বন্ধুরা, আজকে আমি তোমাদের সামনে বরই-মুচি ভর্তার রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি তোমাদের মধ্যে অনেকেই এই রেসিপির সাথে পরিচিত। আমি যদিও মেয়ে নই, তবুও মা, চাচীদের এই ভর্তা বানানো দেখে আমি সব শিখে নিয়েছি।
এই ভর্তা মাঘ মাস থেকে ফাল্গুন মাসে খাওয়া হয়। যেহেতু, চারপাশে এখন শিতের ছায়া, তোমাদের সামনে তাই আজ এই বরই-মুচি ভর্তার রেসিপি তুলে ধরলাম।
বরইকে অনেকেই কুল বলে। আর মুচি কি, জান? জুতা সেলাই করা মুচি নয়। কাঁঠাল গাছের কাঁঠালের মুকুল ধরার সময়, যেগুলোতে কাঁঠাল ফুলে না, কিন্তু, দেখতে কাঁঠালের মুকুলের মতো লাগে, সেটাকে আমরা গ্রাম্য ভাষায় মুচি বলে থাকি।
বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নাম থাকতে পারে। তোমাদের ওইদিকে এর নাম কি, তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবে না। চল দেড়ি না করে রেসিপি বলা শুরু করি।
এই ভর্তা তৈরি করতে যা যা লাগবে তা হলোঃ
১) বরই বা কুল
২) মুচি (কাঁঠালের মুকুলের মতো দেখতে)
৩) কাঁচা মরিচ
৪) লবণ
১মে কাঁঠাল গাছ থেকে মুচি পেরে নিই। এরপর বরই বা কুল গাছ থেকে বরই পেরে নিই। মুচি আর বরইগুলোকে ভালোভাবে ধৌত করি।
অনেক সময় এসব ফল পারতে গিয়ে বালু লেগে যায়। ভালো করে না ধুলে তখন কেমন জানি ক্যাচ ক্যাচ করে। তাই ভালোভাবে, সুন্দরভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
এরপর প্রয়োজনমতো মরিচগুলো ভালো করে ধুয়ে নিই। মরিচ আর লবণ একসাথে মেখে নিই। তারপর সাম-গাহিন (আমাদের এদিকে যেটাতে কোনো কিছু কুটে সেটাকে সাম-গাহিন বলে।
তোমাদের ওইদিকে এটাকে কি বলে, তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিও।) নিয়ে আসি। সেটা ভালোভাবে ধৌত করি। লবণ মাখা মরিচগুলো এবার ওই সাম-গাহিনে দিয়ে দিই। আর কুটতে থাকি। যতক্ষণ পর্যন্ত মরিচগুলো ভর্তার মতো না হয়, ততক্ষন কুটতে থাকি।
মরিচ কুটা শেষ হয়ে গেলে, এবার ওই একই সাম-গাহিনে বরই আর মুচি একদাথে কুটতে থাকি। ভালোভাবে কুটতে থাকি। বরই এর বিচিগুলো যতক্ষণ না পর্যন্ত ভাঙতে থাকে, বা টুকরা টুকরা হতে থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত কুটতেই থাকি।
বরই আর মুচির মিশ্রণ যখন একসাথে মিশে ভর্তার ন্যায় হবে, তখন কুটা বন্ধ করি। এবার আগে থেকে বাটা বা কুটা লবণ মাখানো মরিচগুলো এই বরই-মুচির মিশ্রণে দিয়ে দিই। আবার ৩-৪ মিনিট কুটতে থাকি।
কুটা শেষ করে ভর্তাটা একটা থালাতে বা কলা পাতায় রেখে দিই। এবার হাত দিয়ে সম্পূর্ণ ভর্তাটুকু ভালোভাবে মুত্থা শুরু করি। যদি কেও চিনি দিতে চায়, বা চিনি দিয়ে খেতে পছন্দ করে, তবে চিনি দিয়ে ভালোভাবে মুত্থে নিই।
কিন্তু, চিনি ছাড়াই বেশি মজা। কারণ, চিনি দিলে টক টক ভাবটা চলে যায়। তাই আমরা চিনি ছাড়াই ভর্তা করি। তোমরা তোমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী চিনি দিবে অথবা দিবে না।
তো এভাবে তোমাদের সামনে রেডি হয়ে যাবে, বরই-মুচি ভর্তার সুস্বাদু রেসিপি!
তো বন্ধুরা, কেমন লাগলো আজকের এই রেসিপি সম্পর্কে জেনে? তোমাদের মূল্যবান বক্তব্য কমেন্ট করে জানিয়ে দিও।
ধন্যবাদ সকলকে।
You must be logged in to post a comment.