সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ পিপাসু, পাহাড় প্রেমি এবং প্রকৃত প্রেমি মানুষদের জন্য বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় জায়গা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যদি বাংলাদেশের মধ্যে সেরা ১০টি জায়গা কাউন্ট করা হয় তাহলে সাজেক ভ্যালি নিশ্চিত সর্ব প্রথমে থাকবে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা সাজেক ভ্যালি ঘুরে এসেছি আবার অনেকেই আছি যারা এখনো যেতে পারিনি। আজকে আমরা সাজেক ভ্যালির কুটিনাটি বিষয়ে যেমন জায়গাটা কেমন, যেতে কেমন খরচ হয়,
সাজেক যাওয়ার উপায়,বছরের কোন সময় সাজেক ভ্যালি যেতে হবে, রিসোর্ট এবং কটেজ, খাওয়া দাওয়া,যেতে কতদিন সময় লাগে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে এবং সবশেষে আদিবাসীদের নিয়ে তাদের চালচলন তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবসাজেক ভ্যালি জায়গাটা কেমন?
সাজেক ভ্যালি এমন একটা জায়গা যেখানে চারদিকে মনোরম পরিবেশ মনোরম পাহাড়ের মেলা দেখলেই মনে হবে আপনি যেন প্রকৃতির নিকট সন্নিকটে চলে এসেছেন এবং প্রকৃতির মাঝে একটা আলাদা বন্ধন সৃষ্টি হবে যা আপনার মনে অন্যরকম একটা অনুভূতি সৃষ্টি করবে।
মেঘের খেলা দেখলে আপনার মনে হবে আপনি যেন মেঘের রাজ্যে হারিয়ে গেছেন সাজেক ভ্যালি নিকনেম হিসেবে আমরা মেঘের রাজ্য বা মেঘের ভ্যালি বলতে পারি।
সাজেক ভ্যালি এমন একটি বিস্ময়কর জায়গা যেখানে আপনি একদিনে প্রকৃতির তিন রকম রূপের সাথে পরিচিত হতে পারবেন কখনো প্রচন্ড গরমে আপনার মুখে বিরক্তির ছাপ দেখা যাবে আবার হঠাৎ করেই বৃষ্টি এসে আপনার মনকে রোমাঞ্চকর করে তুলবে আবার কখনো হঠাৎ করেই আপনার চারপাশ ঢেকে যাবে মেঘের কুয়াশার আবরণে।
প্রকৃতির মনোরম সৌন্দর্য এবং মেঘেদের খেলা উপভোগ করার জন্য সাজেক ভ্যালি হচ্ছে আদর্শ জায়গা।।
বছরের কোন সময় যাবেন সাজেক ভ্যালি?
সাজেক ভ্যালির প্রাকৃতিক রূপের কোন তুলনা হয় না। এটা এতো সুন্দর মনোমুগ্ধকর মনোরম জায়গা যে বছরের যেকোনো সময় সেখানে যাওয়া যায়। তবে প্রতি বছর জুনের শেষ দিক থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সাজেক ভ্যালিতে দর্শনার্থীদের আনাগোনা বেশি দেখা যায়।
কারণ এ সময় সাজেকে মেঘের খেলা প্রাকৃতিক সাজসজ্জা বেশি দেখা যায়, তাই বলা যাই বছরের এই সময়টা সাজেক ভ্রমণ করার জন্য সবচেয়ে ভালো সময়।আপনারা চাইলে এ সময় ঘুরে আসতে পারেন।।
সাজেক ভ্যালির অবস্থান কোথায়
আমরা কমবেশি সবাই সাজেক নামটি সাথে পরিচিত কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা সাজেক আসলে কোন জেলায় অবস্থিত, আসুন জেনে নেওয়া যাক মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালি আসলে কোথায় অবস্থিত ?
সাজেক ভ্যালি মূলত রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি বড় ইউনিয়ন। রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত, এটি একটি পার্বত্য জেলা। রাঙ্গামাটি একটি পর্যটন এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরপুর এখানে আরো আছে আদিবাসী সব মিলিয়ে এটা একটা ঐতিহাসিক প এটার্যটন এলাকা।
সাজেক ভ্যালি যেতে কেমন খরচ হয়?
আমরা কোন জায়গায় ঘুরতে যেতে চাইলে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি দেখতে হয় তা হচ্ছে সে জায়গায় যেতে আমাদের খরচ কত হবে এই অনুযায়ী আমরা বাজেট করি আসুন জেনে নেই বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগীয় অঞ্চল থেকে সাজেক যেতে কত খরচ হয় বা কত টাকা লাগতে পারে?
মেঘের রাজ্য সাজেক মূলত রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ি জেলার নালা দিঘি হয়ে সাজেক যাওয়া খুবই সহজ।খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার, খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরের কাছ থেকে জিপ গাড়ি বা চান্দের গাড়ি নিয়ে সাজেক যাওয়া যায়।
এক গাড়িতে ১০ থেকে ১৫ জন যেতে পারবেন, অনেক সময় এত বড় গ্রুপ হয় না তাই অন্য কোন গ্রুপের সাথে কথা বলে একসাথে যেতে পারবেন দুই দিনের জন্য ভাড়া নেয় ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার ৫০০ টাকা। এবার আসুন বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে খাগড়াছড়ির দূরত্ব এবং ভাড়া কত তা জেনে নেওয়া যাক।
রাজশাহী থেকে খাগড়াছড়ি: রাজশাহী জেলা থেকে খাগড়াছড়ি জেলার দূরত্ব হচ্ছে প্রায়৫ ১৭ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি যাওয়ার অনেক বাস রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে সোনিয়া এন্টারপ্রাইজ প্রায় প্রতিটি বাচের টিকিটের মূল্যই ১০০০ থেকে ১২০০ মধ্যে। এছাড়াও ট্রেন রয়েছে রাজশাহী টু খাগড়াছড়ি।
চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি: চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ির দূরত্ব ১১২ কিলোমিটার যেতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘন্টা। চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি আসার জন্য আপনাকে চলে আসতে হবে,
অক্সিজেন মোরে থেকে প্রায় প্রতি ঘন্টায় শান্তি পরিবহনের বাস পাওয়া যায় যার ভাড়া ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং এটি সকাল ৮ থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত প্রতি ঘন্টায় পাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি: ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির দূরত্ব ২৭২ কিলোমিটার যেতে সময় লাগে প্রায় ৭ ঘন্টা। থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার জন্য অনেক বাস রয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি বাস হল হানিফ এন্টারপ্রাইজ বাসের সময় সকাল ৬.৩০ মিনিট (টিকিটের মূল্য ১২০০ টাকা)শ্যামলী পরিবহন রাত ১১ টা এবং সকাল ৬ টা(টিকিটের মূল্য এসি-১২০০ টাকা নন এসি-৫২০ টাকা) ঈগল পরিবহন দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিট সকাল ৬ টা ৩০ মিনিট (টিকিটের মূল্য এসি-৮৫০ টাকা এবং নন এসি-৫২০ টাকা)গ্রীন লাইন পরিবহন ভোর ৫টা ৩০ মিনিট এবং রাত ১০টা ৫০ মিনিট(টিকিটের মূল্য এসি-১২০০ টাকা, নন এসি পাওয়া যায় না) আরো অনেক বাছ রয়েছে কিন্তু এদের সার্ভিস কুয়ালিটি এবং নিসাজেকের বিভিন্ন রিসোর্ট এবং কটেজ
সাজেক রিসোর্ট
পুঞ্জী রিসোর্ট
লুসাই কটেজ
আদ্রিকা ইকো কটেজ
চাঁদের বাড়ি রিসোর্ট
সুমুই ইকো কটেজ
মেঘাদ্রি ইকো রিসোর্ট
ঝিঁঝিপোকার বাড়ি
মেঘালয় রিসোর্ট
সারা নীলকুঠির
সাজেক রিসোর্ট: এই রিসোর্ট টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত রিসোর্ট সাজেক রিসোর্ট নন এসি রুম গুলোর ভাড়া 10000 থেকে 15 হাজার টাকা আছে খাবারের ব্যবস্থা এবং সরকারি চাকরিজী প্রথম শ্রেণী দ্বারা সরকারি চাকরিজীবী তাদের জন্য স্পেশাল ডিসকাউন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা আছে!যোগাযোগ:০১৮৪৭০৭০৩৯৫
মেঘ পুঞ্জী রিসোর্ট: সাজেকের জনপ্রিয় রিসোর্ট গুলোর মধ্যেও মেঘ পুঞ্জি রিসোর্ট অন্যতম এই রিসোর্টের ডেকোরেশন অনেক আকর্ষণীয় মেঘমঞ্জি রিসোটে মোট চারটি কটেজ আছে তার মধ্যে তিনটি কটেজের ভাড়া ৪ হাজার টাকা করে এবং একটি ভাড়া ৪৫০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৮১৫৭৬১০৬৫!
