ছোট থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক সবারই ওপেন ওয়ার্ল্ড গেমস খুব প্রিয়। এর কারন এই গেমগুলোতে গাড়ি চালানো, গানফাইট, বিমান চালানো, সাতার কাটা, মানুষের সাথে ইন্টার এক্ট করা এবং এমন আরো অনেক কিছু করা যায় কিংবা এই ধরনের কিছু না কিছু করা যায়। তাই ওপেন ওয়ার্ল্ড গেমগুলো বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।
এমনকি বাংলাদেশের ছোট ছোট বাচ্চারাও বাসায় কম্পিউটার বা ল্যাপটপ আছে অথচ GTA এর নাম শুনেনি এমনটা বিরল। যেহেতু এই গেমগুলো সবাই পছন্দ করে, তাই কিছু ভালো ওপেন ওয়ার্ল্ড সিরিজ সম্পর্কে সবার সামনে তুলে ধরবো।
১। GTA Series
GTA Vice City, GTA San Andreas, GTA Liberty City, GTA IV, GTA V এগুলো হলো এই সিরিজের সবচেয়ে বিখ্যাত গেমগুলো। এই সিরিজের নির্মাতা Rockstar Games যারা আজ পর্যন্ত সেরা গেম নির্মানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। GTA Vice City গেমটা সর্বপ্রথম ২০০২ সালে রিলিজ হয়। তখন এর গেমপ্লে ও গ্রাফিক্স খুব ভালো ছিলো না।
তখন গেমটিতে সাতার কাটাও যেত না যা San Andreas এ করা যায়। GTA IV/V খুবই উন্নত গ্রাফিক্স এবং গেমপ্লে উভয় দিক দিয়েই। GTA V ২০১৩ সালে তৈরির পর তারা এই সিরিজের নতুন গেম আর বানায়নি। তাদের ভক্তরা এখন নতুন গেমের অপেক্ষায় অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছে। এই সিরিজ এর গেমগুলোতে ফাইট, গাড়ি চালানো, সাতার, মিশন ইত্যাদির মধ্য দিয়ে একটি গল্প এগিয়ে চলে।
গেম শেষ হয় একটি অসাধারন গল্পের অভিজ্ঞতা নিয়ে। এছাড়া যারা পুলিশের সাথে Cheat Code দিয়ে লড়াই করেছে কেবল তারাই জানে এর মজা।
২। Far Cry Series
GTA সিরিজে শহরের ভেতর মিশনগুলো করতে হলেও এই গেমে পুরোপুরো গ্রাম এলাকায় সবকিছু করতে হয়। এর ১ ও ৩ ভার্সনের গল্পটা সেট করা হয়েছে একটা দ্বীপে। ৩য় ভার্সনে কয়েকজন বন্ধু একসাথে ঘুরতে গিয়ে কিডন্যাপড হয়ে যায়। তারপর গেমের নায়ক নেমে পড়ে তার বন্ধুদের খুজে বের করার জন্য। এই গেমের সেরা চরিত্র ছিলেন এর একজন ভিলেন যার নাম ভাস।
গেমের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বিশ্লেষনে দারুন কাজ করেছে Ubisoft কোম্পানি। এছাড়া গেমপ্লে নিয়ে অভিযোগের জায়গা রাখেনি। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো ফার ক্রাই সিরিজের বেশিরভাগ গেমই খুব কম র্যাম থাকলেই খেলা যায়। Far Cry 1/2/3/4/Primal এগুলা অন্তত core i3-4th gen প্রসেসর থাকলেই কোনো দুশ্চিন্তা ছাড়াই খেলা যাবে।
এই গেমগুলোর সৌন্দর্য ও ডিটেইল ছাড়াও অসাধারন স্টোরির কারনে সবার প্রিয় হয়ে উঠেছে।
৩। Assassins Creed Series
কম্পিউটারে গেম খেলেনি অথচ এই ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম শুনেনি এমন মানুষ খুজে পাওয়া কঠিন। এতে কিছু আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের পূর্বপুরুষের স্মৃতিগুলো পুনরুদ্ধার করা হয়। এই কার্যক্রম চলাকালীন ঐ ব্যক্তি তার পূর্বপুরুষের সব কিছুর অভিজ্ঞতা পেতে থাকে আর এই অভিজ্ঞতাগুলো নিয়েই গেমটি তৈরি করা হয়েছে।
এই এসাসিনরা হলো ক্রুসেডের সময়কার ঘাতক যারা রাজ্যকে রক্ষার জন্য নীচ মানুষদের হত্যা করতো। এই গেমটিতে সেই ১৫০০-১৯০০ সালের মাঝামাঝি কোনো সময়কার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে তাই এই ওপেন ওয়ার্ল্ড গেমটি খেলার সময় সেই সময়কার মতো সব পুরনো প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয়। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি সিরিজের অনেকগুলো গেম আসার কারনে অনেকে জানেনা যে এর গল্পগুলো একটার সাথে আরেকটা সম্পর্কিত।
তাই গ্রাফিক্স ভালো দেখে সবার আগে Valhalla শুরু করা মোটেও উচিত হবেনা বরং সেই Assassin Creed 1 থেকে সম্পুর্ন খেলে এগোলে পুরো কাহিনীটা বুঝতে পারা যাবে। এর বেশিরভাগ গেমই পুরাতন ও কম ক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসরে খেলা যাবে।
৪। Witcher Series
এই সিরিজটাও অনেকটা ওপেন ওয়ার্ল্ডের মত হলেও এতে আছে ম্যাজিকাল পাওয়ার যা নাম দেখেই বোঝা যায়। এই গেমে মানুষকে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করা, এডভেঞ্চার, বিভিন্ন সুপারন্যাচারাল জীব-জন্তুকে হত্যা করা ইত্যাদির মাধ্যমে এর কাহিনী এগোয়। এর গেমগুলোর গ্রাফিক্স খুবই উন্নতমানের। এজন্য সব ধরনের ডিভাইসে এগুলা খেলা যায়না, একটু ভালো হার্ডওয়্যার থাকা খুব জরুরি।
৫। Watch Dogs Series
এই সিরিজের গেমগুলো ২০১৪ থেকে প্রকাশ পাওয়া শুরু হয়। তারপর থেকে প্রতিটা গেমকেই GTA V এর সাথে তুলনা করা হলেও কোনোটাই তাদের তুলনায় ভালো হয়নি তবে গ্রাফিক্স এর দিক দিয়ে বেশ উন্নত। এদের গেমের একটা অন্যতম আকর্ষন হলো নায়কের হ্যাকিং দক্ষতা।
সে হ্যাক করে প্রায়ই বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে যা খেললেই বোঝা যাবে। এছাড়া এই গেমে ইংল্যন্ডের লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো, ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ফ্রান্সিসকোর মতো জায়গাগুলোকে কেন্দ্র করে গল্পগুলো তৈরি করা হয়েছে যা গেমগুলোকে বাস্তবিক চিত্র দিয়েছে।
এই গেমটিও Ubisoft এরই তৈরি। তবে এর বেশিরভাগ গেমের অপ্টিমাজেশন খুব ভালো না হওয়ায় নিম্নমানের প্রসেসরে প্রচুর ল্যাগ ও ফ্রেম ড্রপ করে থাকে। এজন্য অন্তত মোটামুটি ভালো প্রসেসর না থাকলে গেমটি খেলার চেষ্টা না করাই ভালো।
এই সিরিজের সব গেম oceanofgames.com ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নেয়া যাবে। এখানে একেবারে ভিডিও টিউটোরিয়াল সহ কীভাবে ডাউনলোড করতে হবে তা বলে দেয়া আছে। খেলতে হলে শুধু গেম এই সাইট থেকে ডাউনলোড করে ভিডিও গাইড অনুযায়ী সব কিছু করতে হবে। তাছাড়া windows, directx, drivers ইত্যাদি আপডেট করা না থাকলে কোনো গেমই ঠিকমতো চলবে না। সেজন্য এগুলো আপডেট করে নিতে হবে।
যারা windows 10 ব্যবহারকারী তারা অনেক গেম খেলার সময়ই চালু না হতে পারে কারন কিছু কিছু গেম 10 এর জন্য বানানো হয়নি। এই সমস্যা দূর করতে Windows এর নির্মাতা Microsoft একটি নতুন ফিচার যুক্ত করেছে যা দ্বারা আগের ভার্সনের গেমগুলোও খেলা যাবে। তা হলো compatibility mode। এই মোড চালু করার জন্য গেম আইকনে মাউস দিয়ে ডান বোতামে ক্লিক করলে properties পাওয়া যাবে।
ওইখানে খুজলেই Compatibility mode পাওয়া যাবে৷ অতঃপর গেমটা যে ভার্সনে সাপোর্ট করে সে ভার্সন সিলেক্ট করে দিলে আর কোনো সমস্যা হবেনা।
আশা করি সবাই গেমগুলো খুব ভালোভাবেই উপভোগ করতে পারবেন।
You must be logged in to post a comment.