ক্যারিয়ার হিসেবে কাস্টমার কেয়ার

ক্যারিয়ার এর শুরুর দিকে আমাদের অনেকের সঠিক ধারণা থাকে না ঠিক কোন দিকে এগোতে হবে। আমরা যেই যেমন ফিল্ড নিয়েই পড়া শুনা করি না কেন আমাদের কিছু কমন জব অপশন থাকে। যেমন এক্সেকিউটিভের পদগুলো ,

কাস্টমার কেয়ার অথবা এডমিনের কিছু সার্কুলার থাকে। ইদানিং আমাদের অনলাইন প্লাটফর্মগুলোর চাহিদা যেমন বেড়েছে তেমন লোক নিয়োগ প্রচুর হচ্ছে। এই মুহূর্তে একটা পপুলার জব হলো কাস্টমার কেয়ার।

কাস্টমার কেয়ারকে অনেকেই প্রাধান্য দিতে চান না আবার অনেকেই চাকরির অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন এই পদটি । এই জন্যই আজকে কাস্টমার কেয়ার নিয়ে কিছু তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি ।

আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনুন :

আমাদের ক্যারিয়ার এর শুরুটা হয় অনেক ধরণের ভয় ভীতি নিয়ে। কারণ দেখা যায় বেশি ভাগ মানুষের কনফিডেন্স লেভেল খুব ভালো থাকে না আবার অনেকের মধ্যে কমিউনিকেশন গ্যাপ খুব থাকে।

দেখা যায় কোনো বিজনেস মিটিং ডিল করতে গেলে প্রেজেনটেশন স্কিল ঘার্তির কারণে হয়তো কোনো প্রজেক্ট মিস হয়ে যাচ্ছে ।
এতে আমাদের আত্মবিশ্বাস কমতে শুরু করে।

কাঙ্খিত জব চলে যাওয়ার ভয় থাকে। ঠিক এই মোমেন্টে আপনাকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। কাস্টমার কেয়ার পজিশনটি আপনাকে কমিউনিকেশন গ্যাপ কমাতে সাহায্য করবে। অভিজ্ঞতা নিন সামনেআগান । আত্মবিশ্বাস কমতে দেয়া যাবে না কোনো ভাবেই।

দক্ষতা বাড়ান :

কাস্টমার কেয়ার এমন একটা জব যেইখানে আপনাকে ফ্রন্ট লাইন এক্সেকিউটিভ হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আপনি আপনার কোম্পানির একজন রিপ্রিজেন্টেটিভ হয়ে কাজ করছেন।

আপনার কোম্পানির ভালো মন্দ সব কিছুকে উপস্থাপন করার দায়িত্ব এখন আপনার কাঁধে দেয়া হয়েছে। তাই আপনাকে কিছুটা ধর্যের সাথে কাস্টমার এর সমস্যা বুঝতে হবে এবং সমস্যা অনুযায়ী সহজ এবং সাবলীল সমাধান জানাতে হবে।

এতে যেমন কাস্টমার এর সমস্যা সমাধান হলো তেমনি একজন কাস্টমার কেয়ার এজেন্টের Problem solving ability ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে।

স্কিল ডেভলপমেন্ট :

আপনি যদি কল সেন্টারে থাকেন তাহলে আপনার সাথে কাস্টমার এর সরাসরি ফোনের মাধ্যমে কথা বলতে হয় তখন ডিরেক্ট কমিউনিকেশন এর স্কিল ডেভলপ হয়ে যাচ্ছে।

পাশাপাশি আপনার তাৎক্ষণিক উপস্থিত জ্ঞান দিয়ে পরিস্তিতি সামলিয়ে নিতে পারছেন। আপনার প্রেজেনটেশন স্কিল এইখানে ডেভলপ হচ্ছে।

এর সাথে আপনি হয়ে যাচ্ছেন একজন ভালো শ্রোতা (good listener)। এই ছোট ছোট গুণগুলো আমাদের ক্যারিয়ার এর এক ধাপ এগুতে অনেক সাহায্য করবে। আর যদি বলি যারা লাইভ চ্যাটে থাকেন তাদের কথা। লাইভ চ্যাটে কয়েকজন কাস্টমারকে একসাথে যোগাযোগ করা যায়।

বেশিরভাগ কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে দেখা যায় লাইভ চ্যাটে একের অধিক কাস্টমারকে একসাথে সেবা প্রদান করতে হচ্ছে। এতে যেমন টাইপিং স্কিল ডেভলপ হয় তেমন আপনি আপনার ব্রেইনকে মূলত multi tasking শিখিয়ে দিচ্ছেন।

অভিজ্ঞতাকে মূল্য দিন :

অনেকেই মনে করেন কাস্টমার কেয়ার এ কোনো ক্যারিয়ার নেই। কাস্টমার কেয়ার এর অভিজ্ঞতা একদম কাজে আসে না।কথাগুলো আসলে কতটুকু যৌক্তিক ?

