বিভিন্ন দেশের ৫টি অদ্ভুত আইন

“ আসসালামু আলাইকুম ” আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ 

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

আইন সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। মূলত আইন হচ্ছে এমন কতগুলো নিয়ম-কানুনের সমষ্টি যা সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত এবং যা মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে ও যা মানুষের মঙ্গলের জন্য প্রণীত। আইন ভঙ্গ করলে শাস্তির বিধান আছে। শাস্তির ভয়ে মানুষ আইন মেনে চলে।আইন না থাকলে সমাজ ও জীবনে ভয়াবহ অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিত

আইন একটি দেশে এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি করে যেখানে সুন্দর, সভ্য ও জীবনযাপনের অনুকূল অবস্থার সৃষ্টি হয়। আইনের মাধ্যমে স্বাধীনতা উপভোগ করা যায়। একটি দেশ বা রাষ্ট্র আইনের সাহায্যে মানুষের অবাধ স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আইন আছে বলেই প্রত্যেক মানুষ সমভাবে স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারে। 

মোটকথা, একটি দেশ বা রাষ্ট্র ও এর জনগনের সুবিদার্থে আইন প্রণয়ন করা হয়। 

কিন্তু আইন সব ক্ষেত্রেই যে স্বাধীনতা দেয় একথা একেবারে ভুল। এমন অনেক আইন আছে যার ফলে অকারণে একটি দেশের জনগণের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত হয়। 

একেক দেশ একেক রকম। আর প্রত্যেক দেশের আইন ও একেক রকম।কিন্তু এমন অনেক দেশ আছে যেগুলোর আইন অনেক অদ্ভুত, হাস্যকর ও বটে ।

তাই আজ আমি আপনাদেরকে ৫ টি এমন আইনের কথা বলবো যে গুলো শুনে আপনারা হয়ত চমকে যাবেন। আপনারা ভাবতে বাধ্য হবেন যে, কেন বা কি কারনে এসব আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আর সে দেশের জনগন কীভাবে এ আইন গুলো মেনে চলে। আর না মানলে তাদের শাস্তি ও পেতে হয়।

১. স্ত্রীর জন্মদিন ভুললেই বিপদ :

আমারা অনেকেই হয়তবা নিজেদের বন্ধু- বান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের জন্মদিন ভুলে যাই। কিংবা স্বামী স্ত্রীর জন্মদিন বা স্ত্রী স্বামীর জন্মদিন ভুলে যাই। এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার, এতে করোই কোনো কিছু আসে যায়না। এমনকি অনেকে এ নিয়ে কোন মাথাই ঘামায় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্ত্রীরা জন্মদিনের বিষয়টা একটু পারসোনাল ভাবে নিয়ে নেয়। মানে তারা স্বামী ওপর একটু ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। আর স্বামী বিভিন্ন কায়দায় স্ত্রীকে মানিয়ে নেয়।

কিন্তু আপনি কি কখনো ভেবেছেন যে, স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে যাওয়া একটা অপরাধ। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন। এমন একটি দেশ আছে যেখানে স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে গেলে শাস্তি পেতে হবে দেশটি হচ্ছে সামোয়াত। সামোয়াতে স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে যাওয়া বেআইনি ।

কেউ যদি তার স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে যায় তাহলে তাকে শাস্তি ভোগ করতে হয়। আর শাস্তি হচ্ছে স্ত্রী তার স্বামীর সাথে কথোপকথন বন্ধ করে দেয়।

কতদিন কথা বার্তা বন্ধ থাকবে সেটা নির্দিষ্ট নয়। এমনকি এর জন্য ভিভোর্স ও হতে পারে। তাছাড়া স্বামীকে জেল ও খাটতপ হতে পারে।

২. মুরগী রাস্তা পার করতে পারবে না :

