কম্পিটারের ইতিহাস জেনে হাপনিও হতে পারেন জিনিয়াস ?

আপনারা যদি কম্পিউটারের ইতিহাস জেনে না থাকেন তাহলে আজি আমাদের এই আটি কেলটি পড়ে হাপনি ও হতে পারের বিশ্ব বিখ্যাত

কম্পিউটারের ইতিহাস- History of Computer

মানুষ প্রথমে নুড়ি, পাথর, ঝিনুক , হাতের আঙ্গল, দড়ির গিট ইত্যাদির মাধ্যমে গননা করতো। কালের বিবর্তনে মানুষের চিরশক্তি পরিবর্তনের কারণে ক্রমাগত গবেষণা ও উদ্ভাবনের ফসল হলো কম্পিউটার।

অ্যাবাকাস বা গননাকরি যন্ত্র Caption

 

কম্পিউটার একটি গণনাকারী যন্ত্র। গণনাকারী যন্ত্র হিসাবে প্রথম অ্যাবাকাস নামক  কম্পিউটার চীন দেশে তৈরি করা হয়। তারপড় কালের বিবর্তনের পাশাপাশি কম্পিউটার এর ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। আধুনিক কম্পিউটার এর রূপরেখা তৈতি করেন বৃটিশ গণিত বিশারদ চার্লস ব্যাবেজ। তিনি 1833 সালে অ্যানালিটিক্যাল নামক গণনা  কারক যন্ত্র তৈরির পরিকল্পনা  করেন। এই যন্ত্রে যাতে স্মৃতি ধরে রাখা যায় তার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সাংসারিক অভাবের কারণে তার এই প্রচেষ্টা সাফল্য অর্জন করতে  পারেন নাই। তবে তার এই পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে আজকের আধুনিক কম্পিউটার।

তাই চার্লস ব্যাবেজকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়। পরবর্তীতে তার এই পরিকল্পনার  উপর গবেষণা  চালতে থাকে। লন্ডন থেকে চলি-শ মাইল দূরে বে-চলি পার্কের কোড এন্ড সাইফার স্কুলে শুরু হয় দ্রুতগতিতে সংকেত লিপির অর্থ উদ্ধারে সক্ষম এমন যন্ত্র উদ্ভাবনের প্রচেষ্টা। টমি ফ্লউয়ার্স, অ্যালেন টারিং প্রমুখ গবেষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল হচ্ছে 1943 সালে নির্মিত  Colossus  কম্পিউটার। ভ্যাকুয়াম টিউব দিয়ে নির্মিত এটি হচ্ছে সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ ইলেক্ট্রনিক  ডিজিটাল কম্পিউটার।

অন্যদিকে আটলান্টিক মহাসাগরের ওপারে যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী ক্ষেপনাস্ত্রের পথ পরিমাপের জন্য দ্রুতগতির হিসাব যন্ত্রের প্রয়োজন উপলদ্ধি করে। লক্ষ্য স্থানের দূরত্বের উপর নির্ভর করে ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপনের কোণ পরিবর্তন করতে হয়। এর জন্য দূরত্বের সংগে কোণের সম্পর্কের সারণী তৈরির প্রয়োজন। মেরীল্যান্ডের ব্যালাস্টিক রিসার্চ ল্যাব 1983 সালে ইউনির্ভাসিটি অফ প্যানস্যালভিনিয়ার মুর স্কুল অফ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যাপক জন মশলী এবং তার প্রকৌ থেকেই জন্ম নেয় ENIAC (Electrical Numerical Integrator And Calculator) কম্পিউটার। এই ENIAC কম্পিউটার নির্মাণ কাজ শেষ হয় 1945 সালের নভেম্বর মাসে। ত্রিশটন ওজনের ENIAC কম্পিউটারটি প্রতি সেকেন্ডে 5000 টি যোগ, 357 টি গুণ করতে সক্ষম ছিল। এক হাজার বর্গফুট জায়গা  দখলকারী এই ENIAC কম্পিউটার চালানোর জন্য 130 থেকে 140 কিলোওয়াট বিদ্যুৎ শক্তির প্রয়োজন হত। 1944 সালে আমেরিকার চারজন প্রকৌশলীর সহযোগিতায় র্মাক -1 নামে একটি স্বয়ংক্রিয় ডিজিটাল কম্পিউটার তৈরি হয়। ইহা ছিল 51 ফুট লম্বা এবং 8 ফুট উচু।

