আমার স্বপ্নের মহারানি, লেখক- শাওন আহমেদ-পর্ব- ০১
হঠাৎই নিজেকে একটি সুন্দর প্রকৃতির মাঝে আবিস্কার করলাম। আমি এক জনমানবহীন রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছি। চারপাশটা দেখতে খুবই সুন্দর, মনমুগ্ধকর।
পুরো জায়গাটাই সবুজ গাছপালায় ঘেরা। আমি বোঝার চেষ্টা করছি আমি কোথায় আছি।
হঠাৎ আমার মনে এক সুন্দর ও অদ্ভুত অনুভুতি নাড়া দিল। মনের ভেতর কেমন যেন ভালোলাগা কাজ করছে। এভাবেই কিছুক্ষণ যাওয়ার পর মনে হলো কেউ আমার পেঁছনে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি যেই পিঁছন ফিরেছি তখনি দেখি একটা মেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তার পরনে নীল রঙের শাড়ী, ঘন কালো চুল। তার সামনেটা দেখার জন্য আমিও তার পেঁছনে দৌড় দিলাম।
কিন্তু আপনারা তো এটা জানেন স্বপ্নে কেউ নিজের ইচ্ছে দৌড়াতে পারে না। যদি চায়ও বাট পারে না। মনে হয় দৌড়ানোর জন্য পায়ে কোন শক্তি অবশিষ্ট নেই। হ্যাঁ এটা স্বপ্ন ছিল।
সেটা আমিও বুঝতে পারিনি। বিষয়টা তখন বুঝলাম যখন তার পেঁছনে দৌড় দিয়ে পরে গেলাম।
আমার ঘুমটাও সাথে সাথে ভেঁঙে গেল। সবই ঠিক ছিল। শুধু সেই ফিলিংসটা আমাকে ঠিক থাকতে দিল না। কারণ সেই সময়টাতে আমি অনুভব করেছি সে আমার আপন কেউ। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই, আমি তার মুখটাও দেখতে পেলাম না।
এসব ভাবতে ভাবতে মাথাটা কেমন ঝিঁম মেরে গেল। মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি। এমন সময় ফজরের আযান কানে ভেসে আসলো। তাই উঠে অযু করে নামাজ পরে নিলাম।
মোনাজাতে আল্লাহর কাছে স্বপ্নের সেই মেয়েটিকে চাইলাম। কারণ ফিলিংসটা ছিল আমার ভালোবাসার। জানিনা ভালোবাসার অনুভুতি কেমন। বাট, সেই সময় আমার কাছে মনের সেই অনুভুতিটাই ভালোবাসার অনুভুতি মনে হয়েছে।
মোনাজাত শেষে বাসা থেকে বেরিয়ে হাটতে হাটতে নদীর পারে আসলাম। আমাদের বাড়ি থেকে মাত্র কয়েকমিটারের দুরত্বেই বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম যমুনা নদী অবস্থিত।
যমুনার পারে এসে সকালের ঠান্ডা বাতাস ছুঁয়ে যাচ্ছে আমার হ্রদয়। বার বার মনে পরছে সেই মেয়েটির কথা। তাহলে কী ঐ সে, যাকে অনেক আগে থেকে আল্লাহর কাছে চেয়ে আসছি।
হুম এটা হতে পারে। কারণ আজই এই অনুভুতিটা পেয়েছি যা এর আগে কখনো হয়নি। হঠাৎ কারও ছোঁয়ায় আমার ভাবনায় ছেদ ঘটলো।
তাকিয়ে দেখি বন্ধু সিজান আমার কাঁধে হাত রেখে ব্লকের উপর বসল। আরে আমিতো ভুলেই গেছিলাম আজ সিজানের আমাদের বাসায় আসার কথা। সিজানদের বাসা বগুড়ায়।
সিজানের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয় ফেসবুকে। আমি ওরে অনেকদিন থেকে বলছি আমাদের বাসা থেকে ঘুরে যা। কিন্তু ওর কাজ থাকায় আসতে পারছিল না। আজ রাতে নৌকায় করে আসছে। আজকের স্বপ্নটার জন্য ওর কথা ভুলেই গেছিলাম।
সিজান- শাওন তুই কী নিয়ে এতো ভাবছিস বলতো? আমি সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে ছিলাম। দেখলাম তুই মনযোগ সহকারে কী যেন ভাবছিস। তারপর একবার আমার দিকে তাকিয়ে আবার ভাবনার জগৎএ ডুব দিছিস?
আমি- স্যরি দোস্ত, আজ একটা বিষয় নিয়ে খুব ভাবছি। সিজান- সেই বিষয়টা কী বলতো শুনি? আমি- আজ তোর বোন আমার স্বপ্নে আসছিল।
সিজান- শাওন তুই বন্ধু হয়ে এসব নিয়ে মজা করিস সেটা আলাদা ব্যপার। কিন্তু এখন একটু সিরিয়সলি বলনা কী হয়েছে?
আমি- আগে বল তোরে বলছি না আমার বউরে তোর বোন বানাবো? সিজান- হ্যাঁ বলছিলি।
আমি- তাই বলছি তোর বোন আজ রাতে আমার স্বপ্নে আসছিল।
সিজান- তা এসে কী করল?
আমি- আমার মনে ভালোবাসার ঝর তুলে দৌরে পালালো।
সিজান- হয়তো তোরে দেখে ভয়ে পালাইছে। (কথাটা হেসে বলল)
আমি- ঐ তুই আবার হাসছিস? আমি কিন্তু খুব সিরিয়াস।
সিজান- আচ্ছা বল আমার বোনটা দেখতে কেমন?
আমি- তার পরনে ছিল নীল রঙের শাড়ি আর ঘনকালো চুল। আমি তার দিকে ফিরতেই সে দৌড়ে পালিয়ে গেল। তার মুখটাও দেখতে দিল না।
সিজান- সো স্যাড।
আমি- কিন্তু আমি তখন একটা অনুভুতির সমুক্ষিণ হয়েছি।
সিজান- কেমন অনুভুতি?
আমি- বুকের বাম পাশটায় হাত রেখে বললাম, ভালোবাসার।
সিজান- দোস্ত সেটাতো স্বপ্ন ছিল।
আমি- আমি জানি এটা স্বপ্ন। কিন্তু আমার এ মন বলেছে। স্বপ্নের মাঝেও কিছু রহস্য লুকিয়ে আছে।
সিজান- হুম হতে পারে। কারণ স্বপ্ন অনেক সময় মানুষের ভবিষ্যৎ এ ঘটবে এমন কিছু নির্দেশ করে। এই বিষয়ে ভালো কোন হুজুর যিনি স্বপ্ন বিশারদ। তিনিই বুঝতে পারবেন তোর স্বপ্নের ব্যপারটা।
আমি- হুম তুই বাসায় চল। অনেকদুর থেকে আসছিস। ফ্রেশ হয়ে কিছুসময় রেস্ট নে।
সিজান- হুম চল আমার খুব ক্ষুদা লাগছে।
তারপর সিজানকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসলাম। আম্মু, আব্বুর সাথে পরিচয় করিয়ে ফ্রেশ হতে আমার রুমে নিয়ে গেলাম। অতঃপর ওকে কিছু খাইয়ে নিয়ে এলাম আমাদের বন্ধুদের আড্ডাখানায়।
সিজান ছাড়া আবির, আরিয়ান, সোহান আর মুনাফ আমার ফ্রেন্ড। ওদের বলছি আজ আমাদের নতুন ফ্রেন্ড আসছে। তাই আজ এখানে পার্টি হবে। সারাদিন আড্ডা আর রাতে বিরিয়ানি।
আমি আর সিজান সবার মাঝে বসে সবার সাথে সিজানের পরিচয় করিয়ে দিলাম। তারপর শুরু হলো আড্ডা। সবাই বন্ধুদের আড্ডা সম্পর্কে কম বেশি ভালোই জানেন।
তাই আর ওদিকে না যাওয়াই ভালো। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে বাসায় আসলাম। তারপর দুজনে গোসল করে যোহরের নামাজের প্রস্তুতি নিলাম।____
প্রথম পর্ব তাই হয়তো ভালো করে লিখতে পারিনি। কেমন হয়েছে জানাবেন।
চলবে ___
You must be logged in to post a comment.