২০১৮ সালে দাড়িয়ে ইন্টারনেট এখন ঘরে ঘরে এসেছে। সেটা শহরে হোক বা গ্রামে। প্রতিনিয়ত প্রচুর মানুষ ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হচ্ছে। মোবাইল কম্পিউটারকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে, অনলাইন কমিউনিটিতে যোগ দিচ্ছে।
ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সাথে সাথেই বাড়ছে অনলাইনের প্রতারণা, ডেটা চুরির মতো প্রতারণা। আর এসব ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে হলে দরকার পরে সাইবার সিকিউরিটির। এখন মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে, এই সাইবার সিকিউরিটি কি?
সাইবার সিকিউরিটিঃ সাইবার সিকিউরিটি অর্থাৎ ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত সিস্টেম, বিভিন্ন যন্ত্র, সফটওয়্যার ও তার ডেটাকে সাইবার অ্যাটাক থেকে প্রটেক্ট করাকে বুঝায়।
এই সাইবার সিকিউরিটি আবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান দিয়ে গঠিত হয়। সেগুলো হলো- এপ্লিকেশন সিকিউরিটি, ইনফরমেশন সিকিউরিটি, নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি, ডিজাস্টার রিকোভারী, ইন ইউজার প্রটেকশন। নতুন টেকনোলজির কাছে এটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে যে, সাইবার থ্রেট এর হাত থেকে এটার সুরক্ষিত কিভাবে করবে। ডেটা ও অন্যান্য সম্পদ গুলো সাইবার থ্রেট থেকে রক্ষা করার জন্য দরকার সাইবার সিকিউরিটির।
সাইবার সিকিউরিটির হাত ধরে যে সব সাইবার থ্রেট গুলো প্রতিরোধ করা যায় সেগুলো হলোঃ-
র্যানসমওয়্যার- র্যানসমওয়্যার হলো এক ধরনের ম্যালওয়্যার, যার সাহায্যে অ্যাটাকার ভিকটিমের কম্পিউটারে ফাইল গুলোকে এনক্রিপ করে টাকা দাবি করে, ফাইল গুলোকে ডিসক্রিট ও আনলক করার জন্য।
ম্যালওয়্যার- ম্যালওয়্যার হলো এক ধরণের ফাইল বা প্রোগ্রাম। যা ব্যবহার করে কম্পিউটারে বিভিন্ন ওমস, ভাইরাস, ট্রোজান হর্স এবং ফাইবার ঢুকিয়ে দিয়ে কম্পিউটারের ক্ষতিসাধন করা যায়।
সোশ্যাল ইন্জিনিয়ারিং - সোশ্যাল ইন্জিনিয়ারিং হলো এক ধরণের অ্যাটাক। যার হাত ধরে কোনো ব্যক্তির প্রটেক্ট ও ইনফরমেশন সংগ্রহ করা যায়।
ফিশিং - ফিশিং হচ্ছে এক প্রকার প্রতারণা। যেখানে কিছু প্রতারণাপূর্ণ ই-মেইল পাঠিয়ে সংবেদনশীল তথ্য চুরি করা হয়। যেমন সাইবার থ্রেট এর কথা। ফিশিং থেকে বাঁচতে হলে অপরিচিত বা আনট্রাসট্রেড ই-মেইল বা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
স্পেয়ার ফিশিং - স্পেয়ার ফিশিংটা নরমাল ফিশিং এর চাইতে একটু বেশি সফিস্টিকেটেড। এই পদ্ধতিতে অ্যাটাকার আগে ভিকটিম সম্পর্কে ভালো করে যেনে নেয়। তারপর ভিকটিমের পরিচিত বা পছন্দের কেউ সেজে তার থেকে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করে। স্পেয়ার ফিশিং এর হাত থেকে বাঁচতে হলে ব্যক্তিগত তথ্য না জেনে অন্য কারো সাথে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ম্যান ইন দ্যা মিডল অ্যাটাক- এই পদ্ধতিতে অ্যাটাকার সেন্ডার এবং রিসিভারের মাঝখানে ইন্টারফেয়ার করে, এবং সেই তথ্য বদলে দেয়। এতে করে প্রোপার কমিউনিকেশন ব্যহত করে। এই ধরনের অ্যাটাক সাধারণ মানুষের চাইতে মিলিটারি বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে। এর থেকে বাঁচতে হলে নিরাপদ কমিউনিকেশন ডিভাইস বা পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।
ট্রোজান - ট্রোজান সিস্টেমে ঢোকার সময় মনে হয় ফ্রেন্ডলি কোনো কিছু। কিন্তু একবার সিস্টেমে ঢুকতে পারলে সেটি হয়ে যায় একটি ম্যালওয়্যার। তখন সিস্টেম বা তার মালিককে নানা ভাবে ক্ষতি করতে পারে। ট্রোজান থেকে বাঁচতে হলে দেখে শুনে সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হবে।
ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক- ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক হলো কোনো একাউন্টের পাসওয়ার্ড অনুমান করা। আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড কি হতে পারে এটা মানুষের পক্ষে অনুমান করা কঠিন হলেও কিছু কম্পিউটার প্রোগ্রাম আছে, যেগুলো খুব দ্রুত সব ধরনের কম্বিনেশন একেক করে ইনপুট দিয়ে পাসওয়ার্ড অনুমান করার চেষ্টা করে। এই অ্যাটাক এর হাত থেকে বাঁচতে হলে স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে এবং ওয়েবসাইটে লগইন এটাম্স লিমিট করে রাখতে হবে।
"আইওটি" অর্থাৎ ইন্টারনেট অফ থিংকস যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেভাবে সাইবার সিকিউরিটির চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ সাইবার থ্রেট এর হাত থেকে বাঁচাতে পারে সাইবার সিকিউরিটি। তাই বলা যায় ইন্টারনেট জগতের পরিকাঠামোকে আরও সিকিউর করার জন্য একমাত্র উপায় সাইবার সিকিউরিটি।
You must be logged in to post a comment.