1946 সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মরিস উইলকশ EDSAC (Electronic Delay Storage Automatic Computer) নামক স্বয়ংক্রিয় ইকেট্রনিক ডিজিটাল কম্পিউটার প্রস্তুত করেন।

Analytical Engine

রেমিংটন ব্যানড নামে কোম্পানী 1951 সালে ইউনিভ্যাক-1 নামে কম্পিউটার তৈরি করেন। ইহা প্রথম বাণিজ্যিক ভিক্তিতে উৎপাদিত হয়। এই কম্পিউটারে ক্রিস্টাল যায়োডের সুইচ ও ভ্যাকিউয়াম টিউব সার্কিট ব্যবহার করা হয়। ইহা একই সংগে তথ্য পড়া, গণনা ও লেখায় কাজ করতে পারতো । ট্রানজিস্টর আবিস্কৃত হওয়ার পর কম্পিউটার আকারে ছোট হয়ে যেতে শুরু করে। আই সি ব্যবহারে কম্পিউটার এ আকার আরো ছোট হতে থাকে।

কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় বিপ-ব ঘটে মাইক্রেপ্রসেসর আবিস্কারের ফলে। 1971 সালে সর্বপ্রথম আমেরিকার ইনটেল কোম্পানী মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করে। েইহা আবস্কারের ফলে কম্পিউটার একটি বক্সের মত ছোট আকার ধারন করে। তবে কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে বাজারে 3.0 GHz এ অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসর পাওয়া যায়। এই High Speed প্রসেসর সম্বলিত কম্পিউটারের সাহায্যে দ্রুত ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্কের কাজা অতি সহজে করা যাচ্ছে।

Computer Generations (কম্পিউটার প্রজন্ম)

কম্পিউটার আবিস্কার হওয়ার পর থেকে এর প্রযুক্তিগত উন্নতি, কাজের গতি এবং আকৃতিগত পরিবর্তন বা বিবর্তন ঘটতে থাকে। এই বিবর্তন ও বিকাশের এক একটি ধাপকে প্রজন্ম বলে। কম্পিউটার শিল্পের ক্রমবিকাশের লক্ষে এটি নির্মাণ কাঠামোরূপে কাজ করে। বিবর্তনের অনেকগুলো ধাপ অতিক্রম করে কম্পিউটার আজ বর্তমান অবস্থায় এসছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন কম্পিউটারকে উন্নত থেকে উন্নতত করেছে একটি প্রজন্ম থেকে আর একটি প্রজন্ম পরিকর্তনের সমায় সমস্যাগুলোর সমাধান করে নতুন কিছু বৈশিষ্ট্যের সমস্বয় ঘটিয়ে এক একটি প্রজন্মের আত্নপ্রকাশ ঘটানো হয়। তবে নতুন বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি পুরনো বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে যায়।

প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার- First Generation Computer

প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারে ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করা হত। হাজার হাজার ডায়োড ভালুভ, রেজিস্টার, ক্যাপাসিটর ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হতো বলে এরা আকারে অনেক বড় ছিল । কয়েকটা ঘর জুড়ে থকত ঐ সব কম্পিউটার, যা বর্তমানে অকল্পনীয়। চালু অবস্থায় কম্পিউটার ভীষণ গরম হয়ে যেত। তাই না পুড়ে যাবার জন্য মাঝে মাঝে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হতো। এ গুলো ছিল সীমিত তথ্য ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এবং পরিচালনার জন্যে অত্যাধিক বিদ্যুৎ শক্তি প্রয়োজন হতো। ভালভের কার্যকালও খুব কম। এ কম্পিউটারগুলো ব্যয় বহুল হলেও কম নির্ভরযোগ্য ছিল। কাজের গতি ছিল মন্থর। 1943 সালে নির্মিত সর্বপ্রথম সম্পুর্ন ইলেষ্ট্রনিক ডিজিটাল কম্পিউটার হলো  ENIAC  । ইহা তৈরি কেরেন ইউনির্ভাসিটি অফ পেনসিলভিনিয়অর মুর স্কুল অফ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যাপক জন মউসলী এবং তার প্রকৌশলী প্রেসপার ইকার্ট। 1943 সালে এই কম্পিউটার কাজ শুরু হয় এবং 1945 সালে এই কম্পিউটারের কাজ শেষ হয়। আটলান্টিক মহাসাগরের ওপারে যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী ক্ষেপনাস্ত্রের পথ পরিমাপের জন্য দ্রুতগতির হিসাব যস্ত্রের প্রয়োজন উপলদ্ধি করে। লক্ষ্য স্থানের দূরত্বের উপর নির্ভর করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপণের কোণ পরিবর্তন করতে হয়। এই জন্য ENIAC কম্পিউটারের জন্ম হয়।

1944 সালে আমেরিকার চারজন প্রকৌশলীর সহযোগিতায় মার্কস-1 নামে একটি স্বয়ংক্রিয়  ডিজিটাল কম্পিউটার তৈরি হয়। ইহা ছিল 51 ফুট লম্বা এবং ৮ ফুট উচু। ১৯৫৪ সালের শেষে বোস্টনে প্রথম আবির্ভূত হয় IBM-650। এটি ছিল এ প্রজন্মের ব্যাপকভাবে সমাদৃত কম্পিউটার।

প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের মধ্যে IBM-650, MARK-I, ENIAC, EDVAC EDSAC ইত্যাদি উলে-খযোগ্য। এ সব কম্পিউটারে প্রথমে মেশিনের ভাষায় এবং পরে ১৯৫২-৫৩ সালে অ্যাসেম্বলী বাষায় প্রোগ্রামৈ তৈরি করা হয়।

প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য

1। ভ্যাকুয়াম টিউব ও বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক বর্তনীর ব্যবহার।

2। ধীর গতি সম্পন্ন গণনাকারী যন্ত্র।

3। আকারে অনেক বড়

4। পঞ্চকার্ডের মাধ্যমে ইনপুট- আউটপুট ব্যবস্থা করা হয়।

5। মেশিন ভাষার নির্দেশ প্রদান

6। মেমরি হিসাবে ম্যাগনেটিক ড্রামের ব্যবহার

দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার- Second Generatation Coputer

1948 সালে আমেরিকার বেল ল্যাবরেটরিতে  উইলিয়াম শকলি  জন বার্ডিন এবং এইচ বূটেন সম্মিলিতভাবে ট্রানজিস্টর তৈরি করেন। এ ট্রাানজিস্টর কম্পিউটারের উ্ন্নতিতে বিপ-ব এনে দেয়। এই প্রজন্মের ভ্যাকুয়াম টিউব এর পরিবর্তে ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হত। এই পজন্মের কম্পিউটার গরম হতো না। ১ম লেভেল প্রাগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের ব্যবহার শুরু হয়। যেমনঃ FORTAN (1956), ALGOL (1958), COBOL (1959)G  এই প্রজন্মের একটি কম্পিউটার আই বি এম 1620 দিয়ে 1964 সালে বাংলাদেশে কম্পিউটার ব্যবহার সূচনা করা হয়। এই কম্পিউটারটি ঢাকার পরমানু শক্তি কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles