আমাদের দেশ থেকে উচ্চ শিক্ষা করতে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো এবং প্রেফারেবল গন্তব্য হচ্ছে আমেরিকা,কানাডা,অস্ট্রেলিয়া,জার্মানি এর পিছনের কারন হচ্ছে।
আমাদের দেশ থেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য যারা বিদেশ যান ,তারা প্রথমত স্কলারশিপ এর সন্ধান করেন।আর স্কলারশিপের জন্য কানাডা এবং আমেরিকা শ্রেয়।কানাডা এবং আমেরিকার জন্য বেশ কিছু কোয়ালিফিকেশন এর দরকার আছে।জিআরই, আইএলটিএস, টো ফেল এর পাশাপাশি প্রফেসর এর কাছ থেকে রিসার্চ ফান্ড জোগাড় এবং রিসার্চ করার টপিক চুজ করাটা বেশ সময় সাপেক্ষ এবং কঠিন কাজ ও বটে।প্রায় ১ বছর এর পিছনে আপনাকে খরচ করতে হবে।কানাডা পিআর এর জন্য বেশ জনপ্রিয়।
উচ্চশিক্ষার জন্য কোন দেশ ভালো হবে তা নির্ধারণ করে সেই দেশের রাঙ্কিং, জীবনযাত্রারমান,আবহাওয়া, স্কলারশিপ,গ্রাজুয়েট, এপ্রুয়েবিলিটি ইত্যাদির উপরে সর্বাধিক শিল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিবেচিত,আন্তরজাতিক শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা এখানে কাজের সুযোগ পায়।জার্মানিতে ২০১৯/২০ সালে সালে প্রায় ৩০২,১৫৭ আন্তরজাতিক শিক্ষার্থী পড়তে গেছে।জার্মানিতে পড়াশোনা করার শিক্ষার্থিদের মধ্য খুব চাহিদা রয়েছে।
জার্মানি
উন্নত দেশগুলোর মধ্য সবচেয়ে কম খরচে উচ্চ শিক্ষা প্রদান করে থাকে জার্মানি।জার্মানির বেশিরভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার কোন খরচ লাগে না।সবার মধ্য একটি ভয় থাকে জার্মান ভাষা শেখা নিয়ে।তবে এই ভয় অমূলক।জার্মান ভাষায় পড়তে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।জার্মানিতে বিদেশি শিক্ষার্থিদের জন্য ইংরেজি প্রাধান্য দেওয়া হয়। শিক্ষা ও গবেষণায় জার্মানদের জনপ্রিয়তা অনেক জার্মানির বেশিরভাগ ভার্সিটিতে নামেমাত্র টিউশন ফি দিয়ে পড়াশোনা করা যায়।এছাড়াও স্কলারশিপ এর সুযোগ তো রয়েছেই।কেউ যদি নিজের ক্যারিয়ার বানাতে চায়,তাদের জন্য জার্মা স্বপ্নের নাম।কিউএস রাঙ্কিং এ সেরা পাঁচশত ভার্সিটি রয়েছে।
জার্মানিতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা এতই জোরদার যে রাতে তিনটা বাজেও আপনি নির্ভয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারবেন।পড়াশোনা ও থাকা খাওয়ার খরচ তুলনামূলক কম।
তবে আপনি যদি জার্মানির ভাষা না জানেন ,তাহলে আপনাকে চলাফেরা করতে কিছুটা বেগ পেতে হবে।
কানাডা
কানাডা ইন্টারন্যাশনাল ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।কানাডা সরকারও ইন্টারন্যাশনাল ছাত্রছাত্রীদের প্রতি খুব সদয়।কানাডায় ভার্সিটির সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও ,অনেক ভালো মানের ভার্সিটি আছে।কানাডায় নাগরিকত্ব পাওয়া তুলনামূলক সহজ ও কম সময়েই ত পাওয়া যায়।পড়াশোনা শেষে খুব সহজেই চাকরি পাওয়া সম্ভব।
আরেকটি কথা যাদের ঠান্ডা সহ্য হয় না ,তাদের জন্য কানাডা নয়।কানাডায় কিছু কিছু প্রভিন্সে শীতের তাপমাত্রা মাইনাস ২০-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে।
যুক্তরাষট্র
অনেকের স্বপ্নের দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে হাভার্ড আর স্ট্যানফোর্ডের মত পৃথিবী সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।পড়াশোনা ,ক্যারিয়ার ,রিসার্চ,এন্টারপ্রেনারশিপ সব দিক দিয়েই এদেশের ভার্সিটিগুোলো এগিয়ে আছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথম পছন্দ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ছাত্রছাত্রী থাকায় খুব সহজেই মানিয়ে নেওয়া যায়। আবহাওয়া বেশ ভালো,তাই নতুন অবস্থায় মানিয়ে নিতে বেগ পেতে হয় না।বিশ্বের সব দেশেই যুক্তরাষ্ট্রের ডিগ্রির মূল্যায়ন করা হয়।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার খরচ অনেক বেশি।তবে স্কলারশিপ পেলে খরচ অনেকটাই কমে আসে।
যুক্তরাজ্য
আধুনিক জ্ঞান প্রযুক্তির প্রথম দিক হলো যুক্তরাজ্য।যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্য তালিকাভুক্ত এবং আন্তরজাতিক ছাত্রদের মধ্য তাদের সুনাম রয়েছ। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্সিটিগুলো বিট্রিশদের হারানো গৌরবের সাক্ষী হয়ে আজ বিশ্ব রেকর্ডের রাজত্ব করছে। কিউএস রাঙ্কিং এ সেরা পাঁচশোর মধ্য উনপঞ্চাসটি বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাজ্যর।
শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ভালো।প্রচুর বাংলাদেশী ইউকেতে থাকায়,মনে হবে এটি একটি মিনি বাংলাদেশ।
কিন্তু যারা আমেরিকান ইংলিশে অভ্যস্ত তারা ব্রিটিশ ইংলিশ এর সাথে মানিয়ে নিতে বেগে পেতে পারে।টিউশনফি টা অনেক বেশি ।তাই স্কলারশিপ ছাড়া অনেক ছাত্রছাত্রীর পক্ষে এদেশে পড়াশোনা করা অসম্ভব।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়া পিআর লাভ এবং সেই সাথে তাদের আবহাওয়া ভালো হওয়াতে অনেক অস্ট্রেলিয়ায় যায়। পৃথিবীর সেরা দেশগুলোর মধ্য অস্ট্রেলিয়া বসবাসের মধ্য একটি।কিন্তু অস্ট্রেলিয়া আসলে স্কলারশিপের সুযোগ নেই যদি না আপনি অনেক ভালো রেজাল্ট করে থাকেন।অস্ট্রেলিয়াতে মাস্টার্স এর পর চাকরি জোগাড় করা খুব একটা কঠিন না।আর আপনি যদি ভালো মত লেগে থাকতে পারেন, তাহলে পিআর পাওয়া খুবই সহজ। ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী চার লাখের বেশি ইন্টারন্যাশনাল ছাত্রছাত্রী অস্ট্রেলিয়াকে উচ্চ শিক্ষাজন্য বেছে নিয়েছে।
আবহাওয়া থাকার জন্য বেশ উপযোগিতা।এর জন্য পড়াশোনা বা কাজের জন্য কোন অসুবিধা হয় না।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা করার পরিকল্পনা।
B
চায়না
বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য চীন একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠছে। পৃথিবীর উদীয়মান শক্তি হলো চায়না।চায়নার উন্নতির পেছনে রয়েছে সরকারের উচ্চশিক্ষায় উজাড় করে খরচ করার উদ্যোগ।চিনে ছাত্রছাত্রী যেতে আগ্রহী হওয়ার কারণ উন্নতমানের শিক্ষা ব্যাবস্থা ,স্কলারশিপ এর সহজ প্রাপ্তি । চীনে উচ্চ শিক্ষার মান ভালো।জীবনযাত্রার মান ভালো হওয়ার সত্বেও সেখানে থাকা খাওয়ার খরচ অনেক কম।
যারা রিসার্চ এর ক্যারিয়ার বানাতে চায় তাদের জন্য চীন এর ভার্সিটি গুলো অনেক ভালো।খুব সহজেই স্কলারশিপ পাওয়া যায়।থাকা খাওয়ার খরচ ইউরোপ,আমেরিকার তুলনায় খুব কম।কিন্তু জীবন যাত্রার মান তাদের কাছাকাছি।
কিন্তু যার চাইনিজ ভাষা জানেন না,তাদের জন্য চলাফেরা করতে খুব অসুবিধায় পড়তে হবে।
কম খরচে উচ্চশিক্ষার জন্য কয়েকটি দেশের নাম উল্লেখ করা হলো ।
বেলজিয়াম
বেলজিয়াম শিক্ষার্থিদের তাত্বিক ও ব্যাবহারিক নানা বিষয়ে মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করে থাকে।উন্নত বিভিন্ন সুবিধার পাশাপাশি খুব অল্প খরচে উচ্চ শিক্ষা শেষ করে বেলজিয়ামে নেওয়া যায় চাকরি।
গ্রিস
প্লেটো,এরিস্টটল ইতিহাস বয়ে চলা গ্রিস উচ্চ শিক্ষার আরেকটি কেন্দ্র।এদেশে জীবনযাত্রার ব্যয় খুবই কম।সেখানে বেশিরভাগ কোর্স ইংরেজিতে পড়ানো হয়।আধুনিক গ্রিসে বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে আধুনিক শিক্ষা প্রদান করা হয়।
ফ্রান্স
ফ্রান্সে বিনামূল্য উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ আছে।শিক্ষা ও সৌন্দর্যের মিলনমেলা ফ্রান্সে একজন শিক্ষার্থীর বাস্তবমুখী বিষয়ে আধুনিক শিক্ষা অর্জন করতে পারে।বিশ্ব রাঙ্কিং অনুযায়ী ফ্রান্সের ৩৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বমানের উচ্চ শিক্ষা প্রদান করে থাকে।দেশটিতে শিক্ষার্থী চাইলে বিভিন্ন সৃজনশীল ও মূলধারার বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করতে পারে।
নরওয়ে
উচ্চ শিক্ষার নানা সুযোগ নিয়ে অপেক্ষা করে নরওয়ে।এই দেশে স্নাতক,স্নাতকোত্তর পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনা করার জন্য অর্থ ব্যয় করতে হয় না । তবে নরওয়েতে পড়তে চাইলে শিখতে হবে সেই দেশের ভাষা।
সুইডেন
জার্মানি নরওয়ের মতো সুইডেন এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিনামূল্য উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দেয়।সুইডিশ এবং নন সুইডিশ যে কেউ এই সুবিধা পেতে পারে। সুইডেনে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে করোলিনস্কা ইন্সটিটিউট,আপ্পসালা বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয় খুব জনপ্রিয়।
You must be logged in to post a comment.