আপনাদের জন্য নিয়া আসলাম এক নতুন ভূতের গল্প

( এই পর্বটিতে ১৮+ কিছু শব্দ আছে। ভালো না লাগলে এড়িয়ে চলবেন কিন্তু দয়া করে কেউ বা।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

তোর মনের জোর আছে। তুই ঠিকই পারবি। তুই তোর লক্ষে পৌছাতে থাক। তোর মনের আশা পূরন হবে।

এতটুকু বলেই শয়তান মেয়েটা অদৃশ্য হয়ে চলে গেলো। আর মায়া ওর কাজে লেগে পড়লো। কয়েক দিন ধরে কঠিন তপস্যা করতে লাগলো।

এই সাধনার ফলে মায়া কিছু মায়া জাদু শিখেছে। আর এই মায়া জাদুটা ঐ শয়তান মেয়েটা ওকে শিখিয়ে দিয়ে গেছিলো। তারপর শুরু হলো মায়ার আসল খেলা।

প্রথম নরবলি দেয়ার জন্য মায়া একটা কালো আলখাল্লা পরে জঙ্গল ছেড়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।

তারপর গ্রামে যেয়ে একটা মানুষকে নিজের মায়া জাদু প্রয়োগ করে তাকে জঙ্গলে নিজের আস্তানায় নিয়ে আসে। তারপর বিরাট একটা আগুনের কুন্ডুলী বানিয়ে তার পাশে বসে পূজা করতে থাকে।

মায়া এক মনে পূজা করছে। পূজা করা শেষে মায়া সেই ধরে আনা লোকটাকে খুব যত্ন করে বলি দিলো। জীবনের প্রথম নরবলী দিতে নিজের মনে একটা উত্তেজনা কাজ করলো। তারপর বলি দেয়া শেষ হলে, নিজের পরনের সব জামা কাপড় খুলে ফেলে দিলো।

মায়া এখন সম্পূর্ন উলঙ্গ। আর এই উলঙ্গ হয়ে আগুনের সামনে বসে চোখ বন্ধ করে এক মনে শয়তান রাজকে ডাকতে লাগলো। কিন্তু সারা রাত এভাবে ডেকেও শয়তান রাজ মায়ার ডাকে সাড়া দিলো না।

শয়তান রাজ মায়ার ডাকে সাড়া না দিলেও, মায়া হতাশ হয়নি। এরপর একের পর এক নরবলী দিতে লাগলো ঠিক আগের নিয়মে। তবুও পিশাচ রাজ ওর উপর খুশি হয়ে ওর সাথে দেখা করতে এলো না।

অমাবশ্যার রাত। মায়া নতুন একটা শিকার ধরে এনে বলির জন্য প্রস্তুত করে, পূজা শুরু করবে। কিন্তু ওর পূজা আর করতে ইচ্ছা করছে না।

আর ইচ্ছা না করার কারন মায়ার ডাকে কিছুতেই শয়তান রাজ সাড়া দিচ্ছে না। তাই মায়া ঠিক করেছে। আজ যদি শয়তান রাজ ওর ডাকে সাড়া না দেয়।

তাহলে ও আর এই কাজ করবে না। কিন্তু নিজের প্রতিশোধ নেয়া কিছুতেই বন্ধ করবে না। যেকোনো উপায়ে ও প্রতিশোধ নিবেই।

মায়া ওর পূজা শেষ করে, নতুন ধরে আনা শিকারটাকে বলি দিলো। তারপর ওর রক্ত নিজের পাশে রেখে আগুনের কুন্ডুলীর পাশে গিয়ে বসলো।

তারপর সম্পূর্ন উলঙ্গ অবস্থায় শয়তান রাজকে ডাকতে লাগলো। এক ঘন্টা দুই ঘন্টা কেটে গেলো। কিন্তু পিশাচ রাজ ওর ডাকে সাড়া দিলো না।

মায়া হতাশ হয়ে যেই চোখ খুললো? ঠিক তখনই ও দেখলো, মায়ার আগুনের কুন্ডুলীর মধ্যে থেকে একটা কালো কুচকুচে একটা বিরাট লম্বা লোক বের হলো।

ওর চোখ দুটো দিয়ে যেনো আগুন বের হচ্ছে। আর ও সম্পূর্ন উলঙ্গ। শরীরে এক ফোটা বস্ত্র নেই। মায়া ঐ লোকটাকে দেখে প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলো। মায়াকে ভয় পেতে দেখে আগুনের ভিতর থেকে লোকটা বজ্র কন্ঠে বললো,

- ভয় পাস না মায়া। আমি শয়তান রাজ। আমি তোর সাথে দেখা করতে আসছি। এখন আমি তোর সাথে মিলিত হব। যদি তোর সাথে মিলিত হয়ে আমি খুশি হই তৃপ্তি পাই?

