প্রিয় বন্ধুরা,আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন?
আবারও হাজির হয়েগেলাম আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে আলোচনা করতে।আজকে আমরা আলোচনা করব হার্ড অ্যাটাকের ১২ লক্ষন নিয়ে।
সূচনা:-
হার্ড অ্যাটাক এর প্রায় এক মাস আগে থেকে আপনার শরীরে এর কিছু লক্ষন দেখা দেয়।হার্ড অ্যাটাক এর লক্ষন প্রথমে কম তীব্রতার সাথে শুরু হয়।অনেক সময় লক্ষন গুলো স্বাস্থ্যের সাধারন অসুস্থতার মতো হয়ে থাকে যার ফলে মানুষ সহজে উপেক্ষা করে থাকে।
জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত করার মাধ্যমেই এর প্রতিকার করা সম্ভব।হার্ড অ্যাটাক হওয়ার আগে আমাদের শরীরে অনেক ধরনের লক্ষন দেখা দেয় যার মাধ্যমে সর্তকতা অবলম্ভন করে আমরা হার্ড অ্যাটাক এর হাত থেকে মুক্তি পেতে পারি।
ত চলুন হার্ড অ্যাটাক এর লক্ষন গুলো কিকি জেনে নেই।
১/ বুক ব্যাথা।
২/ অধিক পরিমানে ঘাম।
৩/ শ্বাসপ্রশাসে বাধা।
৪/ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
৫/ মাথা ব্যাথা।
৬/ তাড়াতাড়ি ক্লান্তি চলে আসা।
৭/ ঘাড়,কনুই,এবং পিঠে ব্যাথা।
৮/ বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৯/ কাশি হওয়া।
১০/ ঘুমে ব্যাঘাত।
১১/ অনিয়মিত পালস রেট।
১২/ সর্দি উপসর্গ।
১/ বুক ব্যাথা।
হার্ড অ্যাটাক এর সবচেয়ে বড় লক্ষন হলো বুকে ব্যাথা।এই ব্যাথা বুক থেকে আস্তে আস্তে শরীরের বিভিন্ন অংশে চরাতে পারে।তবে ব্যাথার তিব্রতা অ্যাটাক এর তিব্রতার উপর নির্ভর করে।
তাই কিছু রোগী অ্যাটাক এর সময় হাল্কা ব্যাথা অনুভব করে আবার কিছু রোগী অ্যাটাক এর সময় চুরিঘাতের মতো ব্যাথা অনুভব করেন।
যদিও বুকে ব্যাথা হার্ড অ্যাটাক এর একটি সাধারন লক্ষন, তবে সব সময় এরকম ঘটনা ঘটে না।
তবে যদি আপনার বা আপনার পরিচিত কারো এরকম লক্ষন দেখা যায় তবে অবশ্যই তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করোন।
২/ অধিক পরিমানে ঘাম।
অতিরিক্ত পরিমানে ঘাম ও হার্ড অ্যাটাক এর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষন । পরিশ্রমের মাত্রা, বা আবহাওয়ার পরির্বতন ছাড়াও অধিক পরিমানে ঘাম হওয়া।তবে এই লক্ষন হার্ড অ্যাটাক এর কিছুদিন আগে থেকে দেখা দিতে পারে।
বিশেষ করে ডায়াবেটিক্স রোগীর ক্ষেত্রে বুকে ব্যাথার পাশাপাশি অতিরিক্ত ঘাম বুক ধরফর করা ইত্যাদি লক্ষন দেখা দেয়।
৩/ শ্বাসপ্রশাসে বাধা।
হার্ড অ্যাটাক এ আক্রান্ত ব্যাক্তিরা প্রায়ই শ্বাস কষ্ট জনিত সমস্যার সম্মূখিন হয়ে থাকেন।আপনার যদি শ্বাস কষ্ট বা অন্য কোন সমস্যা না থাকে এবং হঠাৎ করে শ্বাসপ্রশাসে সমস্যা দেখা দেয়, তবে সেটা খারাপ লক্ষন।
অল্পতেই ধম ফুরিয়ে যাওয়া মূখ দিয়ে নিশ্বাস নেওয়া এগুলো হার্ড অ্যাটাক এর লক্ষন।
৪/ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
যদি হঠাৎ করে কাজের মধ্যে আপনি প্রায়ই অজ্ঞান হয়ে যান, তাহলে বুঝবেন আপনার হার্ডে সমস্যা রয়েছে।এ সমস্যা দেখা দিলে কোন রকম ঝুঁকি না নিয়ে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৫/ মাথা ব্যাথা।
মাথা ব্যাথা একটি সাধারন সমস্যা বলেই আমরা ধরে নেই।যখনই প্রচন্ড মাথা ব্যাথা দেখা দেয় আপরা সাধারনত ঔষধ খেয়েই তা দূর করে থাকি। তবে আপনি জানেন কি হার্ড অ্যাটাক এর অন্যতম একটি লক্ষন হলো মাথা ব্যাথা।
তাই মাথা ব্যাথা দেখা দিলে তা অবহেলা না করে ডাক্তারেরর কাছে যান।
৬/ তাড়াতাড়ি ক্লান্তি চলে আসা।
আপনি কি অল্প পরিশ্রমেই তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে যান বা হাপিয়ে যান? অল্প পরিশ্রম করলেই বুক ধড়ফড় করে? অনিয়মিত হার্ড বিট হলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। কখনও কমবে আবার কখনো বাড়বে।
যদি এই লক্ষন গুলো আপনার শরীরে দেখা দেয় তবে, কোন বিষেশজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করোন।
৭/ ঘাড়,কনুই,এবং পিঠে ব্যাথা।
কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় বুকের ব্যাথা ধিরে ধিরে ঘাড়, কনুই, এবং পিঠে ছড়িয়ে যায়।ব্যাথা মেরুদণ্ডডে ভ্রমন করে,। যেখানে এটি স্নায়ুর পথের সাথে মিশে যায় যার ফলে ব্যাথাটি বুকের চার পাশের কিছু অংশ জুরে প্রশারিত হয়।
