ডোমেইন কি? Domain কিভাবে কাজ করে? A টু Z

আলোচনার শুরুতে একটা প্রশ্ন করা যাক, আপনাকে আপনার এলাকায় মানুষ কিভাবে চিনে? অবশ্যই আপনার কিংবা আপনার বাবার নামে। কি তাই তো? ডোমেইন ও ঠিক এমন একটি জিনিস যার মাধ্যমে ইন্টারনেট এর মধ্যে কোনো একটি নির্দিষ্ট জিনিসকে বোঝানো হয়। আর এই জিনিসটাই হচ্ছে ওয়েবসাইট। এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন আমাদের আজকের আলোচনা কি কেন্দ্রিক হতে যাচ্ছে। হ্যাঁ, আজকে আমরা কথা বলব-

  • ডোমেইন কি? (What is domain)
  • ডোমেইন কিভাবে কাজ করে? (How domain work)

উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে। চলুন শুরু করা যাক-

ডোমেইন কি?

ডোমেইন বা ডোমেইন নেম (domain name) মূলত আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা একটু সহজ করে বলতে গেলে যা লিখলে মানুষ আপনার ওয়েবসাইট খুঁজে পাবে তাই মূলত ডোমেইন হিসাবে অ্যাখ্যায়িত হয়। প্র্যাক্টিক্যালি বলতে গেলে আপনি একটি ওয়েবসাইট ভিজিটের সময় ব্রাউজার এর সার্চ বারে যে নামটি দেখতে পারেন তাকে ডোমেইন বলা হয়। তবে অনেকেই ইউনিভার্সাল রিসোর্স লোকেটর( URL) কে ডোমেইন ভেবে থাকেন যা মোটেও ঠিক নয়। কারণ ডোমেইন হচ্ছে ডট কম ও হাইপার টেক্সট এর মধ্যবর্তী লেখাটি। অর্থাৎ www.multimedia.com এখানে ডোমেইন হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া শব্দটি। এটি ছাড়াও একটি ডোমেইন মোট কয়েকটি ভাবে বিভক্ত হতে পারে সেই সাথে আরো কিছু ধরনের ডোমেইন রয়েছে। যেমন-

ডোমেইন- এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ডোমেইন নামটিকেই বুঝানো হয়। যেমন- multimedia.com

Read More-

টপ লেভেল ডোমেইন- একটি ডোমেইন এর শেষে যে শব্দটি বা অংশটি যুক্ত থাকে তাকে মূলত টপ লেভেল ডোমেইন (TLD) বলা হয় । যেমন- .com, .org, .net ইত্যাদি।

সাব ডোমেইন- গুগল এর ব্লগার দিয়ে আপনি যদি কখনো ফ্রি ওয়েবসাইট খুলে থাকেন তাহলে নিশ্চয় এটি সমন্ধে জানেন। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। আপনার ডোমেইন নেম এর পাশে যে ব্লস্পট লেখাটি থাকে তাকেই মূলত সাব ডোমেইন বলা হয়। অর্থাৎ ডোমেইন নেম ও টপ লেভেল ডোমেইন এর মধ্যবর্তী অংশটুকু। যেমন- .bluehost.com, .wix.com, .blogspot.com, .wordpress.com ইত্যাদি।

ডোমেইন কিভাবে কাজ করে?

ডোমেইন কি বিষয়টি সমন্ধে আশা করি আপনার মোটামুটি একটি ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখন তবে  চলুন এই ডোমেইন কিভাবে কাজ করে তা নিয়েই আসা যাক। আপনি একটি ডোমেইন নেম কিনেই ফেললেন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য। কিন্তু এর পরের ধাপ বা কাজটি কি হতে যাচ্ছে তা সম্পর্কে কি কোনো ধারণা রেখেছেন। হ্যাঁ, তা করার জন্য আপনাকে এই বিষয়টি জানতে হবে।

আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে আপনি যখন একটি ডোমেইন নেম রেজিস্টার করছেন তখন আপনি তার ডিএনএস বা ডোমেইন নেম সিস্টেম এর মাধ্যমে রেজিস্টার করছেন। এখানে ডি এন এস হলো এমন একটি ডাটাবেস যেখানে ডোমেইন নেমের মাধ্যমে ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া যায় অর্থাৎ  একটি আইপি এড্রেস কোনো একটি নির্দিষ্ট ডোমেইন লিখে সার্চ করলে ডি এন এস তা এনে তার সামনে হাজির করে।

বিষয়টি হুবহু আমাদের ফোন এর কন্টাক্ট লিস্ট এর মতোই কিছুটা। এখানে যেমন আপনি কারোর নাম্বার বা নাম লিখে সার্চ করলেই তাকে পেয়ে যান ঠিক তেমনি ভাবে ডোমেইন নাম লিখে সার্চ করলে ওয়েবসাইট চলে আসে।

এখানে মূল যে কাজটি হয় তা হলো ধরুন আপনি আপনার ব্রাউজারে গিয়ে লিখলেন ফেসবুক ডট কম। এ পর্যায়ে ডি এন এস ডাটাবেসটি তার লিস্ট ঘেটে আপনার ওই ডোমেইন নেম সম্বলিত রেজিস্টারড ওয়েবসাইট খুঁজে বের করবে এবং আপনার আইপি এড্রেস এর সাথে তা সংযুক্ত করবে।

