এক সময় একটি বনে একটি কাক ও একটি হরিণ বাস করত। হরিণটি ছিল নাদুস নুদুস এবং দেখতে খুবই সুন্দর। কাক ও হরিন একে অপরের বন্ধু ছিল। দুজনের মধ্যে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
তারা দুজন সব সময় এক সাথে থাকত, এক সাথে ঘুরে বেড়াত। এভাবে তারা দুজন বনের মধ্যে মহা আনন্দে বসবাস করতে ছিল। এক দিন একটি শেয়াল হরিণকে দেখে তার মনে হরিণটির মাংস খাওয়ার লোভ জাগল তার মনে।
কারন হরিণটি ছিল নাদুস নুদুস এবং সুন্দর। এখন শেয়াল মনে মনে চিন্তা ভাবনা করতেছে যে কিভাবে হরিণকে ভুলিয়ে ভালিয়ে কাকের কাছ থেকে তাকে আলাদা করা যায়।
সে ভাবতে ভাবতে একটা বুদ্ধি বের করলেন। সে ভাবতে লাগলেন কোন সময় হরিণকে
একা পাওয়া যাবে। কারন কাকের সামনে হরিণকে
পটানো যাবে না। হঠাৎ করে একদিন শেয়াল হরিণকে একা দেখতে পেলেন। সেদিন কাক হরিণের সাথে ছিল না। শেয়াল মনে মনে ভাবতে
লাগলেন এই সুযোগে হরিণকে পটাতে হবে।
তাই শেয়াল আস্তে আস্তে হরিণের কাছে গেলেন।
হরিণের কাছে গিয়ে তার খুব প্রশংসা করলেন।
হরিণকে বললেন আপনি অনেক সুন্দর। আপনার চোখ দুটি খুব সুন্দর। আপনার নাদুস নুদুস শরীরটা আরও অনেক সুন্দর।
এভাবে অনেক রকমের প্রশংসা করার পর বললেন যে আপনি এতো সুন্দর কিন্তু কিভাবে একটি কালো কুৎসিত কাকের সাথে বন্ধুত্ব পাতালেন বুঝলাম না।
এই বলে কাকের অনেক বদনাম করলেন। এর পর হরিণকে লক্ষ্য করে বললেন যে হরিণ ভাই আপনি
কাককে বাদ দিয়ে আমার সাথে বন্ধুত্ব পাতান। আমি আপনাকে এমন জায়গায় নিয়ে যাব, যেখানে আপনি অনেক ভালো ভালো ঘাস পাবেন,
খেয়ে শেষ করতে পারবেন না। এই ভাবে হরিণকে
অনেক লোভ দেখালেন। হরিণ আস্তে আস্তে লোভে
পড়ে গেলেন। সে কাকের সাথে খুব একটা দেখা সাক্ষাৎ করে না এবং তার সাথে যোগাযোগও করে না।
এমন অবস্থায় শেয়াল সুযোগ বুঝে একদিন হরিণকে বললেন, হরিণ ভাই চলুন আজকে আপনাকে এমন একটি জায়গায় নিয়ে যাব যেখানে ঘাস আর ঘাস।
এই কথা শুনে হরিণ শেয়ালের সাথে চলে গেলেন। হরিণ দেখে সত্যি অনেক ঘাস। হরিণ আর লোভ সামলাতে পারলনা।
সে ঘাস খাওয়া শুরু করে দিল। এদিকে শেয়াল যেখানে শিকারী ফাঁদ পেতে রেখেছে সেই জায়গাটা দেখিয়ে দিয়ে বলে এখানে অনেক সুন্দর ঘাস। এভাবে ঘাস খেতে খেতে হরিণ পড়ে যায় ফাঁদে।
ফাঁদে পড়ে হরিণ এখন শেয়ালকে বাঁচাতে বলে। শেয়াল চালাকি করে বলে, শনিবার আর মঙ্গল বারে দাঁত দিয়ে লোহা কাটা আমার জন্য নিষেধ। এই বলে শেয়াল চলে গেল। শেয়াল বাসায় গিয়ে আনন্দে নাচা নাচি করতেছে আর বলতেছে কালকেই হরিণের মাংস খেতে পারব।
এদিকে কাক অনেক দিন ধরে হরিণের দেখা না পেয়ে তাকে খুজে বেড়াচ্ছেন। প্রায় সন্ধার সময় খুজতে খুজতে দেখে হরিণ ফাঁদে পড়ে আছে। কাক তখন বলল কি বন্ধু আপনার এই অবস্থা কেন?
হরিণ কাককে শেয়ালের সব ঘটনা খুলে বলল এবং তাকে ফাঁদ থেকে বাঁচাতে বললেন। কাক বললেন তুমি কোন চিন্তা করো না। আমি যা বলব তুমি সেই
ভাবে কাজ করবে। তাহলে তুমি মুক্তি পেয়ে যাবে।
হরিণ বলল ঠিক আছে তাই হবে। কাক বলল যখন শিকারীকে দেখবে আসতেছে তখন তুমি মরার ভান করবে। শিকারী মৃত ভেবে যখন তোমাকে ফেলে দেবে তখন তুমি দৌড়ে পালাবে।
এদিকে শেয়াল অনেক ভোরে সেখানে গিয়ে একটি গাছের আড়ালে মাথা বের করে উকি মেরে তাকিয়ে আছে।
এদিকে হরিণ শিকারীকে আসতে দেখে মরার ভান করে আছে। শিকারী এসে দেখে হরিণ ফাদে পড়ে মরে আছে।
শিকারী হরিণকে ফাদ থেকে ছাড়িয়ে যখন ফেলে দিয়েছে তখনই হরীণ এক দৌড়ে পালাতে লাগলেন। এই দিকে শিকারী হরীণকে লক্ষ্য করে তার হাতের লাঠি মারলেন।
কিন্তু লাঠি হরীণের গায়ে না লেগে, লাগল গিয়ে শেয়ালের মাথার মধ্যে। শেয়াল লাঠির আঘাত খেয়ে সাথে সাথে মারা গেলেন।
অবশেষে হরীণ আর কাক আবার সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলেন।
Nice
You must be logged in to post a comment.