লুসাই কটেজ: সাজেক রিসোর্ট এর বিপরীত পাশে এর অবস্থান এই কটেজের ফ্যামিলি কাপল কিংবা বিভিন্ন গ্রুপের জন্য ক্যাটাগরি করা কক্ষ রয়েছে ছুটির দিনে এসব রুমের ভাড়া ৫০০ টাকা পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হয় রুমের ভাড়া হচ্ছে ২৫০০ থেকে ৪৫০০ পর্যন্ত! যোগাযোগ:০১৬৩৪১৯০০৫।
আদ্রিকা ইকো কটেজ: আপনারা যারা খোলামেলা পরিবেশে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তাদের জন্য আদৃকা ইকো কটেজ একটি আদর্শ জায়গা লুসায় কটেজের পিছনে এর অবস্থান।
শুক্রবার শনিবার এবং অন্যান্য ছুটির দিনে রুম ভাড়া থাকে ৪০০০ টাকা এবং বাকি সব দিনে থাকে ৩৫০০ টাকা। যোগাযোগ:০১৮৭৭৭২২৮৫৯
চাঁদের বাড়ি রিসোর্ট: মেঘের সমুদ্র দেখার জন্য চাঁদের বাড়ি রিসোর্ট খুবই সুন্দর একটি জায়গা এবং আদর্শ জায়গা। এই রিসোর্ট থেকে পাহাড়ের সুন্দর দৃশ্য দেখা যায় এখানে প্রিমিয়াম কটেতে ছুটির দিনের ভাড়া ৩৫০০ টাকা আর ছুটির দিন বাদে ৩০০০ টাকা। যোগাযোগ:০১৮৬২৬৪৩৮৬০।
সুমুই ইকো কটেজ: সময় ইকো কটেজ রইলুই পাড়ায় অবস্থিত সাজেকের অপরূপ সৌন্দর্য প্রাকৃতিক রূপ দেখার জন্য এটা একটা অন্যতম কটেজ। এই কটেজের বর্তমান সময়ের রুম ভাড়া ৪ হাজার টাকা! যোগাযোগ: ০১৮৮০৯০৮৪৪৮।
মেঘাদ্রি ইকো রিসোর্ট: সাজেকের আকাশ মন মুগ্ধকর পাহাড় মেঘেদের খেলা সব মিলিয়ে এক অপূর্ব ভিউ পাওয়া যায় এই রিসোর্ট থেকে। সাজেকের এ মনোমুগ্ধকর রূপ দেখার জন্য বেলকুনি আছে প্রত্যেকটা রুমের সাথে।
ছুটির দিন ব্যতীত ডাবল রুমের ভাড়া ৩৫০০ এবং কাপড় রুমের ভাড়া 3000 আর ছুটির দিনে চাহিদার উপর নির্ভর করে অনেক সময় কম বেশি করা হয়! যোগাযোগ: ০১৮৮৩৬৯৭৭২৮।
ঝিঁ ঝিঁ পোকার বাড়ি: জিজিপুকার বাড়ি হচ্ছে যার রুমের একটা কটেজ এর ডেকোরেশন অনেক সুন্দর। এই বইয়ের প্রতি রুমের ভাড়া দুই হাজার থেকে ২৫০০ টাকা!রাপত্তা ব্যবস্থা একটু বেশি ভালো।
এডিটর সাহেবকে নোবেল দেওয়া দরকার।
You must be logged in to post a comment.