এটি ঘাড়ে, কনুই, এবং পিঠে অথবা ভারাক্রান্ত রুপে উপস্থাপিত হতে পারে।
৮/ বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
অনেক হার্ড অ্যাটাক এর রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় হার্ড অ্যাটাক এর পূর্বে বদহজমের মতো লক্ষন দেখা দেয়।
রোগীদের শরীরে অস্থিরতা দেখা দেয় যার ফলে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়ার লক্ষন দেখা দেয়।
৯/ কাশি হওয়া।
হার্ড অ্যাটাক এর আর একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব লক্ষন হলো কাশি। আপনার যদি দীর্ঘদিন কাশির সমস্যা থাকে, এবং তার সাথে যদি কফ বের হয়। তবে বুঝে নিতে হবে যে আপনার হার্ড ঠিক মতো কাজ করছে না।
তবে কাশি সবসময় যে অ্যাটাক এর লক্ষন তা নাও হতে পারে।তবে কফের সাথে যদি নিয়মিত রক্ত বের হয় তবে বুঝে নিতে হবে আপনার হার্ড অ্যাটাক এর সম্ভাবনা রয়েছে। বা ভবিষ্যতে আপনার হার্ড অ্যাটাক হতে পারে।
১০/ ঘুমে ব্যাঘাত।
হার্ড অ্যাটাক এর পূর্বে রোগীদের ঘুমে ব্যাঘাতের লক্ষন দেখা দেয়।এবং ঘুমের মধ্যে শ্বাস কষ্টের কারনে। ফলে শ্বাসরোধ হয় যা হৃদপিন্ডের পেশির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
হার্ড অ্যাটাক হওয়ার কয়েক মাস আগে বা কয়েক সপ্তাহ আগে ঘুমের ব্যাঘাত দেখা দিতে পারে।
১১/ অনিয়মিত পালস রেট।
আপনি যদি নার্ভাস থাকেন, হতাশ থাকেন কিংবা কোথাও থেকে দৌড়ে আসেন তবে আপনার পালস রেট উঠা নামা করতে পারে।
যদি এটা কোন কারন ছাড়াই হয়, তবে তা চিন্তার কারন হয়ে দাঁড়ায়। হার্ড অ্যাটাক এর আগে অনেকের ক্ষেত্রে অনিয়মিত পালস রেট দেখা দেয়।
এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অব্যশই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
১২/ সর্দি উপসর্গ।
সর্দি উপসর্গ ও হতে পারে হার্ড অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষন। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে হৃদক্রিয়া সমস্যা জনিত রোগীরা এতে আক্রান্ত হওয়ার কিছু দিন আগে ঠান্ডা সর্দিতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষন দেখা যায়।
যদি লক্ষন গুলো থাকে তবে কি করবেন ?
যদি, আপনার বা আপনার পরিচিত কেউ উপরোক্ত এই লক্ষন গুলো দেখা যায়, তা হলে অভিলম্ভে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
তবে মনে রাখতে হবে হার্ড অ্যাটাক এর প্রতিরোধ করার প্রথম উপায় হলো হার্ড অ্যাটাক এর পূর্ব লক্ষন গুলো পর্যবেক্ষণ করে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করা।
আর সর্তক হওয়ার সাথে সাথে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে হবে।
শেষ কথা:
ত প্রিয় বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের আলোচনা হার্ড অ্যাটাক এর ১২টি পূর্ব লক্ষন নিয়ে আলোচনা।
ত আসা করছি আপনারা যদি আমার আজকের পোষ্টটি শেষ পর্যন্ত ভালো ভাবে পড়েন তবে ইনশাআল্লাহ আপনারা অনেক উপকৃত হবে।আর আপনাদের কোন উপকারে আসতে পারলে আমার নিজের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
তবে দয়া করে মনে রাখবেন যে শুধু মাত্র উপরোক্ত লক্ষন গুলো হার্ড অ্যাটাক এর একমাত্র লক্ষন নয়।সুতরাং, উপরোক্ত লক্ষন গুলোর উপর ভরসা করে নিজে চিকিৎসা করকে যাবে না।
বরং অস্বাভাবিক কোন লক্ষন দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাহায্য গ্রহনের জন্য ছুঁটে যান!
ত পোষ্ট সম্পকে কোন কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করে যানাবেন। আমি ইনশাআল্লাহ আপনাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিবে।
এতক্ষন আমার পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্যা ধন্যবাদ।
ত এই পর্যন্তই সবাই অনেক ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন,নিরাপদে থাকবেন। আর আমার জন্য বেশি বেশি করে দোয়া করবেন।
আল্লাহ হাফেজ।
You must be logged in to post a comment.