কেয়ারটেকার-০৪ মোহাম্মদ শামীওম বাছির
অবশেষে সোলাইমান আঙ্কেল আমাদের নিয়ে গিয়ে কামরুল চাচাকে পুলিশের হেফাজত থেকে মুক্ত করে।সকল ধরনের অভিযোগ তুলে নেয়।
কামরুল চাচার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে।কামরুল চাচা সোলায়মান সাহেব এর হাত ধরে বলেন আপনি ভুল বুজতে পেরেছেন সেটাই আল্লাহ পাকের নেয়ামত।আল্লাহ যেন সঠিক পথ প্রদর্শন করে।
সোলায়মান সাহেব কান্নার স্বরে জড়িয়ে ধরেন।বার বার ক্ষমা চান।সবাই গাড়ীতে উঠে যার যার বাসায় চলে যান।সামী আজ খুব খুশী। কামরুল চাচাকে কাছে পেয়ে তার আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। নিজ থেকে আজ শৃঙ্খলভাবে পড়তে বসেছে।যটা
তার পরিবারকে অবাক করেছে। সামী কখনো পড়তে বসে না। সারাদিন পাবজি ফ্রি ফায়ারে ব্যস্ত থাকতো এক নিমিষেই তার পরিবর্তন সবাইকে অবাক করবে বৈকি!
রাতের বেলায় সোলায়মান সাহেব একা একা সবার আড়ালে গিয়ে খোলা আকাশের নিচে তাকিয়ে চিন্তা করতে থাকেন!আর আফসোস করছেন! এতদিন আমি কিসের আন্দোলন করলাম?
আমার এত বন্ধু বান্ধব তারা কি আমাকে দেখে ছি ছি করবে না?
পৃথিবী থেকে ইসলাম কে মুছে দেওয়ার প্রচেষ্টায় আমি লড়াকু সৈনিক! আজ আমার কি হলো?
এই কিছু ঠুনকো ছেলে আমাকে নিমিষেই ভুল প্রমান করে দিলো?
আসলেই কি আল্লাহ আছে?
আল্লাহ দেখতে কেমন?
তার ব্যাপারে তো আমি অজ্ঞ?
আমার এতদিনের অহংকার চূর্ণ হয়ে গেলো?
সামান্য অজপাড়াগাঁ গ্রামের কুরআন মুখস্থ করা লোক এর নিকট আমাকে শিখতে হবে?
না আজ আমাকে জানতেই হবে।
আমি সঠিক না ভুল!
এভাবেই অনেকটা সময় কেটে গেলো।
রাতে ছাঁদ তালা দেওয়ার জন্য কামরুল চাচা উপরে এসে দেখে সোলায়মান সাহেব একাকী দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে?
কামরুল চাচা সালাম দিলেন আসসালামু আলাইকুম স্যার।
সোলায়মান সাহেব চমকে উঠলেন!
থতমত খেয়ে সালামের জবাব দিলেন।এবং জিজ্ঞেস করলেন কামরুল সাহেব আপনি কখন এলেন?
কামরুল বললেন স্যার এইতো আনি মাত্র এলাম ছাদ তালা দেওয়ার জন্য।
এসে দেখি আপনি ছাঁদে আছেন।
সোলাইমানঃ ওহ আচ্ছা। চলো যাই।
( এই বলে সোলায়মান সাহেব ছাদ থেকে চলে যাচ্ছে। কামরুল চাচা তালা দিলো।সোলায়মান সিঁড়িতে গিয়ে অপেক্ষা করছে)
কামরুলঃ স্যার আপনার কি শরীর খারাপ?
সোলায়মানঃ না কামরুল। আমি ভালো আছি। আচ্ছা কামরুল সাহেব আপনারা যে বিশ্বাস করেন আল্লাহ আছে?
সে কে? তার পরিচয় কি? আমরা তাকে দেখছি না কেন?
অন্য ধর্মে যে বহু ঈশ্বরে বিশ্বাস করে কিংবা ত্রি ত্বত্ত্বে বিশ্বাস করে ইসলাম ও সেই বিশ্বাস করে?
তিনি কি ঘুমান?
তিনি কি খাবার খায়?
কামরুল চাচা এবার সূরা এখলাস পাঠ করলো এবং তার অর্থ বলল " বল, আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন।তার কোন শরীক নাই।
তার কোন স্ত্রী, সন্তান, নাই। তিনি অবিনশ্বর। "
তারপর আরো বলেন " আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক।তাকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না, নিদ্ৰাও নয়। আসমানসমূহে যা রয়েছে ও যমীনে যা রয়েছে সবই তার।
কে সে, যে তার অনুমতি ব্যতীত তার কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সামনে ও পিছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন।আর যা তিনি ইচ্ছে করেন তা ছাড়া তার জ্ঞানের কোন কিছুকেই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না।
তার কুরসী আসমানসমূহ ও যমীনকে পরিব্যাপ্ত করে আছে। আর এ দু’টোর রক্ষণাবেক্ষণ তার জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ সুমহান। ( সূরা আল বাকারা -২৫৫)
সোলেমানঃ ইসলাম তাহলে এক আল্লাহ এ বিশ্বাসী। তুমি অতি উত্তম কথাগুলো তুলে ধরেছো।এগুলো কি তোমাদের গ্রন্থে লেখা আছে নাকি নিজ থেকে বলেছো?
কামরুলঃ না আল্লাহর শপথ! আমি নিজ থেকে একটি কথা ও বলি নাই। পবিত্র কুরআনে যা আছে আমি তাই আপনার সামনে তুলে ধরেছি।
সোলাইমানঃ অতি উত্তম কথা!!.আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমাতে যাও।
কামরুল সালাম দিয়ে বিদায় জানালো।
সোলাইমান সাহেব এর ঘুম আসে না কামরুল সাহেব এর বলা বানীগুলো বার বার কানে বাজে!!
মন টা কেমন জানি ছটফট করে?
You must be logged in to post a comment.