তুলি গল্প৷ প্রথম পর্ব

গল্পের সব চরিত্র, স্থান, ঘটনা কাল্পনিক।বাস্তবতার সাথে এর কোন মিল নেই। এটা লেখকের নিজের ভাবনা চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। এটা ভালোবাসার গল্প। কোন গল্প থেকে কপিরাই করায় নি।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

যদি কারো সাথে মিলে যায় সেটা কাকতালীয় এর জন্য লেখক দায়ী  নয়। আর কেউ দয়া করে গল্পটা কপি পেষ্ট করবেন না। আশা করি গল্পটা সবার ভালো লাগবে

 

আজ ৭ দিন হলো ঢাকায় এসেছি। আমি আর আমার মা। চিকিৎসার জন্য। ডক্টর বলেছে অনেকদিন থাকতে হবে হসপিটালে এখন নাও ভতী হলে চলবে। তাই হসপিটালের পাশে একটা ফ্লাটে উঠেছি। যাতে হসপিটালে যাও আসাতে কোন রকম সমস্যা না হয়।

সব আমার বাবাই ঠিক করে দিয়েছে। আমাদের বাড়ী কুড়ীগ্রাম। আমার বাবা সেখানকার চ্যায়ারম্যান। তাই হসপিটালের ডক্টর থেকে ফ্লাটের মালিক পযন্ত বাবার পরিচিত।

তাই কোন সমস্যা হচ্ছে না। ও আমি আমার পরিচয় দেই আমার নাম জাহিদ হাসান আদিত্য।  সবাই আমাকে আদি বলে ডাকে। এবার আমি অনাসের ২য় বষের ছাত্র। হঠাৎ করে কলেজ শেষ করে বাসায় আসি। ভালই ছিলাম কিন্তু রাত্রের দিকে অনেক জ্বর আসে ১০৪ এর মত আমি অঙ্গান হয়ে পড়ি। 

যখন চোখ খুলি দেখতে পাই আমি হসপিটালের বেডে শুয়ে আছি। মাথাটা অনেক ব্যাথা করছে। দেখি বাবা, মা চাচা সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এভাবে কেউ তাকিয়ে থাকলে নিজেকে কেমন যেনো বিব্রতো মনে হয়।

মনে হয় আমি কোন আজব জিনিস আর সবাই মিলে সেই আজব জিনিসটাকে দেখতে এসেছে। সে যাই হোক। চোখ মেলার পড় দেখলা। মা পাশে বসে আছে। মার চোখ দেখে বুঝলাম সে ঘুমাই নি আর এক সমুদ্র পানি তার চোখ দিয়ে বের করে ফেলেছে ইতিমধ্যে। 
এখন কেমন লাগছে বাবা। কি হয়েছিলো মা। আর আমি হসপিটালে কেনো। মা কথা বলতে যাবে বাবা মাকে থামিয়ে দিয়ে বললো তেমন কিছু না। জ্বরটা বেড়ে গেছিলো তুমি অঙ্গান হয়ে পড়েছিলে তাই তোমাকে হসপিটালো ভতী করাতে হয়েছে।

কালকেই তুমি বাসায় যেতে পারবে।আজ দু দিন হয়ে গেলো বাসায় আসলাম। শরিরে জ্বর নেই কিন্তু অনেক দূবল। বিছানাতেই শুয়ে আছি। এমন তো কোন দিনও হয় নি। বাবা ঢাকাতে আমার ব্যাপার নিয়ে কার সাথে যেনো কথা বলছে এতো জোড়ে বলছে আমি কিছু কিছু কথা শুনতে পারছি।

বিকেলের দিতে কলেজের বন্ধুরা দেখা করতে আসলো। খুব ভালো লাগলো ওদের দেখে। ঘোর লাগাটা কেটে গেলো। অনেক্ষন ছিলো ওরা। আমি শুয়েই ছিলাম। মা ওদের রাতের খাবার খেতে বললো কিন্তু রাত হয়ে যাবে বলে ওরা না করে দিলো।
ওরা গল্প করে চলে গেলো যাবার আগে বললো এবার কলেজে আসলে সুস্থ হয়ে পিকনিকে যাবে।

আমি বললা হুম যাবো। অনেক রাত মা বাবা চাচা চাচীরা সবাই আমার ঘরে। আমি একটু অবাক।  কি হলো সবাই এক সাথে আমার ঘরে কিন্তু কেউ কোন কথা বলছে না। এ নীরবতা আমার আর ভালো লাগছে না।

অবশেষে নীরবতা ভাংঙ্গ বাবাই করলো। শোন আদি তোমাকে ঢাকায় যেতে হবে। আমি সব ব্যাবস্থা করে দিয়েছি বাবা। তুমি আর তোমার মা যাবে তোমার চাচা তোমাদের পৌছে দিবে। 

সেখানে তোমাকে ডক্টর দেখাতে হবে। এখানকার ডক্টরের সাথে আমার কথা হয়েছে তারা তোমাকে বড় ডক্টরের কাছে রেফার করেছে। আমি বললাম কি এমন হয়েছে যে আমাকে ঢাকাতে যেতে হবে। বাবা পাশে এসে বসলো।  এবার আমি এতোটাই অবাক হলাম যা আমি কোনদিনও হই নি।কারন বাবা কখনই বেশি কথা বলে না।

আর সে তার কাজ নিয়ে এতোই ব্যাস্তো থাকেন মাঝে মাঝে আমার নামটাও ভুলে যান। বাবা আমার পাশে বসে আমার হাতটা ধরলো। আমি একটু উঠে বসতে চাইলে বাবা বাধা দিল। তোমাকে উঠতে হবে না।

তোমার ভালো ডক্টর দেখানোর জন্য ঢাকাতে পাঠাচ্ছি। ভয়ের কিছু নেই। কিছু দিনেরই তো ব্যাপার। আমি কথা বলতে যাবো অনুভব করলাম আমার মাথার ডান পাশে ব্যাথা করছে। 

আর দেখতে না দেখতেই ব্যাথ্যাটা এমন বেড়ে গেলো আমি চোখে অন্ধকার দেখতে পারছি। সব কিছু ঘোলা হয়ে যাচ্ছে। চোখ মেলে ধরে রাখতে পারছিনা।

চিৎকার করবো সেই শক্তি টুকু আমর নেই। শুধু শ্বদ শুনছি সবাই কথা বলছে আর দৌড়দুড়ী করছে। ব্যাস এতটুকই আমার মনে আছে। আদি এই আদি কই তুই?  মার ডাকে যেনো কল্পনার জগৎ থেকে বস্তবে ফিরে এলাম। কি হয়েছে মা। 
মা বারান্দার দরজার সামনে এসে দাড়ালো।

কিরে তুই রেডি হস নি ডক্টরের কাছে যেতে হবে না? আমি মার দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে বললাম হচ্ছি মা। রুমে যাবো এমন সময় আমার নজড়ে কেড়ে নিলো আমার সামের ফ্লেটটার দিকে।  ঠিক আমার বারান্দা বরাবর আরেকটা বারান্দা।

আমার চোখ আটকে গেলো সেই বারান্দার দিকে। গত সাত দিনো বহুবার বারান্দায় এসেছি কিন্তু কখনে সামনের ফ্লাটের দিকে তাকাই নি। বসে বই পড়তাম না হলে মোবাইলে চ্যাট করতাম বন্ধুদের সাথে। আজ চোখ পড়ল। দেখলাম হালক আকাশি নীল রং এর একটা শাড়ী পড়ে চশমা চোখে একটি মেয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে মোবাই টিপছে।

তার সব চিন্তা মোবাইলের ভিতরে তাই আমি যে দেখছি তা খেয়াল করলো না। চুলগুলো খোলা গায়ের রং ফসা।  চশমার কারনে চোখ দুটো ঠিক মতো বুঝা যাচ্ছে না। কিন্তু মোবাইলের স্কিনের আলোতে যতোটুকু দেখলাম চোখ দুট সুন্দর।

দূরত্বর কারনে ঠিক মত মুখমন্ডল দেখা যাচ্ছে না আর সন্ধে নেমে আসাতে ও বারান্দার লাইট অফ থাকার কারনে তেমন একটা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু তার পড়ও আমি তাকিয়ে থাকলাম অপলোক চোখে। জীবনে কোনদিন মেয়ে দেখিনি বা মিসিনি এমনটা না আমার ইয়ারমেট অনেক মেয়ে আছে।

কিন্তু আজকে যাকে দেখলাম দেখার পড় কেমন যেন একটা অনুভুতি কাজ করল। কেন করলো যানি না। হঠাৎ করে মেয়েটা মোবাইলের স্কিন থেকে চোখ সরিয়ে আমার দিকে তাকালো।

আমি বোধয় বোকার মতনই ফ্যাল ফ্যাল করে তাইয়ে ছিলাম তাই মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করে হট করে মাথা ঘুরিয়ে বিরক্তির একটা ভাব নিয়ে বারান্দা থেকে চলে গেলো। এবার আমার হুস হলো। এটা আমি কি করলাম? 

মেয়টা আমাকে মনে হয় খারাপ ভাবলো। মা আবার ডাক দিলো।  একটা অবরাধ বোধ নিয়ে বারান্দা থেকে রুমে গেলাম। 
ডক্টরের চেম্বারটা অনেক সুন্দর করে সাজানো রুমে নানা রকম বই এটা ছোট খাট সোফা।

দেয়ালে সুন্দর এক প্রকৃতির ছবি। এসি কারনে মনে হচ্ছে আমি কোন শীতের দেশে আছি। ডক্টর মনোযোগ দিয়ে আমার রিপট দেখছে। ডক্টরটাকে আমার প্রথম দেখাতেই ভালো লাগলো।

বয়স আনুমানিক ৫০ এর কাছাকাছি বা তার উপড়ে ক্লিন শেভ করা দামি একটা সাট পড়া পারফিউম এর গন্ধটা এতোটাই সুন্দর যে মন ভালো করে দেয় চলতে থাকবে।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