ব্লু-ইকোনমিঃবিশ্বঅর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ও এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন।

সমুদ্রের বিশাল জলরাশী ও এর অভ্যন্তরীণ সম্পদকে কাজে লাগানোর অর্থনীতিই হলো ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি। মূলত সমুদ্রের পানি নীল বর্ণের।

তাই এধরণের অর্থনীতিকে সুনীল অর্থনীতি বলা হয়েছে। সমুদ্র থেকে আহরিত সব ধরনের সম্পদও এর আওতায় পড়বে। সহজ কথায় ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি হচ্ছে সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতি।

সুনীল অর্থনীতির মূল লক্ষ্য হলো টেকসই ও মজবুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সমুদ্র ও এর অভ্যন্তরীণ সম্পদের ব্যাবহার।

এর আরও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা যায়, বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ,কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারত্ব দূরীকরণ, সামাজিক পুজি বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও পরিবেশে সঞ্চয় বিনিয়োগ সৃষ্টি ও ভারসাম্য তৈরী। 

 

বেলজিয়ামের অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক গুন্টার পাউলি সমুদ্রনির্ভর টেকসই ও পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ অর্থনীতির রূপরেখা তৈরি করেন ও এর মডেল হিসেবে সুনীল অর্থনীতির ধারণা দেন।

বিশ্বব্যাংকের মতে  ব্লু-ইকোনমি  বা সুনীল অর্থনীতি হলো,বিশ্বঅর্থনৈতিক  প্রবৃদ্ধি, উন্নততর জীবিকার সংস্থান ও কাজের লক্ষ্যে সামুদ্রিক পরিবেশের উন্নয়ন। 

আর এই সামুদ্রিক পরিবেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা, গবেষণা এবং তার রিপোর্ট ও পরিসংখ্যান উপস্থাপন করাসহ অনেক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

যার মধ্যে ২০১২ সালে রিও ডিজেনিরো,ব্রাজিলে টেকসই উন্নয়ন শীর্ষক জাতিসংঘ সম্মেলন " রিও+২০"

এই প্রক্রিয়ায় বিশ্বের সামুদ্রিক এলাকাসমূহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। 

জাতিসংঘের ২০১৫ এর মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (MDG) পরবর্তী টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে সুনীল অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। 

অর্থাৎ বিগত বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক যতো সম্মেলন হয়েছে তার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিলো সুনীল অর্থনীতি। 

এছাড়াও " সমুদ্র বিষয়ক এশীয় সম্মেলন ",২০১৩ সালে বার্লিতে অনুষ্ঠিত " খাদ্য নিরাপত্তা ও ব্লু-গ্রোথ " ইত্যাদি সম্মেলনের নামও উল্লেখ করা যায়। 

বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থাসমূহ,যেমন - "জাতিসংঘের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচী (UNEP), অর্থনৈতিক সহায়তা ও উন্নয়ন সংস্থা (OECD), বিশ্বব্যাংক (WB),ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (EU)"সহ 

অনেক সংস্থার উন্নয়নের কৌশলের মূলে রয়েছে ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি। 

রিপোর্ট অনুযায়ী সুনীল অর্থনীতির আনুমানিক সম্ভাব্য বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হলো -

উপকূলীয় পর্যটনের ২গুণ, শিপিংয়ের ৪গুণ, তেল ও গ্যাসের ২গুণ, মৎস্যচাষের ২গুণ, উপকূলীয় বায়ুর ৪০গুণ, জলের মধ্যে গাছপালা উৎপাদন ও বংশবিস্তার প্রচেষ্টার ২গুণ, এবং সমুদ্রতলে সম্পদের ১০ হাজার গুণ বা তারও বেশি। 

এছাড়াও ম্যানগ্রোভ ও অনান্য গাছপালা সমুদ্রের আবাসস্থলগুলো জীবাশ্ম-জ্বালানি থেকে অতিরিক্ত নির্গত CO2

শোষণ করবে ও উপকূল অঞ্চল বন্যা এবং ঝড় থেকে রক্ষা করবে। 

বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতির ভূমিকা : 

অস্ট্রেলিয়ার সামুদ্রিক উৎকর্ষ সাধন ও পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৪৭.২ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার আয় করে। 

