সাইবার শব্দের উৎপত্তি কোথা থেকে ও সাইবার শব্দের আভিধানিক অর্থ কী?
গ্রীক শব্দ cybertenic ( সাইবারটেনিক) থেকে ইংরেজি cyber ( সাইবার) শব্দের উৎপত্তি ঘটেছে। সাইবার শব্দের অর্থ হলো: অনলাইন জগৎ, অনলাইন পরিচালনায় দক্ষ। সাইবার জগৎকে দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন:
১. সাইবার ক্রাইম ও
২. সাইবার ক্যাফে
কীভাবে ও কেন সাইবার ক্রাইম করা হয়?
কম্পিউটার বা ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্যাদি চুরি, হ্যাকিং, ফিশিং, স্প্যামিং ইত্যাদি অপরাধ বিভিন্ন ম্যালওয়ার সফটওয়্যারকে কাজে লাগিয়ে অপরাধ করছে একদল প্রতারক।
কেন করা হয় এই সাইবার ক্রাইম?
মূলত লোভ, হিংসা-প্রতিহিংসা ও ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই করা হয় সাইবার ক্রাইম। আর এই সাইবার স্বীকার হচ্ছে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও সাধারণ জনগণ৷
কারা কারা সাইবার ক্রাইমের স্বীকার হচ্ছে?
নারী, ব্যাংকার, সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছাড়াও আরো অনেকে। সাইবার অপরাধীরা ব্যক্তির ক্রেডিট কার্ডের পিন কোড, ই-মেইল, সোশ্যাল মিডিয়া হ্যাক করে ব্যক্তিগত তথ্য চুরিসহ নিমিষেই হাতিয়েই নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা৷ ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে দেওয়া হচ্ছে হুমকি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কী ধরনের সাইবার অপরাধ করা হয়?
সাইবার হামলাকারীরা ফিশিং সাইটের মাধ্যমে হুবহু আরেকটি নকল ফেসবুক পেইজ তৈরি করেও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা হয়৷ আবার লোভনীয় গিফট কার্ড, বিভিন্ন উইশ কার্ড ম্যাসেঞ্জার, হুয়াটস এ্যাপ কিংবা ইমুতে পাঠিয়ে ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলে নিমিষেই চুরি করে নেয় পার্সোনাল সব ডেটা৷
কীভাবে আমরা এই সাইবার হামলার স্বীকার থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারি?
১. ফেসবুক পাসওয়ার্ড কাউকে না দেওয়া৷
২. যে নাম্বার বা ই-মেইল দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট খুলেছেন তা কারো সাথে শেয়ার না করা৷
৩. অন্য কারো মোবাইলে / ডিভাইসে লগিন না করা; আর একান্তই লগিন করতে হলে কাজ শেষে লগআউট দেওয়া এবং একাউন্ট রিমুভ দেওয়া অতীব জরুরি,অন্যথায় একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
৪. টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করে রাখা৷
৫. প্রোফাইল লক করে রাখা।
৬. অপরিচিত কাউকে এড না করা ও ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো থেকে বিরত থাকা।
৭. ক্রেডিট কার্ডের পিন কোড কারো সাথে শেয়ার না করা৷
৮. ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কোনো লিংক পাঠালে তাতে ক্লিক না করা৷
৯. নাম্বার হাইড করা এবং কারো হাতে মোবাইল দিয়ে দূরে কোথাও না যাওয়া, অল্প সময়ের জন্য হলেও; এতে করেও ইমু হ্যাক কিংবা কোনো পার্সোনাল ডেটা চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে৷
১০. ফেসবুক একাউন্ট ক্রিয়েট করার সময় আপনার আইডি কার্ড বা বার্থ সার্টিফিকেট অনুসারে ক্রিয়েট করুন।
সাইবার হামলার স্বীকার হলে কী করবেন?
সাইবার হামলার স্বীকার হলে আপনার স্থানীয় থানায় একটি জিডি করুন। যদি স্বশরীরে থানায় জিডি করতে অসমর্থ হোন তবে অনলাইনেও জিডি করতে পারেন। বিশেষ, কোনো নারী যদি সাইবার হামলার স্বীকার হয়ে থাকে তবে অতি দ্রুত থানায় অভিযোগ দায়ের করতে হবে। আর তিনি যদি থানায় তিনি অভিযোগ করতে কুণ্ঠাবোধ করেন তবে সে নারী ভিক্টিম Police cyber support for women --PCSW এই পেইজে আপনি আপনার অভিযোগ দায়ের করতে পারেন৷ তাঁরা ভিক্টিমের পরিচয় গোপন রাখেন এবং ভিক্টিমকে আইনি পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হয়৷ উল্লেখ্য, এটি একটি ভেরিফাইড পেইজ এবং এ পেইজটি নারী সাইবার ভিক্টিমদেরই শুধু আইনি সহায়তা করে থাকে।
পরিশেষে আপনাদের প্রতি আমার এই বার্তা যে, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে৷ আমাদের সচেতনতাই পারে সাইবার হামলা থেকে বাঁচার৷
এই ওয়েবসাইটে এটি আমার প্রথম পোস্ট। তাই কোনো ভুল-ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে অনুগ্রহপূর্বক ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন৷
আল্লাহ হাফেজ।
You must be logged in to post a comment.