জীবন খুবই বৈচিত্র্যময়, তাইনা! একেক সময় আমাদের অবস্থা একেক রকম থাকে। পরিস্থিতির ভিন্নতায় আমাদের মনের অবস্থা ও ভিন্নতা দেখা দেয়। কখনো নিজেকে বড় ভাগ্যবান মনে হয়। নিজের কর্ম দেখে আনন্দ অনুভব হয়।
স্বপ্ন পায়রাগুলো ডানা মেলে নীল আকাশে উড়ে বেড়ায়। জীবন পথে আরো এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় সৃষ্টি হয় মন মানসে। আবার কখনো হতাশার কালো চাদর ছেয়ে যায় কায়ো- মনে। সবকিছু মনে হয় এলোমেলো, অন্ধকারাচ্ছন্ন।
নিজেকে অকর্মা ভেবে বলতে ইচ্ছে করে- কী করলাম জীবনে? কিছুই হবে না আমার দ্বারা। কোন কাজেরই নই আমি। এমন হাজারো নিরাশা ছেয়ে যায় প্রতিনিয়ত আমাদের মাঝে। কিন্তু এত কিছুর পরও কি আমাদের জীবন অযথা কেটে যায়?
আমরা কি জীবনে কিছুই করতে পারি না? সবাই কি ব্যর্থ হয়ে যাই জীবন-সংগ্রামে?? না, কখনোই না। আমাদের সবার মাঝেই রয়েছে অতুলনীয় যোগ্যতা,অবর্ণনীয় পারদর্শিতা। আমরা সে গুলোকে যথাস্থানে কাজে লাগাতে পারি না।
বটেই আজ আমাদের এই দুরবস্থা। আমরা মানুষ, আকারে ছোট, কিন্তু আমাদের কল্পনা শক্তি খুবই বিস্তৃত। আমরা এর মাধ্যমে মুহূর্তেই চলে যেতে পারি এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে,এক জগত থেকে ভিন্ন জগতে। আমরা যখন একাকী থাকি তখন চলে যাই কল্পনার জগতে, হারিয়ে যাই দূর অজানায়। আচ্ছা?
আমরা যখন নীরব নিস্তব্ধ কোলাহল মুক্ত পরিবেশে থাকি, হোকনা সেটা নদী বা সাগরের তীরে, সবুজে ছায়া ঢাকা দৃষ্টি নন্দন কোন বাগানে, কিংবা পাহাড় থেকে কলকল সুরে বয়ে চলা ঝর্ণার পাশে। যেখানে থাকে হিম শীতল বাতাসের ঝিরঝির প্রবাহ স্নিগ্ধতা,উত্তাল তরঙ্গের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ।
, গাছের শুকনো পাতা ঝরে পড়ার ক্ষীণ আওয়াজ। তখন আমাদের অনুভূতি কেমন হয়? কেমন থাকে আমাদের মনের অবস্থা? কি ভাবতে থাকি সেই আবেগঘন মুহূর্তে, সত্যিই তা অবর্ণনীয়।
খুশিতে আবেগপ্রবণ হয়ে যাই সেই দৃশ্য দেখে।বিলিয়ে দিতে মনে চায় নিজেকে প্রকৃতির মাঝে। হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে নয়নাভিরাম সাজে। তাই না! আচ্ছা, এখন যদি এর বিপরীত দিকটা ভাবি, শোরগোল- কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ।
জন-বসতির অবিশ্রান্ত হট্টগোল, বাজার- হাটের অসহ্যকর হৈহুল্লোর, যানবাহন আর ফেরিওয়ালাদের হাঁকডাক, কেমন যে লাগে তখন! মেজাজটা খুবই খিটখিটে হয়ে যায় তখন। অস্বস্তি ভর করে শরীরের শিরা উপশিরায়। অসহ্য লাগে পরিবেশ-প্রকৃতি। স্বস্তির নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো ও সুযোগ থাকে না তখন।
আচ্ছা এবার সুখ- দুঃখ নিয়ে চিন্তা করি শব্দ দুটির মাঝে যেন একতার বন্ধন বহমান। সুখ আর দুঃখ এরা একে অপরকে ছাড়া যেন থাকতেই পারে না। বাস্তবেও কিন্তু তাই! গোটা জীবন জুড়ে যেন সুখ-দুঃখের মেলা। দুঃখ কষ্টের মধ্যে সুখ একদিন দেখা দিবেই। তেমনি সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-যাপনে দুঃখ কখনো আসবেই। এটাই চিরসত্য ও পরম বাস্তবতা।
আমরা যখন দুঃখ-দুর্দশার সম্মুখীন হই তখন আমাদের অবস্থা ভিন্ন রকম হয়ে যায়।স্বাভাবিক চলার গতি একেবারেই বদলে যায়। কোন কিছুই ভালো লাগেনা তখন। দিক ভ্রান্তের ন্যায় ছুটাছুটি করি, খুঁজতে থাকি শুধু সান্তনার আভাস-বানী।
অবশেষে দুঃখের পর যখন সুখের দেখা মিলে তখন নিভে যাওয়া আত্মার প্রদীপ গুলো পুনরায় সতেজতা ফিরে পায় এবং হৃদয়ের মাঝে ছড়িয়ে দেয় আলোক রশ্মী। ফলে হাজারো আবেগ-উচ্ছ্বাস জেগে উঠে আমাদের হৃদয় গহীনে। ভুলে যাই দুঃখ কষ্টে কেটে যাওয়া বেদনাদায়ক দিনগুলোর কথা। খুঁজে পাই সান্তনার আভাস-বানী।
বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি নতুনভাবে, পূর্ণ উদ্যমে। আচ্ছা! একবারও কি ভেবে দেখেছি, কেন এমনটা হয়? কী কারনে আমাদের অবস্থা এত ভিন্ন হয়? আসলে আমাদের পুরো জীবনটাই বৈচিত্র্যে গাঁথা। চতুর্দিকে শুধু বৈচিত্রের ছড়াছড়ি। অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা সেগুলোর সম্মুখীন হই।
তখন প্রত্যক্ষ করি প্রকৃতির বাস্তবতা, অনুধাবন করি চিরসত্য প্রিয় বিষয়। দেখতে পাই বৈচিত্র্যময় জীবনের বিচিত্র দিক গুলো। এভাবেই হাজারো বৈচিত্রের মধ্য দিয়ে চলছে আমাদের জীবনযাত্রা।
You must be logged in to post a comment.