যা তাদের মোট জিডিপির প্রায় ৩% এরও বেশি। তাই তারা ২০১৫-২০২৫ " ব্লু-ইকোনমিক দশক" পরিকল্পনা করেছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ তাদের অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতির অবদান হবে প্রায় ১০০ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার। 

আবার, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সুনীল অর্থনীতির মাধ্যমে বাৎসরিক গ্রোস মূল্য সংযোজন প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ইউরো ও ৩ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে।

অন্যদিকে, আয়ারল্যান্ডের বাৎসরিক গ্রোস মূল্য সংযোজন ছিলো প্রায় ৩.৩৭ বিলিয়ন ইউরো যা তাদের মোট জিডিপির প্রায় ১.৭%

মরিশাসের ২০১২-২০১৪ পর্যন্ত সময়ে জিডিপিতে ব্লু ইকোনমি  বা সুনীল অর্থনীতির ভূমিকা ছিলো ১০%।২০১৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছিলো ৩৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা মোট জিডিপির প্রায় ২% এবং ৩ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। 

সুনীল অর্থনীতির প্রধান উপাদানসমূহের বর্ণনা  ও বিশ্লেষণ:

এই অর্থনীতির কিছু উপাদান আছে যেগুলোর নিজস্ব তথ্য-উপাত্ত, পরিমাণ ও পরিসংখ্যান ইত্যাদি "সুনীল অর্থনীতি" মূল শিরোনামের ভেতর উপস্থাপন করা হয়। এখানে আমরা উপাদানসমূহের তথ্য ও পরিসংখ্যান এবং বিশ্লেষণ সম্পর্কে জানবো -

1.সামুদ্রিক উদ্ভিজ্জাত খাদ্য:

আজকাল গবেষকরা "সুপার ফুডের " ধারণা দিয়ে থাকেন। মূলত সামুদ্রিক শৈবাল বা শ্যাওলা ও অন্যান্য গোত্রীয় উদ্ভিদ থেকে এই খাবার তৈরি করা হয়। 

বিশ্বের ৮০০ কোটি মানুষের মধ্যে ৪৩০ কোটি মানুষের প্রোটিন চাহিদার ১৫% যোগান দেয় এই সামুদ্রিক পরিবেশের মাছ ও উদ্ভিজ্জাত খাবার।তবে আপনি যে সরাসরি সমুদ্র বা পুকুর থেকে শ্যাওলা তুলে খাবেন ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। 

বরং এটি আপনার কাছে পৌছাবে সবুজ কাপ কেক বা স্মুদি হিসেবে।যেখানে অবশ্যই ডিপ ওশান ব্লু শেড থাকবে। 

তবে মনে রাখতে হবে, এসব কেবল তখনই ঘটবে যখন বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ৮০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। (উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৫ই নভেম্বর বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে)। 

প্রশ্ন জাগতে পারে,  ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির সাথে এই ক্ষুদ্র  শ্যাওলার সম্পর্ক কি?বা শ্যাওলা বাড়ন্ত জনসংখ্যার খাবার  জোগানের ব্যাপারে কতোটুকু ভূমিকা রাখতে পারে?অথবা, এটি একদম ভিন্ন ধরনের একটি খাদ্য ফ্যাশনে পরিনত হবে কিনা?  ইত্যাদি 

তবে উত্তর প্রদানের আগে কিছু সামুদ্রিক শ্যাওলার সাথে পরিচিত হওয়া যাক-

i.মাইক্রো অ্যালজি 

ii.সায়ানো ব্যাকটেরিয়া 

এই দুই ধরনের শৈবাল আসলে জলজ উদ্ভিদ ও এক ধরনের শ্যাওলা। মাইক্রো অ্যালজি এককোষী ও তারা লবনাক্ত বা পরিস্কার পানিতে জন্মে এবং সূর্যের আলো দিয়ে সালেকসংশ্লেষনের মাধ্যমে  শক্তি সঞ্চয় করে। 

অন্যদিকে, সায়ানো ব্যাকটেরিয়াও সবুজ জলজ উদ্ভিদ ও এরাও সূর্যের আলো দিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে। বিশ্বজুড়ে মাইক্রো অ্যালজি বা জলজ উদ্ভিদগুলোর বহু প্রজাতি আছে। তার মধ্যে ক্লোরেলা ও স্পিরুলিনা উৎপাদন ও খাদ্যে ব্যবহার করা হয়। 

উল্লেখ্য,  ব্লু-ইকোনমি র ক্ষেত্রে  স্পিরুলিনা ট্যাবলেট ও পাউডার হিসেবে এবং ক্লোরেলা ভিটামিন, মিনারেল, আয়রন ও প্রোটিন সহকারে বাজারজাত করা হয়।

লন্ডনের প্যাডিং টাউনের কাছে ইয়েটাউনের কিচেনে স্পিরুলিনা ও ক্লোরেলা রান্নার কাজে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে  ব্যাবহার করা হয়। 

ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ল্যান্ট সায়েন্সের প্রফেসর অ্যালিসন স্মিথ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অ্যালজি বা জলজ উদ্ভিদ বিষয়ক বিজ্ঞানী। মানুষ আগে থেকে কিভাবে শ্যাওলা ব্যবহার করত সে সম্পর্কে তিনি  বলেন -

"মানুষ দীর্ঘদিন ধরে নীল শ্যাওলা খাচ্ছে। কয়েকশত বছর আগে থেকে দক্ষিণ আমেরিকার অধিবাসীরা সামুদ্রিক শৈবাল সংগ্রহ ও খাদ্যে সংযোজন করতেন। "

এই মুহূর্তে অল্প পরিসরে খাদ্যে সংযোজন করা হলেও এর একটি স্বাস্থ্যগত কৌশল আছে। অ্যান্ড্রু স্পাইসার সিইও অফ অ্যালুজেনুইটি ক্লোরেলা ভ্যালগারিস ডিমের বিকল্প হিসেবে ব্যাবহার করতে চান ;বিশেষ করে কেক ও পাস্তায়।

স্পিরুলিনা ব্যাবহার করা যেতে পারে ম্যায়োনিজের পরিবর্তে, কারণ এটি অনেকটা ডিমের কুসুমের মতো। 

স্পিরুলিনা ও ক্লোরেলায় উচ্চমাত্রার প্রোটিন আছে। পুষ্টিবীদ রিয়ানন লাম্বার্ট বলেছেন -

"স্পিরুলিনায় ৫৫%-৭০% পর্যন্ত প্রোটিন থাকতে পারে। এটার উদ্ভিদভিত্তিক খাবারের চেয়ে ভালো অ্যামাইনো এসিড প্রোফাইল আছে। আবার, জলজ উদ্ভিদে ওমেগা-৩ আছে যা মাছের চেয়ে সহজলভ্য, এতে আছে ভিটামিন বি-১২ যা মেটাবলিজম ও আমাদের নার্ভাসসিস্টেমের জন্য জরুরি। 

তবে এগুলোর কিছু নেতিবাচক দিক আছে যেমন -

ঘ্রাণ একটু অন্য টাইপের হয়,আবার এগুলোতে বিদ্যমান পুষ্টিগুণ মানুষের শরীরে ঠিকমতো কাজ করে কি-না ইত্যাদি এখনো গবেষণা পর্যায়ে আছে। 

তবে এর সামান্য কিছু নেতিবাচক দিক থাকলেও ইতিবাচক দিক বেশি তাই একে  ব্লু-ইকোনমি র অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

প্রথমত, জনসংখ্যা বাড়ছে আর কৃষিজমি কমছে। তাই উৎপাদন বাড়াতে নতুন দিক উন্মোচন করতে হবে। প্রোটিনের অন্যান্য উৎসের মতো জলজ উদ্ভিদের জন্য বেশি কৃষিজমির দরকার হয়না। 

এগুলো সব জায়গায় হতে পারে, সমুদ্র, লেক,পুকুর, নদী ইত্যাদি। 

 2.মৎস্যশিল্প 

আগেই বলেছি বিশ্বের প্রায় ৮০০ কোটি মানুষের মধ্যে ৪৩০ কোটি মানুষের প্রোটিন চাহিদার ১৫% পূর্ণ করে সমুদ্রের বিশাল জলরাশীর মাছ,বিভিন্ন সামুদ্রিক উদ্ভিদ ও জীবজন্তু। 

রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৮ সালে বৈশ্বিক মাছ রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৫ হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার,যা পরবর্তীতে বেড়েই চলেছে। 

একটি গবেষনায় বলা হয়েছে ২০২২-২০২৭ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে মৎস্যসম্পদের বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারিত হবে বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি  ৪.৮ শতাংশ হারে।

বর্তমান মৎস্যসম্পদের শিল্পের বাজার প্রায় ১৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।  ব্লু-ইকোনমির বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ফিশিং ভেসেল আছে ৪৬ লাখ।

FAO এর রিপোর্ট অনুযায়ী মৎস্য উৎপাদনে ৩৫ % অংশীদারীত্ব নিয়ে বিশ্বে চীন শীর্ষস্থানে আছে। এশিয়ার অন্যান্য দেশে ৩৪%,ইউরোপ ১০%,আফ্রিকা ৭%,এবং ওশানিয়া ১%।

গত কয়েক বছরে এশিয়া -প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মাছ উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। বৈশ্বিক মাছ উৎপাদন এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৪০%।২০২১ সালে বাজার অংশীদারত্বের শীর্ষস্থানে ছিলো এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল।

এশিয়ার অনেক দেশেরই  মৎস্য রপ্তানি প্রতিবছর ৫০ কোটি মার্কিন ডলার হয়।

3.পর্যটনশিল্প 

ভ্রমণ ও পর্যটন কাউন্সিল (WTTC) এর তথ্যানুযায়ী বিশ্বঅর্থনীতিতে  প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে এই শিল্পের অবদান ৮.৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। 

২০১৯ সালে  পর্যটন শিল্প  বিশ্ব অর্থনীতিতে অবদান রাখে প্রায় ২.৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বিশ্বঅর্থনীতির মোট জিডিপির ১০.৩%। 

ব্লু-ইকোনমি' র ডকুমেন্টস গুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৫০ সালে পৃথিবীতে পর্যটকের সংখ্যা ছিল প্রায় ২৫ মিলিয়ন। ২০১৬তে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৩৫ মিলিয়ন।

প্রতিবছর ২৭শে সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পর্যটন দিবস পালিত হয়।জাতিসংঘের অধিনস্ত বিশ্ব পর্যটন সংস্থার তত্বাবধানে ১৯৮০ সাল থেকে সকল সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে দিনটি  পালিত হয়।

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দেশের অর্থনীতিতে পর্যটন শিল্প :

i.মালদ্বীপ:

পর্যটন শিল্প মালদ্বীপের সবচেয়ে বড়ো শিল্প। যা জিডিপির ২৮% ও বৈদেশিক বিনিময় প্রাপ্তির ৬০% এরও বেশি। এটি ১৯৮৯ এর দশকে মাথাপিছু বর্তমান জিডিপি ২৬৫% এবং ১৯৯০এর দশকে আরও ১১৫% বৃদ্ধি করে। 

আমদানি কর ও পর্যটন কর থেকে সরকার ৯০% পর্যন্ত কর রাজস্ব আদায় করে। 

ii.চীন:

চীন বিশ্বের পর্যটন ব্যাবস্থায় চতুর্থ অবস্থানে আছে। ২০০৭ সালে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি বিদেশি পর্যটক এখানে বেড়াতে এসেছিলো। ২০০৯ সালে পর্যটন খাতে প্রায় ১৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। 

বিশ্ব পর্যটন সংস্থার মতে ২০২৩ সালের মধ্যে চীনের অভ্যন্তরীণ পর্যটন হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো এবং চীনারা হবে চতুর্থ বিদেশ ভ্রমনকারী জাতি। 

iii.ইন্দনেশিয়া:    

 ব্লু-ইকোনমির  রিপোর্টদাতাদের ভাষ্যমতে, ২০১৭ সালে  সারা বিশ্বের ভেতর ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন শিল্প ছিলো ২০তম স্থানে। এবং ৯তম দ্রুত বর্ধনশীল পর্যটন খাত হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। 

