প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। মহান রব সবাইকে সুস্থ রাখুক।মুসলিমদের কাছে রমজানের মাসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ মাসে ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।
যা অন্য সময়গুলোতে পাওয়া খুব কঠিন হয়ে থাকে। কিন্তুু সারাদিন রোজা রাখার পর শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। তাই স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলমূল পুষ্টিকর খাবারের একটি বড় উদাহরণ। প্রতিদিনের ইফতারে তাই ফলমূল রাখা অবশ্যই জরুরি।
যদি আপনার অন্য কিছু কেনার সামর্থ্য নাও থাকে তবে আপনি শুধু ফলমূল দিয়েই ইফতার করতে পারেন। প্রতিদিনের ইফতারে অন্তত এক ধরনের ফলমূল হলেও রাখা উচিত।
আজকে আমি আপনাদের বলব,কোন ধরনের ফলমূল আপনারা ইফতারে রাখতে পারেন সে সম্পর্কে। প্রথমেই বলে রাখি,আপনার সামর্থ্য যেমনই হোক না কেন,যেকোনো ১ ধরনের ফলমূল হলেও ইফতারে রাখবেন।
যদি প্রতিদিন ফলমূল রাখা সম্ভব না হয়,তা হলে যখন সামর্থ্য হবে তখন অবশ্যই ফলমূল কিনবেন নিজের পরিবারের জন্য।
বলা হয়ে থাকে,মূলত ফলমূলেই থাকে রোগ প্রতিরোধের আসল প্রতিকার।তাই রোজার সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে অবশ্যই ফলমূল খাবেন।তাহলে চলুন জেনে নিই কি কি ফলমূল আমরা ইফতারে রাখতে পারি এবং কোথায় পাব ও তাদের পুষ্টিগুণগুলোও কেমন হবে।
সতর্কতাঃ আপনারা জানেন,বর্তমানে কিছু ব্যবসায়ী বেশি লোভের আশায়,খাদ্যকে বেশিদিন টিকে রাখতে ও খাদ্যের পচন রোধ করতে খাদ্যে ক্ষতিকর ফরমালিন ও বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহার করে,যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
এতে কিডনি বিকল,মস্তিষ্কের ক্যানসার,পাকস্থলীর আলসার সহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দেয়।
তাই ফলমূল কেনার সময় ভালো করে দেখে কিনবেন এবং বাসায় নিয়ে এসে হালকা উষ্ণ পানিতে লবণ দিয়ে ভিজিয়ে রাখবেন।
উষ্ণ পানিতে না রাখলে অন্তত ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন আধা ঘণ্টা। আর খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে নিবেন ও তারপর খাবেন।
স্বাস্থ্যসম্মত ইফতারে রাখবেন যেসব ফলমূল,
১। খেজুর (date)
কোথায় পাওয়া যাবে:
রজমান মাস মানেই খেজুরের মাস। তাই খেজুর কোথায় পাব প্রশ্ন করাটাই বোকামি।যেহেতু রসূল (স.)খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন,তাই প্রতিটি মুসলমানের কাছে সুন্নাত হিসাবে সবাই খেজুর দিয়ে ইফতার করার চেষ্টা করে।
যদিও আমাদের দেশে মরুভুমির সেই পুষ্টিকর খেজুর উৎপাদন হয় না,তবে আমদানিতে আমাদের দেশে খেজুরের কোনো অভাব হয় না। রমজানের সময় দোকানে দোকানে অহরহ খেজুর পাওয়া যায় আমাদের দেশে।
পুষ্টিগুন:
খেজুরে আছে ভিটামিন, আঁশ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিঙ্ক। এছাড়াও ক্যালোরি, প্রোটিন,ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সমূহ।
কেন খাবেন খেজুর
১,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
২,উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
৩,রক্তস্বল্পতা দূর করে।
৪,হৃদস্পন্দনের হার ঠিক রাখে ইত্যাদি।
২। আঙুর ফল(Grape)
কোথায় পাওয়া যাবে
আঙুর আমাদের দেশিও ফল না হলেও আঙুর ফলের কোনো ঘাটতি আমাদের দেশে নেই। বরং ফলের দোকানগুলোতে আঙুল এর ব্যাপক সরবরাহ দেখে মনে হয় আঙুর আমাদেরই দেশিও ফল।
লাল,কালো ও সবুজ রঙের আঙুর এখন ফলের দোকানগুলোতে অহরহ।এছাড়া বর্তমানে ভাড়ি করে করে আঙুর ফল বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় বিক্রি করা হয়ে থাকে।
পুষ্টিগুন
আঙ্গুরে আছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার, ফলেট, নিয়াসিন, থিয়ামিন, প্যানটোথেনিক এসিড, রিবোফ্লাভিন এবং ভিটামিন এ, সি, ই ও কে। এছাড়াও আরও আছে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, কপার, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ক্যারোটিন-এ ও ক্যারোটিন-বি।
কেন খাবেন এ ফল
১,চোখের জন্য আঙুর খুব ভালো।
২,হজমের সমস্যা ও পেটের পীড়া দূর করে।
৩,ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ভুমিকা রাখে।
৪,ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে কাজ করে।
৫,হার্ট সুস্থ রাখে।
৬,কোষ্ঠকাঠিন্য রোধেও সহায়ক এ ফল।
৩। কলা(Banana)
কোথায় পাওয়া যাবে
আমাদের একটি দেশিও ফল হলো কলা।কলার ফলন আমাদের দেশেই হয় বলে এটি খুবই সহজলভ্য ফল।গ্রামের মানুষ বাড়ির পাশে কলা গাছ লাগিয়ে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা খুব সহজেই পূরণ করতে পারে।শহরে ফলের দোকান ছাড়াও ওলিতে গলিতে কলা বিক্রি করে।
পুষ্টিগুন
কার্বোহাইড্রেট,ভিটামিন বি৬, বি১২, পটাশিয়াম,ম্যাগনেশিয়াম,ফসফরাস,ভিটামিন এ ও আয়রনসহ অন্যান্য সব ভিটামিন ও খনিজ পদার্থগুলো।
কেন খাবেন কলা
১,রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহযোগিতা করে।
২,স্মৃতিশক্তি ভাল রাখে।
৩,স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
৪। তরমুজ(Watermelon)
কোথায় পাওয়া যাবে
তরমুজ একটি মৌসুমি ফল।তাই নির্দিষ্ট সময় ছাড়া এটি তেমন পাওয়া যায় না।কিন্তু কোনো না কোনো রমজান এই তরমুজের মৌসুমে ঠিকই পাওয়া যায়।তাই রমজানে তরমুজ পাওয়া গেলে তা কিনতে
অবশ্যই ভুলবেন না।তরমুজ আমাদের দেশে চাষ হয় বলে,বাজারে তরমুজের ব্যাপক চাহিদা থাকে ও সহজেই পেতে পারেন।
পুষ্টিগুন
পাকা তরমুজে রয়েছে পানি, আঁশ, আমিষ , চর্বি ও ক্যালোরি। এছাড়াও তরমুজে আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, কার্বোহাইড্রেট, খনিজ পদার্থ, ফসফরাস , নিয়াসিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ও ভিটামিন বি২।এতে রয়েছে প্রচুর ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
কেন খাবেন এ ফল
১,হাড়ের গঠন শক্ত ও মজবুত করে তরমুজ।
২,চোখের জন্য অনেক উপকারী।
৩,ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৫। আনারস(Pineapple)
কোথায় পাওয়া যাবে
আনারস এখন সবসময় পাওয়া যায়। তাই ফলের দোকানগুলোতে ও বাজারে অতি সহজেই পেয়ে যাবেন মিষ্টি এই ফলটি।এছাড়া আনারসের মৌসুমে এটি ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়।
পুষ্টিগুন
ভিটামিন এ,ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম রয়েছে। এ ছাড়া এ ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ ও ক্যালোরি রয়েছে।
কেন খাবেন এ ফল
১,রক্ত পরিষ্কার করে
২,হজমে সহায়ক।
৩,হাড়কে মজবুত করে।
৬।আপেল(Apple)
কোথায় পাওয়া যাবে
আপেল বিদেশি ফল।কিন্তু দেশে এর কোনো ঘাটতি নেই।বরং ওলিতে গলিতে এখন ভাড়ি করে আপেল বিক্রি করে। আর ফলের দোকান ও বাজার তো আছেই।
পুষ্টিগুন
একসাথে সব পুষ্টি উপাদানে ভরপুর, এমন একটি ফল, যা বিভিন্ন ফলে থাকলেও একসাথে একটি ফলে নেই। তবে খুব সামান্য পরিমাণ ভিটামিন সি ও ফাইবার এ ভরপুর এ ফল।
কেন খাবেন এ ফল
১,রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে,
২, হার্টের রোগ ও ক্যান্সার হতে রক্ষা করে
৩,হাড়কে শক্ত রাখে।
৪,আপেল দাঁতের জন্য অনেক ভালো।
৭। কমলালেবু (Orange)
কোথায় পাওয়া যাবে
কমলালেবু শীতকালে বেশি পাওয়া গেলেও এটির কোনো অভাব নেই। এখন সবসময়ই পাওয়া যায়।ফলের দোকান ও বাজারে পাওয়া যায়। এছাড়া আপেল,আঙুরের মতো এটিও ভাড়ি করে করে বিক্রি করে।
পুষ্টিগুন
ভিটামিন সি,অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, খনিজ উপাদান, পটাশিয়াম এবং ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ। প্রচুর ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ।
কেন খাবেন এ ফল
১,হার্ট সুস্থ রাখে।
২,ত্বকের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে।
৩,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৪,ক্যান্সারের জীবাণু ধ্বংস করে।
৫,দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে।
৮। আম(Mango)
কোথায় পাওয়া যাবে
আম এখন সবসময় পাওয়া যায়। তাই রমজানে এটি ফালুদায় ব্যবহার করা যায়।ফলের দোকান ও বাজারে পাওয়া যায়।এটি যেহেতু দেশিও ফল তাই আমের সময় রমজান মাস পড়লে আপনে আম দিয়েই ইফতার করতে পারবেন।
পুষ্টিগুন
প্রয়োজনীয় সব ধরণের এনজাইম,ভিটামিন এ ও উচ্চ পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন সি।
কেন খাবেন এ ফল
১,চোখের জন্যও অনেক উপকারী।
২,ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৯। নারিকেল (Coconut)
কোথায় পাওয়া যাবে
নারিকেল সহজলভ্য একটি ফল।এটি সারা বছরই পাওয়া যায়।ফলের দোকান,বাজারে, এমনকি বড় মুদির দোকানেও আপনি নারকেল কিনতে পারবেন।
পুষ্টিগুন
নারিকেলের শাঁসে আছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা,আমিষ, চর্বি ও ক্যালসিয়াম। এছাড়াও ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান তো রয়েছেই।
কেন খাবেন এ ফল
১,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
২,শরীরের ক্ষত তাড়াতাড়ি সারিয়ে তুলে।
৩, দুশ্চিন্তা ও মানসিক ব্যাধি দূর করে এ ফল।
১০। বাতাবি লেবু
কোথায় পাওয়া যাবে
বাতাবি লেবু প্রায় সবসময়ই পাওয়া যায়।রমজানে যদি এটি পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই কিনে খাবেন।ফলের দোকান ও বাজারে পাওয়া যাবে।
পুষ্টিগুন
ভিটামিন সি,শ্বেতসার, আমিষ,ভিটামিন বি,ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যারোটিন, খাদ্যশক্তি।
কেন খাবেন এ ফল
১,এ ফল সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা জনিত রোগ থেকে সেরে উঠতে সাহায্য করে।
২,রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৩,ক্ষতস্থান অতি দ্রুত নিরাময় করে।
১১। ডালিম
কোথায় পাওয়া যাবে
ডালিম সবসময়ই এখন কিনতে পারবেন। রমজানে এই ফলটি খেতে পারেন।ফলের দোকান ও ভাড়ি করে করে বিক্রি করে।
পুষ্টিগুন
শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন সি, ক্যালরি। তবে ডালিমের পুষ্টিমান উপাদনের স্থান, জাত ও মানের ওপর পরিবর্তন হতে পারে।
কেন খাবেন এ ফল
১,পেটের যেকোনো সমস্যায় সহায়ক এ ফল। ২,রক্তনালীকে সুরক্ষিত রাখে ও রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
৩,মনকে সতেজ রাখে।
১২। পেয়ারা(Guava)
কোথায় পাওয়া যাবে
পেয়ারা পুষ্টিকর দেশিও ফল।মৌসুম ছাড়াও সবসময়ই কিনতে পারবেন। রমজানে কিনে খাবেন। এটি দিয়েও ইফতার করতে পারবেন। ফলের দোকান ও বাজারে পাওয়া যাবে।
পুষ্টিগুন
কার্বোহাইড্রেট,ফাইবার, মিনারেল, ক্যালরি, ভিটামিন এ, থিয়ামিন, নিয়াসিন,প্রোটিন।ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড এবং নিকোটিনিক অ্যাসিড। যথেষ্ট পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন,ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স,ভিটামিন সি।
কেন খাবেন এ ফল
১,উচ্চ রক্তচাপ ও রক্ত সঞ্চালনে ভালো ভুমিকা রাখে।
১৩। বাদাম(Nut)
কোথায় পাওয়া যাবে
বাদাম সবসময়ই পাওয়া যায়। তাই ইফতারে অন্যান্য খাবারের সাথে এটি রাখতে পারেন খুব সহজেই।বাজারে ও ভাড়ি করে এটি বিক্রি করে।
পুষ্টিগুন
এ ফল এ ভিটামিন বেশি না পাওয়া গেলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম আছে। এ ছাড়া ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও জিংকসহ প্রয়োজনীয় অনেক খনিজ উপাদানও পাওয়া যায়।
কেন খাবেন এ বাদাম
১,দাঁতের যত্নে বাদাম খুব উপকারী।
২,কিডনির রোগে,হৃদরোগে বাদাম খেলে বেশ উপকার মেলে।
১৪। কাঁঠাল (Jackfruit)
কোথায় পাওয়া যাবে
কাঁঠাল নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া।কাঠাঁল মৌসুমে রমজান মাস আসলে অবশ্যই এ ফল খেতে ভুলবেন না।ফলের দোকান ও বাজারে এটি পাওয়া যাবে।
পুষ্টিগুন
ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম,আয়রন ও খনিজ উপাদান।প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,পটাশিয়াম,ভিটামিন সি।
কেন খাবেন এ ফল
১,উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
২,কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।
৩,ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে কাঁঠাল।
৪,হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৫, ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল করে ত্বকের রোব প্রতিরোধ করে।
১৫। বরই(Plum)
কোথায় পাওয়া যাবে
বরই একটি মৌসুমি ফল।রমজানে বরই পেলে সবার এটি খাওয়া উচিত।বরই মৌসুমে সব ফলের দোকান ও বাজারে এ ফল পাওয়া যায়।
পুষ্টিগুণ:
কুলে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। তবে এতে প্রচুর আঁশ, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, আঁশ।পটাশিয়াম। এছাড়া এতে অল্প পরিমাণে বিভিন্ন রকমের ভিটামিন, খনিজ উপাদান রয়েছে। তবে প্রচুর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।
কেন খাবেন এ ফল
১,জ্বর ও সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করে থাকে। ২,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
