অপরকে প্রভাবিত করবেন যেভাবে, কাউকে দিয়ে আপনার চাহিদামত কোন কাজ করিয়ে নিতে চাইলে সবার আগে আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে কিসের তাগিতে ওরা সেটা করবে, ওরা কি চায়?
একবার যদি জানতে পারেন কিসে ওরা প্রভাবিত হবে, আপনি এ ও জানতে পারবেন কিভাবে ওদের প্রভাবিত করে কাজটা করিয়ে নিতে পারবেন।
আমরা প্রত্যেকেই আলাদা ধাঁচের, প্রত্যেকেরই পছন্দ আলাদা আলাদা।একই জিনিসকে আমরা ভিন্ন ভিন্ন মূল্য দিয়ে থাকি। সুতরাং যেটা ধরে নিলে বিরাট ভুল হবে যে, আপনি যেটা পছন্দ করেন সেটা অন্যরাও করবে, আপনি যা চাইছেন তা অন্যরাও চাইবে।
অপরের মনে বিশ্বাস উৎপাদন
মানুষের স্বাভাবিক হলো চট করে অন্যের কথা বিশ্বাস না করা। বিশেষ করে যদি আপনি এমন কোন কথা বলেন যা সে মেনে নিল আপনারই সুবিধা। এটা সন্দেহ প্রবণতা আপনি অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারেন যদি একটু নিজের কোলে ঝোল না টানা কথাগুলো একবারে সরাসরি না বলে যদি একটু ঘুরিয়ে বলেন।
সবচেয়ে ভালো হয় যদি এসব কথা বলার সময় আপনি এগুলো অন্য কারো মন্তব্য হিসাবে চালিয়ে দেন। তাহলে আপনার হয়ে কথাগুলো অন্য কেউ বলবে সেখানে উপস্থিত না থেকেই,,
ধরুন আপনার ফ্ল্যাটটা যাদের ভাড়া দিতে চাইছেন, তারা জানতে চাইল সেখানকার পরিবেশটা ভাল কি-না?আপনি বলতে পারেন যে বিশেষ করে এখানকার পরিবেশটা আগে ভাড়াটিয়াদের খুব পছন্দ ছিল।
লক্ষ্য করলে দেখবেন প্রশ্নের উত্তর আপনি নিজে দিলেন না, আপনার হয়ে দিলেন আপনার আগের ভাড়াটিয়া। উত্তর আপনি নিজে দিলে যা হবে তারচেয়ে বেশি আশ্বস্ত হবে লোকেরা এতে।
কৌশলটা একটু অদ্ভুত বটে, তবে এতে কারো মনে এতোটুকু সন্দেহ থাকবে না যে একটু ঘুরিয়ে আপনি যা বললেন তাতে কোনো খাদ আছে। ওই একই কথা যদি ওরা আপনার নিজের মতে হিসেবে শুনত তো তেমন বিশ্বাস করত না।
সুতরাং কথা বলুন তৃতীয় ব্যক্তির মারফতেে। অপরের মন্তব্যগুলো কাজে লাগিয়ে নিজের সাফল্যের কথা বলুন পরোক্ষভাবে এবং প্রমাণ হিসেবে নির্দিষ্ট তথ্য পরিসংখ্যান পেশ করুন।
কিভাবে সম্মতি আদায় করতে হয়
কারো মুখ থেকে হ্যাঁ বেরোনো আপনার ভাগ্য বা তার খেয়াল-খুশির উপর নির্ভর করে না। এর পেছনে কিছু হিসেবও কাজ করে। যারা মানুষকে বাগমারার কলা কৌশল রপ্ত করেছেন তারা এমন কিছু কায়দা জানেন যা তাদের কাছে লোকদের হ্যাঁ বলা সম্ভবনা অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়।
আর লোকদের দিয়ে হ্যাঁ বলানো মানে তো আপনি যা চান তা ওদের দিয়ে করিয়ে নেওয়া,,.
এরকম চারটি কায়দা আছে
এক=দেখুন যাতে আপনার কথায় অপরের হ্যা বলার যথেষ্ট যুক্তি থাকে। দুনিয়ার যে যায় করে তার পেছনে কোন না কোন কারণ থাকে। সুতরাং আপনি যদি চান কেউ আমার কাজটা করুক সেটা করার যথেষ্ট যুক্তি তাকে যোগাতে হবে।
তবে দেখবেন যে সব যুক্তি দিচ্ছেন তা যেন তার যুক্তি বলে মনে হয়। অর্থাৎ সেগুলোর মধ্যে সে যেন তার নিজের সুবিধা ও লাভ দেখতে পায়।
ভুলেও এমন কোন যুক্তি দেবেন না যার মধ্যে আপনার নিজের লাভের এতোটুকু গন্ধ থাকে। মোটকথা যা আপনি করাতে চাইছেন তাতে ওদের লাভ হবে সেটাই বোঝান।।
দুই=হ্যাঁ মার্কা প্রশ্ন করুন যাকে দিয়ে আপনি আপনার প্রস্তাবে হ্যা বলাতে চান । তাকে দিয়ে খানিকক্ষণ হ্যাঁ বলার অভ্যাস করান করুন দুই তিনটা হ্যাঁ মার্কা প্রশ্ন। মানে যে সব প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ বলা ছাড়া গতি নেই..
যেমন: আপনি তো বাড়ির সবাইকে সুখে রাখতে চান তাই না ? আপনি চান না আপনার টাকাটা জ্বলে যাক ঠিক তো? এই হে মার্কা প্রশ্নগুলো করার অর্থ হল হ্যাঁ বলিয়ে বলিয়ে উত্তরদাতার মানসিক কাঠামোকে এমন ইতিবাচক করে তোলা যাবে।
শেষে আপনার আসল প্রশ্নের উত্তরটাও হ্যাঁ বলার সম্ভাবনা বাড়ে।তবে হ্যাঁ মার্কা প্রশ্ন করার ভঙ্গি ঠিকঠাক হওয়া চাই, প্রশ্নগুলো করার সময় মাথাটা হ্যাঁ বলার ভঙ্গিতে নাড়বেন এবং প্রশ্ন করবেন আপনি দিয়ে আপনি একটা নজরে পরার মত জিনিস চান ঠিক তো।
তিন=লোকদেরকে দুটো হ্যা বলা থেকে একটি বেছে নিতে বলুন। অর্থাৎ আপনার প্রশ্নে এমন দুটি বিকল্প রাখুন যাতে যেটাই তারা বেছে নেবে আপনি যা চাইছেন তাতে রাজি হবে। হয় এভাবে না হয় ওভাবে।
তার বদলে আপনি যদি ওদের হ্যাঁ বা না বলার মধ্যে একটা বেছে নিতে বলেন তাতে বিরাট ঝুঁকি থাকে। কেননা এতে আপনি তাদের আপনার প্রস্তাবের না বলার সুযোগ করে দিলেন এবং তারা না বলার অর্থ আপনার মন মত কাজটা তারা করবে না।
কায়দা হলো আপনি যে কাজটা তাদের দিয়ে করাতে চান সেটাকে দু'রকম ভাবে প্রস্তাবে রাখা যাতে যে দিকে ওরা যাক না কেন শেষ পর্যন্ত আপনার কথাতে রাজি হয় ।
যেমন ধরুন আপনি কি কাজটা অাজ করবেন নাকি আগামীকাল করবেন?অর্থাৎ আপনি ভদ্রলোককে বিকল্প হিসেবে দুটো সময়ে দিচ্ছেন যার মধ্যে যেকোনো একটি আপনার পক্ষে হ্যাঁ।
আবেদন অনেক হালকা হয়ে যাবে যদি ওনার কাছে এ্যাপয়েনমেন্ট চান।এতে ভদ্রলোক যেমন আপনাকে হ্যাঁ বলতে পারেন তেমনি না বলার সুযোগ থাকে। সুতরাং আপনার প্রশ্ন গুলো একই রকম হওয়া চাই আপনি কালো টা নেবে না সাদাটা ?
আপনি কাল মঙ্গলবার কাজটা করতে চাইছেন আপনার নামে দিল পাঠাবো, না এখনি ক্যাশ নেবেন।
এ কায়দা সব সময় খাটে তা নয় তবে অনেক ক্ষেত্রে কাজটা হয়। আর হ্যাঁ না বলার মধ্যে থেকে বেছে নিতে বলার থেকে অনেক কার্যকর বেশি বটে।।
চার=লোকের মুখ থেকে হ্যাঁ শোনার আশা করুন এবং ওরা বুঝুক যে ওদের কাছ থেকে হ্যাঁ টাই আশা করা হচ্ছে। লোকে দেখে বলবে এটা আশা করা আপনার আত্মবিশ্বাসের পরিচয় দেয়।
তবে এখনো আপনি আরেক ধাপ এগিয়ে ওদের এরকম একটা ধারণা দিচ্ছেন যে আপনি ধরেই নিয়েছেন ওরা হ্যাঁ বলবে।
প্রায় সব মানুষই গোড়ায় নিরপেক্ষ থাকে এবং তাদের নিজের দিকে টানা যায়। একবার যদি বুঝিয়ে দেন যে এটা ধরে নেওয়া হয়েছে যে আপনার প্রস্তাবে রাজি হবে।
অনেকে আপনার উদ্দেশ্যকে সন্দেহ করবে না আপনি যা চাইছেন তা করতে কোন দোনোমোনো করবে না।
এই চমৎকার পদ্ধতি প্রয়োগ করে কয়েকবার সাফল্য পেলেও এতে দক্ষ হয়ে উঠবেন আপনি।
হাসির স্টাইল
টপিকটা দেখে অনেক ভেবেছেন হাসির স্টাইল এটা আবার কেমন?আসলে একজন মানুষের হাসিও অনেক কাজের ক্ষেত্রে সফলতা বয়ে নিয়ে আসে,কারণ হাসিখুশি মানুষকে সবাই পছন্দ করে। তাই এবারে জানুন আপনার হাসির স্টাইল টা কেমন হওয়া উচিত?
যে মুহূর্তে কারো সঙ্গে আপনার প্রথম চোখাচোখি হচ্ছে মুখ থেকে কোন শব্দ বের হওয়ার আগে একবার আন্তরিকভাবে হাসবেন এতে করে ওরা আপনাকে হাসিটা ফিরিয়ে দেবে বিগলিত চিত্তে।
দুটি মানুষের মধ্যে যেকোন একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠার জন্য একটি অনুকূল আবহাওয়া, মেজাজ এবং মঞ্চের প্রয়োজন হয়। সুতরাং আসুন তবে তার জন্য আপনার সময় ও জ্ঞান নিখুঁত হওয়া চাই এবং হাসি অবশ্যই হাঁসবেন নীরবতা ভঙ্গ হওয়ার আগেই এর ফলে আপনার মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ আবহাওয়ার সৃষ্টি কবে ।
আপনার হাসিটা হওয়া চাই ভুবন ভোলানো বিজ্ঞাপনের মডেল দের মত। আর কণ্ঠস্বর কথা বলা সুর এবং ভাবভঙ্গীর ব্যাপারে আপনাকে সাবধান হতে হবে এগুলো যে আপনার ভেতরকার আসল মনোভাব প্রকাশ করে দেয়।
লেখাটি সম্পূর্ন পড়ার জন্য ধন্যবাদ, আমার সঙ্গে থাকবেন এই কামনাই থাকবে। By reja
You must be logged in to post a comment.