প্রায় সব দেশেই খামারে মুরগী পালন করা হয়ে থাকে। মুরগী পালন করা কোন অপরাধ না। কিন্তু জর্জিয়ার কুইটম্যানে একটি আইন হচ্ছে আপনি যদি কোন মুরগীর মালিক হন এবং আপনার মুরগী রাস্তা পার করে তাহলে আপনাকে জরিমানা দিতে হবে।

সেখানে মুরগীর রাস্তা পার করা অবৈধ। সহজভাবে বলতে গেলে এই আইনটি করার কারণ হচ্ছে মালিকরা যাতে মুরগীদের নিয়ন্ত্রণে রাখে। খামারের মুরগীরা যাতে অবাধে চলাফেরা করতে না পারে। 

৩. বাসার বাল্ব নিজ হাতে পরিবর্তন করা অপরাধ :

আমাদের বাসায় যদি কখনো বাল্ব নষ্ট হয়ে যায় তখন আমরা সেটা নিজ হাতে পরিবর্ন করে ফেলি। তার জন্য আমরা কোন ইলেকট্রেশিয়ানকে ডাকি না। কারণ এই কাজটা আমরা ইলেকট্রেশয়ান ছাড়াই নিজ হাতে করতে পারি। কিন্তু ভিক্টোরিয়ানের একটি আইন অনুযায়ী, আপনি যদি একজন লাইসেন্স প্রাপ্ত ইলেকট্রেশিয়ান না হন তাহলে আপনি বাল্ব চেঞ্জ করতে পারবেন না।

আর আপনি যদি এই কাজটি করেন তাহলে আপনাকে জরিমানা দিতে হবে। কেননা সেখানে ইলেকট্রেশিয়ান ছাড়া বাল্ব পরিবর্তন করা অবৈধ। 

৪. প্রতিজ্ঞা / প্রোমিস করা নিষিদ্ধ :

আমরা অনেকেই হয়ত কথায় কথায় প্রতিজ্ঞা করি। অনেক সময় আমরা না বুঝে শুনে ও প্রতিজ্ঞা করে বসি। প্রতিজ্ঞাটি আমরা রক্ষা করতে পারব কিনা তা আমরা চিন্তা করি না। তাই অনেক সময় আমাদের করা প্রতিজ্ঞা আমরা নিজেরাই ভেঙে ফেলি। মুসলিম সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রতিজ্ঞা করা অবৈধ। 

যদি সেখানে আপনি প্রতিজ্ঞা করেন তাহলে আপনাকে জরিমানা, জেল অথবা নির্বাসন দেওয়া হবে। কেননা সেখানে মনে করা হয় যে, প্রতিজ্ঞা করা কোনো ব্যক্তির সম্মান বা বিনয়কে অসম্মান করে। তাই সেখানে প্রতিজ্ঞা করা দন্ডনীয় অপরাধ। তাই আপনি যদি কখনো সেইসব দেশে যান তাহলে প্রতিজ্ঞা করা থেকে বিরত থাকবেন।

৫. মৃত্যুর আগে কবরস্থানে প্লট কেনা :

ফরাসি শহর সারপৌরেনক্রতে মরার আগে কবরস্থানের প্লট কেনার আইনগত বাধ্যবাধকতা তৈরি করা হয়েছে। একসময় এই শহরের মানুষ অযৌক্তিকভাবে মারা যাচ্ছিল এবং তাদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। তখন সেখানকার মেয়র আদেশ জারি করে যে, সেখানে ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ মারা যেতে পারবে না যতক্ষণ না সে তার দাফনের জায়গা না ক্রয় করে।

তাই সেখানকার মানুষ মৃত্যুর আগেই তাদের দাফনের জায়গা ক্রয় করে। যদি কেউ এই কাজটি না করে তাহলে তাকে কঠোর শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে মৃত ব্যক্তিকে কেউ কিভাবে শাস্তি দেবে।

আপনাদের কেমন লাগলো এসব অদ্ভুত আইন জানার পর। কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।

আজ এ পর্যন্তই, আল্লাহ হাফেজ। 

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