"শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড " বলে জানতাম কিন্তু জীবনের কিছু সময় পার করার পর অনাকাঙ্ক্ষিত কোন বিষয় সামনে আসলে তখন মনে হয় "শিক্ষা জাওরামির মেরুদন্ড"। শুধু শিক্ষিত না বরং সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন আমাদের।
যারা শিক্ষিত হয়েছেন, ক্যারিয়ার গড়েছেন তাদের আমরা আমাদের রোল মডেল হিসেবে মানি। কিন্তু সেই মডেল যদি শিক্ষার অসদুপায় অবলম্বন করে শিক্ষার দফারফা করে ফেলে, তাইলে শিক্ষা আর জাতিকে মেরুদণ্ড স্বরুপ ঠেস দিয়ে রাখতে পারবে না, শিক্ষা প্রতিনিয়ত ধর্ষিত।
কথাগুলো খুব আক্ষেপের। খারাপ লাগে বর্তমানে শিক্ষার এ অবস্থা দেখে। বিদ্যা এখন বস্তাপঁচা সার্টিফিকেটের স্তুপ।কোন মান নেই, কোন রূপ নেই।
শুধু সার্টিফিকেটের অধিকারী আর একটা চাকরি যোগাড় করার জন্যই হয়তো বর্তমানের এ শিক্ষা।অতীতে যারা পড়ালেখা করতো তারা ছিলেন সমাজের চোখে সম্মানি।
কিন্তু এখন ঘরে ঘরে পাওয়া যাবে পড়ালেখা জানা মানুষ। কারণ, যুগে যুগে পরিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম হয়েছে।শিক্ষা না থাকলে কোন কিছুই সম্ভব নয়।জাতির উন্নতি করতে হলে শিক্ষা লাগবেই।
একারণেই অল্প হোক, বেশি হোক মানুষ শিক্ষা গ্রহণে পিছিয়ে নাই।
এভাবে শিক্ষা নিতে নিতে একদিন মানুষ শিক্ষার ধরণই পালটে দিলো।কেউ কেউ বেছে নিয়েছে শিক্ষার মাধ্যমেই দূর্নীতি।
এখানে শিক্ষিত হওয়ার গুরুত্বটা ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারলেও সুশিক্ষিত হওয়ার গুরুত্বটা খুব কম মানুষই বুঝে।শিক্ষা কালচারে পরিণত হয়েছে। আত্মশিক্ষা টা ভালোভাবে ঢুকতে পারেনি মানুষের ভিতরে।
সমাজের প্রতিটি স্তরে রন্দ্রে রন্দ্রে মিশে গেছে দূর্নীতি।এই শিক্ষাব্যবস্থার ভেতর দিয়েই এ দূর্নীতি হয়ে যাচ্ছে।কথায় আছে - দুর্জন বিদ্যান হইলেও পরিত্যজ্য।অর্থাৎ, সে যতই শিক্ষিত হোক,মানুষটি ভালো মনের না হলে তাকে গ্রহণ করা উচিত হবে না।
কিন্তু তাতে কি, আপনি শিক্ষিত ঠিক আছে, কিন্তু আপনার অর্থ নাই।আপনার শিক্ষার কোন মূল্য নাই। আপনার শিক্ষা না থাকলে আপনার অর্থ আপনাকে অনেক দূর টেনে নিয়ে যাবে।
মানুষ শিক্ষার সাথে অর্থকে এমন করে মিশিয়ে ফেলেছে যে, শিক্ষা এখন অর্থের মেশিন।হ্যাঁ, আপনি শিক্ষিত হলে উপার্জন করতে পারবেন ভালো, কিন্তু এ শিক্ষা এমন একটি জিনিস যেটা দু একজনের জন্য নয়,বরং পুরো একটা জাতিকে উন্নতির দিকে ধাবিত করবে।
কিন্তু, অর্থ এসে শিক্ষাকে এমন একটা রূপ দিয়েছে, যে মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে শুধু উপার্জনের জন্য।
অনেক কবি সাহিত্যিক প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা পাননি, তারপরো তারা কবি হয়েছেন।তাদের লেখা কবিতা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত। আমরা তদের কবিতা গুলোই পড়েছি।
তারা শিক্ষিত হয়েছেন অন্তর থেকে। আর আমরা প্রাতিষ্ঠানিক এত শিক্ষা,ডিগ্রী,গ্র্যাজুয়েশন করার পরও তাদের ছায়া মাড়ানোর মত শক্তি আমাদের নাই।
কারণ, আমরা শিক্ষিত হয়েছি একটি চাকরির জন্য,একটি সার্টিফিকেট এর জন্য।সমাজে হাই প্রোফাইল ব্যক্তিদের একটু সান্নিধ্যে থাকার জন্য।
You must be logged in to post a comment.