এখানে ফলাফল কি হবে জানেন? হ্যাঁ, আমরা যে ওয়েবপেজটি দেখতে পাব তাই এর ফলাফল। অর্থাৎ ডোমেইন নেম রেজিস্টারড থাকলে তা লিখে সার্চ করলে যে কেউ আপনার ওয়েবসাইটটি খুঁজে পাবে।

একটি ওয়েবসাইট খুলতে গেলে একটি ডোমেইন নেম আসলেই অনেকটা প্রয়োজনীয়। কারণ একটি পরিচয় ছাড়া আপনি যেমন অনেকটাই অচল তেমনি একটি ডোমেইন নেম ছাড়াও একটি ওয়েবসাইট অচল।

আর এখানে অচল বলতে সেই অচল এর কথা বলা হচ্ছে যে কি না লোক সম্মুখে আসতেই পারবে না। হ্যাঁ, ডোমেইন নেম ছাড়া আপনি আপনার ওয়েবসাইট কে লাইভ করতে পারবেন না। অর্থাৎ কেউ আপনার ওয়েবসাইট তার সার্চ রেজাল্ট বা সার্পে খুঁজে পাবে না। যার কারণে আপনার ওয়েবসাইট তৈরি বৃথা হয়ে যাবে। এখন কি করবেন?

Read More-

ডোমেইন কিনবেন কি না? কিনলেও আপনার বাজেট কত থাকতে হবে?

ডোমেইন নেম কেনা যে খুব বেশি ব্যয় বহুল তা কিন্তু নয়। কিন্তু আশ্চর্য হওয়ার মতো বিষয় হলো এটা যে মানুষ এটা না জেনেই ভেবে বসে ডোমেইন কিনবো না অনেক দামি। এ দিক থেকে ভাবতে গেলে তারা ডোমেইন এর সুবিধা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। তো একটি ডোমেইন কিনতে গেলে আপনি দুটি উপায়ে ডোমেইন মালিককে পে করতে পারেন। একটি হলো মাসিক আরেকটি হলো বাৎসরিক ।

আমি আপনাকে মাসে মাসে না দেয়ার বদলে বছরে একবার দেয়ার জন্যই উৎসাহিত করব। কেননা এতে আপনার খরচও কম পড়বে। তো একটি ডোমেইন কিনতে আপনার যে পরিমাণ টাকা লাগবে তা হলো বছরে ১০ ডলার থেকে শুরু করে ১৫ ডলার পর্যন্ত। বাংলাদেশি টাকার এর পরিমাণ ৮০০ টাকা থেকে শুরু হচ্ছে। আর এখন আপনি বাংলাদেশি কিছু ডোমেইন প্রোভাইডার কোম্পানির কাছ থেকেই এটি নিতে পারবেন।

এখন হয়তো আপনি বলতে পারেন আমি তো নতুন আমি কিভাবে ডোমেইন এর খরছ বহন করব?

এক্ষেত্রে আপনার জন্য পরামর্শ একটি আর তা হলো আপনি একটি সাব ডোমেই সহ ফ্রি-ডোমেইন নিয়ে ফেলুন। আমাদের আলোচনার শুরুর দিকেই আমরা উক্ত বিষয়টি বলেছি। আপনি খুব সহজেই গুগল এর ব্লগস্পট সেবা গ্রহণ করে ফ্রি-ডোমেইন দিয়ে আপনার সাইট চালাতে পারেন।

ফ্রি ও পেইড ডোমেইন এর মধ্যে পার্থক্য-

ফ্রি ও পেইড দ্বারা মূলত আপনার ব্যবসার আভিজাত্যকে বুঝায়। অর্থাৎ আপনি যদি একটি ফ্রি-ডোমেইন নিয়ে আপনার ব্যবসা শুরু করেন তবে মানুষ তো ভাববেই আপনার কাছে কিছু নেই। আর এর মাধ্যমে প্রোফেশনালিজ জিনিসটি নষ্ট হয়। আর তাই আপনার যদি সামর্থ্য থাকে তবে অবশ্যই আপনি সাব ডোমেইন নয়। টপ লেভেল ডোমেইন সহই ডোমেইন নেম কিনে ফেলুন। এতে করে আপনি যেমন লাভবান হবেন তেমনি আপনার কাস্টমারও আপনার ব্যবসা সম্পর্কে কোনো বিরূপ মন্তব্য রাখবে না।

ডোমেইন নেম কিভাবে নির্বাচন করবেন?

ডোমেইন নেম নির্বাচন করা আসলেই একটি কঠিন ব্যাপার। আপনি যে নামই চিন্তা করুন না কেন পৃথিবীতে সেই নামে হাজার হাজার ওয়েবসাইট আগে থেকেই আছে হয় সেটা কোনো সাব ডোমেইন সহ নয়তো কোনো টপ লেভেল ডোমেইন সহ। আর তা এটা খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে যায় যে কোনটি ফ্রি আছে। আর তাই আপনাকে একটু সময় নিয়েই এই ডোমেইন নেমটি খুঁজতে হবে । এটা অবশ্যই মনে রাখবেন যে ডোমেইন নেম যেন আপনার ব্যবসাকে রিফ্লেক্ট করে।

সর্বপরিঃ আশা করি উপরোক্ত আলোচনাটি আপনার কাজে আসবে। আর একটি ওয়েবসাইট খোলার শুরুর ধাপটাই যেহেতু ডোমেইন নির্বাচন আর তাই আপনাকে এই সমন্ধে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়াও ওয়েবসাইট ছাড়াই যদি আপনি অনলাইনে ইনকাম করতে চান তবে পড়ে আসুন- অনলাইনে আয়ের সহজ উপায়

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles