করোনায় মোবাইল থেকে সংক্রমণের ঝুকি সবচেয়ে বেশি ? নিজেই মোবাইল স্যানিটাইজ করবেন যেভাবে

মোবাইল ফোন আমাদের পুরো বিশ্বের সাথে সংযুক্ত করছে এবং সম্ভবত আমরা সারা দিনে একমাত্র মোবাইল ফোনের সংস্পর্শেই সবচেয়ে বেশি সময় থাকি।

COVID-19 মহামারীটিতে আমেরিকা ও সারা বিশ্বের  খ্যাতনামা বিজ্ঞানীরা আমাদের নিজেদের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার দিকে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দিচ্ছেন বার বার এবং ফোনের স্বাস্থ্যবিধি এই অবস্থায় একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে!

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে সবাইকে নিজের ফোনটি দিনে অন্তত একবার পরিষ্কার করার পরামর্শ দেন। 

এই কাজটি সঠিক ভাবে শুরু করার আগে, কীভাবে আপনার ডিভাইসটি পরিষ্কার করবেন সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাগুলো দেখে নিতে পারেন।

অ্যাপল এবং কিছু অ্যান্ড্রয়েড প্রস্তুতকারক ডিভাইস প্রায় একই প্রসেসে কাজ করেঃ 

১।পরিষ্কার করার আগে ডিভাইসটি  unplug করুন।

২। সাবান এবং পানি দিয়ে সামান্য ভেজা কিন্তু পানিমুক্ত কাপড় ব্যবহার করতে পারেন।

৩। কখনোই ডিভাইসটিতে সরাসরি স্প্রে করবেন না! তাহলে এতে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে যাবে।

৪।ব্লিচ বা অ্যারোসোল জাতীয় স্প্রে গুলো পরিষ্কারক হিসেবে কখনোই ব্যবহার করবেন না।

৫। ডিভাইসের যে কোনও অংশ খুলতে হলে এটিকে পানিয় জাতীয় তরল এবং আর্দ্রতাযুক্ত স্থান থেকে দূরে রাখুন।

৬। যদিও অনেকগুলি ডিভাইসে জীবাণুনাশক ওয়াইপগুলি ব্যবহার করা নিরাপদ, তবে মনে রাখবেন সরাসরি অ্যালকোহল, ব্লিচ বা ভিনেগার ব্যবহার করলে এসব স্মার্টফোনের স্ক্রিনে আলাদা একটা আবরণ জমে স্ক্রিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলি আমাদের মোবাইল ডিভাইসগুলি পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করার জন্য অতিরিক্ত পরামর্শ দিয়েছেন , বিশেষত চলমান এই COVID-19  সঙ্কটের সময়। 

যদি ডিভাইসের প্রস্তুতকারকের কাছ থেকে কোনও নির্দেশনা পাওয়া নাও যায়, সিডিসি অ্যালকোহল-ভিত্তিক ওয়াইপগুলিকে জীবাণুমুক্ত করতে কমপক্ষে 70 শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত স্প্রে ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয় যা আপনি নিকটস্থ মোবাইল ফোন বা সার্ভিসিং এ গেলে অল্প খরচেই পেয়ে যাবেন।

এছাড়াও আপনি আপনার মোবাইল ডিভাইসের জীবাণু এবং করোনাভাইরাসগুলির সংস্পর্শকে হ্রাস করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারেন এভাবেঃ

১। আপনি যখন বাইরে বের হবেন আপনার ফোনটি যথাসম্ভব আপনার পকেট, পার্স বা গাড়িতে রাখুন। প্রয়োজন ছাড়া এটা ওটা ধরে ঐ হাত দিয়েই আবার পকেটে ফোনটি স্পর্শ করবেন না।

২। আপাতত এই পেন্ডেমিক চলাকালীন সময়টায় কেনাকাটা করার সময়, আপনার স্মার্টফোনে রাখা  note থেকে নয় বরং একটি লিখিত shopping list ব্যবহার করুন।

৩। টাকা দেওয়ার জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করুন, পছন্দসই যোগাযোগবিহীন অন্য কোনো মাধ্যমে বিল পরিশোধ করুন। অন্নত বাইরে তাকার সময় আপনার স্মার্টফোনের এপস থেকে বার বার মোবাইল হাতে নিয়ে পে করা খুব একটা স্মার্টনেস দেখানো হতে পারে না!

৪। অনেক মানুষের কোলাহলযুক্ত স্থানে থাকার পরে, আপনি হাত ধুয়ে বা স্যানিটাইজ করার পরে আপনার হাতটি জীবানুমুক্ত আছে এমনটা নিশ্চিত হয়ে বা গ্লাভস পরেছেন কেবল তখনই আপনার ফোনটি স্পর্শ করুন। অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবেন।

৫। কল করার সময় একটি হ্যান্ডস-ফ্রি ডিভাইস ব্যবহার করুন যাতে আপনার ফোনটি আপনার মুখের বা মুখোশের মুখের কাছাকাছি না যায়। যেমন হেডফোন বা ব্লুটুথ ব্যবহার করুন। সেক্ষেত্রে সেটিকেও সুরক্ষিত করেছেন কিনা খেয়াল রাখুন।

বাজারে মোবাইল স্ক্রিন পরিস্কারক কিছু প্যাড বা টিস্যু পাওয়া যায় সেগুলো হাতের কাছেই রাখতে পারেন।

এছাড়াও মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার এর কুফল সম্পর্কেও আমাদের সচেতন হওয়া উচিত!

গবেষকেরা বলছেন, দিনে পাঁচ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে স্থূলতার ঝুঁকি ৪৩ শতাংশ বাড়ে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চিনিযুক্ত পানীয়, ফাস্ট ফুড, মিষ্টি, বারবার নাশতা খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

এ ছাড়া তাদের শারীরিক সক্রিয়তা অনেক কমে যায়। গবেষকেরা বলছেন, যাদের ওজন বেশি থাকে, তাদের ২৬ শতাংশ এবং আগে মেদযুক্ত ছিল—এমন ব্যক্তিদের ৪ দশমিক ৩ শতাংশ পাঁচ ঘণ্টার বেশি স্মার্টফোনে যুক্ত থাকেন।

গবেষনায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত সময় মোবাইল ফোনের ব্যবহারে তরুণদের মধ্যে যে শারীরিক সক্রিয়তা কমে, তাতে অকালমৃত্যু, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ ও নানা ধরনের ক্যানসার হতে পারে।

সুস্থ থাকতে ফোনের ব্যবহার কমিয়ে আরও বেশি ব্যায়াম ও শারীরিক সক্রিয়তা বাড়ানোর নানা কাজে যুক্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

নিজে সচেতন থাকুন

পরিবারকেও সচেতন রাখুন

সুস্থ থাকুন।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles