বন্ধুরা আজকে আমি তোমাদের সামনে দেশি খাবারের দেশি রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি। টাইটেল দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ, আমি কোন খাবারের কথা বলছি।
আমি আজকে সিদ্ধ বেগুন এর ভর্তা নয়, আমার গ্রামের দাদি-চাচিরা বেগুন পুরিয়ে যেভাবে ভর্তা করে, তা নিয়ে আলোচনা করব।
তো চলো আর দেরি না করে শুরু করা যাক। আমরা শহরে বেগুন যেভাবে ভর্তা করে খাই, তা হলো বেগুন সিদ্ধ করতে দিই চুষা সহ।
এরপর তা সিদ্ধ হয়ে গেলে আমরা বেগুনের চুষা ছিলে নিই। তারপর বেগুন গুলোকে ডলতে থাকি।
এক পর্যায়ে যখন বেগুন গুলো ভর্তার ন্যায় হয়ে যায়, তখন আগে থেকে বাটা মরিচ, লবন, পেয়াজ, সরিষার তেল এর মিশ্রণ বেগুন এর করা ভর্তার সাথে দিয়ে দিই।
তারপর ভালভাবে মেখে নিই। বেগুনের ভর্তা খাওয়ার জন্য রেডি। আজকে আমি সিদ্ধ বেগুনের ভর্তার কথা বলছি না।
আজকে গ্রামীণ এক ঐতিহ্য পুড়া বেগুনের ভর্তা নিয়ে আলোচনা করব। যদিও বেগুন পুড়ে ভর্তা করার চল এখন উঠে গেছে বললেই চলে। গ্রামেও এখন আর আগের মতো কেউ বেগুন পুড়িয়ে ভর্তা করে খাই না।
তবুও আমি এটা নিয়ে কেন আলোচনা করতে চাচ্ছি জানেন? কারণ, আমার বাবা প্রায় বেগুন পুড়ে ভর্তা করে খেতে চায়। তাই প্রায় আমাদের বাসায় বেগুন পুড়ে ভর্তা খাওয়া হই।
এটা খেতে সিদ্ধ বেগুন ভর্তার চেয়ে অনেক ভালো। অনেক সুস্বাদুও বটে। পুড়া বেগুন ভর্তা খেতে যেসব উপকরণ লাগবে:
১. কয়েকটি বড় বেগুন।
২. পরিমাপ মতো কাচা বা শুকনো মরিচ।
৩. পরিমাপ মতো ২-৩ টি পেঁয়াজ।
৪. পরিমাপ মতো লবণ।
প্রথমে অনুনে আগুন দিই। অনুন না থাকলে অনেক সময় শীতের বেলা যেভাবে আগুন ধরানো হয় কাঠ, পাতা দিয়ে শীত থেকে বাচার জন্য ঠিক সেরকমভাবে কাঠ বা পাতা দিয়ে আগুন ধরিয়ে নিই।
অবশ্য পাতা দিয়ে ধরালে সেখানে আগুন বেশিক্ষন থাকে না। সেজন্য কাঠ বা এমন জিনিস দিয়ে আগুন ধরাতে হবে যাতে আগুনের তাপ অনেক্ষন থাকে।
আগুন ধরানোর পর আগুন যখন আর জ্বলবে না, কিন্তু কাঠগুলো লাল বর্ণের থাকবে তখন সেসমস্ত কাঠের উপর ছাই দিয়ে তাতে কতিপয় বেগুন দিয়ে দিই। বেগুন এর উপরে আবার ছাই দিয়ে তার উপর গরম কাঠ রাখি।
এভাবে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করি। অপেক্ষা করার পর কাঠগুলো সরিয়ে বেগুন গুলো দেখে নিই সিদ্ধ হয়েছে কিনা?
না হলে আরেকটু তাপ দিই। ওই একই স্থানে পরে কাচা মরিচ কিংবা শুকনো মরিচ পুড়াতে দিই।
বেগুন আর মরিচ পুড়ে সিদ্ধ হয়ে গেলে ভালভাবে পানিতে ধুয়ে নিই। এরপর বেগুন এর চুষা ছিলে বেগুন গুলো ডলতে শুরু করি।
আর মরিচগুলোও লবণ দিয়ে মেখে ডলতে শুরু করি। এরপর মরিচের মিশ্রণে কাঁচা পেয়াজ দিয়ে ভালভাবে ডলে নিই।
বেগুনের মিশ্রণ আর মরিচের মিশ্রণ এবার হাত দিয়ে মেখে নিই। এরপর তাতে সরিষার তেল দিয়ে ভালভাবে ডলে নিই।
তারপর বেগুনের ভর্তাকে সুন্দরভাবে একটা বাটিতে রেখে দিই। এরপর গরম ভাত সরিষার তেল আর লবণ দিয়ে মেখে বেগুনের ভর্তা দিয়ে মজা করে খাই। আহা।
কি সুস্বাদু পুড়া বেগুনের ভর্তা।
You must be logged in to post a comment.