বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তির উৎকর্ষের একটি চরম বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ইন্টারনেট। আর এই ইন্টারনেটের যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ওয়েবসাইট।
ওয়েবসাইট হচ্ছে অনলাইন বা নেট জগতের প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানে ঠিকানা, বিভিন্ন জরুরী তথ্য, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যকার সকল বিষয় বিদ্যমান থাকে।
অর্থাৎ ওয়েবসাইট হল কোন ওয়েব সার্ভারে রাখা ওয়েব পৃষ্ঠা, ছবি, অডিও, ভিডিও ও অন্যান্য ডিজিটাল তথ্যের সমষ্টিক যা ইন্টারনেট বা ল্যানের মাধ্যমে পরিচালনা পর্যবেক্ষণ ও ব্যবহার করা যায়।
আর তাই এখন আমরা কীভাবে একটি কার্যকর ওয়েবসাইট তৈরি করা যায তাই তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
যেভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করবো -
১। ডোমেইন নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন:
একটি ডোমেইন হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের নাম। আপনার ওয়েবসাইটের কাজের বা উদ্দেশ্যের সাথে মেলে এমন ডোমেইন নাম পছন্দ করুন। ডোমেইন নাম যাতে ইন্টারনেটে থাকা অন্য কোনো ডোমেইন নামের সাথে হুবহু না মেলে তা দেখে ভিন্ন একটি ডোমেইন নাম দেবেন। ডোমেইন নিবন্ধন করার কয়েকটি সাইট বা পেশাদার প্রতিষ্ঠান রয়েছ। এই নিবন্ধক সাইট থেকে আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন বা নাম নিবন্ধন করে নিতে হবে।কন্ট্রোল প্যানেল দিতে পারবে এমন সেবাদাতা বা প্রোভাইডারের কাছ থেকে ডোমেইন ক্রয় করবেন। কন্ট্রোল প্যানেল আপনার হাতে রাখবেন। প্রোভাইডারের কাছে যদি কন্ট্রোল প্যানেল না থাকে তাহলে আপনি কন্ট্রোল প্যানেল পরিচালনা করতে পারবেন না।
তারপর একটি ডোমেইন নাম নির্বাচন করে সেই নামটি দিয়ে নিবন্ধনের জন্য ফরমায়েশ বা অর্ডার দেবেন। যদি আপনি টপ লেভেল ডোমেইন চান তাহলে নিবন্ধনের জন্য পেমেন্ট প্রদান করতে হবে।সাধারণত ডোমেইন নিবন্ধন করা যায় ৭০০ থেকে ৯৫০ টাকার মধ্যে এবং এর মেয়াদ হয় সাধারণত এক বা দুই বছর। মেয়াদ শেষে নবায়ন (রিনিউ) করে নিতে পারবেন।
২। ওয়েব হোস্টিং:
ডোমেইন নিবন্ধনের পরবর্তী কাজটি হচ্ছে একটি ওয়েব হোস্টিং ক্রয় করা। ওয়েব হোস্টিং এর অনেক প্যাকেজ রয়েছে। বিভিন্ন প্যাকেজগুলোর মধ্যে সময় মূল্য এর ক্ষেত্রে ভিন্নতা রয়েছে। সাধারণত মূল্যের ক্ষেত্রে পরিমাণ পাঁচ থেকে সাত হাজার বা কার্যভেদে আরো বেশি হতে পারে। আর এর মেয়াদ সাধারণত এক অথবা দুই বছর হয়। আপনি আপনার সুবিধামতো প্যাকেজের সময়, মূল্য ইত্যাদি ভালোভাবে দেখে যেকোনো প্যাকেজ ক্রয় করে নেবেন।
৩। ডিজাইনকরণ:
কেনার পর আপনার ওয়েব পেজটি ডিজাইন করে নেবেন। ওয়েব পেজ ডিজাইন করার ফলে সবার কাছে অর্থাৎ যারা আপনার ওয়েবসাইটে ঢুকবে তারা আপনার ওয়েবসাইটের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে।
৪। ওয়েব পেজ:
ওয়েব সাইট হল অসংখ্য ওয়েবপেজের সমাহার। এক্ষেত্রে আপনি কিছু জরুরী পেজ ওপেন করে নেবেন। এগুলো হলো হোমপেজ, এবাউট পেজ, কন্টাক্ট পেজ, ব্লগ পেজ, সার্ভিসেস পেজ, শপ পেজ।
হোমপেজ ওয়েবসাইটের প্রথম পেজ যা গ্রাহকরা দেখবে।
এবাউট (about) পেইজটিতে আপনার ওয়েবসাইটের সম্পর্কে সকল তথ্য থাকবে।
কন্ট্রাক্ট পেইজে গ্রাহকরা যাতে ওয়েব পেজ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে পারে সেই ব্যবস্থা থাকবে।
ব্লগ পেজে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ব্লগ, খবর বা ঘোষণা থাকবে।
সার্ভিস পেজে ওয়েবসাইটের যাবতীয় সার্ভিস সম্পর্কে তথ্য থাকবে।
ওয়েবসাইটে কিছু বিক্রি করা হলে তা শপ পেজ থেকে বিক্রি করা হয়।
এই পেইজগুলো তৈরীর প্রক্রিয়া একই ধরনের হওয়ায় আপনি একটি পেজ তৈরি করতে পারলে একইভাবে বাকি পেজগুলোও তৈরি করতে পারবেন।
এই পেইজগুলো তৈরি হয়ে গেলেই আপনার ওয়েবসাইটটি একটি কার্যকরী ওয়েবসাইটে পরিণত হবে।
অর্থাৎ এভাবেই হয়ে যাবে আপনার একটি কার্যকরী ও মানসম্মত ওয়েবসাইট। যদিও ওয়েবসাইটের উন্নয়ন ও বিভিন্ন অপশন এর আরো ক্ষেত্র রয়েছে। আপনি বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে বা কোন ওয়েব সার্ভার প্রতিষ্ঠান এর সাহায্য নিয়ে ওয়েবসাইটের আরো উন্নয়ন করতে পারবেন তথা ওয়েবসাইটে আরও সমৃদ্ধ করতে পারবেন।
উপরোক্ত কার্যাবলী যথাযথভাবে সম্পাদনের মাধ্যমে আপনি তৈরি করতে পারবেন এবং পরিচালনা করতে পারবেন একটি মানসম্মত এবং কার্যকর ওয়েবসাইট।
You must be logged in to post a comment.