৩,হজমে সহায়ক এ ফল।
১৬। আতা ফল(Custard Apple)
কোথায় পাওয়া যাবে
আতা অনেক প্রিয় একটি ফল।এ ফল সবারই খাওয়া উচিত। ফলের দোকানগুলোতে এটি পাওয়া যাবে।
পুষ্টিগুন
শর্করা, পানি, প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, থিয়ামিন, রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিয়ান, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সোডিয়াম।
কেন খাবেন এ ফল
১,রমজানে এ ফল হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
২,দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখবে।
৩, হাড় মজবুত করে।
৪,রক্তের উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রণ করবে।
৫, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
১৭। লিচু(Litchi)
কোথায় পাওয়া যাবে
লিচুর সময় যদি রমজান আসে তাহলে ইফতারে লিচু রাখবেন।লিচু দেশে উৎপাদন করা হয় বলে লিচু মৌসুমে ব্যাপক হারে এ ফল পাবেন।বাজারে ও ফলের দোকানগুলোতে ছাড়াও মৌসুমি মেলাতে এ ফল প্রচুর পাওয়া যায়।
পুষ্টিগুন
লিচুতে থাকে শর্করা, ক্যালরি , ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ভিটামিন ‘সি’। চর্বি একেবারেই নেই। পটাশিয়াম,ফলেট এবং সামান্য সোডিয়াম।
কেন খাবেন এ ফল
১,ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রমজানে লিচু অনেক সহায়ক। এটিতে ক্যালরি অনেক থাকে।
২,হজমে সহায়তা করে ও দেহের শক্তি বাড়ায়। ৩,এছাড়াও হূদরোগের ঝুঁকি কমায় ও রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
৪,এ ফল স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
৫,ক্যান্সার থেকে মানবদেহকে সুরক্ষা প্রদান করে।
১৮। মিষ্টি কামরাঙ্গা
কোথায় পাওয়া যাবে
কামরাঙ্গা সারা বছরই পাওয়া যায়।তাই ইফতারে এটি রাখতেই পারেন।ফলের দোকান ও বাজারে এটি পাবেন।
পুষ্টিগুন
এ ফলে আয়রনের পরিমাণ বেশি,ভিটামিন সি-এর পরিমাণও বেশি কিন্তু ভিটামিন-এ অল্প পরিমাণে থাকে।
কেন খাবেন এ ফল,
১,ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
২,রক্তক্ষরণ বন্ধ করে।
৩,ঠান্ডাজনিত সমস্যায় উপকারী।
১৯। পেঁপে(Papaya)
কোথায় পাওয়া যাবে
পেঁপেকে যেহেতু দেশেই উৎপাদন করা যায়,তাই এটিকে দেশিও ফল হিসেবে আপনি খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।এ ফলটি সবসময় ফলের দোকানগুলোতে পাওয়া যায়।এমনকি আপনি সবজি বাজারেও এ ফল পাবেন।
পুষ্টিগুন
প্রোটিন,ফ্যাট,মিনারেল,ফাইবার,কার্বোহাইড্রেট,
ক্যালরি,ভিটামিন সি,সোডিয়াম,পটাশিয়াম,আয়রন।অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ক্যারোটিন সমৃদ্ধ।
কেন খাবেন এ ফল
১,ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারবেন এ ফল।
২, চোখের সমস্যা ও সর্দিকাশির জন্য উপকারী।
৩,হজম সমস্যা দূর করে।
৪,রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং
৫,হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
৬,কোষ্ঠকাঠিন্য রোধেও সহায়ক এ ফল।
উপরোক্ত ফলমূল ছাড়া ও আপনারা আর ও অনেক ফলমূল রাখতে পারেন ইফতারে। যেমন, ভাঙ্গি,বেল,স্ট্রবেরি,ড্রাগন ফল,জাম ইত্যাদি। মৌসুম অনুযায়ী আপনারা ফলগুলো সহজেই পাবেন।
You must be logged in to post a comment.