শিক্ষার সে কাল-এ কাল

শিক্ষার সে কাল-এ কাল।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

মোঃ মুঈনুদ্দীন

সহকারী শিক্ষক, মূলগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়

কেশবপুর, যশোর।

আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি. ১০ ফাল্গুন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা। বসেছি মূলগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চাশ বর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে স্মরণিকায় লেখার জন্যে।

১ জানুয়ারী ১৯৭৩ খ্রি. বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়ে আজ কেশবপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে স্থান করে নিয়েছে।

শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ঐ সকল নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি বর্গ, শিক্ষক ও কর্মচারিগণের; যাদের অক্লান্ত শ্রম ও মেধার অবদানে বিদ্যালয়টি আজ উপজেলার অন্যতম সেরা একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে।

কিছুক্ষণ পূর্বে ছাদে উঠেছিলাম। পশ্চিমাকাশে চাঁদ অস্তমান। তবে পূর্বাকাশে সারিবদ্ধ  তিন তারা আজও যেন আমাদের পথ দেখায়।

আকাশের রাতের এই চাঁদ, তারা, দিনের সূর্য্য; নবি ইব্রাহিমকে তাঁর প্রতিপালককে খুঁজে পেতে সাহায্য করেছিল।

ইতিহাসের প্রথম বিজ্ঞানী ও দার্শনিক থেলিসকেও জ্ঞান চর্চায় অনুপ্রাণিত করেছিল এই সীমাহীন উদার আকাশ।

যার পথপরিক্রমায় হেঁটেছিলেন গ্রীক দার্শনিকগণ এনাক্সিগোরাস, এনাক্সিমিনিস থেকে হেরোডোটাস, হিপোক্রেটিস, পেরিক্লিস, সক্রেটিস, ডায়োজেনিস, প্লেটো, ইউক্লিড ও এরিস্টেটলরা।

যাদের শিক্ষা ও কর্ম আধুনিক শিক্ষার ভিত্তি হিসাবে বিবেচিত।

কালের বিবর্তনে যত শিক্ষাবিদ তাদের চিন্তা ও কর্মের মাধ্যমে যে অবদান রেখেছেন তার মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষ ও মানব সমাজের জীবনমানের উন্নয়ন যা পরিলক্ষিত হয় ব্যাবিলনীয়, মিশরীয়,রোমান,সিন্দু ও চৈনিক সভ্যতার মধ্যে এবং আলকিন্দ, আল-ফারাবী, আল-গাজালী, ইবনে রুশদ, ইবনে খালদুন, ইবনে সিনা, চাণক্য, ও অতীশ দিপংকরগণের চিন্তা ও কর্মে।

বাষ্পিয় ইঞ্জিন আবিস্কারের মধ্য দিয়ে সূচিত হয়েছিল প্রথম শিল্পবিপ্লবের, বিদ্যুৎ আবিস্কারের মাধ্যমে দ্বিতীয় এবং  কম্পিউটার আবিস্কারের মাধ্যমে তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের। আর আজ দাঁড়িয়ে আছি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বার প্রান্তে। যাকে বলা হচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব।

যা আগামীতে আমাদের জীবন ও জীবিকায় অকল্পনীয় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। মানুষের এই যে এত যান্ত্রিক উদ্ভাবন, প্রযুক্তির এত উৎকর্ষ সাধন; তাসত্বেও কি আকাশ ও তার জ্যোতিষ্কমন্ডলী; চিন্তাশীল ব্যক্তিদের কাছে আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেছে? নবি ইব্রাহিম, থেলিস,গ্যালিলিওরা এই আকাশ অধ্যায়ন করতেন পৃথিবীতে বসে।

আর আজ তা এগিয়ে নেওয়া হয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ পর্যায়ে। ধ্রব তারারা আজও সেই একই দূরত্বে অবস্থান করে আমাদেরকে ভাবায়, পথ দেখায়।

আমরা মানুষ; শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ভুলে গিয়ে শুধুমাত্র স্বার্থসিদ্ধির জন্য কেন আমদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করি? ধ্রুব তারার অনাবিল ছান্দিক ঐক্যের আলোকবর্তীকাকে অবলম্বন করে সামগ্রিকভাবে মানুষ ও মানবতার ঐক্য প্রত্যাশা করে এখানেই শেষ করছি।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

সিনিয়র শিক্ষক, মূলগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কেশবপুর, যশোর।