ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবহারের ৮ টি সুফল বা কারন [Video Conferencing]

Video Conferencing, প্রিয় মানুষদের একই সাথে কথা শোনার এবং দেখতে পাওয়ার বহুল ব্যবহৃত মাধ্যম। যদিও  বর্তমান  COVID-19 পরিস্থিতিতে ভিডিও কনফারেন্সিং এখন আর শুধু প্রিয়জনদের আলাপন এর মাধ্যম হিসেবেই সীমাবদ্ধ থাকছে না।

সময়ের প্রয়োজনে এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে বহুগুণ। যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তো আছেই; তার সাথে যুক্ত হয়েছে অনলাইন পাঠদান, অনলাইন ব্যবসায়িক মিটিং। এমনকি দেশীয় ও  আন্তর্জাতিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক এর জন্যেও এখন vedio conference একটি অনন্য মাধ্যম।

সাম্প্রতিক সময়ে (৫ই এপ্রিল থেকে ৮ ই এপ্রিল) ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম এ অনুষ্ঠিত D-8 সম্মেলন তারই উদাহরণ।

বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে Video conferencing একটি ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। আমরা এখন সহজেই স্কাইপি কিংবা ইয়াহু মেসেঞ্জার ব্যবহার করে খুব সহজেই ভিডিও কনফারেন্সিং করতে পারি, তাই না?

সবই তো বুঝলাম, কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো এক সময় আমরা অডিও কনফারেন্সিং, টেলি কনফারেন্সিং এ অভ্যস্ত ছিলাম। তারপর তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের দুয়ারে কড়া নাড়ল ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থা।

কি এমন সুবিধা পেলাম আমরা যার জন্য চিরাচরিত অডিও কনফারেন্সিং থেকে আমরা একদম ঝুঁকে পড়লাম ভিডিও কনফারেন্সিং এ? হ্যা, সুবিধা তো নিশ্চয় আছে সেটা আমরা অনুভব ও করি। আমি ভাবলাম, যে সুবিধাগুলো আমি অনুভব করি সেটা আজ লেখনীর মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

আর দেখুন তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণ এ লিখতে গিয়েও আজ লাগছে না কলম। প্রযুক্তি যেন আলাদিনের সেই আশ্চর্য জাদুর প্রদীপ যা একে একে আমাদের সব মনের আশা ই পূরণ করে যাচ্ছে।

চলুন তাহলে এখন আলাদিনের কল্প কাহিনী থেকে বের হয়ে দেখে নেই

ভিডিও কনফারেন্সিং জনপ্রিয় হয়ে ওঠার ১০ টি কারণঃ

১ম কারনঃ

ফোর্বসের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে , মানুষ টেক্সট বা অডিও থেকে ভিজ্যুয়াল তথ্য গুলি অনেক দ্রুত গ্রহণ করে। একটি সমীক্ষায়  ৬২% মানুষ একমত হয়েছেন যে Video conferencing যোগাযোগের মানকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে।

এ ছাড়া, জরিপকৃতদের মধ্যে ৫০% বিশ্বাস করেন ভিডিও কনফারেন্সিং বোঝার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আপনি যদি কোনও ছোট ব্যবসায়ের মালিক বা একটি বৃহৎ সংস্থার অংশ হন, প্রকল্পগুলি বোঝার জন্য, প্রত্যাশাগুলি নির্ধারণ করার জন্য এবং আপনার লক্ষ্যগুলি পূরণের জন্য স্পষ্ট যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ, যা আপনি ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে সহজেই লাভ করতে পারবেন।

২য় কারনঃ

আচ্ছা আমরা যখন কারো সাথে কথা বলি তখন আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য কি হতে পারে? আমার মনে হয় আমরা যখন কারো কারও মুখোমুখি হয়, আমরা একটি ব্যক্তিগত সংযোগ স্থাপন করতে চায়। আর এই সুযোগ টাই আমরা লাভ করি ভিডিও কনফারেন্সিং এ ।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৯৮ শতাংশ উত্তরদাতারা বলেছেন যে ভিডিও কনফারেন্সিং তাদের সংস্থার অভ্যন্তরে বা বাইরে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা করেছে।

৩য় কারনঃ 

Video conferencing একটি সময় সাশ্রয়ী যোগাযোগ ব্যাবস্থা ও বটে। ইমেইল,টেক্সট এর মাধ্যমে অনেক সময় অনেক বিষয়ের সমাধান করা যায় না সেক্ষেত্রে Video conference এর মাধ্যমে সহজেই তাৎক্ষণিক ভাবে সমাধান করে সময়ের অপচয় রোধ করা যায়।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৮৯ শতাংশ উত্তরদাতারা দাবি করেছেন যে Video conferencing তাদের কম সময়ে অ্যাসাইনমেন্ট বা কাজ সম্পূর্ণ করতে সহায়তা করেছে।

৪র্থ কারনঃ

আমরা প্রায়ই বিশেষ করে বন্ধুদের আড্ডায় গান বাজনা করে স্ট্রিমলাইনস এর মাধ্যমে লাইভে যায়।লাইভ এ হাসি আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া এখন একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার। এই কাজ টি করতেও কিন্তু আমরা ভিডিও কনফারেন্সিং এর সহযোগিতা নিয়ে থাকি। 

এছাড়াও ভিডিও কনফারেন্সিং রেকর্ড করে রাখা যায়, ফলে পরবর্তী যেকোন সময়ে আবার দেখা যায়।

৫ম কারন:

ভিডিও কনফারেন্সিং এর একটি সফল ব্যবহার আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি শিক্ষা খাতে। স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে করোনাকালীন সময়েও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম এর যে চলমান প্রক্রিয়া আমরা দেখতে পাচ্ছি সেটির পূর্ণ শ্রেয় যায় vedio conferencing এর উপর।

জুম, গুগল ক্লাসরুম সহ বিভিন্ন এপস এর মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

স্বাস্থ্য খাতেও আমরা ভিডিও কনফারেন্সিং এর সুবিধা ভোগ করছি। ঘরে বসেই জরুরি ভিত্তিতে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের সাথে সেবামূলক পরামর্শ লাভ সম্ভব হচ্ছে Video conference এর মাধ্যমে।

৬ষ্ঠ কারনঃ

অনেক সময় তাড়াহুড়ায় টেক্সট করতে গিয়ে আমরা নিজের মনের ভাব সঠিক ভাবে প্রকাশে ব্যর্থ হয়। ভিডিও কনফারেন্সিং এ টেক্সট, ইমেইল করার ঝামেলা থাকে না। সরাসরি স্ক্রিন এ দেখা যায় বলে ভুল বুঝাবুঝির ও সুযোগ থাকে না।

৭ম কারনঃ

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা ট্যাক্সি, হোটেল রুম, বিমানবন্দর, হোম অফিস এবং আরও অনেক কিছু সহ বিভিন্ন স্থান থেকে অংশ নিতে পারি। এই ব্যবস্থায় আমাদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে মিলিত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না বলে সময়ের অপচয় হয় না।

৮ম কারনঃ

ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে আমরা এখন লাইভ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতে পারি। সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, স্বাস্থ্য বিষয়ক, শিক্ষামূলক ইত্যাদি যেকোন অনুষ্ঠান সঞ্চালনার জন্য ভিডিও কনফারেন্সিং এখন রেডিও টেলিভিশন এর সহকর্মী হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

আসলে ভিডিও কনফারেন্সিং এর উপকারি দিকগুলো বলে শেষ করা সম্ভব নয়। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক জীবন যাপন কে অনেক খানি একা হাতেই সমুন্নত রেখেছে এই মাধ্যমটি। ভিডিও কনফারেন্সিং সংক্রান্ত আরও বিস্তারিত মতামত থাকলে কিংবা আর্টিকেলটি সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাবেন। আর আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না অবশ্যই।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles