মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাদের মধ্যে সর্বশেষ নবী, সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আবির্ভাব ছিল জাহেলিয়াতের যুগে। তখন আরব উপদ্বীপ সহ সমগ্র পৃথিবী অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল । সে সময়ে মিথ্যা, পাপাচার, হত্যা, লুন্ঠন , মদ্যপান, জুয়া, যৌন অনাচার, কথায় কথায় ঝগড়া - বিবাদ এমনকি যুদ্ধ বিগ্রহ পর্যন্ত হয়ে যেত।
কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে সাথে সাথে জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো । মানবতা বলতে যা বুঝায় তা ছিল তাদের মধ্যে অনুপস্থিত । এমন বর্বর যুগে শান্তি শৃঙ্খলার ঝাজ্ঞা আবির্ভাব হন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
জন্ম: হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে বিখ্যাত কুরাইশ বংশে মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।
পিতৃ ও মাতৃ পরিচয়: হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিতার নাম আব্দুল্লাহ ও মাতার নাম আমেনা । এবং তার দাদার নাম আব্দুল মুত্তালিব এবং নানার নাম আব্দুল ওহাব ।
মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় তিনি পিতৃ হারা হন । নবুয়ত লাভ পর্যন্ত ৪০ বছর এবং নবুয়ত লাভের পর থেকে মদিনায় হিজরত পর্যন্ত ১৩ বছর মোট ৫৩ বছর পবিত্র মক্কা ভূমিতে কাটান ।এই সময় কালকে তার মক্কা জীবন নামে আখ্যায়িত করা হয়। মদিনায় হিজরত করে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাত্র ১০ বছর জীবিত ছিলেন এবং তিনি মদিনায় অবস্থান করেছিলেন।
এই সময় কে মদিনার জীবন বলা হয় । হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন ছিল সংগ্রাম মুখর । নবুয়ত লাভের পর থেকে স্বজাতির স্বার্থান্ধ ব্যাক্তিরা তাকে সহজে মেনে নেয়নি ।
নানা নির্যাতন , নিপীড়ন, ও অত্যাচারে তারা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন কে বিষময় করে তুলেছিল। তা সত্ত্বেও হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফল হয়েছিলেন জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিস্ময়কর ভাবে ।
তার আদর্শিক বিপ্লব এ উদ্ভাসিত হয় বিশ্ব মানবতা । আলোকিত হয় মানব ও মানব সভ্যতা । তার আদর্শ ছিল বিশ্বের নির্যাতিত ও অধিকার বঞ্চিত মানুষকে মুক্তি দিতে । মুক্তি ও শান্তির দূত হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মধ্যে ছিল সকল মানবিক গুণাবলির বিকাশ । তাই তিনি সমগ্র বিশ্বের মানুষের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পথ প্রদর্শক । তিনি ছিলেন মানব জাতির কল্যাণকারী ।
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রাথমিক জীবন :
নামকরণ : মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় তিনি পিতৃ হারা হন । এজন্য হযরতের জন্মের পর দাদা আব্দুল মুত্তালিব নবজাতক শিশুর লালন পালন এর দায়ভার গ্রহণ করেন এবং তার নাম রাখেন মুহাম্মদ ( প্রসংশিত ) । মাতা আমেনা তাকে আদর করে ডাকতেন আহমদ বলে ।
ধাত্রীগৃহে গমন: হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাতদিন নিজ মায়ের দুধ পান করেন । তার পর আরবের প্রথানুযায়ী শিশু মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে লালন পালনের জন্য সাদ গোত্রের বিবি হালিমা কে ধাত্রী নিযুক্ত করা হয় । তিনি পাচ বছর পর্যন্ত হালিমার গৃহে লালিত পালিত হন ।
১ম বক্ষবিদীর্ণ: বিবি হালিমার গৃহে থাকা অবস্থায় তার বয়স যখন মাত্র ৪ বছর তখন দুজন ফেরেশতা এসে তার সিনা চাক করে নবুয়ত লাভের উপযোগী করে তুলেন এবং অন্তরে সমস্ত রোগ ব্যাধি দূর করে দেন ।
নিজ মাতৃকুলে বালক মুহাম্মদ: তার বয়স যখন ৬ বছর তখন তিনি মা আমেনার কাছে ফিরে আসেন । এর পর তিনি তার মা কে হারান । এবং তার দাদার কাছে ২ বছর লালিত পালিত হন ।পরে ৫৭৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দাদাকেও হারান ।
চাচার অভিভাবকত্বে বালক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম: তার দাদার মৃত্যুর পর তার লালন পালনের দায়িত্ব পরে চাচা আবু তালিবের ওপর । চাচা গরিব থাকায় তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় । চাচা তাকে অশ্ব চালনা , বর্শা চালনা , তলোয়ার চালনা প্রভৃতি শিক্ষা গ্রহণ করেন । ১০ বছর বয়সে তার ২য় বার সিনা চাক হয় ।
আল আমিন উপাধি লাভ: বাল্যকাল থেকেই তিনি চিন্তাশীল ছিলেন । মানুষের দুঃখ- দুর্দশায় তার মন ব্যথিত হতো । তার স্বভাব ছিল নরম প্রকৃতির । তিনি সর্বদা সত্য কথা বলতেন , তাই আরবের সবাই তাকে আল আমিন উপাধি দিয়েছিল ।
কষ্ট করে একজন মহামানবের জীবনী পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
- আপনাদের অনুপ্রেরণা পেলে বাকি টুকু শেয়ার করবো , ইনশাআল্লাহ।
You must be logged in to post a comment.