সুখ কি: মানব ইতিহাসে আজ পর্যন্ত কেউ কি সুখকে সজ্ঞায়িত করতে পেরেছে? এর মাপকাঠিইবা কি কেউ নির্ধারণ করতে পেরেছে?
না আজ অবধি কেউ সুখের সংজ্ঞা কিংবা মাপকাঠি নির্ধারণ করতে পারেনি।তবুও সুখ মানুষের পরম আরাধ্য। সবাই সুখী হতে চায়।
অনাদিকাল থেকে মানুষ সুখের পিছনে ছুটছে।সুখের মতই মানুষের চাহিদাও আপেক্ষিক।
মানুষ মূলত বৈষয়িক প্রাপ্তিকে যেমন বাড়ী,গাড়ী,নিশ্চিত ভবিষ্যত,ক্ষমতা,আধিপত্য ইত্যাদিকে পাবার জন্য ছুটছে।
ছুটছে তো ছুটছেই। কিন্তু সুখ কি পেয়েছে?মানব জীবনের মিলিয়ন ডলার প্রশ্নও এটাই।সুখ তুমি কোথায়?কোথায় তোমার বাড়ী?
বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা জীবনকে জটিল করেছে। কেড়ে নিয়েছে অর্গানিক আবেগ।এত কিছুর পরেও মানুষ দিনকে দিন হতাশ হয়ে পড়ছে।কারো বেশুমার অর্থ আছে সেও হতাশ,কারো অন্নের অভাব সেও হতাশ।
আমরা যাপিত জীবনে অধৈর্য,নেতিবাচক চিন্তা,অনিরাপত্তাবোধ ইত্যাদি অনেক কারনে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ি। নিজের জীবনকে বানিয়ে তুলি নরকের মত।ফলে আমাদের জীবন হয়ে পড়ে দূর্বিষহ।
আমার মনে হয় আমরা নিজেরাই নিজেদের অসুখী করে তুলি। আমাদের নেতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে। আমরা যখন আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে অতিমাত্রায় চিন্তিত হয়ে পড়ি তখনি অস্বস্তি,অনিরাপত্তাবোধ আমাদের মনে এসে বাসা বাধে।
আমরা অসুখী হয়ে পড়ি। আমরা কেন অসুখী? কারণ আমরা নিজেরাই আমাদের অসুখী করে তুলি। আমাদের অপ্রয়োজনীয় চাহিদা, আমাদের অসুখী করে তোলে।
আমরা অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ি, এই অযাচিত হতাশা আমাদের অসুখী করে তোলে।যুগের সাথে কৌশলী ধৈর্যশীল জীবনযাপনের কৌশল আমরা জানিনা বলেই আমরা অসুখী হয়ে পড়ি।
বুক ভরে খোলা আকাশের নীচে দাড়ান খানিকটা সময়,বুক ভরে শ্বাস নিন।নিজের অস্তিত্ব সঁপে দিন প্রকৃতি কিংবা সর্বশক্তিমানের কাছে।
চোখ দুটি আলতো বন্ধ করে ভাবুন আপনি এই বিশ্ব শক্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভাবুন আপনি অনন্য, আপনি সুখী।
পাঠক, যারা ভাবছেন আর হাসছেন এরকম করলেই কি আমরা সুখী হয়ে যাব?সুখী হওয়া কি এতই সহজ? বিশ্বাস করুন নিজেকে নিজে সুখী ঘোষনার এই টনিক আপনাকে কিছু সময়ের জন্য হলেও একটা স্বর্গীয় সুখানুভূতি দিবে।
আপনি এইভাবে চিন্তার ফলে একটা অদ্ভুত সুখ পাবেন। মূল কথা হল আপনার অবচেতন মনে বার বার মেসেজ দিন আপনি সুখী। টনকের মত কাজ করবে এই সূত্র।
চলুন এবার খুঁজি কিভাবে জীবনের সব জটিলতা আর চ্যালেঞ্জকে জয় করে সুখী হওয়া যায়? খুবই সহজ।
ইতিবাচক থাকুন।ইতিবাচক চিন্তার অনুশীলন করুন। কোন ভাবেই হতাশা গ্রস্থ হওয়া যাবে না। ভয় আর হতাশার মত ভয়ানক সংক্রামক আর কিছুই নাই।ভয় আর হতাশাকে আমরা যত প্রশ্রয় দেই ততই তা আমাদের মধ্যে জেঁকে বসে।
তিলে তিলে শেষ করে দেয় আমাদের জীবন কে।তাই যে কোন পরিস্থিতিতে আমাদের থাকতে হবে ইতিবাচক। এই ইতিবাচক চিন্তার অনুশীলনই আমাদের বেঁচে থাকার রসদ যোগায়।
ইতিবাচক থাকার আবার কিছু ছোট ছোট কৌশল আছে যা আপনাদের সুখী হতে সাহায্য করে,হতাশা কাটায়। এই যেমন নিজের জীবনের মধুর কোন না কোন স্মৃতি আছে আপনার।
যেকোন একটি সুখ স্মৃতি স্মরণ করুন কর্পুরের মত হতাশা উড়ে যাবে আপনার মন থেকে।খুব খারাপ লাগছে? হাতের মুঠোফোনটি বের করে প্রিয় কোন বন্ধুকে ফোন দিন।মন ভালো হয়ে যাবে।
যারা সব কিছুতেই নেতিবাচক চিন্তা করে তাদের এড়িয়ে চলুন। অনুভব করতে শিখুন আপনার চারপাশের সবুজ। আপনি নির্ভার হবেন।
কোন পরিস্থিতিতেই প্যানিক হওয়া যাবে না।মনে রাখবেন আমরা নিজেরাই আমাদের অযথা অস্থির করে তুলি।
ফলে নেতিবাচক চিন্তা আমাদের গ্রাস করে ফেলে নিমিষেই।ফলে আমরা ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ি।
চলুন নিজেদের সুখী হতে নিজেরাই নিজেদের সাহায্য করি। ইতিবাচক থাকি,যেকোন পরিস্থিতিতে।
সুখী হবার পথে আমরা নিজেরাই নিজেদের বাধা হয়ে দাড়াই। যতটুকু আছে যা আছে তাই নিয়ে সামনে এগুবার সাহস দেখান।
আপনি মূল্যবান,আপনার জীবন মূল্যবান,নিজের অমুল্য জীবনকে মূল্য দিতে শিখুন,নিজেকে ভালোবাসুন,হাসতে শিখুন আপনি সুখী হবেন।
You must be logged in to post a comment.