অনলাইনে আয় করে রুমানার সফলতার গল্প: রুমানা বি.এ পাশ। তাহারা তিন বোন দুই ভাই। তিনি সকলেরই বড়। ভাইবোন সকলেই অধ্যায়নরত। তাহার বাবা একজন সামান্য রিকসাচালক।
তার সামান্য আয়ে অত্যন্ত কষ্ট করে সন্তানদের পড়ালেখার পাশাপাশি ভরণ পোষণ চালিয়ে যাচ্ছে। রুমানা দেখতে সুন্দর হলেও গরীব বলে কোন ভাল পাত্রের সাথে তাহার বিয়ে হয়না।
অন্যদিকে পড়ালেখা থাকলেও কোন চাকুরীর সন্ধান মিলছেনা। তিনি তার বন্ধুর কাছে শুনেছে কম্পিউটার জানা থাকলে চাকুরীতে অগ্রাধিকার পাওয়া যাবে। এছাড়া অনলাইনেও ঘরে বসে চাকুরী করা যায়।
তাহার মামা সৌদি আরব থেকে একটি পনের হাজার টাকা মূল্যমানের এনড্রয়েট মোবাইল সেট পাঠিয়েছে।
এছাড়া ইউটিউব থেকে বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভিডিও দেখে অনলাইনে টাকা আয়ের মাধ্যম খোঁজে পেয়েছে।
অনেকগুলো সাইটের মধ্যে তিনি অনলাইন মার্কেটিং সাইট পছন্দ করেছে। তিনি অনলাইনে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানতে পেরেছে যে,
জেরিন ফ্যাশন হাউসে অনলাইনে পন্য বিক্রয়ের জন্য বিক্রয় প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে।
উক্ত পদে রুমানা তাহার পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত লিখে জেরিন ফ্যাশন হাউসের পরিচালক বরাবরে আবেদন পত্র পাটিয়ে দিলে কর্তৃপক্ষ তাহার আবেদন গ্রহণ পূর্বক রুমানার চাকুরী নিশ্চিত করে নিয়োগ পত্র পাটিয়েছে।
রুমানা নিয়োগ পত্র পেয়ে খুঁশিতে আত্মহারা। রুমানার সাথে জেরিন ফ্যাশন হাউস কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি হয়েছে যে,
রুমানা জেরিন হাউসের যাবতীয় পন্য পেইস বুক পেইসে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে অর্ডার নিতে পারলে, প্রতি পন্যের বিক্রয় মূল্যের উপর ২০% কমিশন রুমানার একাউন্টে জমা হয়ে যাবে।
চুক্তি অনুযায়ী রুমানা ঘরে বসে জেরিন ফ্যাশন হাউসের যাবতীয় পণ্য তার নিজস্ব পেইস বুকে বিজ্ঞাপন আকারে প্রচার চালু করে দিয়েছে।
ভোক্তারা বা ক্রেতাগন রুমানার পেইস বুকের দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনের কাপড়ের বিজ্ঞাপন দেখে অর্ডার অব্যাহত রেখেছে। ইহাতে রুমানার ১ম মাসে ২০,০০০/- টাকার কাপড় বিক্রি করে ৪০০০/- টাকা অর্জন করেছে।
২য় মাসে রুমানা ৫০,০০০/- টাকার কাপড় বিক্রয় করে ১০০০০/- টাকা আয় করেছে।
এইভাবে রুমানা অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করে করে করে পারিবারিক আর্থিক দৈন্যতা দুরীভূত করে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছে।
রুমানার টাকা দিয়ে ভাইবোনদের পড়ালেখার খরচের পাশাপাশি নিজেও আত্মনির্ভর হয়েছে।
রুমানার গুডওয়েল দেখে বিভিন্ন কোম্পানী তাহাকে আরও উচ্চতর বেতন স্কেলে চাকুরীর অপার পাঠাচ্ছে।
রায়হান ব্যাংকের একজন অফিসার। রুমানার অনলাইনের আয়ের টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে গিয়ে রায়হানের পরিচয়।
রায়হান রুমানার সাথে পরিচয়ের মাধ্যমে রুমানার সফলতার গল্প শুনে রায়হান মুগ্ধ হয়েছে।
রায়হান রুমানার সফলতার গল্প, লোকানো মিষ্টি হাসিতে নিজের অজান্তে ভালবেসে ফেলেছে।
তাই রুমানার সাথে রায়হান প্রতি দিন মোবাইলে কথা বলতে বলতে তাদের দুজনের মধ্যে চিরসাথী হওয়ার স্বপ্ন বেঁধেছে।
এভাবে দুই তিন যেতে না যেতেই রায়হানের পারিবারিক ভাবে রুমানার বাবাকে রুমানার বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। প্রস্তাবে রুমানার বাবা রাজি হলে উভয়ের মধ্যে বিয়ের দিন তারিখ ধার্য হয়।
সেই দিন ছিল শুক্রবার। বসন্তকালের মিষ্টি রোধের পড়ান্ত বিকেল হৈ চৈ মেরিজ পার্কে রুমানার সাথে রায়হানের একাকীত্ব জীবনের অবসান ঘটিয়ে যুগল জীবনের সুচনা হয়।
সেদিন রুমানার বন্ধু-বান্ধবীরা রুমানার দৈর্য্য, প্রচেষ্টা ও অনলাইনের টাকা আয়ের মাধ্যমে সফলতার কাহিনী শুনে ঈশ্বান্বীত হয়ে পড়েছে।
তাহারা রুমানার সাথে অনলাইনে টাকা আয়ের কাজ শুরু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।
পরিশেষে রুমানা ও রায়হানকে মালা বদল পূর্বক মিষ্টি মুখ করিয়ে সেদিনের মত বিদায় নিয়েছে।
You must be logged in to post a comment.