সময় আল্লাহর দেওয়া এক বিস্ময়কর নিয়ামত।আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সময় নামক নিয়ামত দিয়েছেন যেন আমরা তাকে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর সন্তোষ লাভ করতে পারি।
সময় এক বহমান স্রোতের ন্যায় গতিশীল।যাকে ধরে রাখা যায় না, যাকে ফিরিয়ে আনা যায় না।সময় হলো সেই নিয়ামত যাকে জীবন বলা হয়।দুনিয়ার জীবনে এই নির্ধারিত ব্যাপ্তিটাই সময়ের একটি অংশ।
পবিত্র কুআন আল্লাহ তায়ালা সূরা আসর নামে একটি সূরা নাযিল করেছেন যার অর্থ সময়।ইমাম রাযী একজন মনীষীর উক্তি উল্লেখ করে বলেছেন, "একহন বরফ ওয়লাার কাছ থেকে আমি সুরা আসরের অর্থ বুঝেছি।সে বাজারে দ্রুত হেঁকে চলছিলো- দয়া করো এমন ব্যক্তির প্রতি যার পুঁজি গলে যাচ্ছে।
তার একথা শুনে আমি বললাম এটা হলো اِنَّ الْاِنْسَانَ لَفِیْ خُسْرٍۙ বাক্যের অর্থ। মানুষের আয়ুষ্কাল এই বরফ গলে যাবার মতই দ্রুত অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে।একে যদি নষ্ট করা হয় বা ভুল কাজে ব্যয় করা হয় তাহলল সেটি হবে মানুষের জন্য ক্ষতি।"
সময়কে কখনো রাত দিনের আবর্তনে প্রকাশ করা হয়েছে।কখনও অতীত বর্তমান ভবিষ্যত কালে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।আবার কখনও মানুষের শৈশব,যৌবন,বার্ধক্যে সময়কে প্রকাশ করা হয়েছে।
কখনও বা দুনিয়ার জীবন ও পরকালীন অনন্ত জীবনে সময়ের প্রকাশ ঘটেছে। কুরআন হাদিসের বহু জায়গায় বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সময়ের পরিচর্যার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
সূরা ফুরকানের ৬২ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, "তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত আর দিন, তারা একে অপরের পেছনে আসে। এ ব্যবস্থা করেছেন তাদের জন্য যারা শিক্ষা গ্রহণ করার ইরাদা করে কিংবা ইরাদা করে শোকর আদায় করার।"
সময়ের ব্যাপকতা রাত ও দিনের মাঝে লুকায়িত।আর তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বিভিন্ন সময়ের কসম করেছেন।
"শপথ রাত্রির ! যখন সে আচ্ছন্ন করে।" (সূরা লাইল: ১০২)
"শপথ দিনের যখন সে আলোকিত হয়।" (সুরা ফজর: ১-২)
"শপথ ফজরের, শপথ দশ রাত্রির, পূর্বাহ্নের ও শপথ রাত্রির যখন গভীর হয়।" (সূরা দোহা: ১-২)
"শপথ সময়ের ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত।" (সূরা আসর: ১-২)
মুয়ায ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত: "কিয়ামতের দিন চারটি প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া পর্যন্ত বান্দার পা বিন্দু পরিমাণ নড়বে না।
১.তার জীবন সে কোন কাজে ব্যয় করেছে।
২.তার যৌবনকাল কোন কাজে অতিবাহিত করেছে।
৩.তার সম্পদ কিভাবে আয় করেছে এবং কোন কাজে ব্যয় করেছে।
৪.তার জ্ঞান অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে।
সময়ের কিছু বৈশিষ্ট্য
◾সময়ের ব্যাপকতা একটি আপেক্ষিক বিষয়। অর্থাৎ অবস্থাভেদে ব্যক্তিভেদে সময় ব্যাপক কিংবা সংকীর্ণ হয়ে থাকে।যেমন দুঃসময় খুব দীর্ঘ মনে হয় সুসময়গুলো দ্রুত ফুরিয়ে যায়।
◾পৃথিবীর এই গোটা জীবন, এই দীর্ঘ সময় আখিরাতের তুলনায় অনেক ছোট মনে হয়ে থাকে।আল্লাহ তায়ালা বলেন, যেদিন তারা সে দিনটিকে দেখতে পাবে, সেদিন অনুভন করবে- পৃথিবীতে তারা কাটিয়েছে একটি সন্ধ্যা কিংবা একটি সকাল মাত্র।" (সুরা নাজিয়াত: ৪৬)
বিখ্যাত ফরাসি দার্শনিক ও সাহিত্যিক ভোল্টারের "জীডগ ভাগ্যের এক রহস্য" গ্রন্থে এক চমৎকার প্রশ্নোত্তরে প্রশ্ন করা হয়, দুনিয়ার কোন জিনিস সবচেয়ে লম্বা আবার সবচেয়ে খাটো?সবচেয়ে দ্রুতগামী আবার সর্বাধিক ধীরগতিসম্পন্ন? সবচেয়ে বেশি বিভক্তিশীল, আবার সবচেয়ে বেশি সংকোচন শীল?
