সাইবার নিরাপত্তা কি? সাইবার ক্রাইম আইন ও ভোক্তার করনীয়

বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির যুগে বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান, সংরক্ষণ এবং আলোচনা করা হয় যার মাধ্যমে সেটি হলো ইন্টারনেট। ইন্টারনেট ব্যবহার করে আজ প্রতিটা দেশ উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে গেছে। কিন্তু সবসময়ই কি এই ইন্টারনেট এর মাধ্যমে ভালো কাজ করা হয়? এর খারাপ দিক ও আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো সাইবার ক্রাইম। আজ আমি কথা বলব এই সাইবার ক্রাইম থেকে বাঁচতে আমাদের কি কি করা উচিত অর্থাৎ সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে।

আমরা সবাই অনলাইনে কাজ করি। পড়াশোনা, ডাটা সংরক্ষণ থেকে শুরু করে ডাটা এনালাইসিস, তথ্য আদান প্রদান, আলোচনা- সমালোচনা, গণনা সবকিছুই অনলাইনে বা ইন্টারনেট এর মাধ্যমে করা হয়। আর এসব তথ্য হ্যাকাররা নিয়ে আমাদের ব্যক্তিজীবনে বিপদে ফেলে এবং টাকা আত্মসাৎ করে, এটাই সাইবার ক্রাইম। সাইবার ক্রাইম এর শিকার সবথেকে বেশী কিশোরী। তারপরেও নারী পুরুষ উভয়েই শিকার।

বর্তমানে সাইবার নিরাপত্তা আমাদের অনেক সাহায্য করছে। আমরা বিভিন্ন ধরনের ব্রাউজার ব্যবহার করি। গুগল, ফায়ারফক্স, অপেরা, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, ফেসবুক সহ নানা কিছু। নানান ভাবে আমরা প্রতারনার শিকার হতে পারি।

অনেক সময় আমাদের তথ্য নিয়ে আমাদের ফোন দিয়ে বলতে পারে যে, আমাদের কম খরচে এবং স্বল্প মূল্যে বিদেশ পাঠাবে তারা। সেখানে চাকরির ব্যবস্থা থাকবে, খাওয়া দাওয়া থাকবে এবং অন্যান্য অনেক সুযোগ সুবিধা থাকবে। এগুলা একটা ট্র্যাপ। ওই সময় যারা এ কথা বিশ্বাস করে যোগাযোগ করে তারাই পরে বিপদে পরে। আমরা প্রায়ই শুনে থাকি এভাবে ট্র্যাপে পরে অনেকে প্রাণ হারায়। অনেক মানুষ কে আটকে রেখে পরিবারের কাছে টাকা চায়। অত্যাচার-নির্যাতন করতে থাকে। আবার অনেক সময় আমাদের কাছে ফোন দিয়ে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলবে এবং বলবে যে আপনার ব্যাংক এ সমস্যা হয়েছে। ব্যাংকিং এর পিন কোড জানতে চাইবে। সতর্ক থাকতে হবে সবসময়।

আবার ফেসবুকের মাধ্যমেও অনেকে হয়রানির শিকার হয়। ফেসবুক হ্যাক করে মেয়েদের ছবি নিয়ে অনেক হয়রানি করে। ফেসবুক থেকে তথ্য সংগ্রহ করে অন্যান্য মানুষকে বিরক্ত করে।

করণীয়:
এসব থেকে বাঁচতে এবং এসব হয়রানি থেকে উদ্ধার করতে বাংলাদেশ সরকার সাইবার নিরাপত্তা চালু করেছে। জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ জরুরী কল করলেই সব ধরনের সেবা পাওয়া যায়। আবার সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করলেও সাহায্য পাওয়া যায়।

সাইবার নিরাপত্তা থেকে আমাদের আরও যা যা
করণীয় এর কথা বলা হয়েছে তা হলো:

১. ফেসবুকে স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে। মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল দিয়ে খুললে ভালো হয়। যদি কেও হ্যাক করার চেষ্টা করে আমাদের কাছে সাথে সাথেই মেসেজ চলে আসবে আর আমরা সাবধান হতে পারব।

২. পারসোনাল ছবি, কথা এসব বিষয় অনলাইনে যত কম শেয়ার করা যায় তত ভালো। অনলাইনে অপরিচিত ব্যক্তিকে বিশ্বাস করে ছবি, ফোন নাম্বার এবং তথ্য দেয়া ঠিক না।

৩. অন্য কারো ডিভাইসে লগ ইন করলে কাজ শেষ করে লগ আউট করা উচিত। তাহলে পরবর্তীতে প্রতারণা করতে পারবে না কেও।

৪. পরিচিতি- অপরিচিত কাওকেই বিশ্বাস করে নিজের পাসওয়ার্ড, পিন নাম্বার সহ কোনো গোপনীয় তথ্য দেয়া উচিত নয়।

৫. যে কোনো ব্রাউজারে লগ ইন করলে সাথে সাথেই লগ আউট করা উচিত। যদি কখনো আপনার ফোন হারিয়ে যায় তাহলে সহজেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাক হতে পারে।

৬. ওয়েব ব্রাউজারের অটোফিল সুবিধা নিষ্ক্রিয় রাখা যেন কোনো তথ্য সংরক্ষণ না থাকে।

৭. ওয়েব ব্রাউজারের ব্রাউজিং হিস্টোরি এবং ক্যাশ মুছে ফেলা।

আমাদের সবসময় সতর্কতার সাথে ওয়েব ব্রাউজিং করা উচিত। এবং স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। যেকোনো প্রয়োজনে ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের সাহায্য চাওয়া উচিত। তাহলে আমরা যেকোনো ধরনের সাইবার হামলা থেকে বেঁচে থাকতে পারব। সবাই সচেতন থাকি এবং নিরাপদ থাকি।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles