২০২১ সালে ব্লগিং করে আয় করতে চান? জেনে নিন খুটিনাটি বিষয়গুলি

সময়ের সাথে সাথে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের অন্যতম প্রধান একটি মাধ্যম হয়ে ওঠছে ব্লগিং। অথচ বেশ কয়েক বছর আগেও কেও কি অনুমান করতে পেরেছিলো যে ব্লগিং থেকেও আয় করা সম্ভব! 

ইদানিং ব্লগিং পেশাটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। এখন এমন অনেকেই আছেন যারা ব্ললগিংকে প্গরধান পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন এবং দিনের পুরোটা সময় ব্লগিং করেই উপার্জন করছেন। আজকে এই ব্লগিং পেশা ও এই সময়ের সেরা কিছু প্ল্যাটফর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

দুঃখ জনক হলেও সত্যি যখন থেকেই ব্লগিংটাকে মানুষ পেশা হিসেবে নেয়া শুরু করলো, এটাতেও ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট ঢুকে গেছে! বেশ কয়েকটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম দাড়িয়ে গেছে যেখানে আপনাকে ব্লগিং এর জন্য উচুমানের খরচও করতে হতে পারে!

ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এগুলো বাদে এখনও অনেক ফ্রি ব্লগিং সাইট রয়েছে যেখানে আপনি আপনার মনমতো নিজস্ব পোর্টফোলিও তৈরি করতে পারবেন এবং উপার্জনও করতে পারবেন সহজেই। এই পোস্টে আমি আপনার জন্য এরকমই সেরা কয়েকটা প্ল্যাটফর্ম তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

কিভাবে ব্লগিং প্লাটফর্ম নির্বাচন করবেনঃ

কোনও ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম বেছে নেওয়ার সময় কয়েকটি বিষয়ের দিকে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

যেমনঃ

  • সহজে ব্যবহারযোগ্য
  • মোবাইলেই কাজ করা যায় কিনা
  • মাল্টিনিশ/মাল্টি টপিক
  • নিরাপত্তা
  • থিম
  • সাপোর্ট বা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রাপ্তি

নীচে প্রতিটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

1. সহজে ব্যবহারযোগ্যঃ

ব্লগ লেখার শুরুতেই কেও খুব অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে এমনটা ভাবা একদমই ঠিক নয়। ব্লগসাইট সহজবোধ্য হওয়া জরুরি যাতে সামান্য জানাশোনা নিয়ে যে কেও ব্লগিং শুরু করতে পারেন। আসল কথা হলো ব্লগসাইটটিকে অভিজ্ঞ, আনাড়ি সবার কথা মাথায় রেখেই তৈরি করতে হবে।

2. মোবাইলেই কাজ করা যায় কিনাঃ

বর্তমান প্রযুক্তির সিংহভাগই মোবাইল কেন্দ্রীক। ব্লগসাইটটি এমনভাবে তৈরি হতে হবে যেনো এটিকে খুব সহজেই মোবাইলেই কাজ করা যায়। কারন ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ মোবাইলের মতো এতটাও এভেইলেবল হয়ে ওঠেনি আমাদের দেশে।
এবং খুশির খবর হলো বর্তমানে এরকম অসংখ্য ব্লগসাইট রয়েছে যেখানে খুব সহজেই স্মার্টফোন দিয়ে কাজ করা সম্ভব।

3. মাল্টিনিশ/মাল্টি টপিক

মাল্টিনিশ" বলতে যা বোঝায় তা হ'ল একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম যা আপনার আগ্রহের উপর নির্ভর করে সমস্ত ক্যাটাগরির সমন্বয়ে তৈরি করা হবে।
যেমন, একটি সাইট থেকে লেখালেখি করে একজন ব্লগার তার ব্যক্তিগত পোর্টফোলিও সমৃদ্ধ করতে পারবে আবার কেও  নিজের শখ  থেকেও লেখালেখি করতে সাইটটিকে ব্যবহার করবে এমন অপশন যেনো থাকে।

