আমি কিছুদিন আগে আমাদের বিভাগীয় শহর রংপুরে যাই আমার বড় ভাইকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে। আর তাই আমরা সকাল সকাল বের হই। কেননা ট্রেন ছিল সারে নয়টায়।
ট্রেনে যাওয়ার সুবিধা অনেক। প্রথমোতো ভারা কম দ্বিতীয়তো চমৎকার প্রকৃতি উপভোগ করা যায়। যাইহোক আমি কথা দীর্ঘ করবো না।মূল বিষয়টা শুরু করা যাক।
আমার দুই ভাই রংপুর রেলস্টেশনে পৌঁছলাম এগারোটায়।ডাক্তারের চেম্বার খুলবে দুইটায়।আর তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে রংপুর চিড়িয়াখানা যাব।এর আগে আমি কখনো চিড়িয়াখানা যাই নাই। রাস্তাও চিনি না।
আর আমার কাছে কোন স্মার্টফোন ও নেই যে আমি লোকেশন দেখবো। যাইহোক আমি একটা অটোরিকশা ওয়ালাকে বললাম আমি চিড়িয়াখানা যাব যাবেন।
সে বলল যাবে ভাড়া১৫ টাকা। যাইহোক আমরা দুই ভাই উঠলাম এবং চিড়িয়াখানার দিকে রওনা দিলাম।
আমি খুবই উদগ্রীব ছিলাম।কেনোনা প্রথম বার আমি চিড়িয়াখানা যাব তাই। যাইহোক অটো ওয়ালা ভাই আমাদের পুলিশ লাইনের সামনে নামিয়ে দিয়ে বললোএই পুলিশ লাইনে পিছনেই হচ্ছে চিড়িয়াখানা।
আপনারা যারা রংপুর চিড়িয়াখানা গড়েছেন তাদের অবশ্যই জানা আছে পুলিশ লাইনে সামন থেকে চিড়িয়াখানা কতটুক। যাইহোক আমি তো কখনো চিড়িয়াখানায় যাইনি।
সুতরাং আমার জানা ছিলনা চিড়িয়াখানা কত দূরে। অটোআলা পুলিশ লাইনের সামনে নামিয়ে দেওয়াতে আমি তোর আগে শেষ। যাইহোক রাগটাকে নিজের মধ্যে রাখলাম এবং তার ভাড়া দিয়ে দিলাম।
এখন আমার মনে সন্দেহ জাগলোযে চিড়িয়াখানা হয়তো এখান থেকে বেশ দূরে । আর তাই আমি একটি অটো কে দেখে নিলা। দোলাকে বললাম চিড়িয়াখানা যাবে।
সে আমার দিকে তাকাচ্ছিল এবংমাথা চুলকাচ্ছিল। আমি তার মাথার চুলকানির উদ্দেশ্য বুঝতে পারলাম না। আমি তাকে বললাম যাবেন কি না গেলে বলেন আমি অন্য অটো ডেকে নেই।
তিনি বললেন যাবেন আমি জিজ্ঞাসা করলাম ভাড়া কত। অটল আবার আমার মুখের দিকে তাকাল এবং মাথা চুলকাচ্ছে।
আমি রাগ হয়ে বললাম ভাড়া কত ঠিক করে বলে। তিনি বললেন দুইজনে দশ টাকা দিয়েন। আইএম তো অবাক ।
অবাক হওয়ারই কথা এত কম ভাড়া হলে। যাইহোক আমরা দুই ভাই অটোতে উঠলাম। অটোআলা একটান দিয়ে আমাদের চিড়িয়াখানার সামনে নিয়ে দাঁড় করালো।
আমি প্রথমে চিড়িয়াখানা গেট টি দেখতে পাইনি। আর তাই অটোআলা কে জিজ্ঞাসা করলাম দাঁড়ালেন কেন?
সে আমার দিকে তাকালো এবং বললো আমরা এখন চিড়িয়াখানায় সামনে দাঁড়িয়ে আছি।আই এম তো ফিরসে অবাক। কেননা এইতো অটোতে উঠলাম আরে এসে গেলা।
এখন বুঝতে পারলাম কেন পূর্বের অটোওয়ালা আমাকে বলেছিল অল্প একটু সামনেই চিড়িয়াখানা। তখন বুঝতে পারিনি এখন বুঝলাম যে পায়ে হেঁটে আসা যে।
আর তাই তো মনে হয় দ্বিতীয় অটো আলা চিড়িয়াখানা যাওয়ার কথা শুনে মাথা চুলকাচ্ছিল। যাইহোক আমি তার ভাড়াটা দিয়ে দিলাম।
এবং বাকি পুরোটা সময় ভাবতে থাকলাম এইটুক রাস্তা আমি অটোতে এসেছি আমি এতই বড় ভি আই পি লোক যে এইটুক রাস্তা হাটতে পারি ন।
হাতের কাছে গুগল ম্যাপ না থাকলে যা হয় আর কি সেটা হলো আমার সাথে । নিজেই নিজে বোকা হয়ে গেলাম। এরপর কিছুক্ষণ সেখানে ঘোরাঘুরি করলাম পশুপাখি দেখলাম। তারপর ডাক্তার দেখার সময় হয়ে গেল।ডাক্তার দেখালাম।
ডাক্তার দেখাতে দেখাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। । এখন বাড়িতে যাবার পালা। তখন ঘড়ির কাটায় সাড়ে সাতটা বাজে। রংপুর হতে লালমনিরহাট সর্বশেষ ট্রেনটি সাড়ে পাঁচটায় রওনা হয়।আর তাই টেন কপালে জুটল না ।
বাসে যেতে হলো। এবার বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পালা। আমরা ডাক্তার দেখিয়েছিলাম রংপুর ধাপ মেডিকেলের পাশে।
আমারেও জানাছিলনা ধাপ থেকে সাতমাথার ভাড়া কত। আর তাই এবার জিজ্ঞেস করতে হলো অটোওয়ালা কে সাতমাতা যাবেন ভাড়া ক।
অটল আমাকে বলল 50 টাকা । আমার যেহেতু ভাড়া জানা ছিল না তাই আমি সন্দেহ করলাম না। কিন্তু যেহেতু সকালেই একবার আমি ঠকে গিয়েছি তাই এবার একটু চালাকির পরিচয় দিলা।
আমি অটোআলা কে বললাম এখান থেকে তো সাতমাথার ভাড়া 30 টাকা। অটল আমাকে বলল আপনারা যদি ভাড়া জানেনই তাহলে ?
ভাড়া কথা জিজ্ঞাসা করলেন কেন? আমি অটোওয়ালা কে বললাম তাই বলে কি আপনি ভাড়া বেশি করে চাবেন?
অটোওয়ালা বললেন ওঠেন যাওয়া যাক। এরপর আমরা অটোতে উঠলাম এবং রংপুর সাতমাথা পৌছালা। কাটোয়া লার্ভার আপডেট করে দিয়ে আমরা একটি বাসে উঠলা।
বাসে উঠে আমি ভাবছিলাম যাহোক সকালের যে বোকামি করেছি এখন সেটা চালাকির পরিচয় দিলাম।
কিভাবে 20 টাকা সেভ করে নিলাম । তখন নিজের প্রতিটি গর্ব বোধ হচ্ছিল। ঠিক তখনই পাশের একজন ভাইয়া ফোনে তার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিল।
সে তার বন্ধুকে বলছিলো তুই ধাপ থেকে 20 টাকা ভাড়া দিয়ে সাতমাথায় চলে আয় আমি এখানে আছি ।
তখনতো আইএম ফিরছে অবাক। কেননা আমি একই পথ 30 টাকা ভাড়া দিয়ে চলে এসেছি । আবার বোকা বনে গেলাম।
সকালে 10 টাকা এখন 20 টাকা আমার গচ্ছা গেল । আর এভাবেই বোকামির মধ্যে দিয়ে আমার প্রথম রংপুর সফর শেষ হলো।
You must be logged in to post a comment.