বেস্ট ফ্রেন্ড | তাহার প্রয়োজনে আমি আর, আমার প্রয়োজনে শুধুই তিনি

ত্রিশ বছরের একটা মহিলাকে তার প্রিয় বিশজন মানুষের নাম লিখতে বলা হল।  মেয়েটা বোর্ডে গিয়ে বিশ জন মানুষের নাম লেখলো। 

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

প্রশ্ন হলো, এরা কারা? তাদের পরিচয় ডান পাশে লেখো। মেয়েটা এদের পরিচয় লেখলো।

সংসারের সবার নামের পাশে তার বন্ধু বান্ধব পাড়া প্রতিবেশী আত্নীয় স্বজনের  নামও আছে। মেয়েটাকে বলা হলো,

লিষ্ট থেকে দশ জনের নাম মুছে দাও। মেয়েটা তার প্রতিবেশী, আর বন্ধু বান্ধবের নাম মুছে দিলো।

এবার তাকে আরো পাঁচ জনের নাম মুছে ফেলার জন্য বলা হলো। সে তার আত্নীয় স্বজনের নাম মুছে ফেলল। 

শেষে বলা হলো আরো তিন জনের নাম মুছে ফেলার জন্য। মেয়েটা এবার একটু ভাবনায় পড়লো। উপস্থিত সবাই মহিলাটির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে । খুব মনযোগ দিয়ে দেখছে মেয়েটার মাইন্ড কিভাবে কাজ

করে। মেয়েটার হাত কাঁপছে।

সে ধীরে ধীরে তার বেষ্ট ফ্রেন্ডের নাম মুছলো।

এবং বাবা আর মায়ের নামও মুছে দিলো। এখন মেয়েটা রিতিমত কাঁদছে।

যে মজা নিয়ে বিনোদনটা শুরু হয়েছিলো, সেই মজা আর নেই। উপস্থিত দর্শকদের মাঝেও টানটান উত্তেজনা।

লিষ্টে আর বাকী আছে দুইজন। মেয়েটার স্বামী আর সন্তান।

সবশেষে মেয়েটাকে আরো একজনের নাম মুছে ফেলতে বলা হলো।

মেয়েটা‌ এবার সত্যিই কেঁদে ফেললো।

সে নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। সে কারো নাম মুছতে পারছেনা।  

উপস্থাপক বললেন,–মা গো, এইটা একটা খেলা।সাইকোলজিক্যাল খেলা। জাষ্ট প্রিয় মানুষদের নাম মুছে দিয়ে সবচাইতে প্রিয় মানুষ একজন ব্যক্তি, সে কে? তাই তোমাকে প্রমাণ করতে হবে।

মেয়েটা কাঁপা কাঁপা হাতে ছেলের নামটা মুছে দিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। উপস্থিত দর্শকও মেয়েটির সাথে নিরবে কাঁদতে লাগলো।

উপস্থাপক মেয়েটির কাছে গিয়ে বললেন, আমি দুঃখিত।

আসলে, একটা বিনোদন করতে গিয়ে তোমার মনে যে বেদনার ঝড় তুলে দিয়েছি সেজন্য আমাকে ক্ষমা করো। 

মেয়েটার হাতে একটা পুরস্কারের বাক্স তুলে দিয়ে বললেন, এখানে তোমার সব প্রিয়জনদের জন্য উপহার সামগ্রী রয়েছে। যে তোমার যতটুকু প্রিয় সেভাবেই তুমি তাদেরকে বিতরণ করে দিও।

এবার মেয়েটিকে প্রশ্ন করা হলো, কারো নাম তুমি সহজেই মুছে ফেললে। কারো নাম মুছতে গিয়ে সংকোচ বোধ করলে। আবার কারো নাম মুছতে গিয়ে কেঁদে ফেললে। কেন তুমি অন্য নামগুলো মুছলে?

মেয়েটা বলল- প্রথমে বন্ধু আর প্রতিবেশীদের নাম মুছে দিলাম।

পরে যখন আরো পাঁচ জনের নাম মুছতে বললেন, তখন আমার আত্মীয় স্বজনদের নাম মুছে ফেললাম।

কারন, তবু আমার কাছে বেষ্ট ফ্রেন্ড আর পরিবারের সবাই রইলো। পরে  যখন আবার তিন জনের নাম মুছে ফেলতে বললেন, তখন বেষ্ট ফ্রেন্ড আর বাবা মায়ের নাম মুছে দিলাম। ভাবলাম, বাবা মা তো আর চিরদিন থাকবে না। আর বেষ্ট ফ্রেন্ড না থাকলে আর কি হবে?

আমার কাছে আমার সন্তান আর আমার স্বামীই সবচাইতে বেস্ট ফ্রেন্ড। কিন্তু সবার শেষে যখন এই দুইজন থেকে একজনকে মুছতে বললেন, তখন আর সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না।

পরে ভেবে দেখলাম, ছেলেতো বড় হয়ে একদিন বিয়ে থা করে আমাকে ছেড়ে চলে গেলেও যেতে পারে। 

কিন্তু‌, আমার স্বামী সে কোন দিনও আমাকে ছেড়ে যেতে পারবে না।

কারণ, তাহার প্রয়োজনে আমি

আর, আমার প্রয়োজনে শুধুই তিনি

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