তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশ উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আজকের বিকাশের পেছনে রয়েছে অনেক বিজ্ঞানী, স্বপ্নদ্রষ্টা, প্রকৌশলী এবং নির্মাতাদের অবদান।
তার এবং তারহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা, কম্পিউটারের গণনা ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মাইক্রোইলেকট্রনিক্সের বিকাশ বর্তমানে আইসিটি কে মুঠোর মধ্যে নিয়ে এসেছে।
আধুনিক কম্পিউটারের বিকাশ বা প্রচলন শুরু হয় চার্লস ব্যাবেজ নামে একজন ইংরেজ প্রকৌশলী ও গণিতবিদের হাতে। অনেকে তাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলে থাকেন। তিনি তৈরি করেন ডিফারেন্স ইঞ্জিন।
১৯৯১ সালে লন্ডনের বিজ্ঞান জাদুঘরে চার্লস ব্যাবেজের বর্ণনা অনুসারে একটি ইঞ্জিন তৈরি করা হয়।
দেখা যায় যে, সে কি সঠিকভাবে কাজ করছে এবং পরবর্তীতে তিনি অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামে একটি গণনা যন্ত্রের পরিকল্পনা করেন।
তবে গণনার কাজটি কিভাবে আরো কার্যকর করা যায় সেটা নিয়ে ভেবেছিলেন কবিল রোড বাইরনের কন্যা অ্যাডা লাভলেস।
মায়ের কারণে এডা ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞান ও গণিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ১৮৩৩ সালে চার্লস ব্যাবেজ এর সঙ্গে তার পরিচয় হলে তিনি চার্লস ব্যাবেজের অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন কে কাজে লাগানোর জন্য প্রোগ্রামিং এর ধারণা সামনে নিয়ে আসেন।
এ কারণে এডা লাভলেস কে প্রোগ্রামিং ধারণার প্রবর্তক হিসেবে সম্মানিত করা হয়। ১৮৪০ সালে চার্লস ব্যাবেজ তুরিন বিশ্ববিদ্যালয় তার ইঞ্জিন সম্পর্কে বক্তব্য দেন।
যে সময়ে অ্যাড হার লাভলেস চার্লস ব্যাবেজ এর সহায়তা নিয়ে বক্তব্যের সঙ্গে ইঞ্জিনের কাজের ধারাটির ধাপ অনুসারে ক্রমাঙ্কিত করেন।
তার মৃত্যুর ১০০ বছর পর ১৯৫৩ সালে সেই নোট আবারও প্রকাশিত হলেন বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, এডা লাভলেস অ্যালগরিদম প্রোগ্রামিং এর ধারণাটাই প্রকাশ করেছিলেন। বিজ্ঞানী জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল তড়িৎ চুম্বকীয় বলের ধারণা প্রকাশ করেন।
তড়িৎ চৌম্বকীয় বলে ধারণা বিনা তারে বার্তা প্রেরণের সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। বিনা তারে স্থান থেকে অন্য স্থানে বার্তা প্রেরণে প্রথম স্বপন বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু।
১৮৯৫ সালের জগদীশচন্দ্র বসু অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ ব্যবহার করে স্থান থেকে অন্য স্থানে তথ্য প্রেরণের সক্ষম হন।
কিন্তু তার এই আবিষ্কার প্রকাশিত না হওয়ায় সার্বজনীন স্বীকৃতি পায়নি।বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে একই কাজ প্রথম প্রকাশিত হয় সার্বজনীন স্বীকৃত প্রাণ ইতালির বিজ্ঞানী গুগলিএলমো মার্কনি। এজন্য তাকে ব্যথার যন্ত্রের আবিষ্কারক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বিশ শতকে ইলেকট্রনিক্সের বিকাশের পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের আইবিএম কোম্পানি মেইন ফ্রেম কম্পিউটার তৈরি করে। পর্যায়ক্রমে ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রেসর আবিষ্কৃত হলে সাশ্রয়ী কম্পিউটার তৈরির পথ সুগম হয়।
বিশ শতকের ষাট সত্তরের দশকে ইন্টারনেট প্রটোকল ব্যবহার করে আরপানেট আবিষ্কৃত হয়। বলা যায়, তখন থেকে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কম্পিউটার সমূহের মধ্যে আন্তঃসংযোগ বিকাশিত হতে শুরু করে।
আরে বিকাশের ফলে তৈরি হয় ইন্টারনেট। ১৯৭১ সালে আরফানের ইলেকট্রনিক মাধ্যমে পত্রলাপের সূচনা করে না আমেরিকার প্রোগ্রামার রেমন্ড টমলিনসন।
তিনি প্রথম ইমেইল পদ্ধতি চালু করেন। মাইক্রো প্রসেসর এর আবির্ভাবের উপর বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে সেটি ব্যবহার করে পার্সোনাল কম্পিউটার তৈরীর কাজ শুরু হয়।
স্টিভ জবস ও তার দুই বন্ধু স্টি প ও জিনিয়াক ও রোনাল্ডো উইন ১৯৭৬ সালের পহেলা এপ্রিল অ্যাপল কম্পিউটার নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন।
প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান। অ্যাপলের হাতেই পার্সোনাল কম্পিউটারের নানান পর্যায় বিকাশিত হয়েছে।
অন্যদিকে উনিশশো একাশি সালে আইবিএম কোম্পানি তাদের বানানো পার্সোনাল কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করার জন্য উইলিয়াম অথবা বিল গেটস ও তার বন্ধুদের প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটকে দায়িত্ব দেয়।
বিকাশে তো হয় এম এস.এস এবং উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম।
বিল গেটস প্রতিষ্ঠিত মাইক্রোসফট কোম্পানির অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার দিয়ে বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ কম্পিউটার প্রচলিত হয়।
১৯৮৯ সালে স্যার ত্রিমূর্তি জন বারেনার্স লি নামে একজন ব্রিটিশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী হাইপারটেক্সট ট্রান্সফার প্রোটকল ব্যবহার করে তথ্য ব্যবস্থাপনার প্রস্তাব করেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন।
তিনি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর জনক হিসেবে পরিচিত।
নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির বিকাশের ফলে বিশ্বের নানান দেশের মধ্যে ইন্টারনেট বিস্তৃত হয়। ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠে এবং বিকাশিত হয় বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার।
বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাম ফেসবুক। হারবাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর জাকারবার ও তার চার বন্ধুর হাতে শোষিত হয় ফেসবুকে।
শুরুতে এটি কেবল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে অনেকেই ফেসবুক ব্যবহার করেন।
এই সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। আমাদের বাংলাদেশে অনেকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক ব্যবহার করেন।
You must be logged in to post a comment.