নিশুতিরাতে ভয়ানক মূহুর্ত - ১ম পর্ব: আজ রবিবার। দিন ধরে একটানা বৃষ্টি, তাই আজ অফিসে যাওয়া হয়নি। ভাবলাম, আজ শুয়ে-বসে দিন কাঁটিয়ে দিব। ঘুম থেকে উঠে, দেখি মা রান্না করতে ব্যস্ত।
বাবা খবরের কাগজ নিয়ে ব্যস্ত, তিনি খবরের কাগজ পড়ার সময় কোনো খোঁসামোদ পছন্দ করেন না। তাই সময় কাঁটছে না, টিভি দেখে সময় কাঁটাবো তারও উপায় নেই।
কারণটা হলো, "এ এলাকয় একটু মেঘভার করলেই বিদ্যুৎ - কে আর খুজে পাওয়া যায় না।" একটু পর, আমার বন্ধু সজীব এলে একটু সস্তি পেলাম।
কিন্তু এ বৃষ্টিতে সে এখানে এল কেন? তাই বন্ধু সজীবকে বললাম,' আরে সজীব কী মনে করে?', শুনলাম, "তোর নাকি আগামী পয়েলা ডিসেম্বর বিয়ে হতে যাচ্ছে", সজীব একটু পরে উত্তর দিয়ে বললো," হ্যা তুই ঠিকই শুনেছিস'', কিন্তু তোকে এসব ব্যাপারে কে বললো?
আমি উত্তর দিয়ে বললাম, " সকালে আন্টিই তো ফোন করে বললো, যে তুই এবার বিয়ে করতে রাজি হয়েছিস," বোধহয়, সজীব একটু লজ্জা পেয়েছে।
সজীব মাথা নাড়েয়ে বললো," তোকে কিন্তু বিয়ের অন্তত্য ১ মাস আগেই আমার বাসায় আসতে হবে।" এবার একটু সংকোচবোধ করে বললাম, " কেন রে? এত তাড়াতাড়ি গিয়ে কি করবো?
"সজীব বললো, " তুই আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু , তুই না থাকলে, আমি কিন্তু বিয়ের কোনো কার্যক্রম মানবো না, জানিসি তো আমি একটু লজ্জাবোধ করি?
" এবার একটু হেসে বললাম, " আচ্ছা ঠিক আছে, তুই যা বলিস তাই হবে"। কথা বলতে বলতে কখন বিকেল থেকে রাত হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না৷
সেদিন সজীব আমাদের বাড়িতেই থেকে গেল। রাতেও অনেক গল্প হলো, অনেক হাসি-ঠাট্টা করলাম। সকালের নতুন দিনটা শুভ মনে হলো, দেখলাম নীল আকাশ আজকের দিনটিকে সুন্দর করে রেখেছে।
এবার দুই বন্ধু উঠে জগিং করতে রেডি হয়ে গেলাম। দুজনই আজকের সকালকে উপভোগ করলাম। জগিং করাকালে সজীব নীমগাছের তলে দাড়িয়ে পড়লো।
ওর কাছে গিয়ে বললাম," কিরে কি হলো?" ও একটু লজ্জা লজ্জা করে বললো, " লিজা ফোন করেছে রে! এবার আমি ওকে একটু একা ছেড়ে দিয়ে সামনের রহিম চাচার দোকানে বসে পড়লাম।
কথা হয়ে গেলে, দুজনে বাড়িতে চলে এলাম। বাড়িতে এসে মায়ের তৈরী ব্রেকফাস্ট করে, দুজনে অফিসের জন্যে তৈরী হলাম। অফিসে দুই বন্ধু কাজে বসলাম।
আমার রুম আর সজীবের রুম কাছাকাছি হলেও কাজের ফাকে যে কোনো রকম কথা বলবো তার উপায় নেই। এবার কম্পানি কর্তৃক, অনেক বড় একটা প্রযেক্ট এসেছে।
তাই অফিসকালীন সময়ে কোনো প্রকার সময় ব্যয় করা রফিক স্যার কোনো প্রকার পছন্দ করেন না। অফিস শেষে, আমাদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাকিল স্যার বিশেষ কারণে সবাইকে এক জায়গায় জড় করলো, তিনি আনন্দের সাথে বললেন যে,
" আমাদের প্রযেক্ট নাকি শেষের পথে," তবে এ কথাটা শুনে সস্তি পেলাম যে," আমাদের এ আনন্দ উদযাপনের জন্য একটি বিশেষ ভ্রমনের আয়োজন করা হয়েছে।
কম্পানি কর্তৃপক্ষ থেকে চন্ডীপুর গ্রামের পহাড়ী অঞ্চলে ভ্রমন ব্যবস্থা করা হলো। তাই এ-উপলক্ষ্যে তাড়াতাড়ি অফিস ছুটি হলো। তাই সবাই তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে গেলাম।
কারণ, আগামীকাল সকাল ৮ টায় রওনা দেওয়া হবে। কথাঅনুযায়ী পরের দিন সবারই সমাবেশ ঘটলো। রওনা দিলাম সবাই পাহাড়ী ভ্রমনে।
যাওয়ার সময় সবাই খুব উৎসাহিত হয়ে খুব হইচই করলাম। অবশেষে চলে এলাম চন্ডীুপুর। সেখানকার সৌন্দর্যে সবাই মনোমুগ্ধ হয়ে উঠলো।
মনে হলো অফিসের সব ক্লান্তির অবসান ঘটলো। সকালের ব্রেকফাস্ট করে সবাই পাহাড়ী অঞ্চলের দিকে দলবদ্ধ হয়ে এগোতে লাগলাম। এরকম সৌন্দর্য আগে বোধায় আর কোথাও দেখি নি।
যত দেখছি সবাই তত মুগ্ধ হচ্ছিলাম। কিন্তু সেদিনের ভ্রমনের দিনের সমাপ্তি ঘটলেও সৌন্দর্যের সমাপ্তি ঘটে নি। বিকেল বেলা সবাই গল্প করতে বসলাম।
গল্পে যে যার মতো করে গল্প উপস্থাপন করলেও সজীব লিজার সাথেই বেশী সময় কাঁটাচ্ছিল।
কিন্তু যখন সবাই এক এক করে ঘুমাতে চলে যাচ্ছিল। তখনও আমার বন্ধু কথা বলে যাচ্ছিল ফোনে। আমি এবার সংকোচবোধ না করে বন্ধু সজীবের কাছে গেলাম। এবার সজীব কেন জানিনা ফোন কেটে দিল। আমাকে নির্দেশ করে বললো," কি বন্ধু! ওখানে কেন দাড়িয়ে আছিস, কাছে আয়। আমি কাছে গেলাম।
এবার সজীব আর আমি এই নিঝুম রাতে, কথা বলতে বলতে প্রায় রাত ১০ টা বেজে যায়। কথা শেষে যখন ক্যান্ডেলে ফিরে যাব তখন হঠাৎ, গা টা ঝিমঝিম করতে লাগল।
সজীব একটু এগিয়ে গেছে। আমি ওর পিছনে আস্তে আস্তে আসছিলাম। এমন সময় একটা অবাক করা কান্ড ঘটে গেল।
দেখি অষধ্যগাছ তলায় কে যেন একটা মেয়ে চুল ছেড়ে দিয়ে বসে আছে। তাকে দেখে পা থেমে গেল। প্রশ্ন জাগল, কে এই মেয়ে! যে এভাবে গাছতলায় বসে আছে?
(গল্পটি খুব বড় হওয়ায় আজ এই গল্পের ১ম অংশ দেওয়া হলো। এর ২য় নির্ধারিত সময়ে সাবমিট করা হবে। সকলে ভালো থাকবেন।)
You must be logged in to post a comment.