অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যাবহারের অপকারিতা

আজকের দুনিয়ায় যোগাযোগের যে মাধ্যমটি পুরো পৃথিবীকে আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে, তা হলো মোবাইল ফোন। আজকের এই দিনে মোবাইল ফোন আমাদের শুধু কথা বলার মাধ্যম হিসেবেই সীমাবদ্ধ রয় নি। মোবাইল দিয়ে আমাদের করা কাজের হিসেব হয়তো আমাদের কাছেই নেই। 

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

তাই, এই শতাব্দীর সবচেয়ে কার্যকর যোগাযোগের ডিভাইসটা হলো মোবাইল ফোন। আজকাল মোবাইল ফোন শুধু উচ্চ যোগ্য পেশাদারদের দ্বারাই ব্যবহৃত হচ্ছে না, এটি আজ সব ধরণের সামাজিক গোষ্ঠীর মানুষের হাতে পৌছে গেছে। এটি আজ আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুধুমাত্র পুরো সামাজিক গোষ্ঠীর সাথেই নয়, সব বয়সের লোকদের মধ্যেও বিপুলভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

আর শুধু তা-ই নয়, বর্তমানে শিশুরাও সব ধরনের সেল ফোন ব্যবহার করছে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণার সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, শিশুরা কোনও সঠিক নির্দেশিকা ছাড়াই, এমনকি যে কোনও উন্নত প্রকারের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে সক্ষম।

যদিও মোবাইল ফোনগুলি যোগাযোগ ব্যাবস্থার কার্যকর মাধ্যম, এটি ও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে অতিরিক্ত ব্যবহার সবকিছুর জন্যই অপকারি। মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম নয়। মোবাইল ফোনগুলি যে তেজস্ক্রিয় বিকিরণগুলি নির্গত করে যা বিভিন্নভা দেহের উপর খুব ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। 

মোবাইল ফোন দ্বারা নির্গত বিকিরণ শিশুদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যাবহারের কিছু ক্ষতিকর দিক হলো:

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যাবহারের অপকারিতা:

১। একটি সেল ফোন বা মোবাইল ফোন সারাদিন ব্যবহারের পরে সেল ফোনের ডিসপ্লেতে অনেক ধরনের জীবাণু থাকে। আর এই জীবানু আমাদের টয়লেট আসনের তুলনায়ও বেশি হয়ে থাকে। তাহলে আমরা বুঝতেই পারছি এটি কতটা ভয়াবহ।

আর আমাদের ঘন ঘন স্পর্শ করার ফলে বা কথা বলার জন্য আমাদের মুখের কাছাকাছি আনার সাথে সাথে এই জীবাণুগুলি সহজেই আমাদের দেহে স্থানান্তরিত হতে পারে। তাই এটি জীবাণুগুলির সংস্পর্শে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় এমনকি তা শিশুদের স্থিতিশীলভাবে পুরোপুরি বিকাশিত না হওয়ার জন্যও দায়ী হতে পারে। আর এই করোনাকালে তো কথাই নেই। করোনাভাইরাস বহনের জন্য খুব শক্তিশালী বাহন এটি।

২। চ্যাটিং করা বা গেমস খেলার জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে আমাদের হাতের অনবরত চলন প্রয়োজন পরে যা আমাদের কাঁধ এবং হাতের অস্থিবন্ধনিগুলোর তীব্র ব্যথার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।

৩। আজকাল শিশুরা মোবাইল ফোনে গেমস খেলায় বেশি মনোনিবেশ করায় তারা গেমসের প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহ ও আকর্ষণের ফলে ঘন ঘন চোখের পর্দা ফেলতেও ব্যর্থ হচ্ছে। তাই এটি আমাদের কনজেক্টিভা শুকিয়ে যাওয়া এবং অ্যাকুলার টান বাড়ার কারণ হয়েও দাড়াতে পারে।

৫। মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যাবহার আমাদের দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে ফেলে। ধীরে ধীরে তা অন্ধত্বেরও কারণ হতে পারে।

৬। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যাবহারের ফলে নতুন প্রজন্মের শিশুরা বাস্তবতাকে ভুলে যাচ্ছে। যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য খুবই হতাশাজনক। 

৭। অপ্রয়োজনে মোবাইল ফোন ব্যাবহার আমাদের মহামূল্যবান সময় নষ্ট করে দিচ্ছে। বিশেষভাবে ছাত্রজীবনে তা ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে।

৮। আমাদের আবেগকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে মোবাইল ফোন।

উপরোক্ত দিকগুলি ছাড়া আরো অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যাবহারের।

একজন পিতামাতা হিসাবে, আমাদের মোবাইল ফোনের ক্ষতিকারক দিকগুলোর প্রতি আপনার সন্তানকে সচেতন করতে আমাদের অবশ্যই বেশ কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে:

➤ আমাদের সন্তানের বয়স ১৬ বছরের কম হলে তাদের হাতে মোবাইল ফোন দেউয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। একটি ছোটবেলা থেকেই শিশুর মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে।

➤ আমাদের অনেকেরই একটি বাজে অভ্যাস রয়েছে, যা হলো ঘুমানোর সময় মাথার কাছে মোবাইল রাখা। ঘুমানোর সময় মাথার কাছে মোবাইল ফোন রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে।  

➤ একটানা মোবাইল ব্যাবহার বন্ধ করতে হবে। কেননা অবিরত মোবাইল ব্যাবহারের ফলে আমাদের মস্তিষ্ক দুর্বল হয়ে যায়, এবং এক সময় আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ু গুলো শুকিয়ে যায়।

➤ শিশুদের আশেপাশে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

➤ পড়া বা অন্য কোনো কাজ করার সময় মোবাইল ফোন দূরে কোথাও রেখে দেউয়া। যাতে ধরতে ইচ্ছা করলেই তা থেকে দূরে থাকা যায়।

➤ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বা বিদ্যালয়ের কাছাকাছি কোনও মোবাইল ফোন মাস্ট বা নেটওয়ার্ক টাওয়ার নির্মাণ না করা।

➤ স্কুলে শিশুদের মোবাইল ফোন নিতে না দেয়া। এবং শিশুদের শোয়ার ঘরে মোবাইল ফোন না রাখা।

আপনারা চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এই লিংকে। 

আজ আর নয়। কথা হবে পরবর্তী পোস্টে। করোনার এই সময়ে সবাই বাড়িতে থাকুন। নিরাপদে থাকুন।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

I am a student of SSC batch 22. I am a regular article writer. Specially I am a blogger and an old member of JIT Earning Programme. I have also a personal blog. My blog address is: http://www.islamicandtechnicalknowledge.xyz