তাইলে তোর মনের আশা আমি পূরন করবো। আর যদি তৃপ্তি না পাই তাহলে তোকে মেরে ফেলবো।

এটা যে পিশাচ রাজ এটা শুনে মায়া খুব খুশি হলো। পরক্ষনে ভয়ও পেলো, ভয় পেলো এটা ভেবে যে ও যদি পিশাচ রাজকে খুশি করতে না পারে। তাহলে আজ রাতই মায়ার জীবনের শেষ রাত। তবুও মায়া ভেঙ্গে পড়লো না।

নিজের মনকে শক্ত করলো। তারপর টান টান হয়ে শুয়ে পড়লো মাটিতে। মায়াকে শুতে দেখে পিশাচ রাজ আগুনের কুন্ডুলীর মধ্যে থেকে বের হলো।

তারপর সদ্য বলি দেয়া রক্ত সব মায়ার সারা শরীরে ঢেলে দিলো। তারপর মায়ার বুকের উপরে শুয়ে পড়লো পিশাচ রাজ। তারপর মিলিত হলো মায়ার সাথে।

শয়তান রাজের সাথে মিলিত হয়ে মায়ার যেনো দেহ থেকে কলিজা বের হওয়ার উপক্রম হতে লাগলো। এই প্রথম মায়া কোনো শারীরীক সম্পর্কতে জড়ালো। তাও কোনো মানুষের সাথে না।

সয়ং শয়তানের সাথে। প্রচন্ড কষ্ট হতে লাগলো মায়ার। তবুও নিজের আশা পুরন করার জন্য, শত কষ্ট মুখ বুজে সহ্য করতে থাকলো মায়া। অবশেষে ওদের কাজ শেষ হলো।

মায়া মাটিতে শুয়ে হাফাতে লাগলো। তারপর শয়তান রাজ মায়ার হাত ধরে মায়াকে টেনে তুললো। তারপর বললো,

- তোর সাথে মিলিত হয়ে, আমি তৃপ্ত হয়েছি। শান্তি পেয়েছি আমি। আর তাই তোর উপর খুশি হয়ে তোর আশা পূরন করবো আমি।

শয়তান রাজের কথা শুনে মায়া যেনো নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছে না। এতক্ষন যে কষ্টের মাঝে ছিলো? সেই কষ্ট টা মূহুর্তের ভিতর হারিয়ে গেলো, শয়তান রাজের কথা শুনে।

মায়ার এত আনন্দ হচ্ছে সেটা কাউকে বলে বোঝাতে পারবে না মায়া। তারপর শয়তান রাজ মায়াকে বললো,

- তোর উপর আমি খুব খুশি। আজ থেকে তোর অনেক শক্তি কিন্তু তোর পেটে যতদিন না আমার বাচ্চা আসবে? ততদিন তোর সাথে আমি মিলিত হবো।

শয়তান রাজের কথা শুনে মায়া কিছু বললো না। শুধু লাজুক ভঙ্গিতে মাথা নাড়ালো। তারপর শয়তান রাজ একটা খুব জ্বল জ্বলে একটা লাল রং এর পাথরের আংটি মায়ার হাতের আঙ্গুলে পরিয়ে দিয়ে বললো,

- আমার বাচ্চা তোর পেটে এসে। তারপর জন্ম নেয়ার পর কি কি করতে হবে সব জানিস তো?

শয়তান রাজের কথা শুনে মায়া বললো,

- জ্বী মহারাজ জানি আমি।

- হুম ঐ ভাবে কাজ করতে থাকবি। তাহলে তুই হবি অনেক শক্তিশালী এক পিশাচিনী। আর এখন একটা শক্তি তোকে দিলাম। আর সেটা হলো তোকে শিকার ধরতে গ্রামে যাওয়া লাগবে না।

কোনো মানুষ হেটে আসলে? তার সামনে একটা অদৃশ্য রাস্তা চলে আসবে।

আর সে কিছু বুঝতে না পেরে, ঐ রাস্তা ধরে এই জঙ্গলে চলে আসবে। আর জঙ্গলে আসলেই তাকে মেরে ফেলতে পারবি। আর একটা কথা।

তোর এই সব কর্ম কান্ড যদি মনুষ্য জাতি কখন টের পেয়ে যায়? তাহলে কিন্তু তোকে মারার জন্য উঠে পড়ে লাগবে।

আর যদি ঐ তিনটা সুন্দরী মেয়েকে জবাই করার পর ওদেরকে আর আমার যে বাচ্চাটা হবে? তাকে বলি দিয়ে রক্ত খাওয়ার আগে যদি কোনো ভাবে তোকে মেরে ফেলে?