সত্যিই কি এইখানে শিক্ষার মতো কিছু নেই ? বাস্তবিকভাবে কোন অভিজ্ঞতাই গুরুত্বহীন নয় । কাস্টমার কেয়ার এ অনেক স্কিল আপনার একসাথে ডেভলপ হবে।

যেমন কাস্টমার হ্যান্ডেলিং , গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতি সমুক্ষিন হওয়া এবং মোকাবেলা করা। এছাড়া কাস্টমার খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলে তা তাৎক্ষণিক সমাধান করা।

এইগুলো সবই একজন কাস্টমার কেয়ার এজেন্টকে গুরুত্বের সাথে সমাধান হয় । কাস্টমার এর সাথে কোম্পানির সুসম্পর্ক বজায় রাখতে কাস্টমার কেয়ার এর তুলনা নেই।

এতে কোম্পানি যেমন সুবিধা পায় তেমনি একজন কাস্টমার কেয়ার রিপ্রেজেনটেটিভ স্কিল ডেভলপমেন্ট করে নিজেকে মূল্যায়নের একধাপ এগিয়ে যায়।

অফিসে শিষ্টাচার:

অনেকেই বেসিক জ্ঞান থাকেনা অফিস নিয়ে।অফিস এনভিরমেন্ট মেইনটেইন এবং অফিস etiquette শিখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।অফিসের পরিবেশে আপনাকে কতটুকু প্রফেশনাল হতে হবে তার ম্যাপ কাঠিও রয়েছে।

যেমন অনেক অফিস থাকে অনেক ফর্মালভাবে প্রেজেন্ট থাকতে হয়। বিশেষ করে ব্যাঙ্ক অথবা অফলাইন কাস্টমার কেয়ারগুলোতে সাজানো গুছানোভাবে নিজেকে উপস্থাপন রাখতে হয়।

অন্যদিকে অনেক বড় কোম্পানি গুলো থাকে এরা empoyee কি পরিধান করলো তাতে কোনো মাথা ব্যথা নেই। এই কোম্পানিগুলো সার্ভিসকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

ড্রেস আপ তেমন গুরুত্ব দেয় না যেমন গুগল। গুগলে আপনি শার্ট পরুন অথবা টিশার্ট কোনো সমস্যা নেই নিজের যোগ্যতা প্রমান করতে পারলেই হলো ।

এই ছোট ছোট অভিজ্ঞতা আপনি বই পড়ে অথবা ভিডিও দেখে শিখতে পারছেন না। আপনাকে কোনো অর্গানিজশন এর ছোট বড় যেকোনো পদে এক্সপেরিয়েন্স নিতে হবে।

এই সব ক্ষেত্রে বাসায় বসে সময় নষ্ট না করে পড়াশুনা চলাকালিন অবস্থায় পার্ট টাইম হোক বা ফুল টাইম হোক যেকোনো পোস্টে এপ্লাই করে ফেলুন। এই ক্ষেত্রে আপনি অনায়সে কোনো কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার এ ক্যারিয়ার এর প্রথম ধাপ হিসেবে বেছে নিতে পারছেন।

জ্ঞানের পরিধি বাড়ান :

পরিশেষে এইটুকুই বলতে চাই ,আপনার অভিজ্ঞতা সম্পূর্নই আপনার। চলমান এই প্রতিযোগিতামূলক সময়ে একটুকম অভিজ্ঞতার কারণে অনেক ভালো পজিশনে জব পাচ্ছেন না অনেকেই ।

আবার অনেকেই ভালো পজিশনে জব হওয়ার পরেও অফিস culture /etiquette মেইনটেইন না করতে পেরে জব ছেড়ে দিতে হচ্ছে বা অন্যদের তুলনায় নিজেকে পর্যাপ্ত বিকশিত করতে পারছে না ।

তাই সব থেকে ভালো হয় ছোট ছোট সিঁড়ি গুলো পেরিয়ে জীবনের বড় সাফল্যগুলোকে আঁকড়ে ধরুন। এই আপনি যখন কোনো কোম্পানির মালিক হয়ে যাবেন তখন আপনার বুঝতে কষ্ট হবে না আপনার কোম্পানির ফ্রন্ট লাইন এই এজেন্টগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

লিখতে পছন্দ করি। পড়াশুনা করার ইচ্ছাটা প্রবল। খুব বেশি বই যে পড়েছি এমন নয়। সময় আর সুযোগের অভাবে নিজেকে এখনো গুছিয়ে উঠতে পারি নি। তবে নতুন কিছু করার চেষ্টায় আছি। নিজের সুপ্ত চাওয়া পাওয়াগুলোকে শব্দের মাধ্যমে উপস্থাপন করার আপ্রাণ চেষ্টায় এই আমি।