জহরুল সেখ সিজান। বয়স ৩৫। জার্মানির অনেক বড় টেক কম্পানির মালিক সে। বাবা মা সহ জার্মানি থাকে।অনেক বছর পর দেশে আসা।তাই পুরনো সৃতি মনে করার জন্য ট্রেন এ চরে ডালিম পুর যাচ্ছে সে।
ডালিম পুর নেমে ট্রেন এর সামনেই এক রুক্ষ সুক্ষ ভিক্ষুক কে দেখে সে অভাক হয়ে তাকিয়ে রইল।
প্রায় ২০ বছর আগের কথা। সিজান সবে মাত্র ক্লাস ৯ এ উথল।এলাকায় ভালো ছাত্র হিসেবে অর অনেক নাম। পুরো চানপুরা গ্রামে ৮ ম শ্রেণিতে জি পি এ ৫ পাওয়া একমাত্র ছাত্রটি সে।
পরা শুনার প্রতি আগ্রহ দেখে সিজান এর বাবা রহমান সেখ সিদ্ধান্ত নিল সিজানকে শহরের কোন স্কুল এ পরাবে।
বলে রাখা ভালো সিজান এর বাবা চানপুরা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় এর শিক্ষক।কাজেই সিজান মধ্যবিত্ত পরিবার এর সন্তান।
তো কথা অনুজায়ি চানপুরা গ্রাম থেকে সিজান চলে গেল ডালিমপুর সহজে। সেখানে নামকরা এক স্কুল এ ভর্তি হোল সে।
সিজান এর সাথে তার মা নাসিমা বেগম ও ডালিম পুর সহরে এল।রহমান সেখ থেকে গেল গ্রাম এই।
স্কুল এ দিন কাল ভালই কাটছিল সিজান এর।তার দুষ্টুমি গুলো ভালো ছাত্র ও নিস্পাপ মুখের আরালে যেন লুকিয়ে যেত।
কিছু দিন পরেই সে অনুভব করলো তার পরা শুনার জন্য এক্সট্রা কোচিং লাগবে।বলে রাখা ভালো সিজান ৯ ম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি ছিল।
তো প্রয়োজন অনুসারে সিজান কে ডালিম পুর এর এক স্বনামধন্য কোচিং এ ভর্তি করা হল।
দেখতে দেখতে তাদের স্কুল এর অর্ধ বার্ষিকী পরীক্ষা শেষ হোল এবং সে প্রথম হোল।তার আনন্দের সিমা রইল না।
অর্ধ বার্ষিকী পরীক্ষা শেষে কোচিং এ প্রথম ক্লাস! কোচিং এ প্রবেশ করেই সে দেখল তার প্রিয় শিক্ষক জনি স্যার এর সাথে এক মধ্য বয়স্ক মহিলা কথা বলছে।
সিজান আন্ধাজ করতে পারলো হয়তো কেও অর্ধ বার্ষিক এ ফলাফল খারাপ করার কারনে কোচিং এ ভর্তি হবে। সিজান ক্লাস এ প্রবেশ করার পর দেখল নতুন এক মেয়ে ক্লাস এ।
বেশ সুন্দরি,চোখে যেন এক রাশ মায়ার জল্কানি।প্রথম দেখাতেই সিজান এর অনুভুতি ছিল এমন এই।
মেয়েটির নাম ছিল নুপা।তার বাবা মারা গেছে ২ বছর হোল। ডালিম পুর এ বালিকা উচ্ছ বিদ্যালয় এ পরে সে।
একদিন হটাত নুপা সিজান কে উদ্দেশ করে বলল ,”এই সিজান,এই অংক টা বুজিয়ে দে ত।“কেমন যেন এক অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করলো সিজান এর।
এমন তো কখন লাগে নি তার!জগতের সব মায়া যেন নুপার চোখেই সিমাবদ্ধ।তা ভাবতে ভাবতে সিজান অংক টা বুজিয়ে দিল নুপা কে।
এর পর থেকে নুপার প্রতি সিজান এর এক আলাদা অনুভুতি।নুপা হাসলে যেন সিজান পৃথিবীর হাসি অর মাঝে খুজে পায়।
নুপার যখন সিজান বলে ডাকে সে যেন এক অদ্ভুত অনুভুতি।দিন যেতে যেতে একদিন সন্ধায় ফেসবুক মেসেঞ্জার এ নুপাকে সিজান তার অনুভুতির কথা বলেই দিল।
সিজানঃ একটা কথা বলব?
নুপাঃ বল কি বলবি।
সিজানঃ না।থাক।
নুপাঃ আহা বল না!
সিজানঃ তুই রাগ করবি নাতো!
নুপাঃ রাগ করবো কেন,বল তুই।
সিজানঃ আমি না তোকে অনেক ভালবাশি। তোকে দেখেলেই মনে এক অদ্ভুত খুসি লাগে।আমি চাই সবসময় তর সাথে থাকতে।
নুপাঃ পাগল হয়ে গেলি নাকি!কি বলছিস এই সব!তুই আর আমি সুধু ভালো বন্ধু।
এইভাবেই নুপা সিজান এর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিল।সিজান এর কস্তের সিমা রইল না ।এত কষ্ট সে কখন অনুভব করে নি।
সে খাওয়া দাওয়া করে না ঠিক মত,পরায় মন বশে না।সিজান এর এর নুপা ক পাওয়ার চেষ্টা অব্বহত থাকে।
২ মাস পরে,
নুপা হটাত একদিন সিজান কে জানায় সে ও সিজান কে ভালবাশে।এ শুনে যেন সিজান বিশ্বাস এ করতে পারলো না।সে খুসিতে আত্মহারা হয়ে গেল।
এভাবেই সুরু হোল তাদের প্রেমের কাহিনী।হাতে হাত রেখে হাতা,অনুভুতি ভাগাভাগি,সব এ চলছিল ঠিক থাক। এর মদ্ধে বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে গেল।সিজান তার আসানুরুপ ফলাফল করতে পারলো না।
চলতে চলতে ১০ মাস কেটে গেল।সামনে এস এস সি পরীক্ষা।সিজান তার সর্বস্ব দিয়ে নুপা কে ভালবাশে।কিন্তু কিছুদিন যাবত নুপা সিজান কে ইগ্নর করছে।
ওর সাথে কথা বলছে নঅরসিজান বেশ চিন্তিত হয়ে পরল।এমন তো নয় নুপা!কেন সে এমন করছে!
এ ভাবতে ভাবতেই তার দিন যায়।সিজান তার কাছের বন্ধু রাকিবের সাথে এ কথা শেয়ার করলো।রাকিব তাকে সান্তনা দিয়ে বলল সম্পর্কে মাঝে মাঝে এমন হয়।
একদিন বিকাল এ রাকিব সিজান এর বাসায় কোন এক কাজ এ গিয়েছিল।আসার সময় ভুল বসত তার মোবাইল ফেলে আসে।
সিজান পরে বিষয়টি লক্ষ্য করে। যখন সিজান রাকিব এর ফোন তাকায় সে দেখে নুপার ম্যাসেজ।রাকিব এর ফোন আনলক ছিল।
সিজান রাকিব এর ফোন থেকে রাকিব ও নুপার কথপকথন পরে।তা পরে যেন সিজান এর মাথায় বাজ ভেঙ্গে পরল! রাকিব ও নুপার কথা ছিল অশ্লীলতায় ভরপুর ,নগ্ন ছবি আধান প্রধান।
এ দেখে সিজান অজরে কাদতে লাগল। সিজান এর সুন্দর জীবন যেন নষ্ট হয়ে গেল।
সিজান এর জীবন এখন এলমেল প্রায়। সে পাগল প্রায়। ঐ দিকে রাকিব ও নুপা বেশ সুখেই আছে।সাভাবিক ভাবেই সিজান এর সাথে রাকিব ও নুপার কোন সম্পর্ক নেই।
সিজান কষ্ট সইতে না পেরে তার বাবা মা ক এই ঘটনা জানায়,এবং বিদেশ ছলে যেতে ছায়।
তাই এস এস সি এর পর রহমান সেখ তার সব জমি বিক্রি করে সিজান কে স্টুডেন্ট ভিসায় জার্মানি পাঠিয়ে দেয়।এর পর থেকে কোন দিন ও নুপা ও রাকিব এর সাথে সিজান এর দেখা হয় নি।
২০ বছর পর ট্রেন এর পাশে,
সিজানঃ ”নুপা তুমি!”
ভিক্ষুকঃ জি সাহেব। আপনারে তো চিনলাম না।
সিজানঃ আমি সেই সিজান,
ভিক্ষুক এর চোখে পানি।
নুপার এই অবস্থা/রাকিব এর সম্পর্কে জানার কোন ইচ্ছাই ছিল না সিজান এর।
সে শুধু একটাই প্রশ্ন করলো “তোমাকে ভালবাসা কি আমার অপরাধ ছিল?”
দিতে পারলো না নুপা কোন উত্তর।
You must be logged in to post a comment.