সবচেয়ে বেশি অবহেলিত আবার সবচেয়ে আক্ষেপের? এমন বস্তু যা জীবিত কোনো কিছুই হতে পারে না। যা সাধারণ বস্তুকে শেষ করে দেয়, অসাধারণ বস্তুকে অমরত্ব দান করে? উত্তর দেওয়া হলো সময়।
একজন আরব কবি বলেন, "যা কিছু সংক্ষণে তুমি সচেষ্ট হতে পারো, তার মধ্যে সময় হচ্ছে সবচেয়ে মুল্যবান অথচ আমি দেখেছি সময়ই তোমার কাছে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত।"
ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রহ.) বলেন, " রাত ও দিন তোমার মাঝে কাজ করে। তুমিও তাদের মাঝে কাজ করো।"
সালফে সালেহীনরা বলতেন, "সময় একটি ধারালো তরবারি।যদি তুমি তাকে কাটতে না পরো তাহলে সে তোমাকে কেটে ফেলবে।"
◾সময় যা একবার অতিবাহিত হয় তাকে আর ফিরে পাওয়া যায় না।আর তাই সেই সময়ে সংগঠিত কাজ কিংবা অবহেলিত সময় মানিষের আফসোস ও অনুশোনার কারণ হয়ে থাকে।মানুষ দু'টি সময়ে খুব আফসোস করবে এই সময়ের জন্য।
১.মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত। যখন মানুষ নিশ্চিত হয় কর্মের সময় শেষ।
২.আখেরাতে যখন ফল প্রকাশ করা হবে সেই কর্মের সময়ের ওপর ভিত্তি করে।
"হে ঈমানদার লোকেরা! তোমাদের ধন-মাল সন্তান- সন্তুতি যেন তোমাদের আল্লাহর যিকির থেকে উদাসীন না করে।যারা সেরকম করবে তারাই হবে ক্ষতিগ্রস্থ।তোমাদের মৃত্যু আসার পূর্বেই তোমাদের আমি যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করো।
তা না হলে মৃত্যু এলে বলবে- আমার প্রভু আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দাও যাতে আমি দান করতে পারি এবং পূণ্যবান লোকদের অন্তভূক্ত হতে পারে। (সূরা মুনাফিকুন: ৯-১০)
জাহান্নামে শাস্তির সময়েও মানুষ ঠিক একইভাবে আল্লাহর কাছে সময় প্রার্থনা করবে যেন দুনিয়ার জীবনে পাঠানো হয় এবং কিছু নেক আমল করার সুযোগ পায়।
জবাবে আল্লাহ তায়ালা বলবেন- "আমি কি তোমাদের দীর্ঘ জীবন দেইনি- যাতে তোমরা সতর্ক হতে চাইলে সতর্ক হতে পারতে?" (সূরা ফাতির: ৩৭)
সফলতার প্রকৃত রুপ কোনটি?
