ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেট এর ব্যবহার এবং সুবিধা-অসুবিধা সমূহ জানুন বিস্তারিত।

ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে করেছে প্রাণবন্ত আর গতিময়। কেননা ইন্টারনেটের কারণে সারা বিশ্ব আজ একটি একক পরিবারের মত। স্কুল কলেজ অফিস আদালত থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পেয়েছে ছন্দময় গতি।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা ইন্টারনেট আসলে কাকে বলে। চলুন আজকে আমরা ইন্টারনেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।

ইন্টারনেট কি? (what is Called Internet?)

ইন্টার (enter) অর্থ ভিতরে প্রবেশ এবং নেট (net) অর্থ জাল; এ দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারনেট শব্দের অর্থ হচ্ছে অন্তর্জাল।

যে পদ্ধতি ব্যবহার করে দুই বা ততোধিক ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় সাধারণভাবে তাকে ইন্টারনেট বলা হয়।

অন্যভাবে বললে বলা যেতে পারে বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত অনেক বড় ধরনের একটি নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা হচ্ছে ইন্টারনেট।

ইন্টারনেট কাকে বলে এ বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে তথ্য উপস্থাপন করা হলেও মূল কথা কিন্তু একই।

আধুনিক টেলিযোগাযোগ এর একটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট সম্পর্কে জানতে গেলে আমাদের আরেকটি কথা মনে পড়ে যায় আর তা হচ্ছে www (world wide web). আপনি জানেন কি এই ইন্টারনেট বাবাজির জনক কে?

ভিনটন জি কার্ভ হচ্ছেন সেই মহান ব্যক্তি যিনি এই ইন্টারনেট আবিষ্কার করেন। যার ফলে আমরা গোটা বিশ্বের তথ্য নিমিষের মধ্যে জানতে পারি।

এবার চলুন ইন্টারনেট কত প্রকার জেনে নেওয়া যাক।

  • কেবল ইন্টারনেট 
  • স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
  • ডায়াল-আপ ইন্টারনেট 
  • সেলুলার ইন্টারনেট 
  • ওয়ারলেস ইন্টারনেট 

ইন্টারনেটের অনেকগুলো প্রকারভেদের মধ্যে এগুলি সব থেকে বেশি জনপ্রিয়। বর্তমান সময় আমাদের মধ্যে অনেকেই ওয়ারলেস এবং স্যাটেলাইট ইন্টারনেট বেশি ব্যবহার করে থাকে।

এবার আমরা ইন্টারনেটের কিছু প্রয়োগ ক্ষেত্র লক্ষ্য করব।

  • ইন্টারনেট এর ব্যবহার 
  • যোগাযোগ রক্ষায় ইন্টারনেট 

সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার আরেক নাম হচ্ছে ইন্টারনেট। এর বদৌলতে আমরা খুব সহজে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগাযোগ করতে পারি।

আমরা ইমেইলের মাধ্যমে একস্থান  থেকে অন্য স্থানে অনেক সহজ এবং দ্রুততার সাথে আমাদের বিভিন্ন ডকুমেন্ট শেয়ার করতে পারি।

বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ম্যাসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলি। এসব কিছুই কিন্তু সম্ভব হয়েছে ইন্টারনেটের কারণে।

অনলাইন ব্যবসায় ইন্টারনেট 

ই-কমার্স এবং ই-বিজনেস ইন্টারনেট এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনলাইন ভিত্তিক যত ই-কমার্স ব্যবস্থা চালু রয়েছে তার মূলে রয়েছে ইন্টারনেট। কাস্টমারের কাছ থেকে অর্ডার নেওয়া থেকে শুরু করে পণ্য ডেলিভারি পর্যন্ত সমস্ত কিছুই করা হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।

মানুষ এখন ঘরে বসেই পেয়ে যাচ্ছে তাদের কাঙ্ক্ষিত সকল পণ্য। ফলে গতানুগতিকভাবে বাজারে গিয়ে তাদের পন্য কেনার কোন প্রয়োজন হচ্ছে না।

ইন্টারনেটের কারণে বিশ্বের অনেক বড় ধরনের একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট অ্যামাজন থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেকেই হাজার হাজার ডলার আয় করছেন। 

ই-লার্নিং (E-learning)

ইন্টারনেটের কারণে অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম ই-লার্নিং পদ্ধতি চালু হয়েছে। Google এ গিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে এবং YouTube থেকে ভিডিও দেখে শিক্ষা গ্রহণ করছে আমাদের দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি অনলাইন থেকে বিভিন্ন জ্ঞান মূলক  তথ্য তাদের শিক্ষার গতিকে এগিয়ে নিয়েছে আরো এক ধাপ।

অনেক দক্ষ এবং অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী তাদের মূল্যবান পাঠদান অনলাইনের মাধ্যমে দিচ্ছেন। ফলে শিক্ষার্থীরা অনলাইন ব্যবহার করে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করছে।

এতে করে তাদের জ্ঞান আহরণের ইচ্ছাশক্তি ক্রমশ বেড়ে চলেছে।

তাৎক্ষণিক বার্তা 

পৃথিবীর কোন প্রান্তে কখন কি ঘটছে তা নিমিষের মধ্যে আমরা জানতে পারছি। ফেসবুক ইউটিউব এবং অনলাইন টিভির মাধ্যমে এসব খবর আমরা অনেক সহজেই পেয়ে যাচ্ছি।

ভূমিকম্প এবং দুর্যোগ মুহূর্তের আগাম সংবাদ জানার কারণে আমরা অনেক আসন্ন বিপদ থেকে বাঁচতে পারি। এসব কিছুর মূল অবদান হচ্ছে ইন্টারনেট।

সবই তো বুঝলাম এবার কি একটু শর্টকাটে বলবেন ইন্টারনেট আসলে কি কি কাজে লাগে?

ইন্টারনেট কি কি কাজে লাগে 

  • অনলাইন থেকে শিক্ষা গ্রহণ 
  • Google facebook এবং youtube থেকে বিভিন্ন শিক্ষামূলক তথ্য গ্রহণ 
  • অনলাইন থেকে সহজ এবং দ্রুততার সাথে কেনাকাটা করা 
  • ইলেকট্রনিক মেইল সিস্টেমের মাধ্যমে একস্থান থেকে অন্য স্থানে সহজে ডকুমেন্ট শেয়ার করা 
  • বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানো
  •  বন্ধুদের সাথে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা 

ইন্টারনেট এর সুবিধা সমূহ 

  • ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য অনুসন্ধান করে আমরা আমাদের জ্ঞানকে বিকশিত করতে পারি।
  • Internet এর মাধ্যমে আমরা ওয়েবসাইট তৈরি করে আমাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারি।
  • ইন্টারনেট এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে আমরা যে কোন পণ্য ক্রয় করে তার পেমেন্ট  বিভিন্ন পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে সরাসরি প্রদান করতে পারি।
  • আমাদের দেশের বহু তরুণ ফ্রিল্যান্সার ইন্টারনেট ব্যবহার করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে।

এতসব সুবিধা থাকার সত্বেও ইন্টারনেটের কিছু অসুবিধা রয়েছে। চলুন এক নজরে সেই অসুবিধা সমূহ দেখে নেয়া যাক-

ইন্টারনেটের অসুবিধা সমূহ

  • বিভিন্ন সৌশাল মিডিয়া ব্যবহার করার কারণে অতিরিক্ত সময় নষ্ট হচ্ছে যা তরুণ সমাজের শিক্ষায় অনেক বড় ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি করছে।
  • আমাদের দেশের তরুণরা অনলাইন ব্যবহার করে বিভিন্ন গেম এর প্রতি আসক্ত হচ্ছে।  যার ফলে তাদের বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
  • অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেকেই ভুয়া তথ্য প্রদান করে ব্যবসা পরিচালনা করছেন যাতে করে সহজ সরল মানুষ ঠকে যাচ্ছে
  • সাইবার হামলা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ইন্টারনেটকে বিশেষভাবে দায়ী করা হচ্ছে

মন্তব্য  

সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে প্রত্যেকটা বিষয়ের মোটামুটি ভালো এবং মন্দ উভয় দিক রয়েছে এত সব কিছু থাকার পরেও ইন্টারনেটের সুবিধা আসলেই অনেক বেশি কেননা এখন আমাদের আর দূর-দূরান্তে গিয়ে কোনো তথ্য কিংবা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস পাঠাতে হয় না।

এখন আমরা নিমিষের মধ্যে তথ্য পাঠাতে পারি কিংবা গ্রহণ করতে পারি। আসুন আমরা সবাই ইন্টারনেটের ভালো দিকগুলির প্রতি নজর দিই এবং যে সমস্ত দিক খারাপ রয়েছে সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করি।

আপনাদের সুসাস্থ্য কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ্ হাফেজ।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