দ্রুত বর্ধনশীল পর্যটন খাত হিসেবে ইন্দোনেশিয়া এশিয়ার মধ্যে ৩য় এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১ম স্থানে আছে। ২০১৯ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ১৬.১০ মিলিয়ন পর্যটক এসেছে। যা ২০১৮ সালের তুলনায় ১.৯ % বেশি। 

iv.অস্ট্রেলিয়া : পর্যটন অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পর্যটন শিল্প মোট জিডিপির ৩.০% প্রতিনিধিত্ব করে  ও জাতীয় অর্থনীতিতে ৪৭.৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার অবদান রাখে। 

২০১৯ সালে রেকর্ড অবদান ছিলো ৪৪.৬ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার। তাদের ঘরোয়া পর্যটন, পর্যটন খাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা মোট পর্যটন জিডিপির ৭৩% প্রতিনিধিত্ব করে।

২০১৫ সালে ৭.৪ মিলিয়ন পর্যটক রেকর্ড হয়েছিল।যা পরবর্তীতে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত ৮.৬ মিলিয়ন বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ৩%।

পর্যটন ২০১৪-১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় তখন ৫৮০৮০০ জন লোক নিযুক্ত করেছে যা কর্মশক্তির ৫%।২০১০-১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার মোট রপ্তানি আয়ের ৮০% অবদান ছিলো পর্যটন শিল্পের। 

সামুদ্রিক পরিবেশের উন্নয়ন, উৎকর্ষ সাধন ও পর্যটন শিল্পের পরিকল্পিত ব্যাবস্থাপনা দেশের অর্থনীতিতে রাখবে বিশেষ অবদান, জাতীয় অর্থনীতিতে বাড়বে অংশীদারত্ব এবং ব্লু-ইকোনমি  হবে  আরও সমৃদ্ধ ।

4.খনিজশিল্প :  

সমুদ্রের বিশাল জলরাশীর নিচে আছে ধারণাতীত সম্পদ ও মূল্যবান ধাতু বা খনিজ পদার্থের ভান্ডার। সমুদ্র থেকে মানুষ যেমন মুক্তার মতো অমূল্য  জিনিস সংগ্রহ করে, তেমনি তার থেকেও মূল্যবান বালু,ইউরেনিয়াম, থরিয়াম উত্তোলন করে। 

যাতে মিশে আছে ইলমেনাইট,গার্নেট,সিলিমেনাইট,জিরকন, রুটাইল ও ম্যাগনেটাইট। 

সাগরের নিচে জমে আছে ক্লে,যা দিয়ে তৈরি করা হয় সিমেন্ট। সমুদ্র ব্যাবহার করে নবায়নযোগ্য  জ্বালানি উৎপাদন করার রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা।

বায়ু,তরঙ্গ,ঢেউ, জোয়ার-ভাটা,জৈব-তাপীয় পরিবর্তন, লবনাক্ততার মাত্রা ইত্যাদির দ্বারা ব্যাপক নবায়নযোগ্য শক্তির যোগান পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন "প্রতিবছর পৃথিবীতে সমুদ্রবর্তী বায়ু ব্যাবহারে সক্ষমতা ৪০% হারে বাড়ছে। পৃথিবীতে মানুষ যে জ্বালানি ব্যাবহার করে তার প্রায় ৩২% হাইড্রো-কার্বন আসে সামুদ্রিক উৎস থেকে। 

আবার, সমুদ্র পৃথিবীর ৭২% বায়োস্ফিয়ার-এর ৯৫% এলাকা ঘিরে আছে। ব্লুইকোনমি র সমুদ্র বিষয়ক বিজ্ঞানীরা বলেন, "পৃথিবীতে যতো সাগর -মহাসাগর আছে, তাতে পানির পরিমাণ নিরুপন করা হয়েছে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘন কিলোমিটার।"

১মিলিয়ন ঘন কিলোমিটার হলো সবদিকে ১০ লাখ কিলোমিটার জায়গা। যা হিসেব করতে গেলে মাথা ঘুরে যাবে।

পৃথিবীতে মোট যে পানি আছে তার ৯৭% আছে সাগর-মহাসাগরে। তবে তা পুরোটা পানযোগ্য নয়।

এ পানিতে গড়ে ৩.৫ % লবণ থাকায় তা ভীষণ লোনাপানি। মানুষ সামুদ্রিক লোনাপানিকে কাজে লাগিয়ে লবণশিল্প গড়ে তুলেছে।

নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আহরিত খনিজ সম্পদ থেকে বায়োপ্রসপেক্টিং সরবরাহের নতুন দিক উন্মোচন করেছে সমুদ্র। 

তেল, গ্যাস, কয়লা,হাইড্রোকার্বন,কোবাল্ট,কপার,লবন,জিরকন, টাইটানিয়াম, বালি,শৈবাল, ইউরেনিয়াম, শামুক, ঝিনুক, চুনাপাথর, রুটাইল,মোনাজাইট ও লিকক্সিন।

ম্যাঙ্গানিক,আয়রন, নডিউল ফসফরাস ডেপজিট,পলিমেটালিক সালফাইড অ্যাডাপোরাইট,ক্লেসার ডিপোজিট ইত্যাদি আকরিক। এছাড়াও কপার,কোবাল্ট জিঙ্কলেডসহ আরও অনেক ধাতু। 

অন্যদিকে আমাদের অক্সিজেন এর সবচেয়ে বড়ো যোগানদাতা হলো সাগর-মহাসাগর।এগুলো পৃথিবীর শতকরা ৩০%কার্বন ডাইঅক্সাইড শুষে নিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে।

আমাদের বেশিরভাগ খাদ্য, ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, খনিজ সম্পদ এমন কি দামি রত্নভান্ডারের উৎসও হলো সমুদ্র। 

অসংখ্য কারণে পৃথিবীর প্রায় ৩বিলিয়নেরও বেশি মানুষ সরাসরি সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের উপর নির্ভর করে বেচে  থাকে। 

সমুদ্রের তলদেশে সম্পদ সন্ধান করার জন্য ব্লু- ইকোনমির সার্ভে সংস্থা অনেক পরিক্ষামূলক অনুসন্ধান চালিয়েছে।   

সমুদ্রের তলদেশে কি পরিমাণ সম্পদ আছে তার ধারণা দেওয়ার জন্য জার্মানির" কিল" শহরের হেল্মহলাস সামুদ্রিক গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা নজর দিয়েছেন লোহিত সাগর বা রেড সি'র দিকে। 

গবেষণা কেন্দ্রের আর্কাইভ-এ রেড সির  সমুদ্রবক্ষের আটলান্টিস দুই স্তরের মাটির হাজার হাজার নমুনা জমা রয়েছে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন সাগরের মাটিতে তামা কি রুপোর মতো মহার্ঘ্য পদার্থ আছে। 

এমনকি টনটন সোনা রয়েছে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। মেরিন বায়লজিস্ট ড.ভানরি ব্রুকম্যান বলেন -

"আটলান্টিস-২ এর মতো এতো বেশি খনিজ সম্পদ আর কোনো সমুদ্রবক্ষে পাওয়া যাবে না। এখনকার দাম অনুযায়ী ওখানকার খনিজ পদার্থের মূল্য  হবে ১৪-১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। 

আমাদের কাছে যে নমুনা জমা রয়েছে তাতে বলা যায় ওখানে প্রায় ৩০-৪০ টন সোনা আছে। সমুদ্রতলের রাসায়নিক ভান্ডার বিশাল। কিন্তু তা থেকে খুব অল্প পরিমাণে বিশ্বের ব্ল-ইকোনমির মধ্যে যুক্ত  হয়।

বানিজ্যিক ভিত্তিতে আমরা সমুদ্র থেকে সোডিয়াম ক্লোরাইড লবণ, ম্যাগনেশিয়ামের বিভিন্ন লবণ এবং আয়োডিন উদ্ধার করে থাকি।সমুদ্রজলে মূল ৫টি লবনের মধ্যে সোডিয়াম ক্লোরাইড ৭৭.৪% আছে। 

পৃথিবীতে যতো ব্রোমিন আছে তার মধ্যে ৯০%আছে সমুদ্রে। ১৯৬০ সাল থেকে সমুদ্রের লবণাক্ত  জলকে পানীয় জলে পরিবর্তন করার চেষ্টা চলছে। এই চেষ্টা পরবর্তীতে ১০গুণ বেড়েছে। 

১৯৮৪ সালে প্রতিদিন ৯৪লাখ ঘন মিটার জল লবনমুক্ত করা হয় সারা পৃথিবী জুড়ে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া  এবং আফ্রিকা অগ্রণী। 

সমুদ্রের রাসায়নিক ভান্ডারকে বাদ দিয়ে এর খনিজ সম্পদকে আমরা ৩ ভাগে ভাগ করতে পারি।

i. উপকূলবর্তী এবং মহীসোপান এলাকার স্থাপক অবক্ষেপ:

ব্লু-ইকোনমি' তে এই এলাকার ব্যাপক কদর আছে।এখানে  খনিজ বালি তথা পলন পাওয়া গেছে।টিন,টাইটানিয়াম, ইউরেনিয়াম, সোনা,প্লাটিনাম, হীরা কার্বন, রুটিল, ইলমোনাইট, থোরিয়াম,ক্রোমিয়াম, জিরকোনিয়াম, টাংস্টেন, লোহা ও অন্যান্য ধাতুও রয়েছে। 

আইল্যান্ড, মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের সমুদ্রে টিন পাওয়া যায় উপকূল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে এবং ৩০ মিটার গভিরতায় সারা বিশ্বের বাৎসরিক উৎপাদন ২৩০০০০ টন এর ৬০% দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে পাওয়া যায়। 

২৯০০ কিলোমিটার ব্যাপি টিন অঞ্চল উত্তর বার্মা থেকে শুরু করে থাইল্যান্ড -মালেশিয়া হয়ে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। আফ্রিকার উপকূল অঞ্চলে অগভীর জলে হীরা তোলা হয়।

ii. মহীসোপানের পাললিক শিলার স্তর :  

এই স্তরে ছড়িয়ে আছে খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, লোহার আকরিক, সার তৈরির আকরিক ফসফরাস ইত্যাদি। 

জলের তলায় তেল উৎপাদনের প্রথম প্রয়াস আমেরিকার লুসিয়ানা জলাভূমিতে ১৯৪৬ সালে। অগভীর তেলের সম্পদে এখন সবচেয়ে সমৃদ্ধ দুইটি এলাকা হলো পারস্য উপসাগর ও মেক্সিকো উপসাগর। 

মেক্সিকো উপসাগরে ৪৫০০ মিটার গভিরতায় পেট্রোলিয়ামের খোঁজ মিলেছে। পৃথিবীতে প্রায় ৪০ টি দেশ সমুদ্র থেকে শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ খনিজ  তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সংগ্রহ করছে। 

পারস্য উপসাগর, গিনি উপসাগর, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সমুদ্র, দক্ষিণ আমেরিকার সোপান, আফ্রিকার পূর্ব উপকূল, ভারতের পশ্চিম ও দক্ষিণ পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় তেলের উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে মূখ্য উৎপাদনকারী দেশ হলো সৌদি আরব, আবুধাবি,আমেরিকা,ব্রিটেন ও ভেনিজুয়েলা। 

স্কটল্যান্ডের সমুদ্র থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে থেকে কয়লা তোলার কাজ শুরু হয়েছে। ওখানে প্রায় ১০০টি খনি থেকে কয়লা তোলা হচ্ছে। 

জাপান সমুদ্রের ১২০০মিটার গভিরতায় কয়লা তুলছে। বিশ্বের ব্লু-ইকোনমি' তে মোট যে পরিমাণে ফসফেট যুক্ত হয় তার ৮৫% এর মূল উৎস সমুদ্র। ১৮৭৩ সালে ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জের অভিযানে দক্ষিণ আফ্রিকার নিকট সমুদ্রে প্রথম "ফসফেট নুড়ি " ড্রেজ তোলা হয়।

রসায়নের বিচারে এই নুড়িগুলোতে ক্যালসিয়াম ফসফেট সমৃদ্ধ খনিজ, যার মধ্যে বিভিন্ন পরিমাণে ক্লোরাইড মিশে থাকে। 

"ফসফেটিক নুড়ি " যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া গেছে জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা,আর্জেন্টিনা, উত্তর ও মধ্য আমেরিকার সমুদ্র উপকূলে। সাধারণত ২০-৪০মিটার গভীরতায় এই নুড়ি পাওয়া যায়। 

অনেকে বলেন সমুদ্রে প্রায় ৫০ লাখ টনের মতো  সোনা আছে। 

ধাতুর পরিমাণ ৬০কোটি আউন্স 

দক্ষিণ আফ্রিকার সমুদ্র পরিবেশের সোনাকে ব্লু-ইকোনমির ভাষায় "ফসিল সোনা" ও বলা হয়। সমুদ্রের নিচে কমবেশি পরিমাণে লোহা,ম্যাংগানিজ, অ্যালুমিনিয়াম, টাইটানিয়াম ইত্যাদি ধাতু থাকে। গভীর সমুদ্রের শান্ত পরিবেশে তৈরি হচ্ছে পলিমেটালিক নডিউল বা বহুধাতবীয় নুড়ি। 

এগুলো ম্যাংগানিজ নডিউল নামেও পরিচিত। ম্যাঙ্গানিজ ও লোহার  অক্সাইডের যৌগ হলেও এসব নুড়িতে ৪০টি ধাতু পাওয়া গেছে।

বানিজ্যিক দিক থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আছে তামা,নিকেল,ও কোবাল্ট, সীসা,দস্তা,মলিবডেনাম, বেরিয়াম, ক্রোমিয়াম, টাইটানিয়াম ইত্যাদি ধাতু। 

নুড়িগুলোর এক একটির ব্যাস ৩-১০সেমি.। সবচেয়ে বড়ো নুড়ির ওজন ৮৬০কেজি, গাঢ় বাদামি থেকে কালো রঙের ম্যাংগানিজ নুড়ি সব সমুদ্রতেই পাওয়া যায়। 

সেগুলো আছে ৩০০০-৬০০০মিটার গভিরতায়। পৃথিবীর সব সমুদ্রে ধাতব নুড়িপাথরের পরিমাণ আনুমানিক ৩হাজার কোটি টন।

একটি হিসেবে বলা হয়েছে এই সমুদ্রগর্ভের ধাতব সম্পদ ৬হাজার বছর ধরে তামা ও ২০ হাজার  বছর ধরে নিকেল জোগাতে পারে।

উল্লেখ্য, স্থলে এই দুই ধাতুর যে পরিমাণ আছে তা দিয়ে যথক্রমে ৮০ ও ১০০ বছর পর্যন্ত চলতে পারে। 

উপসংহার:

সমুদ্র  মানুষের জীবনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। বেচে থাকার জন্য বিশ্বের প্রায় ৩বিলিয়ন মানুষ সরাসরি সামুদ্রিক পরিবেশের উপর নির্ভর করে।

খাদ্য, ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে শুরু করে শিল্প, বানিজ্য, কৃষি, পরিবহন ইত্যাদির জন্য মানুষ সমুদ্রের উপর নির্ভর করে। 

বিশ্ব-বাণিজ্যের প্রায় ৮০% হয় সমুদ্র পথে। বৈশ্বিক গ্লোবাল পর্যটন শিল্প ও প্রকৃতিনির্ভর পর্যটন শিল্পের বিকাশে সামুদ্রিক ও উপকূলীয় পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

অক্সিজেন সরবরাহ, অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস শোষণ, পুনোরুৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি সরবরাহকরণ,পৃথিবীর তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখাসহ জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে সমুদ্র মানুষের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।

পৃথিবীতে প্রানের সৃষ্টি পানিতে হয়েছিল। একটি দেশের তথা পৃথিবীর অর্থনীতি টেকসই ও মজবুত করতে এবং  i অর্থনীতিকে আরও মজবুত, স্বাবলম্বী করে তুলবে। এক সময়  সুনীল অর্থনীতি দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হয়ে দাঁড়াবে।



আরও পড়ুন :

সুনীল অর্থনীতি ও রূপকল্প-২০৪১

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments
Moonmoon khatun - Jul 11, 2023, 3:08 PM - Add Reply

nice

You must be logged in to post a comment.
Ritu - Jul 25, 2023, 10:49 AM - Add Reply

Nice

You must be logged in to post a comment.

You must be logged in to post a comment.

Related Articles