দুনিয়ার এই সময়গুলো পরকালীন অনন্ত জীবনের তুলনায় একেবারেই তুচ্ছ। আর সেকারণে এই তুচ্ছ জীবনকে ভোগের জন্য রাখা হয়নি।বরং রাখা হয়েছে কর্মক্ষেত্র বা আবাদ করার জমি হিসেবে।
আর সেকারণেই দুনিয়ার সফলতা হলো কর্মের নিপুণতায় সময়ের যথাযথ ব্যবহারে এবং প্রকৃত সফলতা হলো অনন্তকালের সেই পরকালের জীবনে আল্লাহর সন্তোষ লাভ করা, চিরস্থায়ী জান্নাত লাভ করা।
সফতার কুরআনিক মর্ম
আল কুরআন সফলকাম এই অর্থটি প্রকাশ করার জন্য মূল যে আরবী শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তা হলো 'আফলাহা'। এর অর্থ কল্যাণ বা সফলতা। বিপরীত দিকে ক্ষতিগ্রস্ত বুঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে 'খুসর'।
দুনিয়ার আপাতদৃষ্টিতে সফলতা লাভ করলেও অনেক ব্যক্তি পরকালীন জীবনে ক্ষতিগ্রস্ত।এটা প্রকৃত সফলতা নয়।
"অবশেষে প্রত্যেক ব্যক্তিকে মরতে হবে এবং তোমরা সবাই কিয়ামতের দিন নিজেদের পূর্ণ প্রতিদান লাভ করবে। একমাত্র সেই ব্যক্তিই সফলকাম হবে, যে সেখানে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাবে এবং সেখানে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে।
আর দুনিয়াটাতো নিছক একটা বাহ্যিক প্রতারণার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।" (সূরা আলে ইমরান: ১৮৫)
এ ধন সম্পদ ও সন্তান সন্তুতি দুনিয়ার জীবনের একটি সাময়িক সৌন্দর্য - শোভা মাত্র। আসলেতো স্থায়িত্ব লাভ কারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের কাছে ফলাফলের দিক দিয়ে উত্তম এবং এগুলোই উত্তম আশা-আকাঙ্ক্ষা সফল হবার মাধ্যম। (সূরা কাহফ: ৪৬)
◾অকল্যান ও মন্দ কাজ থেকে সুরক্ষিত থাকাই প্রকৃত সফলতা। "আর তাদেরকে মন্দ কাজসমূহ থেকে রক্ষা করো, কিয়ামতের দিন যাকে তুমি মন্দ ও অকল্যাণসমূহ থেকে রক্ষা করেছো তার প্রতি তুমি বড় করুনা করেছো এটাই বড় সফলতা।" (সূরা মু'মিন: ৮)
◾জান্নাতুল ফেরদৌস লাভ করাই প্রকৃত সফলতা। "যারা জাহান্নামে যাবে এবং যারা জান্নাতে যাবে তারা পরস্পর সমান হতে পারে না। যারা জান্নাতে যাবে তারাই সফলকাম। " (সূরা হাশর: ২০)
"আল্লাহ তোমাদের গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং তোমাদেরকে এমন সব বাগানে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশে ঝরনা ধারা প্রবাহিত। আর চিরস্থায়ী বসবাসের জায়গা জান্নাতের মধ্যে তোমাদের সর্বোত্তম ঘর দান করবেন। এটাই বড় সফলতা। " (সূরা সফ: ১৭)
"যেদিন তোমরা ঈমানদার নারী ও পুরুষদের দেখবে তাদের নূর তাদের সামনে ও ডান দিকে দৌড়াচ্ছে তাদের বলা হবে আজ তোমাদের জন্য সুসংবাদ। জান্নাতসমূহ থাকবে যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্নাধারা সমূহ প্রবাহিত থাকবে। সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে। এটাই বড় সফলতা। " (সূরা হাদীদ: ১২)
আয়াতগুলো অধ্যয়নের মাধ্যমে বিষয়টি সুস্পষ্ট যে দুনিয়াবী সফলতা খুবই ক্ষণস্থায়ী। প্রকৃত সফলতা হলো অনন্তকালের পরকালীন জীবনের সফলতা যা আল্লাহর নিকটতম পছন্দনীয় বান্দা হওয়ার মাধ্যমে অর্জন করা যায়।
আর এই সফলতা অর্জনের জন্যই মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের এক সুদীর্ঘ জীবন দান করেছেন।
