পাগলের পুলসিরাত পার হবার কাহিনী।

এক গ্রামে  মোজাম  নামে  একজন বোকা লোক ছিল,  লোকটি প্রতিদিন কোন না কোন  উল্টো পাল্টো  করম্য কান্ড করতো।  কিন্তু সবাই জান্ত লোকটি খুব বোকা তাই  তাকে কিছু বলতো না।

 লোকটি একদিন  রাস্তার পাশে গাছে উঠেছে  ডাল কাটার জন্য।  কিন্তু বোকা লোকটি যেই ডালে বসে আছে, সেই  ডালেরি গুড়া কাটতে শুরু করেছে।

রাস্তা দিয়ে লোকজন যাওয়ার সময়  মোজাম কে এভাবে ডাল কাটতে দেখে বলছে।  

ও মোজাম তুমি এই ভাবে ডাল কাটছো,  তুমিতো  পড়ে জাবানে।

মোজাম বলে, দূর পাগল, ডাল কাটছি, ডাল পরবে, আমি পরবো কেন।  বলে মোজাম ডাল কাটা চালিয়েছে যেতে থাকে। লোকজন আর কিছু না বলে চলে যায়,  যার যার কাজে।

মোজাম ডাল কাটতে কাটতে  প্রায় অরধেক এর ও অধিক কেটে ফেলেছে।  তখন এক অচেনা পথিক, পাঞ্জাবি, পাজামা পরা, মাথায় টুপি, মুখভর্তি দাড়ি, মোল্লা মৌলভী লোক  রাস্তা দিয়ে যাচ্চিলেন।

তিনি মোজাম কে দেখে বললেন, ও ভাই,  আপনি এভাবে ডাল কাটলে, নিশ্চিত  পড়ে গিয়ে হাত পাও  ভাংবে, নইলে মাড়া জাবেন।

মোজাম বলে,,  আপনি কি পাগল, পড়লে ডাল পড়বে, আমি পড়বো কেন?  আপনি যেখানে যাচ্ছেন জানতো, জত সব পাগলের দল।

লোকটা আর কিছু না বলে চলে যায়।

মোজাম ডাল কাটতে কাটতে এক সময়, ডাল সহ মাটিতে আচড়ে পড়ে।  ডাল খুব উচুতে না হয়ায় মোজাম পড়ে গিয়ে  খুব বেথা পেলেও অন্য কোন ক্ষতি হয় না।

কিন্তু মোজাম পড়ে গিয়ে ভাবতে থাকে, মোল্লা লোকটা তো সত্যি কথায় বলেছিল।  আমি গাছ থেকে পড়ে গিয়ে হয় হাত পাও ভাংবে নইলে মারা জাব।

আমিতো সত্যিয় পড়ে গেলাম, আমার হাত পাও কোনটাই  ভাংগে নি।  তাহলে তো আমি নিশ্চিত মারা গিয়েছি। 

আমি যেহেতু মারা গিয়েছি সেহেতু আমি বাড়ি জেতে পারবো না।  মরা মানুষ তো কবরে শুয়ে   থাকে।  এখন থেকে আমাকেও কবরে থাকতে হবে।

এই ভেবে সে গোরস্তানের ভাংগা একটা কবরের মধ্যে ঢুকে শুয়ে পরে।

সময় গরিয়ে গভীর রাত হয়ে যায়,  মোজাম কররে মধ্যে শুয়ে থাকতে থাকতে এক সময়  ঘুমিয়ে যায়।

 এদিকে গ্রামে এক চোর চুরি করতে এসে  পুলিশের তারা খেয়ে গোরস্থানে গিয়ে ঢোকে।  চোরটি ভাংগা কবর দেখে তার চুরি করা টোপলা টি কবরে মধ্যে ছুরে ফেলে দৌড়ে পালায়।

টোপলাটি  মোজামের গায়ের উপর গিয়ে পড়ে। মোজাম উঠে বসে পড়ে।  এদিকে পুলিশ চোর কে খুঁজতে খুঁজতে গোরস্থানে এস পৌছে। 

পুলিশ মোজাম কে কবরের মধ্যে  টোপলা সহ দেখে , চোর ভেবে ধরে।  দড়ি দিয়ে হাত বেধে থানায় নিয়ে জেতে থাকে।

মোজাম ভাবে এর সব কবরের ফেরেস্তা, তাকে নিয়ে যাচ্ছে। সে কোন কথা না বলে আস্তে আস্তে হটতে থাকে।

মোজাম আস্তে হাটায় পিছন থেকে এক পুলিশ তার হাতের লাঠি দিয়ে, মোজামের পাছার উপর দুই বারি দিয়ে বলে জরে হাট।

মোজাম জোরে জোরে হাঁটতে শুরু করে। যেতে জেতে একটা নদীর ধার এসে পৌছে।  নদীতে  একটা বাশ দিয়ে সাকো আর একটা বাশ দিয়ে আরা বানানো। এই বাশের সাকো দিয়ে তারা পার হয়ে থানায় যায়। 

থানায় গিয়ে পুলিশ মোজাম কে মার ধোর ও জিজ্ঞাসা বাদ করে।  পড়ে  তারা বুঝতে পারে যে এই লোক  একটা পাগল, তাই তারা মোজামকে ছেরে দেয়। 

ওদিকে মোজাম থানা থেকে ছাড়া পেয়ে  রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে। সম্পুর্ন অপরিচিত রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে।

সে যেতে যেতে সামনে একটা ওয়াজ মাহফিল দেখতে পায়। সেখানে হুজুর ওয়াজ করছেন,  আমাদের মৃত্যুর পরে যখন কবরে শায়িত হয়ে যাব।

তখন ফেরেস্তা এসে আমাদের তিনটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে। মৃত্যুর পরে আমাদের পুলসিরাত পার হতে হবে, জেটা হবে তলোয়ারের চেয়ে ধারাল।  নিচে দাউ দাউ করে আগুন জ্বালতে থাকবে।

শুনে মোজাম  দৌড়ে গিয়ে মঞ্চের সামনে দারিয়ে বলে, হুজুর মিথ্যা কথা। কবরে পরে এসব কিছুই থাকে না।

 হুজুর রেগে বলে তাহলে তুমি বল কি থাকে।

মোজাম বলতে থাকে, কবরে থাকার পরে, দুই জন না চার জন ফেরেস্তা আসে। খাকি পোশাক  পরা আর হতে থাকে লাঠি। এসে কিছু না বলে দড়ি দিয়ে হাত বাধে, হাটায়ে নিয়ে যায়,  আস্তে হাটলে পাছায় দেয় বারি

পুলসিরাত,,  বাশের সাকো আর বাশের আড়া, আগুন টাগুন কিছুই না নিছে থাকে পানি।

আমি নিজের চোখে সব দেখে আসলাম।

মোজাম এর কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে উঠে। 

সবাই বুঝতে পারে লোকটার মাথায় সমস্যা।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles