আশির দশক থেকেই হাবল টেলিস্কোপের গঠন কার্যক্রম যখন শেষের দিকে তখনই উত্তরসূরি হিসেবে আরো উন্নত কোনো টেলিস্কোপের ব্যাপারে কথাবার্তা শুরু হয়। তবে নাসা এক্ষেত্রে জোরেশোরে কাজ শুরু করে ৯০ এর দশকের শুরুতেই।
১৯৯৪ সালে গঠিত হয় "Hubble Space Telescope & Beyond Committee" যার মূল লক্ষ্য ছিল হাবলের আরো উন্নতি সাধন।
হাবল টেলিস্কোপ মূলত মহাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি বিশ্লেশন করে তার চিত্র তৈরি করত। ঐ কমিটির উদ্দেশ্য ছিল এই রশ্মি নির্ভরতার আরো উন্নতি করা। এই গবেষণাকালে তারা চিত্র তৈরিতে আল্ট্রাভায়োলেট থেকেও ইনফ্রারেড রশ্মির অধিক কার্যকারিতা খুঁজে পান।
মহাবিশ্ব প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে। তাই দূরবর্তী স্থান হতে আলো আসতে আসতে তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেড়ে তা ইনফ্রারেড আলোয় পরিণত হয় যা মানুষের চোখে দেখা দেয় না। অর্থাৎ মহাবিশ্বের যে স্থান থেকে ইনফ্রারেড আসে তা তত দূরে এবং এই দূরত্ব থেকে বোঝা যায় সেই আলো তত পুরনো।
অর্থাৎ মহাবিশ্বের আরো অতীত দেখার অসীম সম্ভাবনা জাগায় তাদের এই গবেষণা।
এই ধারণাকে কাজে লাগিয়েই নাসা হাবলের উত্তরসূরি, জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের কাজ শুরু করে।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো প্রথমেই। ইনফ্রারেড রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক বেশি। আর আমরা সবাই জানি, তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হলে তার শক্তিও সেই অনুপাতে কম হয়। অর্থাৎ এই রশ্মির তাপশক্তি বা তাপমাত্রা হাজারগুণ কম।
তাই সঠিকভাবে কাজ করতে হলে টেলিস্কোপের তাপমাত্রা ইনফ্রারেডের থেকেও কম হতে হবে। অন্যথায়, টেলিস্কোপের সেন্সরগুলো ইনফ্রারেড ধরতে পারবে না।
হিসাব করে দেখা যায়, সঠিক কার্যকারিতা পেতে হলে ওয়েবের নিজস্ব এবং এর পরিবেশের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে প্রায় ২৩৩° সেলসিয়াস (-233°C) হতে হবে। টেলিস্কোপের প্রকৌশলীদের প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল এটাই।
তারা দেখলেন, মহাকাশে টেলিস্কোপটি স্থাপন করলে দুটি পথে এর তাপমাত্রা বাড়তে পারে। প্রথমটি হলো, সূর্য এবং অন্য গ্রহ উপগ্রহ থেকে প্রতিফলিত হয়ে আসা আলো এবং দ্বিতীয়টি টেলিস্কোপের নিজস্ব যন্ত্রাংশ।
আজ এটুকুই। কিভাবে এই দুটি সমস্যা সমাধানে নাসা এই টেলিস্কোপের এক অদ্ভুত আকৃতি দিয়ে ফেললো তার আলোচনা না হয় পরবর্তী পর্বে করা যাবে।
You must be logged in to post a comment.