বর্তমান করোনা মহামারীর সময়ে মানুষের মধ্যে হতাশা ও বিষন্নতা প্রকট হয়ে দেখা দিচ্ছে। এই সময়ে আমাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বা মনোভাব একটি অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের জীবনে বিভিন্ন বিষয়ে সফলতার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। এই দৃষ্টিভঙ্গি জীবনকে করে আশাবাদী এবং দুর করে দুশ্চিন্তা। যেকোন বিষয়ের ভাল ও মন্দ দুই দিকই থাকে। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি হলো কোন বিষয়ের ভাল দিকগুলোকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা।
ইতিবাচক চিন্তা এমন এক মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে আপনি অর্ধেক পানিতে পূর্ণ এবং বাকি অর্ধেক পানিশূন্য একটি গ্লাসের দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করলে গ্লাসে অনেক পানি রয়েছে - এমনটি ভাববেন। অর্ধেক অংশে পানি নেই সেটা গুরুত্ব দেবেন না বা সেটার গুরুত্ব কম বলে বিবেচনা করবেন। আপনার এই মানসিক চিন্তাই হচ্ছে ইতিবাচক চিন্তা তথা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি।
কার্যকর ইতিবাচক মানসিকতার জন্য প্রয়োজন ইতিবাচক চিন্তা, ইতিবাচক অনুভুতি ও ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে লক্ষ্য স্থির করা।
এখন কথা হচ্ছে কীভাবে আপনি মনের এ অবস্থার উন্নতি সাধন করবেন ? এজন্য আপনি কিছু করতে পারেন। যেমন উৎসাহ প্রদানকারী ও প্রেষণা সৃষ্টিকারী সাহিত্য পড়তে পারেন। মনের মধ্যে আপনার স্থিরকৃত লক্ষ্যবস্তুর চিত্র অংকন করে তা নিয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে হোন এবং একাগ্রচিত্তে স্মরণ করুন।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারা আমাদের যে দিকগুলোর বিকাশ ঘটে সেগুলো হলো -
* ইতিবাচক মনোভাব
* গঠনমূলক চিন্তা ও মনোভাব
* সৃজনশীল চিন্তা
* সফলতার প্রকাশ
* আশাবাদ
* সুন্দরভাবে লক্ষবস্তু অর্জনের প্রেষণার যোগান
* উৎসাহপ্রদ হওয়া
* পরাজয় স্বীকার না করা
* আনন্দদায়কতাকে বেছে নেয়া
* নিজের উপর ও নিজের যোগ্ তার উপর বিশ্বাস
* আস্থাভাজন ও উচ্চমানসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে প্রকাশ
* সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে অনুসন্ধানী হওয়া
* সুযোগের অন্বেষণ
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি জীবনকে সফলতা ও আনন্দময়তার দিকে চালিত করে এবং আপনার গোটা জীবনটাকে বদলে দিতে পারে। যদি আপনি জীবনের উজ্জ্বল দিকের উপর দৃষ্টি দেন তাহলে আপনার পূরো জীবন আলোতে পূর্ণ হয়ে যাবে। এই আলোর প্রভাব শুধু আপনার নিজের উপরই পড়বে না যে পথে আপনি পৃথিবীর দিকে তাকাবেন আপনার পূ্রো পরিবেশ এবং চারপাশ সেই আলোর প্রভাবে প্রভাবিত হবে।
এটা যথেষ্ঠ শক্তিশালী ও পারস্পরিক যোগসূত্রে গাঁথা।
এর প্রভাবের উপকারী দিকগুলো হলো -
* লক্ষ্যে পৌছাতে এবং সফলতা অর্জনে সাহায্য করে।
* দ্রুত ও সহজভাবে সফলতা অর্জিত হয়।
* বেশি বেশি মানসিক শক্তি পাওয়া যায়।
* মনের শক্তি ও দৃঢ়তার প্রবল প্রকাশ ঘটে।
* অনুপ্রাণিত হবার যোগ্যতার প্রকাশ ঘটে। এবং অন্যদের প্রেরণা যোগায়।
* মানুষের নিকট থেকে সন্মান পাওয়া যায়।
* যেকোন অসুবিধাকে দমন করার যোগ্যতার প্রকাশ ঘটে।
* নিজের প্রতি হাসিমাখা ভাবের প্রকাশ ঘটে।
তাই ইতিবাচক মনোভাবের উন্নয়ন সাধন করার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়ে মনোযোগ দিন -
* সুখী হতে প্রত্যাশা করুন।
* জীবনের উজ্জ্বল দিকের প্রতি নজর দিন।
* আশাবাদী হতে চান এবং আশাবাদী হোন।
* প্রায়ই আরো বেশি করে হাসার মুক্তি খুঁজতে থাকুন।
* নিজের ও সার্বজনীন শক্তির উপর বিশ্বস্ত হোন।
* নেতিবাচক মনোভাব ও নিরাশ হওয়ার নিরর্থকতার বিষয়ে গভীরভাবে ভাবুন।
* নিজেকে সুখী মানুষের সহযোগী করুন।
* অনুপ্রেরণাদায়ক উদ্ধৃতি পড়ুন।
* ভাবনার সংকল্পকে আরো জোরালো করুন।
* আপনি যা হতে চান তা মনের আয়নায় দেখুন।
* চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করুন।
* একাগ্রতা ও ধ্যান করতে শিখুন।
উপরোক্ত নির্দেশনাগুলোর সবগুলো না হলেও শুধুমাত্র দু একটি যথার্থভাবে অনুসরণ করতে পারলেও আপনার জীবন আরো বেশি আলোকিত হয়ে উঠবে।
Good
Thanks Hossnara
You must be logged in to post a comment.