4. নিরাপত্তা

ব্লগসাইট ব্যবহার শুরুর ক্ষেত্রে আপনাকে দেখতে হবে যে এই সাইটটিতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো সুরক্ষিত কিনা। যেকোন ধরনের সাইবার বুলিং বা ক্রাইম থেকে এটি আপনাকে নিরাপত্তা দেনে কিনা? খারাপ মন্তব্য বা স্প্যাম প্রতিরোধ করার জন্য এটিতে কোনও স্প্যাম ব্লকার রয়েছে কিনা।

5. থিম

আপনি আপনার ব্লগটি কেমন দেখতে চান? আপনার ব্লগে আপনি কোন কোন ক্যাটাগরি রাখতে চান বা কি কি কাজ করতে চান। ব্লগের ডিজাইনটি আপনার ব্লগের থিমের সাথে সামঞ্জস্যময় কিনা এটাও অনেক বড় একটা বিষয়। একেকটি ডিজাইন আপনার ব্লগের থিমকে একেক রূপে উপস্থাপন করতে সাহায্য করবে।

6. সাপোর্ট বা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রাপ্তিঃ

ব্লগে কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা  ব্লগ পরিচালনার সাথে সম্পর্কিত যে কোনও কিছুতে সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে। দেখতে হবে  আপনার ব্লগটিতে 24/7 ঘন্টা সহায়তার ব্যবস্থা আছে কিনা। ব্লগসাইটে ব্লগারদের সহায়তার জন্য লাইভ চ্যাট, জরুরি হটলাইন নম্বর, ভিডিও বার্তায় টিউটোরিয়াল এর ব্যবস্থা থাকা উচিত।

ফ্রী নাকি সেল্ফ হোস্টেড ব্লগ প্ল্যাটফর্ম, আপনার কোনটি বেছে নেয়া উচিত?

ব্লগিংয়ের জন্য কোনো একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের জন্য পছন্দ করার আগে আপনি ফ্রি বা সেল্ফ হোস্টেড (অর্থ খরচ করে) ব্লগ, কোনটি বেছে নেবেন তা একটিবার ভালোভাবে ভেবে দেখা উচিত।

একটি ফ্রি ওয়েবসাইটও আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে অনেকগুলো আকর্ষনীয় ব্যবস্থা দেবে। বিশেষ করে নতুনদের কাছে এটি খুব আকর্ষণীয় ও সহজলভ্য। এর কিছু বিশেষত্ব জেনে নেয়া যাকঃ

ফ্রি এবং পেইড ওয়েবসাইট এর সুবিধা ও অসুবিধা

১। বিজ্ঞাপন

এধরনের ব্লগের একটি সমস্যা হলো এতে প্রচুর পরিমানে বিজ্ঞাপন দেখানো হয় যা আপনার ব্লগের পাঠকদের বিরক্তির কারন হতে পারে! তাছাড়া এই বিজ্ঞাপনগুলি থেকে আপনি সরাসরি আয়ও করতে পারবেন না!
অন্যদিকে সেল্ফ হোস্টিংয়ের জন্য অর্থ প্রদান করে  আপনাকে বিশৃঙ্খলা মুক্ত, বিজ্ঞাপন-মুক্ত ওয়েবসাইটের সুবিধাও উপভোগ করতে দেবে।

২। সেট আপ সহজঃ

ফ্রী ভার্সনে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন ছাড়াই বেশ কিছু সুবিধা পেয়ে যাবেন আপনি। আপনি নতুন হলেও কয়েক মিনিটের মধ্যেই খুব সহজে সেট আপ করে নিতে পারবেন নিজের ব্লগের জন্য। শুধু আপনাকে যা করতে হবে তা হলো গুগল ফর্মে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর  পূরণ করে জমা দিতে হবে। যেমন ধরুন, আপনাকে আপনার ব্লগের নাম, কাজের ধরন, আপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং আরও অনেক প্রশ্নের উত্তর সংযুক্ত করে দিতে হতে পারে।

৩। সাপোর্ট ও সহায়তা প্রাপ্তিঃ

ফ্রী ব্লগিং এর একটাই সমস্যা আর তা হলো, হঠাৎ কোনো জরুরি প্রয়োজনে ইনস্ট্যান্ট সাহায্য না পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে পেইড ফ্রী হওয়াতে সহায়তা কাজে সংশ্লিষ্টদের গড়িমসি দেখানোটা কে খুব একটা দোষনীয়ও বলা  যায় কি?

বেষ্ট ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম কোনগুলোঃ

1. Wordpress.com (Free)

লিস্টের একদম উপরের দিকে ওয়ার্ডপ্রেস কে রাখবো আমি। আর একদমই নতুনদেরকে চোখবুজে এখান থেকেই ব্লগিং শুরু করার পরামর্শ দেবো। এই ব্লগে কাজ শুরু করার জন্য শুধু মেইল, নামধাম দিয়ে সাইনআপ করলেই যথেষ্ট। খুব ঝুটঝামেলার কি দরকার! বর্তমানে এখানে ৭৬.৫ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছেন।

সুবিধা সমূহঃ

★যেসকল ব্লগার একদমই বিনা খরচে আপনাদের ব্লগ শুরু করতে চাচ্ছেন।
★ব্লগের ফাঁকফোকরে বিজ্ঞাপন চলে আসলেও যাদের ব্লগ পরিচালনায় বিজ্ঞাপন মূখ্য নয়, তাদেরকে তেমন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়না।
★অনলাইন ডায়রি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
★স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হয়ে যাবে।
★থিম থেকেই ব্লগের ডিজাইন বেছে নিতে পারবেন।

আপনি আপনার মোবাইল থেকেই আপনার ব্লগটি তৈরি করতে পারবেন।

অসুবিধা সমূহঃ

*আপনি আপনার ব্লগে দেখানো বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের কোনো অংশ পাবেননা।
*আপনার নিজে থেকে কোনো বিজ্ঞাপন দেখাতে পারবেন না।
*আপনি যদি তাদের শর্তাদি অনুসরণ না করেন তবে এটি  আপনার ব্লগটিকে যে কোনও সময় বন্ধ করে দিতে পারে!

2. WordPress.org (Self-hosted)

Wordpress.org  হলো নিজে হোস্ট করে কাজ করার মতো একটি ব্লগসাইট,  যার মানে হলো আপনার নিজের হোস্টিং সরবরাহকারীর খোজ নিজেকেই করতে হবে হয়তো এরজন্য তার কাছে সব কাজের জন্য আপনি দ্বায়বদ্ধও থাকবেন।

সুবিধাগুলো হলোঃ

★কাজ করার জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্লগার খুজে পাওয়া যায়। যে কোনও ধরনের ব্লগ সাইট হিসেবে প্রস্তুত করে নেয়া যায়। যেমন ব্যক্তিগত পোর্টফোলিও, শখ, ই-কমার্স, বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের ব্লগ এবং আরও অনেক কিছু।

অসুবিধা সমূহঃ
এটা ঠিক সম্পূর্ণ আনাড়িদের জন্য নয়,  তবে আপনি চাইলে অল্পদিনেই কাজ শিখে সহজে অভ্যস্ত হয়ে যেতে পারবেন।

3. Wix

ওয়েবসাইটের নির্মাতা হিসাবে নবীন ব্লগাররা উইক্সকে পছন্দ করে এমন একটি বিষয় হলো এখানে একটি ব্লগ তৈরি করা অনেকটাই সহজ।
আপনি যদি একটি ছোট ই-কমার্স বা অনলাইন স্টোর তৈরি করার পরিকল্পনা করে থাকেন Wix তাহলে আপনারই জন্য।

সুবিধাসমূহঃ

★যেসকল ব্লগার নিজের মতো করে একটি ছোটমোটো ই-কমার্স সাইট থেকে ব্যবসা শুরু করতে চান Wix তাদের জন্য আদর্শ ব্লগসাইট।
★ই-কমার্স, স্বাস্থ্য, ফটোগ্রাফি, রেস্তোঁরা, ফ্যাশন এবং পার্সোনাল পোর্টফোলিও ব্লগ তৈরির জন্য অন্যতম বেষ্ট সাইট হতে পারে Wix।

অসুবিধাসমূহঃ
*কখন কোন জায়গায় বিজ্ঞাপন দেখানো হবে তার উপরে আপনার কোনোধরনের হস্তক্ষেপ থাকবে না।

4. Medium

সাম্প্রতিক ব্লগিং প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে অন্যতম এটি।  আপনি মিডিয়ামকে এমন একটি সাইট হিসেবে পাবেন যা আপনার আর্টিকেলগুলোকে আরও বেশি প্রসার করতে সাহায্য করবে। লেখালেখির সুবাদে আপনি লেখক ও সাংবাদিকদের একটা অংশ হয়ে ওঠতে পারবেন খুব সহজেই! আবার আপনার লেখালেখিতে আগ্রহী সবাই সহজেি আপনাকে ফলো ও তাতে মতামতও জানাতে পারবেন এখানে।

একজন নতুন  ব্লগার হিসাবে Medium এ একটি ব্লগ খুলে নিয়ে আপনার পছন্দের লেখকদের ফলো করে খুব ভালোভাবেি অভিজ্ঞ হয়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে আপনার জন্য।

সুবিধা সমূহঃ
★নতুন ব্লগাররা খুব সহজেই সাইনআপ করতে পারবেন।
★ যারা মনের খোরাক মেটানোর জন্য সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস কিছু খুজছেন!
★ফ্রিল্যান্সারররা তাদের পোর্টফোলিও ভারী করতে পারেন।

অসুবিধাঃ
*চাইলেই মনমতো কাস্টমাইজ করতে পারবেননা।
*ব্র্যান্ডিং এর পরিধি বেশ সীমিত
*আপনি নিজে থেকে বিজ্ঞাপন দেখাতে পারবেন না।

5. Squarespace

এটির প্রচ্ছদটি দেখলে প্রথমেই আপনার মনে হবে যে,  এই ওয়েবসাইটটি  সৃজনশীল লেখকদের কথা ভেবেই মডিফাই করা হয়েছে। আসলেই! এটি একেবারেই সত্য! আপনি কয়েক সেকেন্ডের একবারের চেষ্টাতেই এখানে একটি ব্লগ খুলে ফেলতে পারবেন।

আর যতদূর দেখেছি, প্রতিযোগীতার ক্ষেত্রে এটি Wix এর খুব কাছাকাছি। আপনার প্রয়োজনীয় সবধরনের বৈশিষ্ট্যই এখানে পেয়ে যাবেন।

সুবিধা সমূহঃ

★আপনি চাইলে যেকোন সময় আপনার ছোট ব্লগটিকে বড় পরিসরে ব্যবসায়িক ব্লগ এ পরিণত করে ফেলতে পারবেন।
★কোনও ডিজাইন এবং কোডিং দক্ষতা নেই এমন ব্লগাররাও অবলিলায় ব্যবহার করতে পারবেন।

অসুবিধাঃ

১। ব্যক্তিগত পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্লগ তৈরির অনুমতি পাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
২। আপনার জন্য প্রয়োজনীয় সব টুলস এখানে নাও পেতে পারেন।

একটি অসাধারন ব্লগ তৈরি করার জন্য আপনার কোন কোন টুলস ব্যবহার করা উচিত?

ওয়েব হোস্টিং

HostGator- একটি হোস্ট যা Bluল থেকে প্রায় ছিল, হোস্টগেটর অন্যতম সেরা একটি টুলস। এই ওয়েব হোস্টটির আপটাইম মোটামোটি 99.9%। আপনার যেকোনো সমস্যায় 24/7 লাইভ চ্যাট এ সহায়তা পেয়ে যাবেন!

WpEngine - এটি ওয়ার্ডপ্রেস প্ল্যাটফর্মে তৈরি হওয়া প্রথম দিককার হোস্টিং ওয়েবগুলোর মধ্যে একটি। দ্রুত লোডিং এবং একাধিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য এটি সুপরিচিত। 

ডোমেইন এর নাম রেজিস্টার করাঃ

NameCheap- এটি একটি সুলভ মূল্যের ডোমেন তৈরি করার টুলস। এটি সবসময়ই স্বাধীন সংস্থা হিসাবে কাজ করে। এবং  আপনাকে নেমচেপের নির্ধারিত খরচ তালিকার বাইরে আলাদা লুকানো কোনো খরচ নিয়ে চিন্তিত থাকতে হবেনা। এর ডাটা সেন্টারগুলি সাধারনত উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপেই সবচেয়ে বেশি সম্প্রসারিত!

GoDaddy -  GoDaddy শীর্ষ ডোমেইন নেইম রেজিস্টার সাইট এর মধ্যে লিস্টের এক নম্বরে থাকবে।
এখানে যেকোনো ধরনের ডোমেইন নেইম এক্সটেনশন সহজেই খুজে পাওয়া যায় - আপনি যদি কোনও স্বাস্থ্য ব্লগ, প্রযুক্তি ব্লগ, অনলাইন শপ বা অন্য কোনও ব্লগ শুরু করতে চান তাহলে প্রয়োজনীয় ডোমেইন খুব সহজেই এখান থেকে পেয়ে যাবেন।

Name.com - Name.com কেবল ডোমেইন নাম রেজিস্টার ই করে না,এছাড়াও এখানে হোস্টিং, এসএসএল এবং ইমেইলও সরবরাহ করা হয়।
এদের প্রচ্ছদ আর রুলসগুলো আপনি নিজেই খুব সহজে বুঝে নিয়ে সাইনআপ করে ফেলতে পারবেন।

WordPress এর জন্য প্রয়োজনীয় Theme:

BridgeTheme (By ThemeForest) - এখানে প্রচুর আকর্ষণীয় সব থিম রয়েছে তবে এর মধ্যে অন্যতম আকর্ষনীয় একটি হলো ব্রিজ থিম।
এটি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে প্রায় 4,500 এরও বেশি স্টার পেয়েছে, বুঝতেই পারছেন এটা কতটা জনপ্রিয়!

The Essence  (by The Meridian Theme) - আপনি যদি লাইফস্টাইল রিলেটেড ব্লগার হয়ে থাকেন এবং  ম্যাগাজিনধর্মী কোনো ওয়েবসাইট চান তাহলে আপনি The Essence বেছে নিতে পারেন চোখ বন্ধ করে।

Business Theme (by My ThemeShop) - যদি ব্যবসা ভিত্তিক ব্লগ তৈরি করতে চান তাহলে এটি আপনার জন্য একদম পারফেক্ট। এটার আরেকটা সুবিধা হলো আপনি ব্লগ নিজেই কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন।

কন্টেন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রেঃ

Hemingway App - এই অ্যাপটি সম্ভবত আমেরিকান লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের সাহিত্যকর্ম থেকে  অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয়েছে। এর উল্লেখযোগ্য একটি বৈশিষ্ট্য হলো এটি আপনার লেখার প্রতিটি বিষয় যেমন পাঠযোগ্যতা, লেখার ধরন পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রয়োজনে
আরও ভাল শব্দ বা ভাষার ব্যপারে সাজেশান দেয়!

Canva - আপনি ভিজ্যুয়াল সংযুক্ত না করে অনলাইন মার্কেটিং চালাতে পারবেন না।
ক্যানভা দিয়ে আপনি চাইলেই বিশাল বড় ব্লগ পোস্ট সংক্ষিপ্ত করে সারমর্মে নিয়ে আসতে পারবেন। এবং সামগ্রিক মার্কেটিংয়ের একটা পরিসংখ্যান তৈরি করে ফেলতে পারবেন। এমনকি এই অ্যাপটি স্বয়ংক্রীয় ভাবে কাজ করে বলে,আপনাকে ব্লগের ডিজাইনের ব্যপারে খুব যে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তেমন কোনো কিছুরও প্রয়োজন নেই।

The Blog Post Ideas Generator - অনেক সময় দেখা যায়,  ব্লগের পোস্টের জন্য নতুন ইউনিক কোনো আইডিয়া সহজে মাথায় আসছেনা!
তখন দেখা যায় যে,এই ধরনের এপপস গুলো থেকে সহজেই টুকটাক কিছু আইডিয়া খুজে নেয়া যায়। এছাড়া আপনি চাইলে আপনার ফোন বা পিসির Chrome এর জন্যও এই টুলসটি  ইনস্টল করে নিতে পারেন।

Rank ট্র্যাকিংয়ের ক্ষেত্রেঃ

RankTracker- এটি আপনাকে কেবল আপনার বর্তমান পোস্টগুলোর Rank ই দেখাবে না, সাথে সাথে সময়ের সাথে আপনার উন্নতির জন্য আপনি আগের এবং বর্তমান পোষ্টগুলোর মধ্যে একটা Ranking এর চার্ট দেখাতে যা থেকে আপনি পোষ্টের আপডাউন ধরতে পারবেন খুব সহজেই। এছাড়া আপনার কাজের জন্য শিডিউলও তৈরি করে নিতে পারবেন।

Ahrefes -Ahrefes একটি খুবই গোছানো একটি  টুলস ।  এর যে দিকটি সবচেয়ে ভালো লাগার মতো তা হলো এটি আপনার আশেপাশের ব্লগারদের সাথে আপনার স্ট্যাটিক র‌্যাঙ্কিং দেখাবে।

Moz Pro  Rank Traker- এই Rank ট্রেকারটি আপনার কাজের গতিকে সহজ করে দেবে। এটার সাহায্যে আপনি কোন কোন দিক নিয়ে কাজ করলে Rank এ এগিয়ে থাকবেন এটা সহজেই অনুমান করতে পারবেন।

স্যোশাল মিডিয়ায় একাউন্ট পরিচিতিঃ

Hootsuit- Hootsuit এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগটির পোস্ট শিডিউল ঠিক রাখার পাশাপাশি ইচ্ছামতো অনেকগুলো স্যোশাল মিডিয়ার একাউন্টের সাথে কানেক্ট হতে পারবেন। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যক একাউন্টের বেশি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের সাথে কানেক্ট হতে চাইলে আপনাকে কিছু খরচ করতে হতে পারে!

SocialOomph - আপনার টুইটার প্রোফাইলটিকে জেনারেল থেকে  সেকেন্ডড লেভেলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এটা মারাত্মক রকমের ভূমিকা রাখতে পারে!
আপনি টুইটারে বেষ্ট টুইট দাতা হিসেবে লিস্টের শীর্ষে থাকবেন এমন স্বপ্ন একবার হলেও দেখেছেন কিনা? এটা আপনাকে এইক্ষেত্রে সাহায্য করবে একদম ম্যাজিকের মতো। এছাড়া এটা দিয়ে আপনি অনেকগুলো প্রোফাইলকে একসাথে জয়েন্ট করে প্রচুর সংখ্যক ফ্যানফলোয়ার বানিয়ে ফেলতে পারবেন অল্প কয়দিনেই!

পুরো একটি দলকে পরিচালনা করার ক্ষেত্রেঃ

Slack- আপনি যদি খুব  সহজ সরল একটি অ্যাপ খুজে থাকেন তাহলে এটি আপনার জন্য। এটা আপনাকে অনেক দূরের কোনো কর্মী বা পুরো দলের সাথে যোগাযোগ করা সহজ করে দেবে লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে একজায়গায় বসে থেকেও পুরো সংস্থার কাজগুলোকে সুন্দরভাবে মনিটর করতে পারবেন।

Trello - এমন একটি প্ল্যাটফর্ম খুজছেন যেখান থেকে পুরো আপনার কর্মীদের দলীয় কাজগুলো পর্যবেক্ষন করতে চাচ্ছেন? বা চাইলে তাদের নতুন কাজের জন্য ফাইল সংযুক্ত করতে পারবেন?
তাহলে Trello ব্যাবহার করে দেখুন নিরাশ হবেন না কতা দিচ্ছি।

GoToMeeting - সত্যি বলতে কি, সম্প্রতি চলমান এই লকডাউন এর সময়ই আমি GoToMeeting এর ব্যাপারে জেনেছি। যেসব ব্লগার তাদের কাজকে আরো দ্রুত গতিতে প্রসারিত করতে চান এটা তাদের জন্য অতি উত্তম একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।
GoToMeeting আপনাকে বিশ্বব্যাপী আপনার টিমের সাথে ওয়েব কনফারেন্স এবং মিটিং সেট আপ করতে সাহায্য করবে খুব দ্রুততার সাথে।

আউটসোর্সিং এর জন্য 

ClearVoice-  আপনার ক্রমবর্ধমান ব্যাবসায়ীক ব্লগটিকে নতুন নতুন কন্টেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে  ক্লিয়ার ভয়েজ সর্বোত্তম সহায়তা দিয়ে থাকে। যেটি আপনার ব্র্যান্ডকে আরো শক্তিশালী হতে সাহায্য করবে।

FreeUp -FreeUP এর অভিজ্ঞ ও দক্ষ ভার্চুয়াল ফ্রিল্যান্সারদের সমন্বয়ে একটি বিশাল দল রয়েছে যারা আপনাকে আপনার ব্লগিং ব্যাবসার প্রসারে প্রয়োজনীয় সবধরনের সহায়তা করতে সবসময় প্রস্তুত থাকে। তারা তাদের ওয়েবে প্রথম যখন সাইনআপ করা হয় তখন থেকেই ব্লগারদের চাহিদাটা বুঝে নিয়ে পরামর্শ গ্রুপ তৈরি করে নেয়।

UpWork - এখন পর্যন্ত  আপওয়ার্কের প্রায় 12 মিলিয়ন রেজিস্ট্রেশনকারী ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন।  এবং 5 মিলিয়ন  এরও বেশি ক্লায়েন্ট রয়েছেন।
এবং এরই মাঝে আপওয়ার্কে ফ্রীল্যান্সিংয়ের নতুন নতুন আরো বিভাগ চালু হচ্ছে। নিজেই আলাদা ব্লগসাইট খুলে বসার চেয়ে এই জায়গা গুলোতে নিজের প্রতিভার পরিচয় দিতে পারেন সাহস করে।

কিভাবে একটি ব্লগকে জিরো থেকে হিরোতে নিয়ে যাবেনঃ

আপনি যখন ব্লগিং শুরু করবেন কেবল কোথায় কোথায় বিনামূল্যে ব্লগসাইট পাবো বা কোথায় অল্প কষ্টে বেশি আয় পাবো এটা জানাই কিন্তু যথেষ্ট নয়! সঠিক কৌশলগুলি না খাটালে ব্লগিংয়ে বেশি দূর আগাতে পারবেন না।

নীচে কিছু টিপস দেখে নিতে পারেন।

ব্লগের স্ট্রাকচার এর দিকে খেয়াল রাখুন - আপনার ব্লগের লেখাগুলো অগোছালো বা কেবলই কতগুলো শব্দের সন্নিবেশ এমন যেনো না হয়!
বরং এমন ভাবে সাজান যেনো পাঠকরা স্টেপ বাই স্টেপ পড়ে মজা পায়।

ব্লগের টাইটেল যেনো আকর্ষনীয় হয়- আপনার জন্য আমার প্রথম পরামর্শ থাকবে আপনার আর্টিকেলের শিরোনামগুলো যেনো অনপয়েন্টে থাকে। টাইটেলের শব্দ চয়ন সহজ অথচ আকর্ষনীয় হলে সহজেই পাঠক টানতে পারবেন।

নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করুন - নতুন নতুন ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে আমরা স্প্যামিং এর ঝামেলাগুলো থেকে বেরুতে পারিনা যা খুবই বিরক্তকর। এজন্য  ওয়েবসাইটের  ড্যাশবোর্ডের
সেটিংসে গিয়ে স্প্যামিং অপশন অফ করে দিন।

কমেন্টের রিপ্লে দিন - যখন আপনার ব্লগে পাঠকরা কমেন্ট করবে চেষ্টা করুন প্রত্যেকের কমেন্টে ধন্যবাদসূচক কিছু রিপ্লে দেয়ার। এতে কমেন্টদাতা খুশি হন পরবর্তী পোস্ট পড়ার উৎসাহ পান। এতে আপনারই ভিউ বাড়বে।

কিছু কথাঃ

একটি সুন্দর গোছালো ব্লগ তৈরি করতে আপনি অনেক কিছুই করতে পারেন। আপনি প্রচুর পরিমাণে তথ্য উপস্পথান করতে পারেন। নতুন নতুন ডাটা সংযোজন করলে পাঠক উপকৃত হয়। লেখার মাঝে মাঝে কোটেশান, লেখার স্টাইল বদলালে দেখতেও কিন্তু সুন্দর লাগে।

আশা করছি লেখাটি থেকে কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। শুভ কামনা রইলো।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles