মীমের বিয়ে | ভালোবাসা | বাসরঘর ও সংসার

আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় গিয়ে বসতে সবাই বললো: মানুষ নিজের বিয়ের দিনে এতো দেরি করে ওঠে? আমি শুনে চুপ করে বসে রইলাম। আজকে আমার বিয়ে।মে বিয়েতে আমার কোনো মত নেই। আমি ছারা বাসার সবায় খুশি আর বাসা ভর্তি লোকজন।বাবা মা নিজের পছন্দের ছেলের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছে।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

কিন্তু আমার পছন্দ ছিল অন্য কেউ। আমি ইফটিকার কে ভালো বাসি।শত চেষ্টার পরেও বাবাকে বলতে পারি নি আমার ভালো বাসার কথা । বাবা অনেক রাখি আর বদমেজাজি ছিলেন। আমি বাবাকে অনেকবার বলার চেষ্টা করছি কিন্তু পারিনি। ইফটিকারের সাথে আমার সম্পর্ক আজ ২ বসর‌।

ও আমাকে অনেক ভালোবাসে।ও সৌদি আরবে থাকে ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌সেখানে জব করে।বেতন বেশ ভালো পায়। কিন্তু ছোট জাতের বলে বাবা ওদের পছন্দ করেন না।ওর বাবা আমাদের বাসায় মালি ছিলেন।তবে পরিস্থিতি তাকে এমন বানায়। একটি এক্সিডেন্ট এর জন্য ইফটিকারের বাবার এক হাত কেটে যায়।এর পর তার বাবার চাকরি চলে যায়।

তার পর আমাদের বাসায় মালির কাজ আর সবকিছু দেখাশোনা করে ইফতিকার কে বড়ো করেছেন।ইফতিকার অনেক ভালো ছাত্র ছিলেন।আর সেজন্যই ভালো কম্পানি তে জব পায় আর আমার বাবা তাকে বিদেশে যাবার সুযোগ করে দেয়।আমি এস এস সি পাস করে ছি। বাবা আমাকে কলেজে ভর্তি করেছেন।তবে বাবা বলেন তার বয়স হয়েছে।

ভালো ছেলে পেলে মেয়েদের ঘরে রাখতে নেই। বাবা পূরোনো দিনের মানুষ। পুরোনো চিন্তা ভাবনা তার। এখনো বদলায়নি।আমি ইফতিকার কে অনেক ভালোবাসি আর ইফতিকার আমাকে তার চেয়ে বেশি ভালো বাসে। আমি জানতাম না তখনো মে কি আছে আমার ভাগ্যে। ইফতেখার চলে যাওয়া প্রায় ছয় মাস হলো ।

ও আমাকে বলেছে এসে আমাকে বিয়ে করবে।কেও মেনে না নিলে আমার পাসপোর্ট আর ভিজা কমপ্লিট করে আমাকে নিয়ে যাবে। যেদিন রায় আমাকে জরিয়ে ধরে কাঁদছিল কিছু সময়। আমার ইচ্ছে হচ্ছিল ওর সাথে চলে যায়। ভালোবাসায় এতো কষ্ট কেন? আমার সাথে ওর ফোনে কথা হতো। আমি ওকে বিয়ের কথা বলেছি কিন্তু কিছু দিন হলে ওর সাথে কথা বলতে পারিনি।

জানিনা ফোনে কল যায়না। কিন্তু কেন কিছুই জানতাম না। শুধু ভাবতাম ইফিকার কি আমাকে ধোঁকা দিল?অনেক প্রশ্ন বুকের ভেতরে। কিন্তু কোনো উত্তর ছিল না তখন।ও আমাকে ধোঁকা দিতে পারে না। কিন্তু কি সমস্যা হলো ওর। কেন এমন করছে?এই একটা প্রশ্ন আমাকে প্রতিদিন কুরে কুরে খাচ্ছে।

আমি এই প্রশ্নের উত্তর নেবার জন্য হয়তো এখনো বেঁচে আছি।এর মধ্যে ১ মাসের মধ্যে বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে দিল। আমি মনমরা হয়ে থাকতাম এইটা আমার মার চোখে পড়ে। বাবার কাছে হয়তো মা বলেছে। কিন্তু বাবা ভেবেছিলো বিয়ে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু কিছুই ঠিক হবার ছিল না। বেঁচে ও যেনো মরে গিয়ে ছিলাম আমি। আজকে আমার বিয়ে। আমি ছেলে কে দেখিনি।কেমন ছেলে বলতে পারবো না।

শুনেছি।ঢাকায় নাম করা বিসনেস এর মালিকের ছেলে।সেও বাবার সাথে বিসনেস করে। বাবার ছোট বেলাযর বন্ধুর ছেলে সে। এগুলো তে আমার কোনো ইন্টারেস্ট ছিল না। আমার মন ইফতেকারের কাছে।আমি বিয়েতে না বা হ্যাঁ বলার সুযোগ পায়নি কারন বাবা সেইটা জানার দরকার মনে করেন নি।

আজকে আমার বিয়ে।আমাকে সাজিয়ে তৈরি করলো।একটু পরে কবুল বলতে হবে আমার। অন্য কারোর জীবনের সাথে জরিয়ে যাবে আমার জীবন।আমি শুধু চেয়েছি একটা বার ইফতিকারকে দেখতে আর উত্তর গুলো চায়তে। আমি কবুল বললাম। আমাদের পাশের গ্রামে ছেলের গ্রামের বাড়ি।

আমি আপাতত এখানে থাকবো বিয়ে শেষে ঢাকায় গিয়ে আবার আমাদের বড়ো করে অনুষ্ঠান করা হবে। আমি নিয়ে ভেবেছিলাম কিন্তু এখন আমি অন্য কারোর।খারাপ একটা সত্যি হলেও এইটায় সত্যি। এখন বসে আছি বাসরঘরে।এই দিন টা অন্য কাওকে নিয়ে ভেবেছিলাম কিন্তু সেটা হয়তো আর কোন দিনি পূরন হবে না।

আমার শপনো গুলি মুহূর্তের মধ্যে বদলে গেছে।একটু পরেই দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম। শুনতেই সে আসলো।সে মানে আমার বর আর আমি যার বৌউ এখন।এসে দরজা লাগিয়ে দিল।তারপর আমার কাছে এসে বসলো ও।

আমি বিয়ের আগে ওর সাথে ফোনে কথা বলিনি।আমাকে ফোন দিত রিসিভ করে ১ মিনিট কথা বলে কিছু একটা বাহানা দেখিয়ে রেখে দিতাম।সে আমার কাছে এসে পাশে বসে বললো।কেমন‌ আছো?আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম:হিম। ভালো।ও বললো আচ্ছা তোমাকে যেদিন দেখতে যায় সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত দেখছি তুমি কেমন মন মরা আর আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করছিলাম মে এই বিয়েতে দেখো তোমার কোনো মত আছে নাকি। তুমি বলেছিলে নেই।

তাহলে কারণ কি তোমার?এতো মনমরা হয়ে আছে কেন? এইটা সত্য যে এমনটা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো সে। কিন্তু ইফতেখার এর কোনো খোঁজ না পেয়ে আমি বলেছিলাম কোন পচ্ছন্দ নেই আমার।আমি তার কথা শুনে বললাম: কিছু না আমার শরীর টা ভালো করছে না। সেজন্যই। আমি হয়তো অযানতেই একটা ছেলের জীবন নষ্ট করে ফেলেছি।যাকে নিজের ভালো বাসা দিতে পারবোনা তাকে কিভাবে নিজের শরীর টা দেবো।

ভাবতেই ও আবার হাতটা টেনে নিয়ে নিজের দুই হাতের ভেতরে নিয়ে আমাকে বলছে: আচ্ছা এমন বিষয়?আমাকে এইটা আগেই বলতাম। সত্যি এইটা ছারা আর কোনো কারণ নেই তো?আমি বললাম: না আর কোন কারন নেই।ও আমার হাতটা টেনে নিয়ে আমার খুব কাছে এসে আমার মাথাটা ওর বুকে নিয়ে রাখলো আর বললো এইভাবে শুয়ে থাকো ।

আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি তুমি ঘুমাও।আমার চোখে দিয়ে পানি চলে আসলো। এইটা আমি কি করেছি ?একটা ছেলের জীবন নিয়ে কেনো খেলছি। ভাবতেই ও বললো: জানো আমি তোমাকে নিয়ে অনেক শপনো দেখেছি। আমার বৌওকে অনেক ভালোবাসবো আর আদর করবো আমি। আমি ঘুরতে যাবো হাত ধরে। একসাথে গল্প করবো ‌‌।

আমার সবকিছু আমার বৌয়ের অধিকার। এইগুলো ওর মুখে থেকে শুনে আমরা কষ্টে বুকটা ফেটে যেতে লাগলো।একটা ভালো ছেলের জীবন আমি শেষ করে দিলাম।আমি ভাবলাম কিছু না পারলেও মিথ্যা ভালো থেকে হলেও এই ছেলেটির জীবন আমি নষ্ট করতে পারবো না। আমি ইফতিকার কে ভুলতে চায় ।

ইফতিকার আমাকে মিথ্যা শপনো দেখিয়েছে। এইগুলো ভেবে আমি আমার বরের বুকে মাথা রেখে দুই হাত দিয়ে জরিয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম। আমার জরিয়ে ধরায় সে যেনো চিন্তা মুক্ত হলো।আমি ঘুমিয়ে গেলাম। আমার গল্পের বাকি টা পরতে পার্ট টু এর জন্য আমাকে ফলো দেন আর দয়া করে আমার গল্পটি শেয়ার করুন যেন এমন আরো বাস্তব জীবনের গল্প আপনাদের কাছে দিতে পারি। বাকি অংশ দেখতে হলে পার্ট টু দেখুন।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