আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আপনি কি ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে চাচ্ছেন? ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম খুবই সহজ আবার খুবই কঠিন। যেমন প্রথমদিকে সব কাজে কঠিন মনে হয়। কিন্তু যখন কোন কাজে এক্সপার্ট হয়ে গেলে সেটা যতটা কঠিন মনে হতে হয় ততটা সহজ হয়ে যাবে।
আর্টিকেল এর সূচনা: আপনারা হয়তো ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করা যায়। হ্যাঁ এটা 100% সত্য। তবে এটা মনে রাখবেন ইনকাম করতে পারে না। ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার বিভিন্ন নিয়ম ও নীতিমালা রয়েছে।
এইগুলো মেনটেন করে ওয়েবসাইটে কাজ করলে আশা করি ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে পারবেন। ওয়েবসাইট থেকে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করা সম্ভব।
বিশ্বের নয় বাংলাদেশের এমন এমন সাইট রয়েছে যেখান থেকে তাদের মাসে প্রায় লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। এমনকি ওয়েবসাইকে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে অনেকেই। যেহেতু তাদের ওয়েবসাইট থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
এই কারণেই অনেকে নিজেদের সংসার চালাতে কোন সমস্যা।তাই তারা ওয়েবসাইটকে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। এমনকি আপনিও চাইলে ওয়েবসাইট থেকে ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে পারবেন।
আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা ওয়েবসাইট সম্পর্কে এ টু জেড আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাই শুরুতেই শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। আশাকরি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম?
ওয়েবসাইট: ওয়েবসাইটে সাধারণত কিভাবে ইনকাম হয়? ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার নানা রকম পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করা যায়।
সবথেকে ট্রাস্টেড এবং জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ওয়েবসাইটে ব্লগিং করে আয়। আপনি চাইলে আপনার অবসর টাইম গুলো ওয়েবসাইটের লেখালেখি করে আয় করতে পারবেন।
বিশ্বে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য নানা ধরনের প্লাটফর্ম বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারমধ্যে ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগার অন্যতম। এই দুটি প্ল্যাটফর্ম সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং মানুষ বেশি ব্যবহার করতে পছন্দ করে।
এই দুটি প্লাটফর্মের ভিতরে যে কোন একটি প্ল্যাটফরম কে কাজে লাগিয়ে আপনি ওয়েব সাইটের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। সাধারণত ওয়েবসাইটে ভিজিটর না হলে ইনকাম আসেনা।
তাই আপনাকে এমন কিছু মাথায় নিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে যাতে ভালো পরিমাণে ভিজিটর আসে। আপনার ওয়েবসাইটে যদি ভিজিটর না আসে তাহলে আপনি কিভাবে ইনকাম করবেন? তাই শুরুতেই ভাল পদ্ধতি নির্বাচন করুন।
ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি দরকার?
ওয়েবসাইট তৈরি: একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে সাধারণত তিনটা জিনিস প্রয়োজন হয়।
- থিম।
- হোস্টিং।
- ডোমেইন।
সাধারণত এই তিনটি জিনিস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়। তবে এগুলো একা প্ল্যাটফর্মের এক এক রকম। যেমন আপনি ব্লগারের যদি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে আপনার হোস্টিং এর দরকার নেই।
ফ্রিতে আপনি হোস্টিং পেয়ে যাবে। তবে এমনিতে নয় একটু টেকনিক খাটিয়ে। এমনকি ব্লগারে আপনি সম্পূর্ণ ফ্রি-তে ওয়েবসাইট আজীবন চালাতে পারবেন। তবে ওয়ার্ডপ্রেসে অনেকটাই ভিন্ন।
ওয়ার্ডপ্রেস হল অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্যরকম। তবে সর্বপ্রথম থ্রিতে আপনি ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। তবে ভিজিটর বেশি আসা শুরু করলেই একাউন্ট সাসপেন্ড হয়ে যাবে।
এমনকি এ ওয়াডপ্রেস এ আপনাকে সকল কাজ টাকা দিয়ে করাতে হবে। যেমন হোস্টিং ডোমেইন থিম এগুলো। যেহেতু এগুলো ছাড়া ওয়েবসাইট বানানো কমপ্লিট নয়। সেহেতু আপনি কে ওয়ার্ডপ্রেসের টাকা খরচ করতেই হবে।
থিম এর কাজ: এবার আমরা থিম এর সাথে একটু পরিচয় নিয়ে নেব। থিম হলো আপনার ওয়েবসাইটকে সুন্দরভাবে প্রদর্শন করবে।এই থিম ছাড়া আপনার ওয়েবসাইট কমপ্লিট হবে না। ওয়েবসাইটের সৌন্দর্য একমাত্র থিমই এনে দিতে পারে।
ওয়ার্ডপ্রেসে কিংবা ব্লগারে আপনারা ফ্রিতে ডিফল্ট কিছু থিম পেয়ে যাবেন। তবে সেগুলো আপনারা ব্যবহার করলে কোন লাভ হবে না। বিভিন্ন কারন আছে যেমন আপনার ওয়েবসাইটটি দেখতে খারাপ লাগবে।
অনেক রকম কাস্টমাইজ করার সুযোগ পাবেন না।প্রফেশনাল ভাবে আপনার ওয়েবসাইট সাজাতে পারবেন না। দেখতে অনেকটাই খারাপ লাগবে আপনার ওয়েবসাইট। ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটটি এ কারণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ নাও করতে পারে।
এই কারণেই আপনার ওয়েবসাইটটি অবশ্যই একটি থিম এর প্রয়োজন হবে। ওয়েবসাইটের থিম এর জন্য অনেক প্রতিষ্ঠানে থিম বিক্রি করে। আপনারা থিম গুলো ফ্রিতে নিতে পারেন অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে আবার প্রিমিয়াম কিনে নিতে পারেন।
তবে সব থেকে ভালো কিনে নেওয়ার কারণ কিনে নিলে থিমে নানারকম কাস্টমাইজেশন অপশন পাবেন। এমনকি আপনার ওয়েবসাইটের সৌন্দর্য থিমই করে দিবে।
আশা করি বোঝাতে পেরেছি থিম কি এবং এর কাজ কি। বুঝতে অসুবিধা হলে অবশ্যই কমেন্ট করতে একদমই ভুলবেন না।
ডোমেইন এর কাজ: ডোমেইন হলো আপনার ওয়েবসাইটের নাম। যেমন ফ্রিতে আপনারা ওয়াডপ্রেস অথবা ব্লগারে ওয়েবসাইট তৈরি করলে। আপনার ওয়েবসাইটের নাম গুলো হবে।
- prothom-alo. wordpress.com
- prothom-alo. blogspot.com
এই ধরনের এড্রেস পাবেন আপনার ওয়েবসাইটে। যেটা অনেক বড় এবং মনে রাখা অসম্ভব এর মত। এই ডোমেইন হলো আপনার ওয়েবসাইট এর সাথে ডট কম ডট নেট ডট ইনফো এগুলো ব্যবহার করা।
যেমন উদাহরণ হিসেবে আপনার ওয়েবসাইটটি prothom-alo. wordpress.com এখানে ডোমেইন যে কাজটি করবে সেটা হল আপনার ওয়েবসাইটটি ডট কম ডট নেট ডট ইনফো এগুলো যোগ করে দিবে।
যেমন prothom-alo.com। এখানে খেয়াল করুন wordpress.com কিন্তু উঠে গিয়ে শুধু ডটকম এসেছে আপনার ওয়েবসাইটটি। তার মানে বুঝতে পেরেছেন ডোমেইন এর কাজ টা আসলে কি। তবে ডোমেইন এর জন্য আপনাকে ক্রেডিট দিতে হবে প্রতিবছর।
হোস্টিং এর কাজ: হোস্টিং হলো আপনার প্ল্যাটফর্ম এর জায়গা বা স্থান। সহজ ভাষায় বোঝাতে গেলে আপনি ফসল ফলাতে চান। তার জন্য নিশ্চয়ই জায়গা দরকার হবে। আপনি যত বেশি জমিতে চাষাবাদ করবেন তত বেশি জায়গার দরকার হবে।
সাধারণত এই হোস্টিং এর কাজ হলো জায়গা। আপনার হোস্টিং যত জায়গা হবে ততো বেশী আপনি আপনার ওয়েবসাইটের তথ্য যুক্ত করতে পারবেন। যেমন ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের ছবি ইমেজ আর্টিকেল ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এগুলো থাকার জন্য তো একটা জায়গার দরকার তাই না!
সাধারণত এই হোস্টিং এই কাজ সম্পন্ন করে। তবে হোস্টিং এর জন্য আপনাকে কিছু টাকা খরচ করতে হবে প্রতি বছরে। এক এক ধরনের কোম্পানি একেকরকম চুক্তিতে আপনার সাথে ডিল করতে পারে।
আপনার ওয়েবসাইটে থিম ডোমেইন-হোষ্টিং এগুলো দিয়ে পরিপূর্ণ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। এবং ওয়েবসাইট চালাতে এইগুলোই প্রয়োজন হয়। তবে প্রতিটা প্লাটফর্মে ভিন্ন ভিন্ন কাজ রয়েছে।
যেমন আপনি যদি কোন ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসে করতে চান তাহলে, ডোমেইন হোস্টিং এবং থিম অবশ্যই দরকার। কিন্তু সেই ভাবে আপনি যদি ব্লগারে ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে, আপনি ওয়েবসাইটে সম্পূর্ণ ফ্রিতে চালাতে পারেন।
ব্লগারে হোস্টিং এর কোন প্রয়োজন হয় না। একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করলে ফ্রিতে আপনাকে প্রায় 15 জিবি স্পেস দিবে। এই 15 জিবি প্রতিটা জিমেইলের এই সাধারণত দিয়ে থাকে। আর আপনি যদি ব্লগার এ কাজ করেন তাহলে হোস্টিং এর দরকার হবে না কখনোই।
হোস্টিং এর কাজ সাধারণত ওই জিমেইল এর 15 জিবি স্থানান্তর করে। তাছাড়া আপনি চাইলে ডোমেইনও নাও কিনতে পারেন। কারণ ব্লগারে আপনি সম্পূর্ণ ফ্রি তে ওয়েবসাইট চালাতে পারবেন আজীবন।
যেমন ওয়ার্ডপ্রেসে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করলে, কিছুদিনের ভিতরেই ভিজিটর বেশি আসলে একাউন্ট সাসপেন্ড করে দেয়। কিন্তু ব্লগারে আপনি চাইলে আজীবন চালাতে পারবেন।সত্যই ভিজিটর বেশি হোক না কেন আপনার একাউন্ট সাসপেন্ড হবে না।
এভাবে এক এক প্লাটফর্মে বা প্রতিষ্ঠান এক এক রকম নিয়ম-নীতি রয়েছে আরো অনেক। আমি শুধু আপনাদের সামনে ব্লগার এবং ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে আলোচনা করলাম। সত্যিকার অর্থে এই ধরনের প্লাটফর্ম আরো অনেক রয়েছে।
তাই আপনারা চাইলে যে কোন প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন। কমপ্লিট ভাবে কিছুদিন ব্লগিং করে কিছু আর্টিকেল আপনার ওয়েবসাইটে লিখে।
অ্যাডসেন্সে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আবেদন করতে পারেন। সর্বনিম্ন 30 থেকে চল্লিশটা আর্টিকেল থাকলেই এডসেন্স অ্যাপ্রুভ করে নেয়। তবে আরো কিছু বেশি নিয়ম-নীতি রয়েছে অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভে হওয়ার জন্য।
এডসেন্সের নিয়ম-নীতিগুলো মেনে আবেদন করলে অবশ্যই অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল হয়ে যাবে আপনার। অ্যাডসেন্স এপ্রুভ হয়ে গেলে আপনার ওয়েবসাইট এ বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পারবেন। এখনই বিজ্ঞাপনগুলো যারা দেখবে তাদের থেকে আপনার ইনকাম হবে।
হ্যাঁ যত বেশি লোক বেশি বিজ্ঞাপন দেখবে ততো বেশি বেশি আপনার ইনকাম হবে। এডসেন্স থেকে শুধু বিজ্ঞাপন দেখে হাজার হাজার টাকা ইনকাম সম্ভব দিনে।তুমি তার জন্য আবশ্যক প্রফেশনাল ভিজিটর থাকা লাগবে আপনার ওয়েবসাইটে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ
- আপনি যদি সত্যিই ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে চান তাহলে,সবার সাথে সুন্দর ব্যবহার করবে এবং মানুষের উপকারের কথা মাথায় রেখে কাজ করবেন।
- কোনভাবেই ভুল তথ্য বা খারাপ কর্মের সাথে মানুষের জড়িত করবেন না।
- ইনকামের জন্য অবশ্যই নিয়ম-নীতিগুলো মেনে কাজ করবেন।
- ওয়েবসাইটে প্রথমে আপনার ভিজিটর নাও আসতে পারে, তাই বলে আপনি হাল ছেড়ে দিবেন না।
- আপনি কাজগুলো করতে থাকুন নিয়মিত এবং নিয়ম মেনে অবশ্যই ভিজিটর পেয়ে যাবেন।
- কাজের প্রতি মন মানসিকতা ও ইচ্ছাশক্তির এবং সততার সাথে কাজ করুন।
- ইনকামের জন্য শুধু এডসেন্স নয় অন্যান্য মাধ্যমে ওয়েব সাইট থেকে আয় করার সুযোগ রয়েছে সেগুলো কাজে লাগাতে পারেন।
- সব সময় ইনকামের কথা চিন্তা না করে মানুষের উপকারের কথা মাথায় রেখে ওয়েবসাইটে কাজ করুন।
- সর্বোপরি ওয়েবসাইটে কাজের নিয়ম নীতি এবং ইনকাম এর গাইডলাইন মেনে সম্পূর্ণ কাজ করার চেষ্টা করুন।
শেষ কথা
পরিশেষে বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি এ পর্যন্তই।আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে একদমই ভুলবেন না।আর্টিকেল এ যদি কোন কিছু জানার থাকে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
এবং ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার উদ্দেশ্য হলে অবশ্যই নিয়ম-কানুনের দিকে বেশি মনোযোগ দিন। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন। এই কামনা করে বিদায় নিচ্ছি আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।
You must be logged in to post a comment.