মহিলারা সাধারনত: সংসারের সব কাজ সুসম্পন্ন করার পর বাড়তি কিছুটা সময় পেয়ে যান। সে সময় হয় ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি নয়তো টিভি সিরিয়াল দেখে সময় কাটান। আর এই সময়টা কাটিয়ে তেমন কিছু অর্থনৈতিক সাশ্রয় হয় না। কিন্তু আজ আমি জানাবো কিভাবে ঐ সময়টাকে কাছে লাগিয়ে লেখালেখি করেও ঘরে বসেই ইনকাম করা যায়।
তাতে লেখালেখির মধ্য দিয়ে যেমন মনের খোরাক মিটবে তেমনি প্রচুর টাকা রোজগারের পথ খুলে যায়। তাই আজকের আলোচনায় লেখালেখির মাধ্যমে কিভিবে টাকা রোজগার করা যায় বা কিভাবে কোথায় লিখলে প্রচুর ইনকাম করা যাবে তার বিশদ আলোচনা করছি।
বন্ধুরা সর্বপ্রথম আপনাদের সুস্থতা ও শুভ কামনা করে লেখালেখি করে মহিলাদের আয়ের নানা সুযোগের কথা আলোচনা করবো। আমরা জানি যে রাঁধে সে চুল ও বাঁধে। তাই সংসারের মহিলারা যেমন স্বামী সংসার ছেলে মেয়েদের সামলে নিয়ে ঘর সাজাতে পারে তেমনি তিনবেলা রসনাতৃপ্তির যোগাড় দিয়ে সবার মন জয় করে রাখে।
মহিলাদের এই সহনশীলতার জন্য তারা প্রাচীন কাল থেকে এক সবার কাছে সমাদৃত হয়ে আসছেন। কাজের নিরিখে মেয়েরা পুরুষের থেকে অনেক বেশি স্পর্শকাতর। তারা একবার যে কাজে মন দেবেন সেই কাজ শেষ করেই ছাড়বেন। মেয়েদের এই শত কাজের মধ্যেও একটু সময় বাঁচিয়ে কিছু কিছু ওয়েব সাইডে লেখালেখি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ইতি পূর্বেই অনেক মহিলা আর্টিকেল রাইটার অনলাইনে টাকা ইনকামের জন্য বিভিন্ন সাইটে লেখা শুরু করেছেন। কিন্তু লেখার মান ভাল না হওয়ার জন্য তেমন সাম্মানিক পাচ্ছেন না বা ইনকাম করতে পারছেন না। আজ আপনাদের জানাবো ভালো লেখালেখির কিছু নিয়ম বা কৌশল।যা লেখিলেখির মানকে অনেক উন্নতি করতে পারবে এবং আপনি হয়ে যেতে পারেন এক স্বনামধন্য লেখিকা। তাহলে আসূন শুরু করা যাক লেখালেখির কৌশল বা লেখালেখি করার কিছু নিয়ম।
লেখালেখির নিয়ম বা কৌশল:-
লেখালেখির নিয়ম বা কৌশল না জানার জন্য এই অনলাইন যুগে অনেক লেখক লেখিকা মার খেয়ে যাই। আসল উদ্দেশ্য আমাদের সফল হয় না,বিরক্ত ও মনোক্ষুন্ন হয়ে অনেক মানুষ হাল ছেড়ে দেন, ভাবেন আমার দ্বারা কিচ্ছু হবে না। আমি বলবো এটা ভুল। কারন মানুষ পারে না এমন কাজ নেই।
বিশেষ করে আজকের এই উন্নত প্রযুক্তির যুগের মহিলারা কোন কাজে চ্যালেন্স নিতে পারবে না এমন হতে পারে না। তারা কঠোর মানসিকতা নিয়ে যেকোন কাজে প্রতিযোগিতামূলক চিন্তাধারা নিয়ে জয়ের নেশায় পাগল হয়ে থাকেন। তাই আমার বিশ্বাস মহিলারা লেখালেখি করে দারুণ একটা সুন্দর প্লাটফ্রম তৈরী করতে পারবেন আমার এই লেখা পড়ে। তাই জেনে নেওয়া যাক লেখালেখির নিয়ম বা কৌশল।
1. মানসিক প্রস্তুতি:-
লেখালেখির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কাজ করার ইচ্ছা। আর তার জন্য চাই অফুরন্ত মানসিকতা। নিজের মনে মনে দৃঢ় সংকল্প করতে হবে যে আমি যে কাজে হাত দেব তার সর্বশেষটা দেখে ছাড়বো।
তাহলে যদি আপনি লেখালেখি করতে চান তবে আপনাকে প্রথমেই মাথায় সেট করে নিতে হবে যে আমি এটা করেই কিছু ইনকাম করে সংসারের কাজে লাগাবো। তাই যেকোন কাজের আগে আপনার মানসিক প্রস্তুতি চাই।
2. ধৈর্য ও সাধনা:-
লেখালেখির ক্ষেত্রে সবার আগে যা প্রয়োজন তা হলো ধৈর্য আর ধৈর্যচ্যুত হলে আপনার সারা জীবনের সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যাবে। তখন আপনি হয়ে যাবেন পরাজিত নায়িকা। না তা হওয়া যাবেনা। প্রতিটা কাজে সাধনা চাই।
যে কাজ করি না কেন তার সম্পর্কে ভাবা চিন্তা করা,এবং কিভাবে কাজটা করলে আরো আরো সুন্দর করা যায় তার একটা রূপরেখা তৈরী করতে হবে। তবেই আপনি লেখালেখিতে দক্ষ হতে পারবেন।
3. পরিকল্পনা বা পূর্ব ধারণা:-
আমরা জানি সফলতার সঙ্গে কোন কাজ করতে হলে পূর্ব ধারণা বা পরিকল্পনা নিতে হয়। সেরকম লেখালেখির ক্ষেত্রেও একটা পরিকল্পনা বা ছক মনে মনে তৈরী করতে হবে। কিভাবে লেখা শুরু করবো ,বিষয়বস্তু কি হবে, কত সুন্দর করে একটা নামকরণ করা যায়।
সারাংশ অংশটিতে কি লিখবো এবং বিষয় বস্তু পর্যালোচনা করতে গিয়ে কি কি বিষয় তুলে ধরবো এবং কিভাবে। এবং শেষকথায় আমি কি লিখবো? এই সব পূর্ব ধারণা বা পরিকল্পনার ছক মনে মনে আগে তৈরী করে নিতে হবে।
4. বিষয়বস্তু নির্বাচন:-
সব থেকে ভাইটাল বিষয় হলো একটি সুন্দর বিষয়বস্তু নির্বাচন করা যে বিষয়ের উপর লেখালেখি করে আমরা প্রশংসা পাওয়ার সাথে সাথে ইনকামের রাস্তাটা খুঁজে পাই। এমন বিষয় লিখবো না যা পাঠক কোনভাবেই গ্রহন করবে না।
এমন বিষয় নির্বাচন করা উচিত পাঠক যেন ঐ বিষয়টি দেখার জন্য মুখিয়ে বসে আছে। অর্থাৎ বিষয়বস্তু এমন নির্বাচন করতে হবে যা প্রচুর মানুষের চাহিদা থাকবে। সহজে তারা তা গ্রহন করতে পারবে।
5. সরলীকরণ:-
আমরা যারা লেখক লেখিকা তাদের মনে রাখা উচিত যে আমাদের বিভিন্ন ধরনের পাঠক পাঠিকা রয়েছে। শিক্ষত অল্প শিক্ষিত আধা শিক্ষিত। তাই সবার পক্ষে কঠিন ভাষা কিংবা জটিল বাক্য পঠনের দ্বারা বিষয়বস্তু বুঝে নেওয়ার শক্তি নাও থাকতে পারে। তাই লেখনী হবে সরল সাদাসিধে ও পঠন উপযোগী। মানুষ লেখনী পড়ে যাতে বুঝতে পারে সেইভাবে লেখা দরকার।
6. সুসম্পর্কযুক্ত বাক্যগঠন:-
আমরা যারা লেখক লেখিকা। আমরা আমাদের মনের নানা কথা লেখনীর মধ্য দিয়ে প্রকাশ করি। তবে এ বিষয়টি সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যে একটি বাক্য লেখার পর পরবর্তী বাক্যটি যেন আগের বাক্যের সাথে সসম্পর্কযুক্ত হয়।
তা না হলে পঠনের ক্ষেত্রে পাঠক বৈষম্যতা অনুভব করবে এবং আপনার লেখা পাঠ করবার স্পৃহা হারিয়ে ফেলবে। যত ছোট ছোট বাক্য গঠন করবেন তত সৌন্দর্য বজায় থাকবে। এবং পাঠক তা গভীর আগ্রহের সঙ্গে পাঠ করবে।
7. পর্যায়ক্রমিক ধারা বজায় রাখা:-
যেকোন লেখনীর ক্ষেত্রে আমাদের একের পর এক পর্যায়ক্রমিক ধারাকে বজায় রেখে কাজ করতে হবে। কারন একটা স্তরের সঙ্গে আর একটা স্তরের একটা কো-রিলেশন থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
না হলে লেখার ছন্দপতন ঘটবে আর সে কারনে পাঠক উন্মুক্ত হয়ে পঠনে মনোযোগী হবে না। তাই একটা প্যারার সঙ্গে আর একটা প্যারার দারুন একটা সম্পর্কযুক্ত হওয়া চাই। তবে লেখার সৌন্দর্য বাড়বে।
8. উপসংহার বা শেষ কথা:-
উপসংহারে এমন সুন্দর বার্তা দেবেন যাতে পাঠক পরবর্তীকালে আপনার লেখা পাঠে মনোযোগী হয় এবং আকর্ষিত হয়। তাই মনযোগ সহকারে শেষ কথার মাধ্যমে আপনার সুন্দর মোলায়েম একটা বার্তা দিয়ে শেষ করবেন।
বিভিন্ন মাধ্যমে লেখালেখি করে ইনকাম:-
ওয়েব সাইডে বিভিন্ন সাইড রয়েছে যেখানে মহিলারা প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারে। আমি আমার আগেল লেখায় সেই বিষয় গুলো তুলে ধরেছি আপনারা পারলে দেখে নেবেন। যারা লেখালেখিতে ইচ্ছুক তারা গুগল সার্চ করে অনেক প্লাটফর্ম পেয়ে যাবেন। ওখানে আপনারা রেজিস্ট্রিকরণ করে লেখালেখি করে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
শেষকথা:-
এত সময় বন্ধুরা ভাল লেখনীর নানা পদ্ধতি কৌশল আলোচনা করলাম, আপনারা নিশ্চয়ই উপকৃত হবেন এবং লেখালেখির জন্য মনে জোর পাবেন উদ্দম পাবেন। যারা লেখা ছেড়ে দেবেন ভাবছিলেন আশা করি আমার এই লেখা পড়ে তারা নতুন করে আবার জেগে উঠবেন এবং নতুন উদ্দমে লেখা শুরু করবেন।
ধন্যবাদ।
You must be logged in to post a comment.