সিলেট থেকে ঢাকা যাওয়ার বাসে।

সিলেট থেকে ঢাকা যাওয়ার বাসে উঠেছি। আমার সিট নাম্বার ফোর ডি। জানালার পাশের সিট। জার্নিতে আমার পছন্দ সিট হলো ফোর বা ফাইভ সিরিয়ালের জানালার পাশের সিট।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

বাসে বসে আছি। বাস ছাড়তে আর সময় লাগবে। দশ মিনিট অপেক্ষা করে বাস ছেড়ে দিলো। আমার পাশের সিটটা এখনো ফাঁকা! মনে হয় সামনের কোনো স্টেশন থেকে উঠবে।

যা ভেবেছিলাম তাই হলো। কয়েকটা স্টেশনে পার হওয়ার পর একটা মেয়ে উঠল। আমার কাছে এসে বলল, "ভাইয়া জানালার পাশের সিটটায় বসা যাবে?"

আমি মেয়েটার দিকে তাকালাম। কালো রংয়ের একটা বোরকা পরেছে। মুখটা বের করা। কী সুন্দর দেখতে! তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে?

এমন সুন্দরী মেয়ের অনুরোধ উপেক্ষা করা যায়? যায় না। আমি সিটটা ছেড়ে দিলাম।

"ধন্যবাদ ভাইয়া।" বলে মিষ্টি হাসি দিলো। বাঃ! হাসিটা তো দারুণ!

মেয়েটার নাম জানা হলো সুইটি। কথা বলে কম। কথা বলার সময় স্বর একটু কেমন জানি লাগে। মেয়েটা খুব ভালো! অল্প সময়ে আমাদের ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেল। 

মেয়েটার বাড়ি সিলেট। পড়াশোনা করে ঢাকায়। হলে থাকে। 

অল্প সময়ে আমরা নিজেদের মোটামুটি সবকিছু জেনে ফেললাম।

বাসের বিরতি দিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসে। উজানভাটি নামে একটা রেস্টুরেন্টে। 

আমি সুইটি কে বললাম, "নামবেন না?"

একটু হেসে প্রথমে না বলল। অনুরোধ করায় পরে রাজি হলো।

দুইজনে নিচে নামলাম। রেস্টুরেন্টটা ভালোই। হালকা খাওয়া-দাওয়া করলাম। খাবারের বিলটা আমিই দিলাম। 

একটা সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিলাম। বন্ধুদের জ্বালানোর জন্য। এমন সুন্দরী একটা মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়াচ্ছি।

বিরতির পর আবার বাস ছাড়ল। উজানভাটি রেস্টুরেন্টের পরেই আশুগঞ্জ। আশুগঞ্জ ব্রিজটা দেখতে বেশ সুন্দর। 

ব্রিজটা পার হওয়ার পরই বাসটা থেমে গেল। কয়েকজন পুলিশ উঠে বললেন, "সবাই নামেন বাস চেক করা হবে।"

পাশের যাত্রী বলল," মনে হয় কোনো ইনফরমেশন পাইছে।"

আমি আর সুইটি একসাথে নিচে নামলাম। একে একে সবাইকে জিজ্ঞেসবাদ করছে। কয়েকজন বাসে উঠে জিনিসপত্র চেক করছে।

সুইটি কে নাম-টাম জিজ্ঞেস করল। আমাকে বলল, "আপনার পরিচিত?"

"হ্যাঁ।"

একজন মহিলা পুলিশ সুইটি কে চেক করা শুরু করল। অনেকেই এ সব ভিডিও করছে। আচমকা পুলিশ সুইটির বোরকা খুলতে বলল। একটা করে কাপড় অনাবৃত হচ্ছে আর সুইটির আদল পরিবর্তন হচ্ছে। 

জানা গেল সুইটি মেয়ে না ছেলে! ওর দেহের মধ্যে মাদক পাওয়া গেল। 

পুলিশ অফিসার আমাকে বললেন, "আপনারা একসাথে না?"

"না স্যার।"

"আপনি না বললেন পরিচিত। "

"বাসে উঠে পরিচয় হয়েছে স্যার।"

পাশের মহিলা পুলিশ কি যেন বললেন। পুলিশ অফিসার আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বললেন, "বুঝতে পারছি। আপনি যান।"

সুইটির ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে! টেনশনে ভুলে গেছিলাম আমি সুইটির ছবি ফেসবুকে দিয়েছিলাম। হঠাৎ ঢুকে দেখি বন্ধুরা কমেন্ট করছে," দোস্ত তোর বয়ফ্রেন্ডটা জোস!"

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