কেয়ারটেকার-২

কেয়ারটেকার = পর্বঃ ০২

মোহাম্মদ শামীওম বাছির 

সেদিনের ঘটনার পর সবাই সবার সাথে ভাব বিনিময় হলো।মুরুব্বি চাচার নাম ও জানা হলো।নাম তার কামরুল হাসান। বাড়ী দিনাজপুর। ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত।

গ্রামের মক্তবে শিক্ষাদান করতেন।কিন্তু অভাবের তাড়নায় শহরে এসেছেন। পাশের গলিতে একটা বাড়ীর কেয়ারটেকার এর দায়িত্ব নিয়েছেন। মালিকের বাজার করতে এই পথে এসেছিলেন।

আর ছোট্ট ছেলেটির নাম আহসান সামী।বাবা মা দু'জনে চাকুরীজীবি। তার দেখাশোনা করেন বাসার কাজের বুয়া।একধরনের অনাদর অবহেলায় বড় হচ্ছেন।

খারাপ বন্ধুদের সঙ্গ পেয়ে এধরণের কাজ করছেন।আজ থেকে সিগারেট  খাবে না বলে শপথ করেছেন।আহসান সামী কিছুক্ষণ আগে কামরুল চাচাকে গালী গালাজ করলেও  এখন তাদের মধ্যে মহব্বত তৈরি হয়েছে।

দুজনে মোবাইল নাম্বার আদান প্রদান করেছে। আমাদেরগুলো ও দিয়েছি।কর্ম ব্যস্ততায় আমরা একে অপরকে বিদায় দিয়েছি।আহসান সামী বাসায় যায়।কিছুদিন হলো তাদের বাসার কেয়ারটেকার মারা গিয়েছে। একজন কেয়ারটেকার প্রয়োজন।তার বাবা কেয়ারটেকার খোজছে। সামী কখনো তার বাবার সাথে মন খোলে কথা বলে না।

আজ সে  তার বাবাকে বলে আমার পরিচিত একজন লোক আছে ওনাকে রাখলে ভালো হয়।যিনি অনেক ভালো মানুষ। পাশের গলিতে চাকুরী করেন।আপনি চাইলে ওনাকে আমাদের বাসায় রাখতে পারেন।

সামীর কথা শুনে তার বাবা বিস্মৃত হলেন ছেলের কথার কোন উত্তর দিলো না।পরের দিন সকালে  সামীর বাবা সামী থেকে কামরুল চাচার ঠিকানা সংগ্রহ করে তার মালিকের সাথে কথা বলেন।কামরুল চাচার মালিকের ও এত লোক লাগে না।কিন্তু লোক লজ্জায় কামরুল চাচাকে ছাটাই করতে পারছে না।মালিকটি খুশিই হলো।

কথা হলো আগামীকাল থেকে সামীদের বাড়ীতো কেয়ারটেকার হিসাবে দায়িত্ব পালন করবে।কামরুল চাচা জয়েন করলো।ঠিকঠাক কাজ করছে।সামী স্কুল শেষে সারাক্ষণ  কামরুল চাচার নিকট বসে থাকে।তার থেকে জ্ঞানের সুধা পান করে।

বিভিন্ন গল্প কাহিনি শুনে।ভালোই সময় যাচ্ছে। কামরুল চাচা একদিন বললেন প্রত্যেক মুসলমান এর উপর দ্বীনি শিক্ষা গ্রহন করা ফরজ।তোমার উচিৎ দ্বীন শিক্ষা করা।

আহসান সামী বললো আমি আপনার কাছে দ্বীন শিখতে চাই। কামরুল চাচা তৎক্ষনাৎ বলেনঃ সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ বলেন তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে ইলম দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন বহুগুণ। -সূরা মুজাদালা (৫৮) : ১১

আহসান সামী বলে আমি সেই মর্যাদা লাভ করতে চাই। 

কামরুল চাচা বলেন "যে ব্যক্তি ইলম শিক্ষার জন্য কোনো পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তার জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। -(সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৬৯৯")

আহসান সামী বলে উঠলো  "অ মাই গড"আমি এই সুযোগ লুফে নিতে চাই। 

কামরুল চাচা তার কথা শুনে বুঝতে পারলেন ধর্মীয় জ্ঞান না থাকায় কোথায় কি বলতে হবে জানা নাই। কামরুল চাচা মনে মনে পণ করল এই ছেলেকে আমি দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করবো ইনশাআল্লাহ।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

লেখক মোঃ শামীওম বাছির (শামীম) ২০০১ সালের ১২ ই এপ্রিল কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার থানার ফতেহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মোঃ গিয়াসউদ্দিন দীর্ঘদিন যাবত বাহরাইনে প্রবাসজীবন যাপন করছেন।মা মনোয়ারা বেগম একজন গৃহিনী।দুই ভাই তিন বোন রয়েছে। তিনি ২০১২ সালে ফতেহাবাদ মোকামবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করেন।অতঃপর ২০১৮ সালে ফতেহাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করেন।অতঃপর কুমিল্লা মডেল কলেজে একবছর পড়াশোনা করেন।বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সৈনিক হিসেবে ২০১৯ সালে চাকুরীতে জয়েন করেন।২০২০ সালে পুনরায় ফতেহাবাদ নায়েবআলী কলেজে ভর্তি হয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করেন।বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অফ স্কলারস এ বিএসসি ইন ইলেকট্ররাল ইলেকট্রনিকস ইন্জিনিয়ারিং এ অধ্যয়নরত আছেন।তিনি একাধারে গল্প,নাটক,কবিতা লেখালেখি করে থাকেন।এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, এক টাকায় স্বপ্ন পূরণ ফাউন্ডেশন, ইউনাইটেড ফতেহাবাদ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা।তিনি দেশের গণমানুষের জন্য দীর্ঘদিন যাবত সেবা করে আসছেন