আজ পত্রিকা খুললে দেখা যায় অমুক নায়ক-নায়িকার ডিভোর্স হয়ছে। অনুপ্রেরণা দেওয়া বড় ভাই এর সাথে তার স্ত্রীর মনোমালিন্য চলছে।
পাশের বাসার সংসারে প্রতিনিয়ত ঝগড়াফাসাদ হয়েই থাকে। অমুকের বউ অন্য কারোর সাথে পালিয়ে গেছে। নানা খবরাখবর আমরা শুনে থাকি। এসব দেখে শুনে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
আমরা যেসব নায়ক-নায়িকা,সিঙ্গার,মোটিভেশনাল ম্পিকার,বড় ভাই-আপুদের আইডল ভাবি দিন শেষে দেখা যায় তারাই অসুখী নিজেদের জীবনীতে। জীবনের কোন একটা মুহূর্তে গিয়ে আমরা উপলব্ধি করতে পারি প্রিয় মানুষটা আসলে আমাদের জীবনে কতটা মূল্যবান।
আমরা যাদের দেখে ভেবে থাকি আমাদের চোখে দেখা ওরাই সব থেকে বেশি সুখী কিন্ত দিন শেষে দেখা যায় তারাই সংসার জীবন সব থেকে বেশি অসুখী।
এটার মূল কারণ আমরা আমাদের প্রিয়জনের কদর করতে ভুলে যায়।একটু ভেবে দেখুন আমরা যেটা খুব সহজে পেয়ে যায় সেটার প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধ কম থাকে।
আমাদের কনফিডেন্স থাকে আমি ওই জিনিস চাইলেই তো পাবো। ভুলে যায় এই চাওয়ার মাঝে আমরা যেটা পাচ্ছি সেটার প্রতি দায়িত্ব নিতে। ঠিক তেমনি সাংসারিক জীবনে প্রিয় মানুষটাকে সময় দিতে ভুলে যায়।তখন তাদের বুঝতে অক্ষম হয়।
এই থেকে প্রিয় মানুষের প্রতি দুরত্ব সৃষ্টি হয়, মনোমালিন্য হতে শুরু করে এক পর্যায়ে সেটা বিচ্ছেদে পরিণত হয়।
আমরা যখন বড় ভাই বা কিংবা বিবাহিত বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডাতে মগ্ন থাকি তারা বলে জীবনে বিয়ের কথা ভাববি না । তবে দিনশেষে যাদেরই আমরা আইডল কাপল ভাবি তাদের মন্তব্য প্রায়ই সময় এমই হয়ে থাকে।
কিন্ত মনে মনে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রিয় মানুষের জন্য যত কল্পনা জল্পনা জন্মায় যেটুকু তাদের থেকে অনুপ্রেরিত হয়ে পাই।
অনেক সময় রোমান্টিক কাপল ভিডিও দেখলেই আমরা সামাজিক যোগাযোগে ভাইরাল হলেই শেয়ার করি। তখন ভিডিওর মুহুর্ত গুলো আমরা ইনজয় করি আবার মানুষকে দেখানোর জন্য শেয়ার করি।
কমেন্ট করে করে তাদের অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকি।তাদের জন্য মন ভরে দোয়া করি। আমাদের অন্তরে তখন প্রিয় মানুষটার জন্য ওই মুহুর্তে কল্পনা জগতে হারিয়ে যায় ।
হঠাৎ যখন শুনি আমাদের আইডল সেই কাপলদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটেছে চোখ বন্ধ করে কারোর উপর দোষ চাপিয়ে দেয়। দোষ দিয়ে থাকি ছেলেটা খারাপ না হয় মেয়েটা খারাপ।
তুবও কিন্ত আমাদের অন্তরে তাদের দেখানো রোমান্টিক ভালোবাসার মুহূর্ত গেঁথে থাকে।আমরা না জেনে কতই না মন্তব্য করি। আমরা মন্তব্যই করতে পারি কিন্ত একটু ভেবে দেখিনা কেনো বিচ্ছেদ হলো তাদের। আসলে কি তাদের ভালোবাসা কমতি ছিলো!
তবুও এই থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে ভুলে যায় আসলে প্রিয় মানুষটা আমাদের জীবনে কত মূল্যবান কিছু। এতোকিছুর পরও আমরা জীবনে উপলব্ধি করতে পারিনা প্রিয় মানুষটার অনুভূতি।
আপনার প্রিয় মানুষকে আগলে রাখার দায়িত্ব আপনারই।তার মন বুঝা,তার চাওয়া পাওয়ার চাহিদা একমাত্র আপনাকেই বুঝতে হবে। দিন যত এগোচ্ছে প্রযুক্তি যত বাড়ছে দিন শেষে বিচ্ছেদের পরিমাণ ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রিয় মানুষের থেকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলছি আর্টিফেসিয়াল যুগের বানানো একটা কাহিনীকে। তাদের মত বীর হতে চাচ্ছি। আমাদের অনুভূতি গুলো শেয়ার করছি সামাজিক যোগাযোগে।
দুইজন পাশাপাশি থেকেও শান্তি পাচ্ছি না আমরা। হাজার হাজার কষ্টের পোষ্ট,তখন ভেঙ্গে যায় মন।প্রিয় মানুষ কাছে থাকলে নাকি এক প্রকার মানসিক শান্তি পাওয়া যায়,তবুও সাথে থেকে আমরা সেটা পাইনা।
কারণ একটাই আমাদের বোঝার ক্ষমতা কমে গেছে। প্রিয় মানুষকে হাসি খুশি রাখতে ভুলে গেছি। তার সকল কষ্ট আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারছিনা।
আমারা যতটুকু না বুঝি নিজের মানুষটাকে তার থেকে বেশি বুঝে ফেলছি অন্যের অনুভূতি। এন্টারটেইনমেন্ট নিতে আমরা খুজে বেড়ায় বাহ্যিক কোনো অদেখা জগৎকে।
অনেকের কাছে এক সময়ে গিয়ে মনে হয় সংসার জীবন অনেক বেশি কষ্টদায়ক। এতো এতো অর্থ খরচ হচ্ছে,মানসিক শান্তি পাইনা। কিন্ত এর পিছনের কারণ আমাদের অজানা থাকে।
আমরা যদি একটু চিন্তা করি,প্রিয় মানুষের কাছে সবটা খুলে বলি আমি মনে করি সে কখনো অবুঝ হবেনা। নিজের কষ্ট,দুঃখের কথা যদি প্রিয় মানুষের কাছে বলে সে আপনাকে অবশ্যই বুঝবে।তখন দুইজনে মিলে সমাধানের পথ বের করতে পারবেন।
জীবনটাকে রঙিন করতে,মানসিক শান্তি প্রিয় মানুষটার থেকেই পাওয়া যায়। আমাদের জীবন হোক রঙিন, ভালোবাসার বন্ধন হোক জোরালো,সুখি হোক প্রতিটা পরিবার।
You must be logged in to post a comment.