আল্লাহ তা'য়ালা বলেন, "আমার রহমতই এদেরকে কূলে ভিড়িয়ে দেয় এবং একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত জীবনের দ্বারা লাভবান হবার সুযোগ দিয়ে থাকে।" সূরা ইয়াসিন: ৪৩)
জীবনের মাধ্যমে আমরা 'সময়' নামক যে নিয়ামত লাভ করেছে তার উদ্দেশ্যই হলো আল্লাহর সন্তোষ ও আল্লাহর রহমতের উপযোগী করে নিজেকে গড়ে তোলার কাজে সময় ব্যয় করা।
হাদিসে বলা হয়েছে, "আল্লাহর দু'টো নিয়ামতের সাথে বহু মানুষ ধোঁকা বাজের মতো আচরণ করবে। নেয়ামত দু'টি হলো সুস্থতা ও অবসর।" (সহিহ বুখারি-৬৪১২)
আরেকটি হাদিসে এসেছে, "পাঁচটি জিনিসের পূর্বে পাঁচটি জিনিসকে গনিমত হিসেবে গ্রহণ করো। তার মধ্যে একটি হলো ব্যস্ততার পূর্বে অবসর।" মূলত অবসর বলে কোন শব্দ নেই। আমরা যে সময়টাকে অবসর বলি সেই সময়টা হলো কর্মশূন্য।
অর্থাৎ আমাদের মন কাজ পায়না বা আল্লাহর পথে ব্যস্ত থাকেনা সেটাকে আমরা অবসর বা কর্মশূন্য মনে করে থাকি। বাস্তবে যখন আমাদের নফস আল্লাহর কাজ করে না তখন সে শয়তানের কাজ করে।
একজন প্রসিদ্ধ আলেমের মতে নির্ঝঞ্ঝাট অবসর সময় এক মহান নিয়ামত। আল্লাহর যে বান্দা নফসের উপর প্রবৃত্তির দরজা উন্মুক্ত করে দিয়ে এ নিয়ামত কাজে লাগায় না এবং বাসনার তৃপ্তি মেটাতে মেটাতে শেষ করে দেয়, আল্লাহ তার হৃদয়ের নিয়ামতকে (চিত্তের প্রশান্তি) বিলুপ্ত করে দেন। তার অন্তরের নিষ্কলুষতা ছিনিয়ে নেন।
সফলতা অর্জনের সময়কে কাজে লাগানোর কুরআনিক নির্দেশনা
১.প্রতিযোগিতা করে নেক কাজ করা
"তোমরা প্রতিযোগিতা করে দৌড়ে এসো, তোমার রবের ক্ষমার দিকে আর সেই জান্নাতের দিকে, যার প্রশস্ততা আসমান ও জমিনের মত।" (হাদীদ: ২১)
এই প্রতিযোগিতায় অগ্রগামী হবার তাকিদ দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, "যে লোক ভয় পায়, সে ভোররাতেই যাত্রা শুরু করে। আর যে ভোররাত্রেই যাত্রা শুরু করে সে গন্তব্যে পৌঁছতে পারে।
জেনে রাখো, আল্লাহ তা'লার পণ্য খুবই দামি। জেনে রেখো আল্লাহ তা'য়ালার পণ্য হলো জান্নাত।" (তিরমিযি)
নেক কাজের গুরুত্ব দিয়ে আল্লাহ বলেছেন, "আর ওজন হবে সেদিন যথাযথ সত্য। যাদের নেক আমলের পাল্লা ভাড়ি হবে তারাই সফলকাম। আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারা নিজেদের ক্ষতিসাধনকরী।" (সূরা আরাফ: ৭-৮, সূরা মু'মিনুন: ১০২-১০৩)
২.জান-মাল ও নিজের সর্বস্ব দিয়ে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর পথে সময়কে বিনিয়োগ করা
"হে ঈমানদারগণ! সবরের পথ অবলম্বন করো। বাতিলপন্থীদের মোকাবিলায় দৃঢ়তা দেখাও,হকের হেফাযতে উঠেপড়ে লাগো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে।" (সূরা আলে ইমরান: ২০০)
সূরা তাওবা ১১১ আয়াতে আল্লাহর সাথে জান-মাল বেচাকেনার চুক্তির ব্যাপারে বলা হয়েছে, "কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে যে কেনা- বেচা করছো সেজন্য আনন্দ করো। এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।"
"অন্যদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম ও তাঁর ঈমানদার সাথীরা নিজেদের জান-মাল দিয়ে জিহাদ করেছেন। সমস্ত কল্যাণ এখন তাদেরই জন্য এবং তারাই সফলকাম। " (সূরা তাওবা: ৮৮)
৩.নামায কায়েম করা, নামাজের সংরক্ষণ করা, সময়মত আদায় করা এবং বেহুদা কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা
"নিঃসন্দেহে সফলকাম হয়েছে মুমিনরা যারা নিজেদের নামাজে বিনয়াবনত এবং ফাহেশা কাজ থেকে বিরত থাকে।" (সূরা মূমিনুন: ১-২)
"আর দেখো, নামাজ কায়েম করো দিনের দুপ্রান্তে এবং রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হবার পর। আসলে সৎকাজ অসৎকাজ কে দূর করে দেয়। এটি একটি স্মারক তাদের জন্য যারা আল্লাহকে স্মরণ রাখে।" (সূরা হুদ: ১১৪)
৪.পরকালীন পুরস্কারের আশায় দুনিয়ার জীবনের প্রতিটি সময়কে কাজে লাগানো
মৃত্যুর মাধ্যমে আল্লাহর দেওয়া সময় নামক নিয়ামতির উপর থেকে আমাদের অধিকার হারিয়ে যায়। তাই যে কাজ পরকালে মূল্যহীন তা থেকে বিরত থাকা। কোন প্রাণই আল্লাহর অনুমতি ছাড়া মরতে পারেনা।
মৃত্যুর সময়তো লেখা আছে। "যে ব্যক্তি দুনিয়াবী পুরস্কার লাভের আশায় কাজ করবে আমি তাদেরকে দুনিয়া থেকে দেবো আর যে পরকালীন পুরস্কার লাভের আশায় কাজ করবে সে পরকালে পুরস্কার পাবে। " (সুরা আলে ইমরান: ১৪৫)
৫.নফসের খায়েশকে দমন করা
মূলত নফসের প্ররোচনায় মানুষ অলাভজনক এবং পশুবৃত্তির কাজে সময় নষ্ট করে থাকে। তাই নফসকে বিশুদ্ধ করার চেষ্টা করে সময়কে লাভজনক কাজে লাগানো প্রয়োজন।
"নিঃসন্দেহে সফল হয়ে গেছে সেই ব্যক্তি যে নফসকে পরিশুদ্ধ করেছে।" ( সূরা শামস: ৯)
"নিশ্চয়ই নফস মন্দের দিকে প্ররোচনা দেয়।" (সূরা ইউনুস:৫৩)
৬.আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য সর্বদা অনুসন্ধান করা
"তারপর যখন নামাজ শেষ হয়ে যায়, তখন ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো এবং অধিক মাত্রায় আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো। আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে। " (সুরা জুমুআ)
"হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো, তার দরবারে নৈকট্য লাভের উপায় অনুসন্ধান করো এবং তার পথে প্রচেষ্টা ও সাধনা করো।সম্ভবত তোমরা সফলকাম হতে পারবে। " (সূরা মায়েদা:৩৫)
"তোমরা যখনই দেখবে তখন তাদেরকে রুকু সিজদা এবং আল্লাহর করুণা ও সন্তুষ্টি কামনায় তৎপর পাবে। " (সূরা ফাতহ: ২৯)
মু'মিন জীবনের সময় ব্যবস্থাপনা
মূলত একজন মু'মিন ব্যক্তির উদ্দেশ্য তার রবের সন্তোষ পাওয়া, দুনিয়ায় শান্তি ও পরকালের মর্যাদা পাওয়া। অনেক মু'মিন ব্যক্তি সময়কে কাজে লাগানোর গুরুত্ব উপলব্ধি করেন, সময়কে বিনিয়োগ করতে চান কিন্তু সঠিক কর্মনীতি বা ব্যবস্থাপনার অভাবে তাদের সময়গুলো বিক্ষিপ্তভাবে ব্যয় হয়।
সময়বিন্যাস কর্মনীতি
১.রাসুলুল্লাহ (সা.) হযরত ইব্রাহিম (আ.)- এর সহিফা থেকে বর্ণনা করে বলেন, একজন বিবেকবানের ৪টি সময় থাকবে।
ক.একটা সময় সে তার রবের কাছে চাওয়া পাওয়ার কথা বলবে।
খ.একটা সময় সে নিজেকে মূল্যায়ন করবে।
গ.একটা সময় আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে ভাববে।
ঘ.আর একটা সময় খাবার পানীয়ের জন্য খালি রাখবে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তার সাহাবিরা এ ৪টি ভাগে সময় ভাগ করে তাদের কর্তব্য গুলো প্রসারিত করেছেন।তারা দিনে অশ্বারোহী, রাতে দরবেশ হিসেবে আল্লার দরবারে ধরনা দিতেন।
দিনের সময়টুকু তারা রিযিক অন্বেষণ, দাওয়াতে দ্বীন ও অন্যান্য সামাজিক কাজে ব্যস্ত থাকতেন আর মাগরির থেকে এশা'র মধ্যে সমস্ত কাজ ও পারিবারিক সময়,দান শেষে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তেন যেন রাতের শেষভাগে দাঁড়িয়ে থাকা যায় আল্লাহর সামনে।
২.সময় আল্লাহর দেয়া নেয়ামত। আর প্রত্যেক নেয়ামত সম্পর্কে আল্লাহ পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব নিবেন। এই জবাবদিহিতার শংকা মনে জাগরুক রাখলে বেহুদা ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থেকে স্থায়িত্ব লাভ করা যায়, এমন কাজ করা সহজ হয়।
"এ ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের একটি সাময়িক সৌন্দর্য-শোভা মাত্র। আসলে তো স্থায়ীত্ব লাভকারী সৎ কাজগুলোই তোমার রবের কাছে ফলাফলের দিক দিয়ে উত্তম এবং এগুলোই উত্তম আশা-আকাঙ্ক্ষার সফল হবার মাধ্যম।" (সূরা কাহফ: ৪৬)
৩.ইবাদাত, নিজ শরীর ও আমাদের সাথে সংশ্লিষ্ট পরিবার-পরিজনের অধিকারের ব্যাপারে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। কোন একদিকে হেলে না পড়া।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "নিশ্চয়ই তোমার উপর রবের হক আছে। তোমার আত্মা ও পরিবার পরিজনের হক আছে। সুতরাং প্রত্যেক হকদাকে তার হক আদায় করে দাও।"
৪.ইবাদতের নির্ধারিত সময় কে প্রাধান্য দেওয়া এবং উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কাজ করা। ফরজ ইবাদতগুলো বিশেষত নামাজ ওয়াক্ত হওয়া মাত্রই আদায়ের চেষ্টা করা।
"নিশ্চয়ই নামাজ মুসলমানদের উপর ফরয, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।" ( সূরা নিসা : ১০০)
একইভাবে রোজা, হজ, জাকাত, নির্ধারিত সময়ে পালন করতে হবে।
৫.বরকত পূর্ণ সময় গুলো খুঁজে নেয়া এবং আমল করা।
ক)ভোরবেলা: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "হে আল্লাহ আমার উম্মতের ভোরবেলায় বরকত দাও।" (তিরমিযি)
একদিন ভোরে ফাতেমা (রা.) শুয়েছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, "মেয়ে! আপন রবের রিজিক বন্টনের সময় উপস্থিত থাকো।অলসদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।কেননা আল্লাহ তায়ালা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময়ে মানবজাতির রিজিক বন্টন করেন। "
এছাড়াও সূরা বনী ইসরাঈল বলা হয়েছে, "ফজরের সময় তেলাওয়াত করো, এটা পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।"
খ)শেষে তাআলার নৈকট্য তালাশ করা। সূরা যারিয়াতে এসেছে, "তারা রাতের সামান্য অংশই নিদ্রায় করতো, তারা শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনা করতো।" সূরা মুজ্জাম্মিল ও মুদ্দাসসির এ অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী ভাষায় শেষ রাতে সিজদা,তাহাজ্জুদ, ইস্তেগফার ও তিলাওয়াতের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে।
শেষ রাতে জেগে আল্লাহর দরবারে ধরনা দেওয়া নফসকে নিয়ন্ত্রণ করতে সারা দিনের শক্তি জোগায় । আবুল হাসান আলী তার বিশ্ব বিখ্যাত গ্রন্থে এভাবে লিখেছেন -
"যে ব্যক্তি ইলমের জন্য নির্জনতা অবলম্বন করে, একাকিত্ব তাকে আতঙ্কে ফেলে না, যে কিতাবের মাধ্যমে সন্ত্বনা গ্রহণ করে সে সর্বদা সান্ত্বনা লাভ করে। যাকে কোরআন তেলাওয়াত মুগ্ধ করে, বন্ধু-বান্ধবের বিচ্ছিন্নতা তাকে ব্যথিত করে না। "
শেষ রাতে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের কাছে আসেন এবং ঘোষণা করেন- "কে আছো ক্ষমাপ্রার্থী, আমি ক্ষমা করতে ইচ্ছুক, কে আছো সাহায্যপ্রার্থী।" (মুসলিম)
গ) রমজান মাসের প্রতিটি দিন ও রাত বিশেষত শেষ একটি বেজোড় রাতের প্রতিটি মুহূর্ত বেশী বেশী নেক আমল করা, বরকত পূর্ণ আমল বেশি বেশি করা যেমন- ইস্তেগফার, যিকির,দান,তাহাজ্জুদ তেলাওয়াত ও দোয়া করা।
এছাড়া জুমার দিন, দুই ঈদের দিন এবং দুই ঈদের আগের রাত। এগুলো ক্ষমা ও রিযক প্রধানের জন্য আল্লাহর পছন্দনীয় সময়।
ঘ) এছাড়াও শারীরিক অসুস্থতার সময়, সংকটপূর্ণ ও বিপদের সময় আসার পূর্বে ভালো সময় গুলোতে বেশি বেশি ভালো কাজ করা।হাদীসে এসেছে কেউ যদি চায় দুঃসময় আল্লাহ তার দোয়া কবুল করুন, সে যেন সুসময়ে বেশি বেশি আল্লাহকে ডাকে।
ঙ)যৌবনের কাজগুলোর মূল্যায়ন যেভাবে হয় বার্ধক্যের কাজগুলো সেই মর্যাদা পায় না। তাই যৌবনের শক্তি সামর্থ থাকা অবস্থায় কঠিন নেক আমলগুলো করার চেষ্টা করা।
৬.কোন কাজ পরবর্তী সময়ের জন্য ফেলে না রাখা।
আল্লাহর রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবীদের এভাবে প্রশিক্ষণ দিতেন যেন ব্যস্ততা আসার পূর্বে অবসরকে গনীমত হিসেবে গ্রহণ করেন,মৃত্যু আসার পূর্বে যৌবনকে, দারিদ্র্য আসার পূর্বে সচ্ছলতাকে বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনকে, রোগগ্রস্ত হওয়ার পূর্বে সুস্থতাকে।
তাই পরবর্তী সময় আরও কঠিন হতে পারে বা ব্যস্ততম হতে পারে এই ভাবনা নিয়ে আগেই কাজ করে ফেলার চেষ্টা করা।
রাসুলুল্লাহ এভাবে দোয়া করতেনঃ "হে আল্লাহ আমার জীবনের শেষ ভাগকে করো সর্বোত্তম, শেষ কর্মগুলো যেন হয় সবচেয়ে ভালো, সর্বোৎকৃষ্ট দিনটি যেন হয় তোমার সাথে সাক্ষাতের দিন। "
৭. যখনই অবসর হয় আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে উঠে পড়ে লাগতে হবে। সূরা আল ইনশিরাহ ৭ নং আয়াতে এভাবে আল্লাহ বলেছেন "যখনই অবসর পাও, ইবাদতের কঠোর পরিশ্রমে লেগে যাও।
হাদিসে কুদসীতে এসেছেঃ আল্লাহ বলেছেনঃ "হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি নিজের অবসর সময় তৈরি কর ও ইবাদতে মন দাও, তাহলে আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র্য ঘুচিয়ে দিব।
আর যদি তা না কর, তবে তোমার হাতকে ব্যস্ততায় ভরে দিবো। আর তোমার অভাব কখনোই দূর হবে না। মন যখন অবসর থাকেন তখন বেশি বেশি জিকিরের মাধ্যমে আমলনামা বাড়ি করা যায়।
হাদীসে এসেছেঃ দুটো বাক্যে আছে এমন যা মুখে উচ্চারণ সহজ কিন্তু দাড়িপাল্লায় ভারি। আল্লাহর নিকট খুব প্রিয় তা হলো- "সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম।"
৮.নিজের কাজের হিসাব নেওয়া, ইহতিসাব ও ইস্তেগফার করা। পবিত্র কোরআন এসেছে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, "আর সেদিন আমলনামা সামনে রেখে দেওয়া হবে সেসময় তোমরা দেখবে অপরাধীরা নিজেদের খাতায় যা লেখা আছে সেজন্য ভীত হচ্ছে এবং বলছে হায়!
আমাদের দুর্ভাগ্য, এটা কেমন খাতা আমাদের ছোট বড় এমন কোন কিছুই এখানে লেখা থেকে বাদ পড়েনি। " (সূরা কাহাফ- ৪৯)
যে ব্যক্তি সফল হতে চায় তাকে জীবন থাকতেই সেই আমলনামা জেনে নিতে হবে। তাই নিজ কাজের সময়ের হিসাব নিজেকে নিতে হবে। হযরত ওমর (রা.) বলেন, "তোমরা পরকালীন হিসাব-নিকাশের পূর্বে নিজেদের হিসাব নাও। তোমাদের কর্ম দ্বারা তোমাদের ওজন দেওয়ার পূর্বে নিজকর্মকে ওজন দিয়ে নাও।"
কাজেই প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যয় করতে হবে নিজের কাজের মূল্যায়ন করে। ভুল চিহ্নত করে, ইস্তেগফার করা এবং পরবর্তী দিনের পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য। একজন ক্ষুদ্র পুঁজির ব্যবসায়ীর মত নিজের আমল ও সময়ের চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হবে।
৯.পরবর্তী স্থায়ী জীবনে মর্যাদা ও বরকত পূর্ণ আমল করে যাওয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "আদম সন্তানের মৃত্যুর সাথে সাথে আমলনামা বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি বিষয় ছাড়া, সদাকায়ে জারিয়া, উপকৃত হওয়া যায় এমন জ্ঞান এবং সৎকর্মশীল সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।
তাই যে আমলগুলো কিয়ামত পর্যন্ত জারী থাকে সেসব আমল বেশি বেশি করতে হবে।
হাদীসে এসেছে যে, "বেহেস্তবাসীদের একটি আফসোস ছাড়া বেহেশতে আর কোনো মনোবেদনা থাকবে না। দুনিয়াতে যে সময়টা আল্লাহকে ভুলে থেকে কাটিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঐ অবহেলার জন্যই তারা আফসোস করতে থাকবে। "
জান্নাত তো চিরস্থায়ী বাসস্থানেরই নাম, যেখানে সামান্য দুঃখ-কষ্ট, অভাব পর্যন্ত থাকবে না। অথচ একটা বিষয়ে আফসোস থেকেই যাবে। আফসোসতো মনোবেদনারই সৃষ্টি করে।
এ দুঃখটুকু থেকেই যাবে। সকলের বেলায় তা হয়তো হবেনা; কিন্তু যাদের বেলায়ই হোক, এ বেদনাটুকুর অস্থিত্ব সত্য।
এ আফসোসের কারণ তালাশ করলে হাদিসের বিবরণ থেকে তা বোঝা যায়। আল্লাহর দিদারই জান্নাত এর সকল নেয়ামতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নিয়ামত বলে জান্নাতবাসীরা মনে করবে।
আল্লাহ তায়ালাকে দেখতে পাওয়ার চেয়ে বড় তৃপ্তি আর কোনোটাতেই তারা বোধ করবে না। সবাই সমান পরিমাণ সময় আল্লাহকে দেখতে পাবেনা। যে দুনিয়ার জীবনে আল্লাহকে যত বেশি স্মরণ করেছে সে ততো বেশি সময় আল্লাহকে দেখার সৌভাগ্য লাভ করবে।
তাই যারা কম সময় দেখার সুযোগ পাবে তারাই হয়তো ঐ রকম আফসোস করবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর বান্দার জন্য নয়নাভিরাম জান্নাত তৈরি করেছেন।তিনি চান কারা তাকে সর্বাবস্থায় সর্বোচ্চ ভালোবাসে তা জেনে নিতে। তাকে আমাদের অন্তরের ভালোবাসা প্রকাশের সবচেয়ে সুন্দর মাধ্যম হলো সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার।
এর মাধ্যমে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করতে পারি। আসুন, পবিত্র এই রমজান মাসে প্রতিটি বরকতপূর্ণ সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করি । অতীতের ঝরে যাওয়ার সময়গুলোর জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চাই এবং ভবিষ্যতে অর্থহীন পাপযুক্ত সময় থেকে পানাহ চেয়ে আল্লাহর স্মরণ ও তার ভালোবাসার ছায়ার নীচে আশ্রয় নেই।
আমাদের শরীর ও মনকে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর দিকে নিবিষ্ট করি এবং তাঁরই দেওয়া সময় তারই পথে কাজে লাগানোর দৃপ্ত শপথ করি । আল্লাহ আমাদের কবুল করুন।
You must be logged in to post a comment.