অনলাইন বিবাহ

বিয়ের বাজার বড়ই চড়া, পাত্র মিললে পাত্রী মিলে না। ভেবে ক্লান্ত আশরাফুন্নেসা। দিনে দিনে বাড়ছে বয়স সম্বন্ধ আসার নেই কোন নাম গন্ধ। হতাশ মনে বসে একা ভাবে কেমন করে মেয়ের জন্যে খুঁজে পাবে বর খানা।

মেয়ে তো নয় যেন সে স্বর্গের অপ্সরা। লম্বা এলো কেশে তার বাতাস করে খেলা। নাম তার সুগন্ধা। রূপে গুনে অতুলনীয়া। এলাকায় সে সেরার সেরা। কর্মে আছে সকল দক্ষতা। তারপরও জুটছে না তার ভাগ্যে বর একখানা।

হঠাৎ করেই ঘটল ঘটনাখানা। ফেসবুকের সাজেশনে সুগন্ধা পেলো বিবাহ. কমের পেজ খানা। পেজখানা পেয়ে অতি আনন্দে যোগ হলো সে সেই পেজে। আজ থেকে শুরু হচ্ছে তার জীবনে নতুন এক অধ্যায় যে।

প্রতিদিনের ছকে বাঁধা জীবন শেষে বসে পড়ে মোবাইলখানা নিয়ে হাতে। খুঁজে ফেরে আপন মনে অতি সাবধানে সযতনে নিজের জন্যে তৈরি জীবন সঙ্গীকে।

সকাল থেকে সন্ধ্যা তার কাজই কেবল পাত্র খোঁজা। খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত পায় না সে পাত্র একখানও। 

সুগন্ধা ভাবে অন লাইনে কি  পাত্র বেশে কেবলই আসে সবাই মজা করতে,,,?? কষ্টে ফাটে তার বুক পায় না সে পাত্র খোঁজার সুখ।

যে পাত্রকে তার হয় পছন্দ, হয় সে টেকো নয় তো বাচ্চাসহ করবে সে বিবাহ। এটাই  পাত্রের মূল বক্তব্য। হতাশ মনে সে খোঁজে আবার নতুন পাত্র।

হঠাৎ করেই তার জীবনে ঘটে নতুন একখানা ঘটনা। মনের মতো পাত্রও সে পেয়ে যায় একখানা।

পোস্টে আছে লেখা সুদর্শন পাত্রের কথা,,,লম্বায় আকাশ ছোঁয়া,,, টাকা পয়সা আছে মেলা,,,থাকে সূদুর আমেরিকা। এই পাত্রকে কিছুতেই যাবে না করা হাত ছাড়া।

সুগন্ধা নক করে ইনবক্সে পাত্রও জবাব দেয় সানন্দে। দু'জনের হয় চেনা জানা। এবার শুরু হয় বিয়ের কথা। পাত্র জানায় তাকে চলুক কথা কিছুদিন ইনবক্সে। মতের মিল হলে পরে বিয়ে হবে অনতিবিলম্বে।

সুগন্ধার মনেতে জোয়ার কেননা তারও আছে রূপের বাহার। দু'জন দু'জনকে জানার পরে বিয়ে হবে নিঃসন্দেহে। 

এভাবে কেটে যায় তাদের বেলা। মেঘে মেঘে সম্পর্কের ঘোরে চাকা। আজ তাদের সম্পর্কের বছর পূর্তি একখানা। কিন্তু কেউ কাউকে আজও চেনে না।

এবার সুগন্ধা পাত্রকে দেয় তাড়া তাড়াতাড়ি কর দেখা। পাত্র বলে হেসে এত তাড়া কিসে ?? হোক না আরও কিছুদিন কথা,, সারাজীবন তো আমরা থাকবো দু'জনা।

এ কথার পরে তাদের সম্পর্কে লাগে ভাটা। সুগন্ধা ভাবে আগের মতো তো হয় না কথা। নক করলে জবাব আসে ব্যস্ততা। সুগন্ধার মাথায় ঢোকে সন্দেহের পোকা।

বুদ্ধি করে বলে ফেলে তোমার ন্যাশনাল আইডি দেখাও আমাকে। আর চাই আমেরিকার নাগরিকত্বের সনদ সাথে তোমার গ্রামের বাড়ির পুরো খবর।

এ কথা শুনে পাত্র যায় হকচকিয়ে। বিনা নোটিশে সুগন্ধাকে ব্লক করে হারিয়ে যায় চিরতরে।

সুগন্ধার মনে লাগে ব্যথা। সত্যিকারের মানুষ সে পাবে কোথা,,,?? বিয়ের পাঠ চুকিয়ে,,, আত্মপ্রত্যয়ী হয় নিজেতে। হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে হয় সে নারি উদ্যোক্তা।

বিয়ে নামক শব্দে তার প্রচুর ঘৃণা। তবুও এড়াতে পারে না নিয়তি সেটেল্ড ম্যারিজে গড়ে সুখের বসতি।

## অনলাইন. কম পাত্র-পাত্রীদের সময় কাটানোর পরিসর। এখান থেকে হয় না তেমন বিয়ে। বউ বাচ্চা রেখে বেশির ভাগ নারী পুরুষ আসে সময় কাটাতে।

তাই অনলাইনে পাত্র চাই/ পাত্রী চাই এ ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপনে নিজেকে জড়ালে শেষ হয়ে যাবেন অচিরে। কারো বিজ্ঞাপন হলে পছন্দ,, সঠিক যাচাইয়ে করবেন তাকে সিলেকশন। ভুল নির্বাচন জীবনে নামাবে আঁধার ভুবন।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles