শিক্ষা সর্বযুগে সর্বজন বিদিত একটি আলোকিত বিষয়,শিক্ষা ছাড়া মানুষের বৈশিষ্ট্যের কোন মূল্য থাকে না।মানুষ যুগে যুগে শিক্ষাকে গ্রহণ করে নিজেকে পরিবর্তন করেছে।
আদিম যুগ থেকেই মানুষ শিক্ষা গ্রহন করে আসছে অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধির সমন্বয়ে।তবে আদিম যুগে শিক্ষা গ্রহণের জন্য এখনকার যুগের মতন স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় ছিলনা।
মধ্যযুগে শিক্ষার মান ছিলো উন্নত তবে বর্তমান আধুনিক যুগের এত উন্নত থেকে উন্নত তর ছিলনা।এখন মা বাবা একটু সচেতন হলেই তার সন্তানকে শিক্ষা দিতে পারে বিভিন্ন উপায়ে। বর্তমান ২১ শতাব্দীর শিক্ষাব্যবস্হা অত্যাধুনিক ও প্রগতিশীল।
ই-লার্নিং বা অনলাইন লার্নিং
ই-লার্নিং কে ইলেকট্রনিক লার্নিং,অনলাইন লার্নিং বা অনলাইন শিক্ষা বলতে পারি।ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের মধ্য দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন কেই বলা হয় ই-লার্নিং।
এ শিক্ষাটি মূলত অনলাইন ভিত্তিক প্লাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন ধরনের কোর্স লাইভ ক্লাস,অডিও, ভিডিও রেকর্ড থাকে। এই প্লাটফর্মে লার্নার খুব সহজে তার মনের প্রশ্নগুলির উত্তর খুজে নিতে পারে এবং জটিল বিষয়গুলির সমাধান থাকে হাতের নাগালে।
বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির অগ্রগতি ও শিক্ষাব্যবস্হার সার্বিক উন্নতি হওয়ার পলে মানুষ ই-লার্নিং বিষয়টিকে বিজ্ঞানের আশীর্বাদ হিসেবে গ্রহণ করছে।
ই-লার্নিং উচ্চশিক্ষাকে করেছে আরও বেশি গতিশীল ও সহজ।কোন ব্যক্তি চাইলেই এখন অন্যদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘরে বসেই ই-লার্নিং এর মাধ্যমে ডিগ্রি নিতে পারেন।
এলিয়ট মাইসি ১৯৯৯ সালে "eLearning" শব্দটি তৈরি করেছিলেন,পরবর্তীতে বিশ্বজুড়ে কম্পিউটারের সূচনার ব্যপকতা এবং সময়ের পালাক্রমে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ইত্যাদি সহজ হওয়ার ফলে ই-লার্নিং বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রাসারিত হয় এবং মানুষ এটিকে সহজেই গ্রহণ করতে পেরেছে।
ই-লার্নিং এর উপকারিতা
বর্তমান সময়ে ই-লার্নিং এর জনপ্রিয়তা খুব বেশি।মানুষ এখন তার বাসায় বসে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক কোর্স এবং দক্ষতা মূলক কোর্স করতে পারে।
১.ই-লার্নিং প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে লার্নার(শিক্ষার্থী) পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে থেকেও সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
২.ই-লার্নিং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী তার পছন্দ মতন কোর্স এর উপর জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
৩. শিক্ষার্থী তার সময় বাঁচাতে ই-লার্নিং প্লাটফর্ম বেছে নিতে পারে।
৪.চাকুরি,কাজের পাশাপাশি অন্য যোগ্যতাসম্পন্ন কোর্স গুলি ই-লার্নিং এর মাধ্যমে করা সম্ভব।
৫.ই-লার্নিং স্লো লার্নার দের জন্য বেশ উপযোগী একটি পদ্ধতি।
৬.ই-লার্নিং এর মাধ্যমে শিক্ষক ক্লাসের অমনোযোগী ছাত্রদের মনোযোগী করে তুলতে পারে সহজে।
৭.ই-লার্নিং এর মাধ্যমে শিক্ষক ক্লাসে ছাত্রদের ভালো ফলাফল করার বিভিন্ন টিপস ও গাইড দিতে পারেন।
৮.ই-লার্নিং এর মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রী একটি বিষয় বার বার রিভিশন দিতে পারে এবং পড়ার নির্দিষ্ট পরিবেশে আবদ্ধ না হয়ে তারা উন্মুক্ত ভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
৯.ই-লার্নিং এর মাধ্যমে যে কোন ব্যক্তি যে কোন পরিবেশে সকল বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতে পারে।
১০.ই-লার্নিং প্লাটফর্মে শিক্ষার্থীর উপর মুখস্ত করার বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দেয়া হয়না এখানে শিক্ষার্থী হাতে কলমে শখের ভুবনে প্রবেশ করে মনের আনন্দে শিখতে পারে।
বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্হায় ই-লার্নিং ঃ
বর্তমান বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাকে ডিজিটালাইসড করতে বদ্ধপরিকর।বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট কানেকশন এখন সচারাচর পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সরকার ছাত্র ছাত্রী দের আধুনিক প্রগতিশীল শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করতে প্রতিটি স্কুল, কলেজে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস,প্রজেক্টর,উচ্চশিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় হল এবং ক্যাম্পাসে ফ্রি ওয়াইফাই কানেকশন নিশ্চিত করেছেন।
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন অনলাইন আবেদন, ভর্তি,রেজাল্ট ইত্যাদি প্রক্রিয়া চলমান।
এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ২১ শতাব্দীর যোগ্য শিক্ষক হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার বিভিন্ন দক্ষতামূলক ট্রেনিং এর ব্যবস্হা করেছন।বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষক দের ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে অনলাইন প্লাটফর্মে।
একজন শিক্ষক যেটা কুব সহজে বাসায় অবস্হান করে অংশগ্রহন করতে পারছেন।এই সমস্ত ট্রেনিং সেশনে মাস্টার ট্রেনার হিসেবে থাকছেন উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন স্কলার গন।
এই ট্রেনিং এ শেখানো হচ্ছে কিভাবে একজন শিক্ষক ছাত্রদের ২১ শতাব্দীর ওয়েব ২.০০ টুল এর সাথে পরিচিত করাবেন।
কিভাবে ইংলেশে দক্ষতা অর্জন করবেন,কিভাবে ছাত্রদের গতানুগতিক শিক্ষা ও পরীক্ষা থেকে বেড় করে ই-লার্নিং এ যুক্ত করবেন।এবং কিভাবে একটি ক্লাসকে ডিজিটাল,এসিংক্রোনাস ও ইন্টারেস্টিং করে তুলবে।
বিভিন্ন ওয়েব ২.০০ টুল গুলি kahoot এবং padlet এছাড়াও flipped classclass ছাত্রদের জন্য খুব মজার একটি বিষয়।
You must be logged in to post a comment.