তাহলে কিন্তু তুই মারা যাবি। আর তোর সাথে আমার বাচ্চাটাও মারা যাবে। তোর মনের আশা আর পূরন হবে না।

শয়তান রাজের এই কথা শুনে মায়া প্রচন্ড হতাশ হলো। তারপর বললো,

- তাহলে কি কোনো ভাবেই আমি আমার লক্ষে পৌছাতে পারবো না?

- না তোকে এখন মেরে ফেললে আর পারবি না। কিন্তু তোর এই হাতের আংটি টা হাতে থাকতে যদি তোর মৃত্যু হয়। আর কোনো ভাবে তুই আত্মা হয়ে আবার ফিরে আসিস? তাহলে তোর লক্ষে আগের নিয়মে আবার শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারবি।

আমার বাচ্চাটাকেও আত্মা হয়ে ফিরে আসা লাগবে। একা একজন ফিরলে হবে না। তবে যে আগে ফিরুক। অপর জনকে ফেরানো ব্যাবস্থা সে করবেই।

একবার মৃত্যু হলেও যে মায়া আবার বেঁচে ফিরতে পারবে এটা ভেবে খুব আনন্দ হচ্ছে মায়ার। মায়া বললো,

- আমি যদি পরের বার আবার মারা যায়, তাহলে কি আবার বাঁচতে পারবো?

মায়র কথা শুনে শয়তান রাজ বললো

- না। আত্মা হয়ে মরলে আর বাঁচতে পারবি না। তবে আত্মা হয়ে তুই আবার তোর কাজ ঠিক মত করতে পারলে তুই অমর আর শক্তশালী হয়ে যাবি।

আর তোর দেহ ফিরে পাবি কিন্তু অনেক সুন্দর চেহারার অধিকারী হয়ে। তবে এই মৃত্যুর পর জীবত হলে। মানে আত্মা হয়ে ফিরলে তোকে পরের বার মারাটা খুব কঠিন হবে।

- কিন্তু মারা তো যাবে। আর সেটা কিভাবে?

- বলবো তবে আজ না। অন্য একদিন। এখন আমার রাজ্যে আমাকে ফিরতে হবে।

এটা বলেই শয়তান রাজ মায়াকে শক্ত করে বুকের সাথে জাপটে ধরলো। তারপর মায়ার ঠোটে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে, লম্বা একটা চুমু খেয়ে, আবার আগুনের ভিতর চলে গেলো। তারপর অদৃশ্য হয়ে গেলো শয়তান রাজ।

এর পর থেকে শুরু হলো মায়ার নরবলী। আর প্রতিবার বলি দেয়ার পর, সেই আগের নিয়মে শয়তান রাজের সাথে মিলিত হতে লাগলো মায়া।

এই করতে করতে এক সময়, শয়তান রাজের সন্তান মায়ার গর্ভে এলো। মায়ার গর্ভে বাচ্চা আসার পর থেকে শয়তান রাজ আর মায়ার সাথে দেখা করতে আসে না।

তারপর মায়া অপেক্ষা করতে লাগলো বাচ্চা হওয়ার। এক সময় বাচ্চা হলো। তারপর শয়তান মেয়েটা মায়াকে যা যা করতে বলেছিলো? ঠিক তাই তাই করতে লাগলো। গ্রাম থেকে সেই সাতটা বাচ্চাকে চুরি করে এনে বলি দিয়ে, সব রক্ত নিজের ছেলেকে খাওয়ালো।

শক্তিশালী হয়ে উঠলো বাচ্চাটা। আর ঐ সাতটা বাচ্চার আত্মা, মায়ার বাচ্চার সাথে থাকতে লাগলো। এরপর থেকে শুরু হলো মায়ার প্রতিশোধ।

গ্রাম থেকে তিনটা সুন্দরী মেয়েকে ধরে এনে, তাদের ভিতরে তিনটা বাচ্চার আত্মা ঢুকিয়ে দিলো। আর মানুষ মারতে থাকলো মায়া। গ্রামের মানুষ মায়ার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে যেতে থাকলো।

মায়া নিজের শক্তি পেয়ে আর প্রতিশোধের নেশায় বিভোর হয়ে, লুকিয়ে থাকতে পারলো না। গ্রামের মানুষের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করে ওদেরকে মারতে লাগলো। আর এটাই ছিলো মায়ার জীবনে চরম ভুল।

মায়া যদি শয়তান মেয়েটার কথা মত নিজে শক্তিশালী, অমর আর সুন্দরী হয়ে, ওর প্রতিশোধ নিতো? তাহলে মায়া কখনো মরতো না।

কিন্তু মায়া প্রতিশোধের নেশায় এতটাই বিভোর ছিলো যে, সব কিছু ভুলে নিজেকে জাহির করে তাই মানুষ মারতে লাগলো।

এতটুকু বলে থামলো তান্ত্রিক। তান্ত্রিক থামলে আমি আর নীলা বসে ভাবতে লাগলাম। তারপর আমি তান্ত্রিক কে বললাম,

- বাবা তারপর মায়ার মৃত্যুর হলো কিভাবে?

আমার কথা শুনে তান্ত্রিক আবার বলতে শুরু করলো,

- তারপর গ্রামের মানুষ তো বুঝে ফেললো যে এই কাজ মায়া করছে। যত মানুষকে খুব বাজে ভাবে মারা হচ্ছে? সব করছে ঐ মায়া। আর তাই গ্রামের সব মানুষ একত্রিত হয়ে একটা আলোচনার আয়োজন করলো।

যে কিভাবে মায়াকে আটকানো যাবে? আর ওর হাত থেকে বাঁচবে মানুষ। আলোচনার এক পর্যায়ে এক তান্ত্রিকের সন্ধ্যান পাই গ্রামের মানুষ। তারপর সেই তান্ত্রিকটা সহ গ্রামের সব মানুষ মিলে অনেক রাতে জঙ্গলে প্রবেশ করে।

আর মায়া তখন ওর পূজায় ব্যাস্ত ছিলো। পুরো গ্রামের মানুষ মায়ার আস্তানা ঘিরে ধরে। মায়া বুঝতে পেরে ঐ চারটা বাচ্চা, আর তিনটা সুন্দরী মেয়ে, যাদের ভিতরে তিনটা বাচ্চার আত্মা ঢুকানো?

আর নিজের বাচ্চাটাকে ঝাপিয়ে পড়তে বলে গ্রাম বাসিদের উপর। প্রচন্ড একটা যুদ্ধ মত সৃষ্টি হয় জঙ্গলে। পুরো জঙ্গল কেপে কেপে উঠতে থাকে।

এক পর্যায়ে তান্ত্রিক মায়া আর ওর দলবলকে আটকাতে সক্ষম হয়। মায়ার বাচ্চাকে মায়ার চোখের সামনে মেরে ফেলে তান্ত্রিক।

নিজের বাচ্চার মৃত্যু দেখে পাগলের মত আচরন করে মায়া। আর নিজের লক্ষে পৌছাতে না পেরে উন্মাদ হয়ে যায় মায়া।

তারপর তান্ত্রিক মায়াকেও মেরে ফেলে। মায়াকে মেরে ওর মৃত দেহটা একটা জায়গাতে পুতে রাখে। আর কিছুটা দুরে ওর বাচ্চাকেও পুতে রাখে। আর ঐ সাতটা বাচ্চার আত্মাকেও মায়ার বাচ্চার সাথে বন্ধি করে রাখে নিজের তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে।

তান্ত্রিক মায়া আর ওর বাচ্চাকে যেখানে পুতের রাখে? সেখানে একটা একটা করে দুইটা মন্ত্রপুত বোতল দিয়ে বন্ধ করে রাখে।

যেনো কোনো দিনও মায়া বা ওর বাচ্চা আর ঐ সাতটা বাচ্চা আবার ফিরে আসতে না পারে। কারন তান্ত্রিক জানতো, যে মায়া আবার ফিরে আসতে পারে ?

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments
APTABUZZAMAN MUJAHID - Apr 1, 2024, 7:39 AM - Add Reply

খুব সুন্দর লেখা

You must be logged in to post a comment.

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

I am a professional article writer.